• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‘ভাইরাল হওয়াই এখন মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে’
বাংলাদেশের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন মনে করেন বাংলাদেশে এখন ভাইরাল হওয়া সবচেয়ে বড় বিপণন কৌশল হয়ে উঠেছে৷ এক্ষেত্রে ন্যায়-অন্যায় নিয়ে মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে মনে করেন শিল্পী আফজাল হোসেন৷ গণমাধ্যমের সম্প্রসারণ, নতুন পরিচালক, প্রযোজক, অভিনয় শিল্পীদের উত্থানে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে বেশি কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে৷ টেলিভিশন, থিয়েটারের বাইরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তার লাভ করেছে দর্শকদের সঙ্গে শিল্পীদের যোগাযোগ৷ রুপালি পর্দার বাইরেও তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনুসারীরা৷ তবে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে দুই ধরনের মনোভাবই রয়েছে৷ অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, আমার কাছে মনে হয় পরিবর্তন মানিয়ে নেয়ার ব্যাপারটা আমাদের থাকা উচিত৷ এক টকশো-তে বিনোদনের একাল ও সেকাল, বিনোদনের মান নিয়ে আলোচনায় অতিথি ছিলেন শিল্পী ও নির্মাতা আফজাল হোসেন এবং অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলোয়ার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বলেন, আমার ফলোয়ার্স অনেক আছে কিন্তু কতজন আমাকে পছন্দ করে বা আমার ভক্ত সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই৷ বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায়, সেটা ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুক যা হোক৷ যারা আমাকে আমার কাজের জন্য পছন্দ করে তারা আমি যেমন, যে কাজ করছি সেগুলো দেখেই আমাকে পছন্দ করেন৷ তারা যে সবাই আমার ফলোয়ার্সের মধ্যে আছে বা সবাই আমাকে ফলো করছে সবসময় এমন নয়৷ আমি এই পার্থক্যটা দেখেছি৷ দর্শক নির্বাচন ও সে অনুযায়ী কনটেন্ট নির্মাণের প্রসঙ্গে আফজাল হোসেন বলেন, আমরা একটা পজিটিভ সময়ে কাজ করতে পেরেছি৷ কাজ করার আগে যদি ভাবতে হতো, আমাদের অনেক বড় জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে হবে, তাহলে অনেকগুলো ভালো কাজ হতো না৷ গণমাধ্যম, নির্মাতাদের দর্শক ধরার প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যখন অনেক টেলিভিশন এলো, তখন আর অনুষ্ঠান থাকলো না৷ অনুষ্ঠান দর্শককে খাওয়ানোর বিষয় তৈরি হলো৷ আজমেরী হক বাঁধনের অভিনীত সিনেমা রেহানা মারিয়াম নূর প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে কান উৎসবে মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলো৷ তবে ছবিটি ব্যবসা সফল কিনা সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বলেন, সুপার ডুপার হিট বলতে যা বুঝায় তা অবশ্যই ছিল না৷ একটি মোবাইক আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া বিপণন কৌশল নিয়ে প্রশ্ন ছিল দুই অতিথির কাছে৷ এ বিষয়ে বাঁধন বলেন, আমাদের মুখ্য বিষয় হচ্ছে ভাইরাল হতে হবে৷ এত কনটেন্ট এত বিজ্ঞাপন, এত খবর, এত কিছু পৃথিবীতে ঘটে যাচ্ছে এখন এটা একটা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি আমরা কীভাবে ভাইরাল করবো একটা কিছু৷ মানুষ চিন্তা করছে তার কাজটা কয়জন দেখছে, কয়টা ক্লিক হচ্ছে, ভিউ হচ্ছে এটার জন্য তারা অস্থির হয়ে যাচ্ছে৷ আফজাল হোসেন মনে করেন, শুধু বিজ্ঞাপন নয় যে যেখানে আছে সেই অবস্থায় যা খুশি তা করতে পারে৷ এক্ষেত্রে প্রশ্ন করার মানুষ নাই৷ যদি প্রশ্ন কেউ করে থাকে, করে ফেলে তাহলে আক্রমণ করার মানুষেরও অভাব হয় না৷ বলেন, কোনটি ন্যায় কোনটি অন্যায় সেটাও আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না৷ তবে ভাইরাল হওয়া দোষের কিছু নয় এমনটা মনে করেন তিনি৷ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, জনপ্রিয় করে তোলার মাধ্যমে ভাবনায় যদি একটা বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব হয় এর মতো অসাধারণ সৃজনশীলতা আর হতে পারে না৷ যখন মানুষ ঐ অসাধারণত্ত্বকে স্পর্শ করতে পারে না তখন খুব সাধারণ বিষয় নিয়ে এসে মানুষ হৈ চৈ ফেলে দেয় এবং এটাকে আমরা ভাইরাল বলি৷ এটা আসলে সাফল্য নয়৷ বরং এই বিষয়গুলো মানুষকে দিনে দিনে নিম্নগামী করে৷
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:২২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়