• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
৬ দফা দাবি জানিয়ে জেএসডি সভাপতির বিবৃতি
চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ নাহিদ ইসলামের 
কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ডিবি পরিচয়ে কোন একটি ‘রাষ্ট্রীয় বাহিনী’ তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। খবর বিবিসি বাংলার। তিনি বলেন, ‘আমি শারীরিক নির্যাতনের কারণে চিকিৎসা নিচ্ছি। আঘাতের কারণে আমার দুই কাঁধ ও বাম পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে আছে। শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও নির্যাতন করা হয়েছে আমাকে। আন্দোলনে আমি যাতে নেতৃত্ব বা নির্দেশনা দিতে না পারি সে কারণেই হয়তো আমাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।’ নাহিদ ইসলামের এই অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, নাহিদ ইসলামকে আটক বা ছেড়ে দেওয়া সম্পর্কে তারা কিছু জানে না। এ দিকে কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়া, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয় কিংবা ভবিষ্যত কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেছেন নাহিদ ইসলাম। গত ২০ই জুলাই শুক্রবার মধ্যরাতে নন্দীপাড়ার এক বন্ধুর বাসা থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন তার বাবা বদরুল ইসলাম। রোববার মুক্ত হওয়ার পর নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘তুলে নিয়ে যাওয়ায় সময় ওই বাসার নিচে পুলিশ ও বিজিবির গাড়িসহ তিন-চারটি গাড়ি ছিল। সেখানে থাকা একটি প্রাইভেট কার বা মাইক্রোতে তাকে ওঠানো হয়। সে সময় তিন থেকে চার স্তরের কাপড় দিয়ে আমার চোখ বাঁধা হয় এবং হ্যান্ডকাফ পড়ানো হয়। কিছু সময় পর গাড়ি থেকে নামিয়ে আমাকে একটি বাড়ির রুমে নেওয়া হয়। আমাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরবর্তীতে আমার ওপর মানসিক ও শারীরিক টর্চার শুরু করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর আমার কোনো স্মৃতি নাই। রোববার ভোরে চারটা থেকে পাঁচটার দিকে পূর্বাচল এলাকায় আমার জ্ঞান ফেরে। পরে আলো ফুটলে কিছু দূর হেঁটে একটি সিএনজি নিয়ে বাসায় চলে আসি। রোববার দুপুর ১২টায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হই আমি।’ কোটা সংস্কার দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে রোববার কোটা পুর্নবহালে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে আপিল বিভাগ। এই রায়ে বলা হয়েছে, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি সাত শতাংশের মধ্যে পাঁচ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, এক শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা আর এক শতাংশ প্রতিবন্ধী-তৃতীয় লিঙ্গ কোটা হিসেবে থাকবে। এতে সরকার চাইলে এই কোটার হার কম-বেশি করতে পারবে। অনতিবিলম্বে সরকারকে এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রোববার নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমরা দেখেছি সাত শতাংশ কোটার কথা বলা হয়েছে। তবে এটা এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট না যে, সকল গ্রেডে নাকি শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে। এটা যদি সকল গ্রেডের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে সেটাকে আমরা ইতিবাচক মনে করি। আর সকল গ্রেডের না হলে আমাদের পূর্ণাঙ্গ দাবিকে প্রতিফলন করে না।’ কোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রথম দিনের কর্মসূচিতে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এরপরই আন্দোলনকারীরা এই একই কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। 
ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ গ্রেপ্তার
‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে সমর্থন দিলো জামায়াত-এবি পার্টি
কোটা আন্দোলনে হেফাজতের যোগ দেওয়ার সংবাদ ভিত্তিহীন
কোটা সংস্কার আন্দোলনরতদের পক্ষে সড়কে নামল ছাত্রশিবির
ছাত্রলীগের হামলা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে: কর্নেল অলি
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নারকীয় হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। বিবৃতিতে কর্নেল অলি বলেন, একটি যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। তিনি বলেন, সোমবার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় জড়ো হলে ছাত্রলীগের বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়। আমি এই ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অলি বলেন, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়বিচারভিত্তিক রাষ্ট্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করলেও উপেক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য। এদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া কারও কোনো অধিকার নেই। শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের দাবি-দাওয়া যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত। মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিসমূহ সরকারকে এখনই মেনে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, মেধাবী শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের সম্পদ। তাদের হত্যা করা বা ধ্বংস করা রাষ্ট্রের কর্ম হতে পারে না।  তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধের অর্থ্যাৎ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান অঙ্গীকার ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণ করা। সাংবিধানিকভাবে ও আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিক সমান। আমি রণাঙ্গনের একজন বীরবিক্রম হিসাবে বলব, সন্তানদের চাকরির জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি; বৈষম্য দূরীকরণের জন্যই আমরা দেশ স্বাধীন করেছি।
কোটা আন্দোলন জিইয়ে রেখে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা চলছে: রাশেদ
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক মো. রাশেদ খান বলেছেন, সরকার আজীজ-বেনজীর-আসাদুজ্জামান-মতিউরদের দুর্নীতি, ভারতের সাথে রেলচুক্তিসহ সমসাময়িক নানান ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাইতো পরিকল্পিতভাবে ২০১৮ সালের মীমাংসিত বিষয় সামনে আনছে সরকার। ২০১৮ সালে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন, ‘আর কোনো কোটা থাকবে না, যেহেতু সংস্কার করলে আবার আন্দোলন হবে, তাই কোটা বাতিল করা হবে।’ সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন-২০১৮-এর সংগঠকরা সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেয়। সেখানে লিখিত বক্তব্যে রাশেদ এসব কথা বলেন। রাশেদ বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি সফল ছাত্র আন্দোলন। ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন ৮ এপ্রিলে থেকে জোরালো আন্দোলনে পরিণত হয়। আমরা সে সময়ে কোটা বাতিল নয় বরং কোটা সংস্কার চেয়েছিলাম। সে সময় ২ জুলাই সরকার তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। রাশেদ বলেন, গত ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোটা বাতিল আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই। তাহলে তিনি কেন বাতিল করার কথা বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা তো বাতিল চায়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করছে দাবি করে রাশেদ বলেন, শুনতে পাচ্ছি ইডেন কলেজের মেয়েরা আন্দোলনে রাস্তায় নামলে তাদের ওপর ছাত্রলীগের নারী ও পুরুষ কর্মীরা হামলা করছে। রোববার (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে বেপরোয়া হবার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ জন্য রোববার রাত থেকেই ছাত্রলীগ বেপরোয়া হয়ে গেছে। ইডেন কলেজ, ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। প্রতিরোধের ডাক দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। আপনাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আপনারা যদি ছাত্রলীগের সামনে দাঁড়াতে না পারেন তাহলে আপনাদের ব্যর্থ করে দিতে পারে। ২০১৮ সালে আমরা যেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম তাতে ছাত্রলীগ এক সময় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সক্ষমতা অনুযায়ী পাশে থাকবো। আন্দোলনকারীদের যেন গ্রেফতার করতে না পারে সেজন্য যেভাবে পাশে থাকার দরকার আমরা সেভাবে পাশে থাকবো বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান সাবেক নেতারা।
কোটা নিয়ে ছাত্রসমাজের প্রতি ছাত্রলীগের যে বার্তা
সরকারি চাকরিতে ‘কোটা’ ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের লক্ষ্যে ছাত্রসমাজের উদ্দেএশ বেশ কিছু বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।   শনিবার (১৩ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিটি আরটিভি নিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-  ভাষা, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার, সমতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা ও শিক্ষার সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহিদের রক্তস্নাত, বাংলার ছাত্রসমাজের নির্ভরতা-নিশ্চয়তার প্রিয় ঠিকানা, ন্যায়ের পথের নিরলস যাত্রী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্রসমাজের প্রতি প্রীতি ও শুভেচ্ছা। বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথি, আধুনিক-উন্নত-আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের কারিগর, গবেষণানির্ভর-বিজ্ঞানভিত্তিক-সমন্বিত-সন্ত্রাসমুক্ত-কর্মসংস্থানবান্ধব-অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের পথিকৃৎ, একদিনে ৩৬ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করে বিশ্বে নজির স্থাপনকারী, নারীর শিক্ষা-সমতা-মর্যাদা-কর্মসংস্থানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাঁর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারি-বেসরকারি খাতে চাকরি ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ, শিক্ষা খাতে অভূতপূর্ব অর্জন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে জয় করার লক্ষ্যে তারুণ্যনির্ভর কর্মপরিকল্পনা, ডিজিটাল বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে যে যাত্রা সূচনা করেছেন তার জন্য বাংলার ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি  হৃদয় নিংরানো ভালোবাসা ও অভিনন্দন। প্ৰেক্ষাপট আন্দোলনের  প্রেক্ষিতে দেশে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা বাতিল হয় ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একই বছরের ৪ অক্টোবর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরবর্তীতে ২০২১ সালে উচ্চ আদালতে করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে এ বছরের ৫ জুন হাইকোর্ট ৪ অক্টোবর, ২০১৮-এর প্রজ্ঞাপন বাতিল ঘোষণা করে। সরকার পক্ষের আইনজীবী হাইকোর্ট বিভাগের দেয়া এই রায় বাতিলের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ  আদালতের আপিল বিভাগে আবেদন করে, বর্তমানে যা বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে গত ৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর পৃথক একটি রিটে ৫ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের দেয়া রায় স্থগিত করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনকে বহাল রেখে স্ট্যাটাস কো আদেশ জারি করে। এর ফলে সরকারি চাকরিতে চলতি সময়ে আর কোন কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত নেই।  বাস্তবতা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত-আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থান সম্পর্কে দ্বিধাহীনভাবে বলিষ্ঠতার সাথে কাজ করে চলেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যার ফলশ্রুতিতে এদেশের তরুণ সমাজ সরকারি চাকরি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগের মাধ্যমে নিজেদের মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে দরিদ্র-অনুন্নত পর্যায় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক নীতি ও কর্মসূচি দেশের সর্বত্র উন্নয়ন-অগ্রগতির আলো পৌঁছে দিয়েছে। দেশ ও সমাজের পিছিয়ে পরা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য নানামুখী সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কারণে তারাও আর পিছিয়ে নেই। দেশের তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরে সরকারি চাকরির প্রতি যে আগ্রহ-আকর্ষণ বর্তমানে সৃষ্টি হয়েছে তা সম্ভব হয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার অনন্য-অতুলনীয় নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার মাধ্যমে।  ২০১৮ সালের আন্দোলন পরবর্তী প্রেক্ষাপটে কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ তুলে দেয়ার কারণে নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়, যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, কোটা ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদেশের নারী সমাজ। উদাহরণস্বরূপ: কোটা থাকা অবস্থায় সর্বশেষ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসে নারীদের চাকরি হয় যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অন্যদিকে কোটা তুলে দেওয়ার পর ৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসে নারীদের চাকরি হয় ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ, ২১ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। পুলিশ ক্যাডারে ৩৬তম বিসিএসে ১৬ জন, ৩৭তম বিসিএসে ১৪ জন, ৩৮তম বিসিএসে ১২ জন, ৪০তম বিসিএসে ৭ জন এবং ৪১তম বিসিএসে মাত্র ৪ জন নারী সুপারিশকৃত হন। অর্থাৎ কোটা না থাকার কারণে বিসিএসে দিন দিন নারীদের অংশগ্রহণের হার একেবারে তলানিতে চলে যাচ্ছে এবং উন্নয়নের মূলধারা থেকে নারীরা ছিটকে পরছে। এমনকি প্রায় ৫০টি জেলায় বিসিএস ছাড়াও সরকারি যেসব কর্মসংস্থানে সুযোগ ছিল সেগুলোতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব শূন্য হয়ে যায়। ‘প্ল্যানেট ৫০/৫০’ বিনির্মাণে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যেখানে সরকারি চাকরিতে জেন্ডার সমতা থাকা উচিৎ সেখানে বাংলাদেশে তা ২৫ শতাংশ এর  নিচে রয়েছে। কোটা ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার কারণে তা আরও প্রান্তিক পর্যায়ে চলে গেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সমন্বিত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনের জন্য বিশেষ বিধি থাকলেও ২০১৮ পরবর্তী বাস্তবতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ: ৪০তম বিসিএসে দেশের ২৪টি জেলা থেকে এবং ৪১তম বিসিএসে ১৮টি জেলা থেকে একজনও বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশকৃত হয়নি।  একইভাবে সমাজের পিছিয়ে পরা বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর জন্যও এটি সত্য। কোটা থাকা অবস্থায় ৩১ থেকে ৩৮তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ১৭৯ জন বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশকৃত হন। কোটা বাতিলের পর ৩৯তম বিসিএসে বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক  জাতিগোষ্ঠীর ২৪ জন সুপারিশ পেয়েছেন এবং ৪০ ও ৪১তম বিসিএসে সুপারিশ পেয়েছেন মাত্র দুইজন। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন রিপোর্ট-২০২০ অনুসারে ৩৫-৩৯তম ৫টি বিসিএস পরীক্ষার পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট ১৪ হাজার ৮১৩ নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে মেধায় ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ, জেলা কোটায় ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ, নারী কোটায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটায় ০.৮৮ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী কোটায় ০.১১ শতাংশ নিয়োগ হয়। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে, কোটার শূণ্য পদে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করার কারণে কোটা থাকা অবস্থাতেও প্রতি বিসিএসে ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ নিয়োগ হয়েছে মেধার ভিত্তিতে।  এদিকে বিসিএসে আবেদন করার সময় কোন কোটা নেই। সর্বশেষ ৪৩তম বিসিএসে ৪ লাখ ৪২ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে প্রিলি পাস করে মাত্র ১৫ হাজার ২২৯ জন লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষাতেও কোনো কোটা নেই। এখান থেকে ৯ হাজার ৮৪০ জন উত্তীর্ণ হন ভাইভার জন্য। ভাইভাতেও কোন কোটা নেই। ভাইভায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে ২ হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার সুপারিশ করা হবে। অর্থাৎ যদি কোটা থাকতো তাহলে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপে পৃথকভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোটার প্রসঙ্গ আসতো। সুতরাং এখানে মেধাবীদের মধ্যে থেকেই অধিক মেধাবীরা নিয়োগ পেতেন এবং কোটা কোনভাবেই তাদের মেধার বিস্তর ফারাক করে দিত না।  সর্বোপরি, যেখানে সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষাতেই একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয় তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয়, যা পুরোপুরি ন্যায় এবং সংবিধানসম্মত। জনদুর্ভোগ আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে না ধরে তথাকথিত আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোমতেই যৌক্তিক কোনো পদক্ষেপ নয়। এই আন্দোলনের কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে, হাসপাতালে রোগীদের যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না, জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনীয় সম্পদ যেমন তেল, গ্যাস, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন দুরূহ হয়ে উঠছে, কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের যীবনযাত্রা অচল হয়ে যাচ্ছে। আন্দোলন-আন্দোলন খেলা ও হিরোইজম প্রদর্শনের এই নিম্ন মানসিকতা এদেশের শিক্ষিত তারুণ সমাজের প্রতি সাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।  এমতাবস্থায় কোটা বাতিল বা সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে সে সম্পর্কে পুন:ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। কোটা সংক্রান্ত বিষয়টির সংবেদনশীলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হবার পরও একথা বিবেচনাধীন যে, আন্দোলনকারীরা সমাজ ও দেশ হতে বিচ্ছিন্ন কেউ নয়। নিজেদের দাবি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টিও তারা কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেন, সাধারণ জনগণ বনাম শিক্ষার্থী এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে। আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান বিদ্যমান প্রতিটি বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনে করে যে, কোটা ব্যবস্থার একটি যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান ও সংস্কার আনয়ন করা এই মুহুর্তে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে কোন হঠকারিতা নয়, তাড়াহুড়ো নয়, কোন অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে ‘স্পট ডিসিশন’ গ্রহণ করা নয়। কোটা ব্যবস্থার সময়োপযোগী সংস্কার আনয়নের জন্য একটি সমন্বিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামোর প্রেক্ষিতে একটি যৌক্তিক, স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এমন উদ্যোগে এদেশের ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম তাদের মেধা-মনন দিয়ে একটি উপযুক্ত ব্যবস্থা প্রণয়নে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু কোন সমন্বিত উদ্যোগের পথে না হেঁটে, এমনকি আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কেন এই অনিঃশেষ আন্দোলন? হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছে, বর্তমানে যা বিচারাধীন বিষয়। একটি বিষয় যখন আদালতের গন্ডিতে প্রবেশ করে তখন তার সমাধান আইনের কাঠামোতেই হতে হয় এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ কথা কি আন্দোলনকারীরা জানে না? পাশাপাশি হাইকোর্টের পৃথক আরেকটি রায়ে যখন স্ট্যাটাস কো অবস্থা জারি করে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে সেহেতু আইনের পরবর্তী ধাপগুলো পর্যন্ত অপেক্ষা না করে কেন জনসাধারণ বিরোধী এই অবরোধ অব্যাহত রাখতে হবে তা এদেশের ছাত্রসমাজ, জনসাধারণ জানতে চায়। একইসাথে দেশের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কেও আন্দোলনকারীদের জানতে হবে, মানতে হবে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার পৃথক তিনটি কাঠামো আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ। প্রতিটি বিভাগ পৃথক ও স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং একটি অন্যটির কাজে হস্তক্ষেপ করে না। কোটা বাতিলের নির্বাহী আদেশ যেহেতু বিচার বিভাগ থেকে বাতিল করা হয়েছে সেহেতু আদালতে এটির কার্যক্রম শেষ হবার পরই কেবল আইন ও নির্বাহী বিভাগ নতুন করে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং ততোদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামোর এই মৌলিক বিষয় না বুঝে জনগণকে জিম্মি করা অব্যাহত থাকলে আন্দোলনকারীদের এটিও মনে রাখা দরকার যে, এদেশের আইন বিভাগ সার্বভৌম, বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং নির্বাহী বিভাগ জনগণের ভোটে প্রতিষ্ঠিত। তাই কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলনের কাছে রাষ্ট্র কখনোই নতি শিকার করতে পারে না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের শিক্ষার্থী সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে- ১. আন্দোলনের নামে অনিঃশেষ অবরোধ কার্যক্রম পরিচালনা কোনোভাবেই দাবির সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে আসতে পারে না। ২. চলমান এইচএসসি পরীক্ষা, তীব্র তাপদাহ, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সড়ক অবরোধ, নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে তাদের অবিলম্বে ফিরে আসতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, উচ্চ আদালতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত মধ্যবর্তী সময়ের জন্য পুনর্বহাল হয়েছে। তাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে স্বাভাবিক আইনগত প্রক্রিয়ায় কোটা সংক্রান্ত জটিলতার যৌক্তিক সমাধান নিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের সব রকম বিশৃঙ্খলাপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। ৪. কোটা-সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন এবং কেউই দেশের প্রচলিত আইনের উর্ধে নয় বিধায় আইনি প্রক্রিয়াতেই এর চুড়ান্ত, স্থায়ী, যৌক্তিক ও অন্তরভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে এগুতে হবে। ৫. এ ক্ষেত্রে দেশের শিক্ষার্থী সমাজের নির্ভরতার প্রতীক, তারুণ্যের স্বপ্ন পূরণের ঠিকানা দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাদের পাশে রয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের পাশে রয়েছে। পরিশেষে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দেশের শিক্ষার্থী সমাজের পাশে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে সমস্যার গভীরে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিক সমাধান নয় বরং বিচার বিভাগীয় পর্যবেক্ষণের আলোকে সাংবিধানিক অনুশাসন অক্ষুণ্ন রেখে, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতাকে বিবেচনায় নিয়ে, জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকল্পে, প্রান্তিক ও নিম্নবর্গীয় মানুষের প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আলোকে যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী, যুগোপযোগী, ইতিবাচক সমাধান নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।  একইসাথে আদালতের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জানাচ্ছে যে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক উচ্চ আদালত এদেশের মহান সংবিধানে উল্লেখিত সুযোগের সমতা নিশ্চিতকল্পে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যমান বাস্তবতায় কোটা নিয়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ সন্তুষ্ট হবে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং, আন্দোলনের নামে দেশের শিক্ষার্থী সাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে জিম্মি করে, জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে, দেশরত্ব শেখ হাসিনা পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার যেকোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দেশের ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে এক্যবদ্ধ লড়াই অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ । জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।  
প্রধানমন্ত্রী ভারতের অনুমতি নিয়ে চীন যাচ্ছেন: সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ভারতের জোরেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, জনগণের নয়। দেশটির তাঁবেদারি করছে সরকার। শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ অভিযোগ করেন তিনি। ক্ষমতার বিনিময়ে ভারতকে কী কী বিলিয়ে দেয়া হচ্ছে প্রশ্ন করে সাকি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চাই। সরকারি মদদেই বিদেশি ঋণের টাকা লুট চলছে আর সেই ঋণ শোধ করছে জনগণ। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের অনুমতি নিয়ে চীন সফরে যাচ্ছেন। এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে।   সভায় বক্তারা হুংকার দিয়ে বলেন, গলায় গামছা বেঁধে সরকারকে বিদায় দিতে হবে। তিস্তা প্রকল্পে ভারতকে যুক্ত করা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির প্রমাণ। ভারতের সঙ্গে রেল ট্রানজিট প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ভারতের সঙ্গে রেল ট্রানজিট সমঝোতা নিয়ে জনগণকে অন্ধকারে রেখেছে সরকার। রেল করিডোর সমঝোতা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ট্রেনে নিত্যপণ্য নাকি অস্ত্র পরিবহন করবে ভারত এমন প্রশ্ন রাখেন এই নেতা।
সারাদেশে আজ ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ
ভারতের সাথে দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল, চিহ্নিত দূর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে শুক্রবার (৫ জুলাই) সারাদেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যেসব চুক্তি হয়েছে তাতে দেশের স্বার্থ নেই দাবি করে গত ২৭ জুন রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে অনুষ্ঠিত দলের থানা প্রতিনিধি সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে শুক্রবার(৫ জুলাই) সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করার জন্য জেলা ও মহানগর শাখা নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। ভারতের সাথে দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল এবং চিহ্নিত দূর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ইসলামী আন্দোলন ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবারবাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সহকারি মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্র্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন।বক্তব্য রাখবেন,কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
রাজধানীতে বেনজীর-মতিউরের কুশপুত্তলিকা দাহ
দুর্নীতি রোধে দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রণয়ন এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দাবিতে তাদের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে সমাবেশ করেছে নতুনধারা বাংলাদেশ (এনডিবি)।  শুক্রবার ( ২৮ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদীর সভাপতিত্বে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী বলেন, আলোচিত রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে মানুষ মারা গেছে ৬০০, আর সচিবালয়ের রাসেলস ভাইপারদের কামড়ে সারা দেশের মানুষ অর্থনৈতিক-সামাজিক-শিক্ষা ও সাংস্কৃতিকভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংস হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশ, অর্থনীতি ও মানুষকে বাঁচাতে সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দুর্নীতিবাজদের তালিকায় আগামী ১ মাসের মধ্যে না করলে দুদক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি করবে নতুনধারার নেতাকর্মীরা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নতুনধারা প্রেসিডিয়াম মেম্বার বোর্ডের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান আজাদ, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. নূরজাহান নীরা, যুগ্ম মহাসচিব মনির জামান, সদস্য আফতাব মণ্ডল, আল আমিন বৈরাগী ও নিজাম উদ্দীন প্রমুখ।
ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে ব্ক্তারা / বুকের রক্ত দিয়ে হলেও রেল ট্রানজিট বাতিল করব
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে রেল ট্রানজিট বাংলাদেশে হতে দেব না, বুকের রক্ত দিলেও এটি বাতিল করব। দেশকে বিক্রি করতে দেব না। শুক্রবার (২৮ জুন) জুমার নামাজের পর বাইতুল মোকাররম মসজিদের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল, সমঝোতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ নেই দাবি করেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ। তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতি আজিজ আহমেদ, বেনজীর আহমেদ ও মতিউর রহমান সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে, তাদের দেশে এনে বিচার করতে হবে। দুর্নীতির সব টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে দেশের জনগণ একদিন এর বিচার করবে। মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, আজকে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে দুর্নীতিবাজরা। আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য একে আজাদ বলেছেন যে, ৮-১০ মানুষ ব্যাংকগুলোকে লুটে সব টাকা নিয়ে গেছে। এটা সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরাও জানে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথায়-কথায় বলেন বিদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশ থেকে এনে বিচার করব। কিন্তু যারা দেশটা লুট করল, ব্যাংককে লুট করল, অর্থনীতি ধ্বংস করল, তাদের ধরে এনে বাংলার মাটিতে বিচার করব এই কথা তো আপনার মুখে শুনি না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এখন কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা কেজি এবং আলু ৭০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়।  আগামীতে একই দাবিতে জেলা-মহানগরে কর্মসূচি দেওয়া হবে জানান সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ।