• ঢাকা শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
মালয়েশিয়ার পোশাক কারখানা থেকে আটক ৩৫ বাংলাদেশি
মিশরে কুরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নারী হাফেজের সাফল্য
প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরের নতুন রাজধানী ‘প্রশাসনিক কায়রো’তে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলেন হাফেজ হুমাইরা মাসউদ নামের এক নারী হাফেজ। দেশটিতে অনুষ্ঠিত ৩১তম আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৬০টি দেশের প্রতিযোগীদের মাঝে অনারবদের জন্য নির্ধারিত গ্রুপে পঞ্চম স্থান অর্জন করলেন তিনি। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দেশটির ‘গ্র্যান্ড মসজিদে’ অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার ফলাফলে দ্বিতীয় গ্রুপের বিজয়ীদের মধ্যে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশী হাফেজ হুমাইরা মাসউদের নামটিও। হাফেজ হুমাইরা মাসউদ অনারবদের জন্য নির্ধারিত গ্রুপটিতে পঞ্চম স্থান অধিকার করে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন দুই লাখ মিশরীয় পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ টাকা। এই গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জনকারী নাইজেরিয়ান হাফেজ ফাতেমা আবু বকর পেয়েছেন ছয় লাখ মিশরীয় পাউন্ড বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। বিজয়ী হাফেজ হুমাইরা মাসউদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মিশরের ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. ওসামা আল-আজহারী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, কায়রোর গভর্নর ড. ইব্রাহিম সাবের, সাবেক মুফতি ড. শাওকি আল্লাম, সুদানের সাবেক ওয়াকফ মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ মুস্তফা আল-ইয়াকুতি, প্রতিযোগিতার বিচারক বৃন্দ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার চর ভৌরবী গ্রামের মাসুদ আজীজ এর কন্যা ২০১০ সালে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় ২য় স্থান অধিকার করেছিলেন।  তিনি নারায়ণগঞ্জের উম্মে আইমান (রা.) আন্তর্জাতিক বালিকা মাদ্রাসা থেকে হেফজ, জামিয়া ইব্রাহিমিয়া আমিনিয়া মহিলা মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদীস উত্তীর্ণ হয়ে মিশরের বিখ্যাত আজহার ইনস্টিটিউটে সানুবি (উচ্চ মাধ্যমিক) অধ্যয়নরত। আরটিভি/এএইচ
গ্রিসে পোল্যান্ডের তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে বাংলাদেশির যাবজ্জীবন
কলকাতায় ট্রাকচালককে পিটিয়ে আ.লীগ ও যুবলীগের ৪ নেতা গ্রেপ্তার
মিশরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রদূতের শোক
শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে মিশরে বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া
অধ্যাপক ড. একে এম ওয়াহিদুজামানের মায়ের মৃত্যুতে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত 
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. একে এম ওয়াহিদুজামানের মমতাময়ী মায়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।  রোববার (৮ ডিসেম্বর) দেশটির রাজধানীর কোতারায়া মসজিদে মিলাদ ও দোয়া বিএনপিমালয়েশিয়া শাখা ও অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে এই দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ মোশাররফ হোসেন, সহ-সভাপতি তালহা মাহমুদ, ডঃ এস এম রহমান তনু, সহ সাধারন সম্পাদক কাজী সালাহউদ্দিন,সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা সালাহ উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক এস এম বশির আলম, যুবনেতা মোঃ জসীম উদ্দিন, এম,এ কালাম, নুরে সিদ্দিকি সুমন, শেখ সেলিম, নাজমুল হোসেন,খালিদ হাসান রিপন, বাবু সরকার, শাহজালালসহ আরও অনেক নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী।   এর আগে গত শনিবার  বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের মাতা মোসাম্মৎ আশরাফুন্নেসা বার্ধক্যজনিত কারণে রাজধানীর ইনসাফ আল বারাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। এর আগে গত শনিবার নিজ বাসায় অধ্যাপক ড. একে এম ওয়াহিদুজামানের মমতাময়ী মা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।  তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমার একমাত্র ছেলে সন্তান এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক। এছাড়া তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) চতুর্থ উপাচার্য ছিলেন। এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সম্পাদক নির্বাচিত হন। আরটিভি/কেএইচ
ভিসা নিয়ে ইতালির বড় সুখবর, বাংলাদেশিদের জন্য কঠিন শর্ত
নতুন আইন করে তিন বছর মেয়াদি স্পন্সর ভিসায় ৪ লাখ ৫২ হাজার শ্রমিক নিচ্ছে ইতালি। চলতি বছরের এই ভিসায় দ্বিতীয়বারের মতো আরও ১ লাখ ১০ হাজার শ্রমিকের কোটা বাড়িয়েছে দেশটি। তবে বাংলাদেশসহ ৩ দেশের ক্ষেত্রে কঠিন যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ইতালির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ আইনটির অনুমোদন দিয়েছে। উচ্চকক্ষ সিনেটে অনুমোদন পেলেই প্রকাশ করা হবে গেজেট।  জানা গেছে, এই আইনে নতুন করে ১ লাখ ১০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৪৭ হাজার কৃষি কাজে এবং বাকিরা পর্যটন ও হোটেল ব্যবসা খাতে আসতে পারবেন। তবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের ইতালিতে আসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের আলবেনিয়ায় পাঠাচ্ছে ইতালি সরকার। দেশটির নতুন আইনে পারিবারিক ভিসায় আসার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু কঠিন শর্ত দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্পন্সর ভিসা কোনও কারণে বাতিল করা হলে তা মালিক পক্ষকে জানানো হবে না। তাই বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা। আরটিভি/এসএপি
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফি বেড়েছে চার সেবার 
মাত্র একদিনের নোটিশে লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে চারটি সেবার ফি বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ব্রিটেনে বসবাসরত বিদেশি পাস‌পোর্টধারী‌দের বাংলা‌দেশ ভ্রম‌ণের ক্ষেত্রে ভিসা ফি ৪৬ ইউরো থেকে বাড়িয়ে ৭০ ইউরো করা হয়েছে। ব্রিটিশ পাসপোর্টধারীদের জন্যও একই নিয়ম করা হয়েছে।  এ ঘটনায় শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রিটেনের বাংলাদেশি ক‌মিউনিটি‌তে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মতে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দূরত্ব সৃষ্টির জন্যই হঠাৎ করে বিভিন্ন সেবা গ্রহণের ফি বাড়ানো হয়েছে। তবে, হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এটা সরকা‌রের সিদ্ধান্ত। সব দে‌শের জন্যই এটা বাড়া‌নো হ‌য়ে‌ছে। এখা‌নে হাইক‌মিশ‌নের কিছু করার নেই। আরেকজন কর্মকর্তা জানান, সরকার গত চার তা‌রিখ থে‌কে ফি বা‌ড়ি‌য়ে তা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলেছে। কিন্তু, লন্ডন হাইক‌মিশ‌নে এখনও পু‌রনো রে‌টে ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। ব্রিটে‌নে তা আগামী ১৭ ডিসেম্বর থে‌কে কার্যকর হ‌বে। তি‌নি আরও জানান, নো ভিসা, নাগরিকত্ব ত্যাগ, দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পু‌লিশ ক্লিয়া‌রেন্স; শুধু এ চারটি সেবার ফি বেড়েছে। বাকি সব সেবার ফি অপরিবর্তিত আছে। প্রসঙ্গত, ব্রিটে‌নে ক‌য়েক লাখ বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাদের বেশিরভাগই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছেন। বাংলা‌দেশ ভ্রমণের ক্ষে‌ত্রে নো ভিসা নি‌তে হয় তা‌দের। প্রতি বছর ডিসেম্বর মা‌সে ছু‌টির সম‌য়ে ক‌য়েক হাজার ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি তাদের প‌রিবার নি‌য়ে দে‌শে আসেন।  আরটিভি/এসএইচএম
প্রবাসীদের হয়রানির অভিযোগ, বন্ধ হচ্ছে ইএসকেএল কার্যক্রম
প্রবাসীদের হয়রানির পাশাপাশি বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অবশেষে বন্ধ হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এক্সপাট সার্ভিসেস কুয়ালালামপুরের (ইএসকেএল) সকল কার্যক্রম।  সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি ইএসকেএল মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবা প্রদানে কোনোরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র ছাড়াই ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডির মতো স্পর্শকাতর কাজের দায়িত্ব পায়।  দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে ভিডিও কলের মাধ্যমে কোম্পানিটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন। অথচ ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডিসংক্রান্ত সেবাদানের পূর্ব কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না কোম্পানিটির। প্রবাসীদের নির্বিঘ্নে সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও রেমিট্যান্স যোদ্ধারা সেবা নিতে গিয়ে মারধরসহ নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। ‘গুডবাই দালাল ভাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করা ইএসকেএল নিজেরাই গড়ে তোলেন বিশাল এক দালালচক্র। সেবাপ্রত্যাশীদের এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সেবা নেওয়ার আহ্বান জানালেও ১৫০ রিঙ্গিত ঘুষ দিলে কোনোরকম এপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই দালালরা পিছনের লিফট দিয়ে ভিতরে নিয়ে যান। আর এই দালালদের গডফাদার হলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্রান্ডিং এন্ড মার্কেটিং ডাইরেক্টর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে গর্ব করা অভিনেতা আরমান পারভেজ মুরাদ। এমনকি ১০ রিঙ্গিতের মোবাইল সিম ৩০ রিঙ্গিতে বিক্রি করেন সেবাপ্রত্যাশী প্রবাসিদের কাছে।    এ ছাড়া গণমাধ্যমে একেরপর এক প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়মের খবর আসতে থাকে। এসব অনিয়ম ঢাকতে কতিপয় কিছু মিডিয়াকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে তাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইএসকেএল। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রবাসীদের কথা বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ায়নি।  এদিকে এক বছরের চুক্তি পাওয়া ইএসকেএলের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বরে। চুক্তি নবায়ন করতে সবোর্চ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশিনের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর আগামী ৫ বছরের জন্য ইএসকেএলের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন।  অভিযোগ রয়েছে, খোরশেদ আলম খাস্তগীর ইএসকেএলকে চুক্তির বাইরে এনআইডির সেবা দেওয়ার কাজও পাইয়ে দেন। তাছাড়া ইএসকেএলের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম।  উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ইএসকেএল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ এর সঙ্গে জড়িত সকল ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিরদ্ধে কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাচারের অভিযোগ উঠেছে। ই-পাসপোর্ট ও ভিসা সার্ভিসের আড়ালে হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে ইএসকেএলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, ইএসকেএলের নামে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছে। ইএসকেএলের অনিয়ম নিয়ে বিগত সরকারের আমলে প্রতিবাদ করেছিলেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের নেতা মকবুল হোসেন মুকুল, যার ফলশ্রুতিতে তাকে নোংরা ভাষায় গালাগালি করে ইএসকেএল থেকে নজর সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন নিক্সন চৌধুরীর ভাই নূর-ই-আলম চৌধুরী, যিনি তৎকালীন সংসদের চীফ হুইপ ছিলেন। আরটিভি/আরএ/এস
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বিবৃতি
বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বিবৃতি দিয়েছে সরকার।  স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সংখ্যালঘু ইস্যু সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফোরামে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম। বিবৃতিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি উল্লেখ করেন, অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে আমরা লক্ষ করছি, কিছু বক্তা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তাকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সম্প্রতি একজন মুসলিম আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পরেও আমাদের সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ এবং সব ধর্মীয় নেতাদের সমর্থন শান্তি বজায় রাখতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সহায়তা করেছে। আমাদের সরকার সতর্ক রয়েছে এবং যেকোনও মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার যেকোনও প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে অবিলম্বে কাজ চালিয়ে যাবে।  তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় সহিংসতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংঘটিত সহিংসতার মূলে ছিল রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণ, সাম্প্রদায়িক নয়। ওই সহিংসতা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট রাজনৈতিকভাবে অনুগত লোকদের প্রভাবিত করেছিল; তাদের প্রায় সবাই মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ছিল মাত্র কয়েকজন। সংখ্যালঘুদের ওপর কোনও উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণ হয়নি। বরং জুলাই মাসে গণআন্দোলনের পর আমাদের দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনুসরণ করে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশ তার সংখ্যালঘুদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছিল, তা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে আমাদের সরকার সব ধর্মের মানুষের কাছ থেকে অপ্রতিরোধ্য এবং অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুনর্ব্যক্ত করে যে, ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক বাংলাদেশির নিজ নিজ ধর্ম পালন বা স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল ভিত্তি। এটি আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতাদের বারবার আশ্বস্ত করেছেন এবং সরকারের প্রথম ১০০ দিনে সেটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে দুজন উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়েছে।  স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর প্রসঙ্গে বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, বাংলাদেশের জনগণ যখন ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবময় উদাহরণ স্থাপন করছিল, তখন আমরা সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়ে অতিরঞ্জিত, ভিত্তিহীন ও ভুয়া খবর এবং স্বার্থান্বেষী মহলের ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া লক্ষ্য করেছি। আমরা এই ফোরামেও এটি দেখেছি। এই ধরনের অনেক অপপ্রচারকে বৈশ্বিক গণমাধ্যম উড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সরকার বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশ সফরে আসা বিদেশি সাংবাদিকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।  আরটিভি/কেএইচ/এএইচ
লেবানন থেকে দেশে ফিরছেন আরও ১০৫ বাংলাদেশি
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে ৪০ জন এবং বুধবার ৬৫ জন বাংলা‌দে‌শি নাগ‌রিক দেশে ফিরবেন। সোমবার (২ ডিসেম্বর) রা‌তে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বৈরু‌তের বাংলা‌দেশ দূতাবাস। দূতাবাস জানিয়েছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর ৬৫ জনের একটি গ্রুপ বৈরুত থেকে দুবাই হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবে। তারা ওইদিন সকা‌লে বৈরুতের রফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সকা‌লে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।   বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় তাদের বহনকারী উ‌ড়োজাহাজ হজরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছা‌নোর কথা রয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার রাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ৪০ বাংলাদেশির দেশে ফেরার তথ্য জানায় দূতাবাস।   যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে বাংলাদে‌শিদের দেশে ফেরা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাত ১১টায় দেশে ফিরেছেন আটকেপড়া আরও ৮২ বাংলাদেশি।   পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেবানন থেকে যারা দেশে ফিরতে ইচ্ছুক তাদের সবাইকেই সরকার নিজ খরচে দেশে ফেরত আনবে। আরটিভি নিউজ/টিআই
ইএসকেএলের অনিয়ম-দুর্নীতিতে দুর্ভোগে মালয়েশিয়া প্রবাসীরা
বিগত সরকারের আমলে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবা প্রদানে কোনরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র ছাড়াই ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডির মতো স্পর্শকাতর কাজের দায়িত্ব পায় ইএসকেএল নামে বেসরকারি একটি কোম্পানি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে ভিডিও কলের মাধ্যমে কোম্পানিটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন। অথচ, ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডি সংক্রান্ত সেবাদানের পূর্ব কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না কোম্পানিটির। জানা গেছে, উদ্বোধনের পর থেকেই আর্থিক দুর্নীতি ও চুক্তির লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেও কাঙ্খিত সেবা পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন অনেক প্রবাসী। ন্যাশনাল আইডি বা জন্মনিবন্ধনের সঙ্গে পাসপোর্টের তথ্যের মিল না থাকায় ই-পাসপোর্টের দিকে ইতোমধ্যে আগ্রহ হারিয়েছেন মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী প্রবাসীরা। অভিযোগ আছে, জালিয়াতির মাধ্যমে দালালদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মালয়েশিয়া থেকে বহু রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে প্রবেশেও সহায়তা করেছেন ইএসকেএলের কর্মকর্তারা। যেন দূরপ্রবাসে বসে বাংলাদেশি দূতাবাসের পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে অকার্যকর করার এক নীল নকশা চলছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের দোহাই দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইএসকেএলকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন খোদ দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর। দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বরাদ্দ দেয়া পাসপোর্টের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ইএসকেএলকে পাইয়ে দেন তিনি। পরবর্তীতে পাসপোর্ট অধিদপ্তর চিঠির মাধ্যমে জানায়, পাসপোর্টের মতো স্পর্শকাতর সার্ভিসের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং বিদেশি নাগরিকদের কাছে দেয়ার সুযোগ নাই। পরে আবার অদৃশ্য কোন কারণে সেই চিঠি স্থগিত করা হয়।  এদিকে সম্প্রতি অনুমতি ছাড়াই দূতাবাসের পাসপোর্ট সার্ভিস সেন্টার থেকে জোরপূর্বক সরকারি মেশিন ইএসকেএল অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত হলে অবশিষ্ট মালামাল রেখে সটকে পড়েন ইএসকেএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ায় আসা ই-পাসপোর্ট টেকনিক্যাল রেজুলেশন বুকে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকে টিম অনিয়ম দেখতে পেয়ে। শুধু তাই নয়, ইএসকেএলে সেবা নিতে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়া রেমিটেন্সযোদ্ধাদের বক্তব্য নিতে গেলে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত হন বেসরকারি ২ টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধি। দূতাবাস সংশ্লিষ্ট অনেকের দাবি, মূলত দূতাবাসের পাসপোর্ট শাখাকে অকার্যকর করা এবং রোহিঙ্গাদের নির্বিঘ্নে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিতেই ইএসকেএলকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছে দূতাবাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। আর এ কারণেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের সাফাই গাওয়া হয়। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন অনিয়মের খবর গণমাধ্যমে এলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয় । অথচ, তদন্ত কমিটির মালয়েশিয়া যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হলেও শেষ মুহুর্তে রহস্যজনকভাবে স্থগিত হয়ে যায় সে সফর। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ইএসকেএলকে বাঁচাতে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপির কিছু নেতা। জানা গেছে, কোন প্রকার সরকারি ফি ছাড়া প্রবাসীদের যে এনআইডি সেবা প্রদান করার কথা, সেই সেবা নিতে প্রবাসীদের থেকে ৭৫ রিঙ্গিত আদায় করছে ইএসকেএল। চুক্তি বহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক অতিরিক্ত চার্জ আদায়ও করা হচ্ছে প্রবাসীদের কাছ থেকে। এ কাজে নির্লিপ্তভাবে সহায়তা করেন এনএসআই কর্মকর্তা ও কাউন্সেলর জিএম রানা, যিনি ডেপুটি হাইকমিশনারের অত্যান্ত আস্থাভাজন হিসেবে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের কাছে পরিচিত ছিলেন। চুক্তি বহির্ভূত ও অন্যায়ভাবে ইএসকেএল অফিসে এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করার কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দূতালয় প্রধান হিসেবে পদায়ন পাওয়া অত্যন্ত মেধাবী, সৎ ও কর্তব্যপরায়ন কর্মকর্তা কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) ফারহানা আহমেদকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। সেই পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব সিস্টেমের বাইরে গিয়ে বিগত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কাউন্সেলর প্রণব কুমার ভট্টাচার্যকে। দায়িত্ব পেয়েই দূতালয় প্রধান ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আলোচিত কোটি টাকার দুর্নীতির কেলেঙ্কারী থেকে ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর ও শ্রম উইংয়ের প্রথম সচিব সুমন চন্দ্র দাসকে নিরাপরাধ প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় তাদের নির্দোষ দাবি করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন মন্ত্রণালয়ে। প্রণব কুমার ভট্টাচার্য দূতালয় প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরে কোন প্রকার চুক্তি না করে ইসএকেএলকে এমআরপি পাসপোর্টের আবেদন জমা নেয়ার দায়িত্ব দিয়ে হাইকমিশনের ফেসবুকে পেইজে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেন। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মোতাবেক, এমআরপি পাসপোর্ট সার্ভিস দেয়ার নামে প্রবাসীদের নিকট থেকে ২০ রিঙ্গিত আদায় করছে ইএসকেএল । কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। চুক্তির শর্ত অনুসারে প্রতিটা পাসপোর্ট আবেদনের বিপরীতে ফি সরাসরি দুতাবাসের ব্যাংক একাউন্টে জমা করার কথা থাকলেও তা না করে নিজেদের কাউন্টারে ফি জমা নিয়েছে ইএসকেএল। এতে করে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ ও সরকারের রাজস্ব বেসরকারি কোম্পানির একাউন্টে চলে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ইএসকেএল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ এর সঙ্গে জড়িত সকল ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিরদ্ধে কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাচারের অভিযোগ উঠেছে। ই-পাসপোর্ট ও ভিসা সার্ভিসের আড়ালে হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে ইএসকেএলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, ইএসকেএলের নামে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছে। ইএসকেএল এর অনিয়ম নিয়ে বিগত সরকারের আমলে প্রতিবাদ করেছিলেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের নেতা মকবুল হোসেন মুকুল, যার ফলশ্রুতিতে তাকে নোংরা ভাষায় গালাগালি করে ইএসকেএল থেকে নজর সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন নিক্সন চৌধুরীর ভাই, যিনি তৎকালীন সংসদের চীফ হুইপ ছিলেন। অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার জন্য ইএসকেএকের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে বিগত সরকার, আর যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করছে, তার কোনো সঠিক হিসাব নাই। এতো টাকা কীভাবে তারা মালয়েশিয়াতে নিয়েছে এবং এই টাকার উৎস কোথায় তার কোনো সঠিক জবাব ইএসকেএল কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটি যেখানে অফিস ভাড়া নিয়েছে সেখানকার ভাড়া এবং সেখানে যতজন কর্মচারী কাজ করে, তাদের বেতনাদি হিসাব করলে দেখা যায়, প্রতিমাসে লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রাইভেট এই কোম্পানিকে। এই লোকসানের হিসাব নিজ মুখে স্বীকার করেছেন ইএসকেএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ এবং অভিনেতা আরমান পারভেজ মুরাদ। প্রশ্ন উঠেছে, কী কারণে একটা প্রাইভেট কোম্পানি লোকসান দিয়ে প্রবাসীদের সেবা প্রদান করবেন। এ যেন শস্যের মধ্যে ভুত লুকিয়ে আছে। তথ্য বলছে, ইএসকেএল এর মার্কিটিং এন্ড ডেভলপমেন্ট অফিসের আরমান পারভেজ মুরাদ মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত কিছু সাংবাদিকদের দিয়ে বিভিন্ন সময় আসল সত্য গোপন রেখে প্রবাসীদের মিথ্যে ভোগান্তির সংবাদ প্রকাশ করেছেন। কিছুদিন আগে দূতাবাসের পাসপোর্ট ও ভিসা কনস্যুলার মিয়া মোহাম্মদ কিয়ামুদ্দিন একজন দালালের জামার কলার ধরেছিলেন। পরবর্তীতে দেখা যায়, সেই ব্যক্তি আসলে পাসপোর্টের দালাল আব্দুল কাদের। দালালের কলার ধরার মুহুর্তে মোবাইল দিয়ে ছবি তোলেন ইএসকেএল এর মার্কেটিং ডিরেক্টর আরমান পারভেজ এবং তিনি সেই ছবি কিছু সাংবাদিকদের দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করান । দেশ পুনর্গঠনে জন্য এখনও যারা স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের এজন্ডা বাস্তবায়ন করছে, ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে যারা বেঈমানি করছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা। জানা গেছে, ইএসকেএল প্রতিষ্ঠানটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানা ও তাদের শেখ ফুপাতো ভাই ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর ছেলে এবং সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের মালিকানাধীন। অভিযোগ রয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শেখ পরিবার হাজার হাজার কোটি টাকা মালয়েশিয়া হয়ে লন্ডন এবং আমেরিকায় পাচার করেছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন মাওয়া হিলসা প্রজেক্ট এর মালিক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, মার্কেটিং ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে অভিনেতা আরমান পারভেজ মুরাদকে। সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের ঘনিষ্ট কর্মকর্তা বাংলাদেশ হাইকমিশন, মালয়েশিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীরের সহায়তায় টেন্ডার বিহীন ইএসকেএল কোম্পানিকে মালয়েশিয়ার ই-পাসপোর্ট ও ভিসা প্রসেসিং এর দায়িত্ব প্রদান করে বাংলাদেশ হাইকমিশন। এ কাজে সহায়তা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন দুর্নীতিবাজ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে অন্যতম শাহ মোহাম্মদ তানভির মনসুর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, যাকে সম্প্রতি ওএসডি করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত সচিব মোঃ আলী রেজা সিদ্দীকি, যাকে গত ১৭ অক্টোবর একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে পরিকল্পনা বিভাগে বদলি করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আরও জড়িত রয়েছেন ইএসকেএল এর পরামর্শদাতা ই-পাসপোর্ট প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ নুরুস ছালাম, যিনি বিগত সরকার প্রধানের খুবই ঘনিষ্ঠজন ও তার একান্ত সহযোগী ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর লেফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সাল । অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে তড়িঘরি করে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই ইএসকেএলের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে বাংলাদেশ হাইকমিশন, মালয়েশিয়া। ডেপুটি হাইকমিশনারের তত্ত্বাবধানে এই চুক্তি সম্পাদন করা হয়। চুক্তি সম্পাদনে ডেপুটি হাইকমিশনারের একান্ত সহযোগী হিসেবে কাউন্সিলর প্রণব কুমার ভট্টাচার্য দায়িত্ব পালন করেন। এই প্রণব কুমার ভট্টাচার্যকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইএসকেএল কোম্পানিকে সফল করার দায়িত্ব প্রদান করে মালয়েশিয়ায় পদায়ন করা হয়। ডেপুটি হাইকমিশনার খাস্তগীর ও কাউন্সেলর প্রণব কুমার ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে চুক্তি সম্পাদন করে ই-পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা কার্যক্রমের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় ইএসকেএলকে। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের ই-পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা প্রদান কার্যক্রম ইএসকেএল অফিস, সাউথগেইট কমার্সিয়াল সেন্টারে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পরেই দূতাবাসের পাসপোর্ট সার্ভিস সেন্টার থেকে সরকারি সার্ভারসহ যাবতীয় যন্ত্রপাতি ইএসকেএল কোম্পানির অফিসে স্থানান্তর করা হয়। চুক্তি অনুসারে, ইএসকেএল কোম্পানির কর্মচারী কর্তৃক পাসপোর্ট সার্ভিস সেন্টারে ই-পাসপোর্ট আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করার কথা থাকলেও ডেপুটি হাইকমিশনার খাস্তগীরের সহযোগিতায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে ইএসকেএল কোম্পানি ই-পাসপোর্ট সার্ভারসহ যাবতীয় যন্ত্রপাতি তাদের অফিসে খুলে নিয়ে যায়। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, পাসপোর্ট সার্ভিস সেন্টার গত বছরের আগস্ট মাসে আম্পাং থেকে বর্তমান নতুন অফিসে স্থানান্তর করে আনা হয়। বর্তমান ভবনের মালিকপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ভবনটি তিন বছরের চুক্তিতে নেওয়া হলেও সম্প্রতি হাইকমিশন থেকে ভবন ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে দূতাবাসের পাসপোর্ট সার্ভিসের যাবতীয় কার্যক্রম ইএসকেএল অফিসে স্থানান্তর করা হয়েছে। পাসপোর্ট সার্ভিস সেন্টার পুরাতন ভবন থেকে নতুন ভবনে পরিবর্তনের সময় অভ্যন্তরীন কাঠামো তৈরিতে প্রচুর সরকারি অর্থ ব্যয় করা হয়। ভবনটিকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, ই-পাসপোর্ট সেবা ও এনআইডি সেবার জন্য প্রস্তুত করতে ৩০-৩৫ লাখের বেশি সরকারি অর্থ ব্যয় করা হলেও ইএসকেএল কোম্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য ভবনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে চলতি মাসের ১৫ তারিখে। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট সেবা এবং এনআইডি সেবার যাবতীয় যন্ত্রপাতি ও সার্ভার ইতোমধ্যে ইএসকেএল অফিসে নিয়ে স্থাপন করে সেখান থেকেই ই-পাসপোর্ট, ভিসা, ট্রাভেল পাস ও এনআইডি সেবা দেয়া হচ্ছে। পাসপোর্ট সার্ভিস সেন্টারের বর্তমান ভবনের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ছেড়ে দেয়ার কারণে হাইকমিশনকে গুনতে হয়েছে পুরো তিন বছরের চুক্তির মাসুল। যা শুধুমাত্র ইএসকেএল কোম্পানিকে অবৈধ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যেই করা হচ্ছে। ৪৫ রিঙ্গিতের বিনিময়ে হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পাসের জন্য সাধারণ প্রবাসীদের অতিরিক্ত ২০ রিঙ্গিতের চার্জ আদায় করা হচ্ছে কোন প্রকার চুক্তি ছাড়া। অভিযোগ আছে, হাইকমিশনার, ডেপুটি হাইকমিশনার ও তার অনুসারী কর্মকর্তাদের ভয়ে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে হাইকমিশনের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কথা বলারও সাহস পায় না। দেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও হাইকমিশন এখনো সেই সরকারের মদদপুষ্টদের নিয়ন্ত্রণে। ইএসকেএলের চুক্তির মেয়াদ গত ২১ সেপ্টেম্বর শেষ হয়ে গেলেও বিগত সরকারের দোসর আমলারা আবারও নতুন করে তাদের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চুক্তি নবায়নের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইএসকেএল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে দিয়ে আওয়ামী মদদপুষ্ট দুর্নীতিবাজ আমলাদের কাছে তদবির করে চলেছে। একইসঙ্গে বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আরব আমিরাতের আবুধাবি, দুবাই, কাতারের দোহা, কুয়েত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য সকল দূতাবাসের কাজও হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এই ইএসকেএল। তাদের এসব কাজে সহায়তা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। আরটিভি/এসএইচএম