একদিকে ২৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে চলছে ট্রেন, আর চলন্ত ট্রেনের ওপর দিয়ে বিপরীত দিকে অনবরত ছুটে চলছেন একজন সাইকেল আরোহী। সাইকেল চালানো তো নয়, যেনো রীতিমত ট্রেনের ওপর দিয়ে উড়ে চলছেন তিনি। পার হচ্ছেন একের পর এক ঝুঁকিপূর্ণ বাধা। ভাবছেন এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য? কিন্তু না, সাহসী কাজটি করে ইতিহাস গড়েছেন পোল্যান্ডের ডাউইড গজিয়েক। চলন্ত ট্রেনের ওপর এভাবে সাইকেল চালিয়ে, তিনি পৃথিবীর প্রথম রাইডার হিসেবে এটি সম্পন্ন করেছেন।
এই ব্যতিক্রমী কাজটি পোল্যান্ডের আপার সিলেসিয়ায় হয়েছে, যেখানে ডাউইড একটি বিশেষ পথ তৈরি করেছিলেন; যা মোট ১০টি ট্রেনের বগির ওপর দিয়ে বিস্তৃত ছিল। চলন্ত অবস্থায় তিনি একের পর এক কসরত সম্পন্ন করেছেন, যার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল এক ধরনের উল্টো ঝাঁপ, যা আগে কেউ করেনি দাবি তার।
তিনি জানান, এটা আমার জীবনের সেরা সময়। অনেকদিন ধরেই আমি এমন কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলাম, আর আজ তা পূর্ণ হয়েছে। ডাউইডের মতে, চলন্ত ট্রেনের ওপর সাইকেল চালানো আর স্থির পথে চালানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য। ট্রেন চলতে থাকলে, প্রতিটি বাধা তার দিকে এগিয়ে আসে, যা তার জন্য ছিল বড় একটি মানসিক চ্যালেঞ্জ। তবে শুধু উল্টো লাফই নয়, ডাউইডের এই যাত্রায় ছিল আরও অসাধারণ কিছু কসরত, যেমন ডাবল ঘূর্ণি এবং সামনের দিকে ঝাঁপ। তবে সবচেয়ে কঠিন ছিল শেষ বগির ওপর থেকে উল্টো ঝাঁপ দিয়ে সোজা নেমে আসা।
এই কাজটি আমার জীবনের অন্যতম কঠিন কাজ ছিল, কারণ প্রতিটি পথ ছিল খুবই সরু এবং তাকে নিখুঁতভাবে সবকিছু করতে হয়েছে। আমার ভাই সিজমনও পাশে ছিলেন, যিনি নিজেও একজন দক্ষ সাইকেল চালক। তার মতে, এই কাজটি ছিল একেবারে পাগলাটে এবং কঠিন।
ডাউইডের এই কাজের সফলতার জন্য প্রশংসা পায় বিশেষ কিছু প্রতিষ্ঠান, যারা ট্রেনের বগিগুলোতে তৈরি করেছিলেন ৮টি ঝাঁপ দেওয়ার জায়গা এবং একটি সিঁড়ি থেকে নেমে আসার পথ, যা ছিল প্রকৌশল আর ক্রীড়া দক্ষতার এক অসাধারণ সংমিশ্রণ। এছাড়া ক্রীড়া ইতিহাসে একটি বিশাল মাইলফলক বলে ধরা হচ্ছে।
আরটিভি/এফআই