পূর্বঘটনার জের ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মারামারির ঘটনার ১৪ দিন পার হয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনোরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীঘটিত এক অপ্রীতিকর ঘটনায় এক জুনিয়র শিক্ষার্থীকে সতর্ক করে ভেটেরিনারী অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ১৭ ব্যাচের শামীম রেজা নামে আরেক সিনিয়র শিক্ষার্থী। এ ঘটনার জের ধরে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের মধ্যে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। জুনিয়রকে নারীঘটিত কারণে সতর্ক করার জন্য সেদিন রাতে সদলবলে সেই জুনিয়র হলে গিয়ে হামলা করে তাকে আহত করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সিনিয়র শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সুপারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষক পরিস্থিতি সামাল দেন এবং তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত অভিযুক্ত হামলাকারীদের বিপক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। হামলার এতদিন পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় হামলাকারীদের পক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার ১৪ দিন পার হয়ে গেলেও কোনোরকম শাস্তির ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন ওই ভবনে অবস্থানরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে প্রশাসনের কাছ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত এবং শাস্তির মৌখিক আশ্বাস পেয়ে ভবনের তালা খুলে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত ২৬ অক্টোবর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সায়েন্সের ১৭ ব্যাচের শামীম রেজার রুমে ঢুকে তার ওপর একই হলের ২০ থেকে ৩০ জন অর্তকিত হামলা চালায়। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। শুধু তাই নয় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ জানালেও প্রায় ১৬ দিন পেরিয়ে গেছে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো সুস্পষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছি।
আন্দোলনের খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শামসুজ্জোহা এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. এমদাদুল হাসান।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রক্টর ড. মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘এই ঘটনা যেদিন হয় সেদিন আমরা প্রক্টরিয়াল বডি এবং হল প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমরা ঘটনা শুনেছি এবং অভিযুক্তদের নামও পেয়েছি। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি খুব দ্রুতই তদন্ত করবে এবং তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আমরা হামলাকারীদের বিপক্ষে ব্যবস্থা নেবো।’
এ সময় অভিযুক্ত হামলাকারী এবং তাদের সহযোগিতা করা সকলের বিচার দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোন অগ্রগতি না হলে আরও কঠোর আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনিক ভবন চত্ত্বর ত্যাগ করেন তারা।
আরটিভি/এমকে-টি