রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আবারও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই মানববন্ধন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানে প্রতিবাদ জানান তারা।
মানববন্ধনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গেলাম কিবরিয়া চৌধুরী মিশু বলেন, গত জুলাই আন্দোলনে ২০ হাজারেরও বেশি ভাই আহত হয়েছেন। তাদের এই ত্যাগের কারণে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম যেখানে শিক্ষার্থীরা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সুযোগ-সুবিধা পাবে। কিন্তু আপনারা আজ একটু খোঁজখবর নিলে দেখবেন, কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া বাকি সবাই কোনো না কোনো ভাবে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। এই আত্মীয়তার বন্ধন এখনই সময় ভেঙে ফেলার।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বুকে যতক্ষণ পর্যন্ত রক্ত ও শক্তি আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথে দাঁড়িয়ে থাকবো। ইনশাল্লাহ! আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হওয়ার পরেও এখন আমাদের রাস্তায় দাঁড়ানো দুঃখজনক।
এ সময় উম্মে সালমা নামের তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মকর্তা বলেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে যাই তখন দেখি এই বাচ্চারা পোষ্য কোটা নিয়ে কথা-বার্তা বলছে। তখন আমি রিকশা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে যাই। তাদের কষ্ট দেখে আমার বুকে আবু সাইদ, আবু রায়হানের মায়ের কান্না সহ সারা বাংলাদেশের সকল মায়ের কান্নার কথা মনে পড়ে। তাই আমি তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি। আমি পোষ্য কোটার অন্তর্ভুক্ত হলেও আমি পোষ্য কোটা চাই না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, কোটা সংস্কার করতে গিয়ে শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়ে গেল, রাষ্ট্র সংস্কার হয়ে গেল। কিন্তু পোষ্য কোটার মতো একটি অযৌক্তিক কোটা এখনো রয়ে গেল। এটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাল-বাহানা শুরু করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আমরা আমাদের জায়গা থেকে বিন্দু পরিমাণ সরে যাই নাই। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়ব না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন বিভিন্ন ধরনের যুক্তি দেখাচ্ছে। আপনাদের যুক্তি এই জুলাই বিপ্লবের কাছে কিছুই না।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ নভেম্বর রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনেও বসেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের এ কোটা পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হয়। তবে এ কমিটি এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও কার্যকরী সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বলে জানা গেছে। পরে প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখানো সহ একাধিক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আরটিভি/এএএ