• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় রাবিতে তদন্ত কমিটি
শাবিপ্রবির মূল ফটকের নাম ‘শহীদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের ধাওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে খাল পর হতে গিয়ে নিহত হন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুদ্র সেন। এবার তার নাম অনুসারে শাবিপ্রবি’র মূল ফটকের নাম ‘শহীদ রুদ্র তোরণ’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে এ ঘোষণা দেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের অন্যতম সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘শহীদ রুদ্র সেনের স্মরণে শাবিপ্রবি’র প্রধান ফটকের নাম ‘শহীদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা করছি। কাগজের এই লেখা যদি ছিড়ে ফেলা হয়, আমরা আবারও রক্ত দিয়ে লিখে রেখে আসবো। রুদ্র মরে গিয়েও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল।’  এর আগে বাদ জুমা তারা স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় ৯ দফা দাবিতে গণসংযোগ করেন। প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই পুলিশের ধাওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে কয়েক বন্ধুর সঙ্গে খাল পার হতে গিয়ে ডুবে মারা যান শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র সেন।
৩০০ কক্ষ ভাঙচুর, সংস্কারের পরই চালু হবে শিক্ষা কার্যক্রম: ঢাবি উপাচার্য 
সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলো বেরোবি
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ বার্তা
শাস্তির শঙ্কায় শিক্ষকের অব্যাহতি, ‘দূরভিসন্ধি’ দেখছে জাবি প্রশাসন
কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা
কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছাত্র আন্দোলনকারীরা। তবে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আট দফা দাবি মানা না হলে আবারও মাঠে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তারা। এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা আহত এবং শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের দায়িত্ব সরকারকে নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী মোকাররম হোসাইন বলেন, ‘যেহেতু সরকার ধীরে ধীরে আমাদের সব দাবি মেনে নিচ্ছে, কিন্তু এখানে তৃতীয় পক্ষ এসে আমাদের অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করে তুলেছে। তাই আমরা তৃতীয় পক্ষকে কোনো‌ সুযোগ নিতে দেব না। আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হবে, এ সুযোগ আমরা কেউকে নিতে দেব না।’  তিনি বলেন, ‘আমাদের আট দফা দাবি নিয়ে সরকার কাজ করছে, আমরা চাই তাড়াতাড়ি আমাদের দাবি মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যবস্থা করা হোক। আমাদের দাবি যেহেতু মেনে নেওয়া হচ্ছে তাই আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে, ৩০ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আবার আন্দোলনে ফিরব।’  আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তোফায়েল আহমেদ তপু সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনও অগ্নি সংযোগ বা জ্বালাওপোড়াওয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে না। এ কাজের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক।’  তবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেন হেনস্তা করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি। আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী রেজোয়ান গাজি মহারাজ, সুজন ভৌমিক ও মনিমুল হক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।  প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ থেকে ২১ জুলাই দেশ উত্তপ্ত হয়েছে ওঠে। এ সময় পুলিশসহ দেড় শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে বিটিভি, মেট্রোরেল, সেতুভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালায় দুর্বৃত্তরা।
ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  গত ১৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ খানকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আট সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত জমা দিতে বলা হয়েছে।   কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর আহম্মদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান, ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ফেরদৌসী বেগম ও অ্যাডভোকেট অধ্যাপক শফিকুল্লাহ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ জুলাই ও তার পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিন্ডিকেট। কমিটিকে আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।  
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চাকরি ছাড়লেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমে জাহিদুল করিম নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জাহিদুল করিম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর করা অব্যাহতিপত্র রেজিস্ট্রারকে মেইল করা হয়েছে। অব্যাহতিপত্রে সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম লিখেছেন, ‘গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি হামলা চালিয়েছে, তা এই জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা ও কিছু সংখ্যক প্রতিবাদী শিক্ষককে রক্তাক্ত করার মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এমন কর্মকাণ্ড দেখেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষকদের নির্লিপ্ত থাকতে দেখেছি।’ শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলীয় করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করা এই শিক্ষক বলেন, ‘দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির সরকারের উদাসীনতা ও শিক্ষকদের দলীয় মনোভাব আমাকে ব্যথিত করেছে। আমি সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সর্বদা পাশে থেকেছি। কোটা সংস্কারের একটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর মূল্যবান জীবন দিতে হয়েছে।’ শহীদ সকল শিক্ষার্থী ও আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধকে জাগ্রত করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি থেকে অব্যাহতি ঘোষণা করছি।’ এদিকে জাহিদুল করিম তার নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে ব্যাহতিপত্রটি পোস্ট করার পর ভাইরাল হয়ে গেছে। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল করিম ২০১০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করছেন। জাহিদুল করিমের অব্যাহতিপত্রের ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানের মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে যা বললেন আইনমন্ত্রী
শিক্ষার পরিবেশ তৈরি হলে যত দ্রুত সম্ভব দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।  মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে ব্রিফিংয়ে তথ্য তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী।  এ ছাড়া সাম্প্রতিক ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়েও কথা বলেন তিনি। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।  আনিসুল হক বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। রায় অনুয়ায়ী পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের জন্য ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য। এক শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং বাকি এক শতাংশ প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য।    
নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করবে না ঢাবি প্রশাসন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরপরাধ কোনো শিক্ষার্থীকে হয়রানি করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর পরিচালক মাহমুদ আলম সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধান এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুততম শুরু করার লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথাও উল্লেখ করা হয়।  পদক্ষেপগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহে শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীরাই থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী আবাসিক হলগুলোতে মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে অবস্থান করবে, যেন বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে না পারে।  তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত নিয়মে নির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের মতো নিয়োজিত থাকবে। দ্রুত সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলের কক্ষসমূহ সংস্কার করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।  ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম যেন কোনোক্রমে ব্যাহত না হয়, সেজন্য শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কাম্য। বিগত কয়েকদিনে ক্যাম্পাসে সংঘটিত অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাবলি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সব সদস্যকে ক্যাম্পাসে একটি সুন্দর, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব এবং ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্বাস করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
ক্যাম্পাস-হল খুলে দিতে ৫ পদক্ষেপ নিল ঢাবি
শিক্ষার্থীদের হলে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ও দ্রুত সময়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। ক্যাম্পাস ও হল খুলে দিতে এরই মধ্যে পাঁচ পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) ঢাবি জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধান ও শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে শুরু করার লক্ষ্যে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে শুধু বৈধ শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী আবাসিক হলগুলোতে মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেন কোনো শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে অবস্থান নেবে যেন বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে না পারে। দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলগুলো সংস্কার করা, আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম কোনোভাবেই যেন ব্যাহত না হয় সে ধরনের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
জাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় ক্যাম্পাস ছাড়ল পুলিশ
কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দিনভর ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ঘটনা ঘটেছে। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিয়ে পুলিশেদের ক্যাম্পাসের মেইন গেটের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আশপাশের গ্রামের মানুষজনও যোগ দেয় আন্দোলনে। পুলিশ সদস্যরা এখন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে আছেন। এদিকে, চলমান আন্দোলনে বৃহস্পতিবার সারা দেশে অন্তত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে চারজনের মৃতদেহ রাজধানীর উত্তরার বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাওয়া গেছে। হাসপাতালটির পরিচালক মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে চারজনের মৃতদেহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি তাদের পরিচয় জানাতে পারেননি। এর আগে উত্তরায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে দুজন নিহতের খবর নিশ্চিত করেন উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সাব্বির আহমেদ। সব মিলিয়ে উত্তরায় ছয়জনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে হাসপাতাল সূত্রে। উত্তরায় নিহতদের মধ্যে একজনের নাম শেখ ফাহমিন জাফর। তিনি টঙ্গী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। এ ছাড়া রাজধানীতে সংঘর্ষে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী ধানমণ্ডির পুরনো ২৭ নম্বর সড়কে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. ফারহানুল ইসলাম ইসলাম ভূঁইয়া (ফারহান ফায়াজ) নিহত হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষক কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, দুপুরে রাজধানীর সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।