লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীরা।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়ামের সঞ্চালনায় বক্তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদসহ ১৪, ১৫ ও ১৭ জুলাই হামলায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত সকল শিক্ষককে তদন্ত চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে এবং অতিদ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে; নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য ও জুলাই গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীর ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও হলে পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী ফারহানা ফারিনা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস হতে চলেছে কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি অভিযুক্ত শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা চলছে এমন ছাত্রলীগ কর্মীরাও ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ক্যাম্পাসে এই আওয়ামী দোসররা পুনর্বাসিত হবে। কোনো নিয়ম কানুন মেনে গণঅভ্যুত্থান হয়নি। তাই নিয়মের দোহাই দিয়ে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন আমরা মেনে নেবো না।
এ সময় জাবি শাখার সমন্বয়ক মেহেরাব সিফাত বলেন, একজন খুনি কখনো শিক্ষক হতে পারেনা। বশির আহমেদ ও তার সহযোগীরা বিগত আন্দোলনের মতো এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করেছে। কিন্তু আমরা এই আন্দোলনে সফল করেছি। যাদের হাতে শিক্ষার্থীদের রক্ত তারা কোন ধরনের প্রশাসনিক পদে থাকা মানে শহিদদের সাথে বেইমানি। অবিলম্বে তাদের অব্যাহতি দিতে হবে এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যাতে পুনর্বাসিত হতে না পারে সে ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো উপাচার্যের কাছে তুলে ধরেন এবং দাবি পূরণের লিখিত আশ্বাস না দিলে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেট সভা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।
আন্দোলকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিনের অব্যাহতি চেয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে তাদের বিষয়ে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আমি তাদের বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয় একটা নিয়মে চলে। সিন্ডিকেটে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। নিয়ম অনুযায়ী যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার চেষ্টা করা হবে।
আরটিভি/এমকে-টি