• ঢাকা রোববার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১
logo
পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম ১৫ অক্টোবর
যে কারণে দেশ ছেড়েছিলেন আজহারী
দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। জানা গেছে, ভারত সরকারের অদৃশ্য চাপে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আজহারীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। বুধবার (২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজহারী নিজেই তার দেশে ফেরার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, সালামাতে প্রিয় মাতৃভূমিতে এসে পৌঁছালাম। পরম করুণাময় এই প্রত্যাবর্তনকে বরকতময় করুন। দোয়ার নিবেদন।’ এর আগে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ঘোষণা দেন মিজানুর রহমান আজহারী। সে সময় এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে এখানেই এ বছরের তাফসির প্রোগামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই, মার্চ পর্যন্ত আমার বাকি প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হলো। রিসার্চের কাজে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে আবারও দেখা হবে ও কথা হবে ইনশাআল্লাহ। তবে তার দেশ ছাড়ার প্রসঙ্গ নিয়ে একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আজহারীর এক মাহফিলে ১২ ভারতীয় নাগরিকের ধর্মান্তরের একটি ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ভারত সরকারের অদৃশ্য চাপেই আজহারীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। ভক্তরা জানিয়েছেন, স্পষ্টভাষী এবং সাহসী একজন বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। তার মাহফিলগুলোতে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি কাউকে পরোয়া করতেন না। তা ছাড়া তার বিভিন্ন মাহফিলে এসে অসংখ্য বিধর্মী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতেন। মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী শুধু তৎকালীন সরকারের জন্যই আতঙ্কের কারণ ছিল না, অসংখ্য ভণ্ড পীর-মুরিদদেরও চক্ষুশূল ছিলেন। তারাও বিভিন্নভাবে তাকে ওয়াজের ময়দান থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করেছিল সে সময়। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর আলোচনা শুনতেন। এমনকি বাংলাদেশে এসে অনেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। যে কারণে আন্তর্জাতিক চাপের মুখেই তাকে দেশ ছাড়া করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে জয়পুরহাটে ও লক্ষ্মীপুর মাওলানা আজহারীর দুই মাহফিল ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। ভারত থেকে ১২ সদস্যের একটি হিন্দু পরিবার আজহারীর লক্ষ্মীপুরের মাহফিলে এসে ধর্মান্তরিত হন। ওই সময় পুলিশ ১২ জনকেই আটক করে এবং তাদেরকে ভারতে ফেরত পাঠায়। এরপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা আজহারীকে জামাতসংশ্লিষ্ট বলে ট্যাগ দেন। আরটিভি/এসএপি-টি
দেশে ফিরলেন মিজানুর রহমান আজহারী
শুভ মহালয়া আজ
ডেঙ্গু ও সব ভাইরাস থেকে বাঁচার দোয়া
জুমার দিন যে দোয়া পাঠে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়
ইমাম ভুল করলে মুসল্লিদের করণীয়
মসজিদের ইমাম সাহেব জামাতে নামাজ পড়াতে গিয়ে মাঝে মাঝে ভুল করে থাকেন। যেমন চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে দ্বিতীয় রাকাতে না বসে দাঁড়িয়ে যাওয়া বা চার রাকাত শেষ হওয়ার পরও দাঁড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি।  ইমাম সাহেব এমন ভুল করলে করণীয় নামাজ পড়াতে গিয়ে যদি ইমাম কোনো ভুল করে ফেলেন তাহলে মুক্তাদি জোরে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে ভুল ধরিয়ে দিতে দেবেন। মুক্তাদি হলো যিনি ইমামের পেছনে নামাজ পড়ছেন। সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, একদিন আল্লাহর রাসুল (সা.) আমর ইবনে আওফ গোত্রের একটি বিবাদ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সেখানে যান। রাসুলের (সা.) অনুপস্থিতিতে আসরের নামাজের সময় হয়ে গেলে, মুয়াজ্জিন আবু বকরকে (রা.) নামাজ পড়াতে অনুরোধ করলেন। আবু বকর (রা.) নামাজ পড়ানো শুরু করার পর নবিজি উপস্থিত হয়ে নামাজে শরিক হলে সাহাবিরা হাতের ওপর হাত মেরে আওয়াজ করে তাকে সতর্ক করার চেষ্টা করলেন যেন তিনি নবিজিকে ইমামের দায়িত্ব দিয়ে পিছিয়ে আসেন। নামাজ শেষে নবিজি (সা.) বললেন, আমি তোমাদের হাতে আওয়াজ করতে দেখলাম। কারণ কী? নামাজে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে। সুবহানাল্লাহ বললে তার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হবে। হাতে আওয়াজ করা তো নারীদের জন্য। (সহিহ বুখারি: ১২০১) সুতরাং হাদিসটি থেকে বোঝা যায় যে, নামাজের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে পুরুষদের উচিত হলো ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে ইমামকে সতর্ক করা। তবে নারীরা যদি জামাতে উপস্থিত থাকেন এবং ইমামের কোনো ভুল ধরিয়ে দিতে চান, তাহলে তারা ‘সুবহানাল্লাহ’ না বলে বাম হাতের পিঠে ডান হাত মেরে আওয়াজ করে ইমামকে সতর্ক করবেন। সাধারণত আমাদের দেশে ইমামের ভুল হলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে ইমামকে সতর্ক করা বা ভুল ধরিয়ে দেওয়ার প্রচলন রয়েছেন। ‘আল্লাহু আকবার’ বললেও নামাজের সমস্যা হবে না। তবে সুন্নত হলো ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা।  একটি বর্ণনায় এসেছে, রাসুল (সা.) একদিন চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে দ্বিতীয় রাকাতে না বসে দাঁড়িয়ে যান। তখন সাহাবায়ে কেরাম ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে ভুল ধরিয়ে দেন। (সুনান নাসাঈ: ১১৭৮)
মিশরে খুলে দেওয়া হলো সাঈদা জয়নব (রা.) মসজিদ ও মাজার
মিশরের আদিম রাজধানী ফুসতাত ও বর্তমানে ইসলামিক কায়রোর ব্যস্ততম একটি এলাকা ইল-সাইদা জায়নব।‌  বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কন্যা ফাতেমা তুজ-জোহরা (রা.) ও হযরত আলী-ইবনে-আবু তালিরের (রা.) কন্যা সাইদা জয়নাব বিনতে আলীর (রা.)র নামানুসারেই এলাকাটির নাম। এখানেই রয়েছে মিশর ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহত্তম একটি মসজিদ। যা, হযরত  হাসান ও হোসেনের (রা.) বোন সাঈদা জয়নাব (রা.) কবরের উপর নির্মিত।  ইতিহাসবিদরা মনে করেন, সাঈদা জয়নাবকে (রা.) কারবালার যুদ্ধের কয়েক মাস পর মিশরে নির্বাসিত করা হয়েছিল।  কারবালা থেকে নির্বাসিত হয়ে সাঈদা জয়নাব (রা.) মিশরে পৌঁছার পর তৎকালীন মিশরের গভর্নরের নেতৃত্বে মিশরীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগত জানান। এসময় হযরত সাঈদা জয়নব (রা.) মিশরবাসীর জন্য দোয়া করে বলেন,  "يا اهل مصر اعنتمونا أعانكم الله" السيدة زينب رضى الله عنها   ‘হে মিশরবাসী, আপনারা আমাকে সমর্থন করেছেন, আল্লাহ আপনাদের সমর্থন করুন। আপনারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন, আল্লাহ আপনাদের আশ্রয় দিন। আপনারা আমাকে সাহায্য করেছেন, আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করুন, সমস্ত অসুবিধা থেকে মুক্তি এবং সমস্ত চিন্তা থেকে মুক্তির পথ তৈরি করে দিন।’  হযরত সাঈদা জয়নব (রা.) মিশরে নয় মাস স্থায়ী ভাবে মিশরে বসবাস করার পর ইহজগত ত্যাগ করলে তাকে এই স্থানে সমাহিত করা হয়। সাঈদা জয়নাবের কবরের উপর বিশাল  মসজিদটি কখন নির্মিত হয়েছিল তার কোন সঠিক নথি না থাকলেও ১৫৪৭  সালে মসজিদটি অটোম্যান শাসনামলে মোহাম্মদ আলী পাশা প্রথম সংস্কার করেন।  ১৭৬৮ সালে আবদুল রহমান কতৃক‌  পূর্ণ সংস্কারের পর ১৯৪০ সালে পুরাতন মসজিদটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে বর্তমান মসজিদ নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই, মসজিদটি ইসলামী ইতিহাসের নিদর্শন হিসাবে নিবন্ধিত করা হয় । মসজিদটির কেবলা প্রাচীরের সমান্তরালে সাতটি করিডোর নিয়ে গঠিত একটি বর্গাকার থালা ও একটি গম্বুজ দ্বারা আবৃত। কেবলা প্রাচীরের বিপরীত দিকে রয়েছে সাইয়্যিদা জয়নাবের (রঃ)র সমাধি।   করোনা মহামারীতে মসজিদটি বন্ধ থাকার পর আবারো ব্যাপক সংস্কারে করে মসজিদ ও মাজারটি খুলে দিয়েছেন বর্তমান মিশর সরকার। গত সপ্তাহে মসজিদটি আসরে নামাজ আদায় করতে গিয়ে দেখা যায়, বিপুল পরিমাণ মুসুল্লি নামাজের পর মাজার জিয়ারত করছেন। আরটিভি/ ডিসিএনই-টি
হজ ও ওমরাহ পালনে সৌদির নতুন নির্দেশনা
২০২৫ সালে যারা পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের পরিকল্পনা করছেন নিয়ে তাদের নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব সরকার।  খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যেসব মানুষের বয়স ৬৫ বছর বা তারও বেশি, কঠিন রোগে আক্রান্ত— যেমন হৃদরোগ, কিডনি, শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা, ডায়বেটিস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, ক্যানসার, খুবই অসুস্থ, গর্ভবতী এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশু, তাদের এ বছর হজ ও ওমরাহ পালনের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া উচিত। কেননা হজ পালনে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হবে, তাই তাদের সেই ধরনের শারীরিক সক্ষমতা থাকতে হবে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা স্বাস্থ্যগত এবং শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন, কেবল তারাই যেন হজে আসেন। কারণ আগামী বছরও হজ হবে গ্রীষ্মকালের প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে। চলতি বছর হজ করতে গিয়ে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই মারা গেছেন অতিরিক্ত গরমের মধ্যে হেঁটে। হজের সময় সৌদিতে অস্বাভাবিকরকম তাপমাত্রা ছিল। যেসব মানুষ অনুমতি ছাড়া হজ করতে গিয়েছিলেন তারা এই দীর্ঘ পথ হাঁটার পর বিশ্রাম করার জন্য কোনো জায়গা পাননি। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পানিও পাননি অনেক হজযাত্রী। এতে করে খোলা ময়দানে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন অনেকে।  পরিস্থিতি তখন এমনও হয়েছিল যে, অনেকের মরদেহ সড়কে পড়ে ছিল। কিন্তু মানুষ ও যানবাহনের চাপের কারণে স্বাস্থ্যকর্মীরা দীর্ঘসময় পর্যন্ত সেগুলো উদ্ধার করতে পারেননি। আরটিভি/এফএ-টি
আজ মধু পূর্ণিমা
আজ মধু পূর্ণিমা। এটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যরা গভীর ভক্তি ও ঐতিহ্যবাহী উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তাদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসবটি উদযাপন করবেন। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও তিন পার্বত্য জেলায় সেপ্টেম্বরের পূর্ণিমার দিনটিকে মধু পূর্ণিমা উৎসব বা মধু-অর্ঘ উৎসব হিসেবে পালন করবেন।  বৌদ্ধ পুরান অনুযায়ী, গৌতম বুদ্ধ পারিলেয়া বনে বর্ষাযাপন কালে একটি হাতি প্রতিদিন ফল সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করত। এ সেবা করা দেখে বনের একটি বানরেরও বুদ্ধকে পূজা করার ইচ্ছা জাগে। ভাদ্র পূর্ণিমাতে সে একটি মৌচাক সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করে। মৌচাকে মৌমাছির ছানা ও ডিম থাকায় বুদ্ধ প্রথমে মধু পান করেননি। বানর তা বুঝতে পেরে মৌচাকটি নিয়ে ছানা ও ডিম পরিষ্কার করে পুনরায় বুদ্ধকে দান করলে এবার বুদ্ধ মধু পান করেন। মধু পান করতে দেখে বানর খুশিতে, আনন্দে আত্মহারা হয়ে বৃক্ষ শাখা থেকে বৃক্ষশাখায় লাফাতে লাগল। হঠাৎ অসাবধানতাবশত বৃক্ষের শাখা ভেঙে বানর মাটিতে পড়ে গাছের গোড়ায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়। পারিলেয়া বনে হাতির কাছে বুদ্ধের সেবাপ্রাপ্তি ও বানরের মধুদানের কারণে এ দিনটি বৌদ্ধদের কাছে স্মরণীয় ও আনন্দ-উৎসবমুখর পুণ্যময় একটি দিন। এ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভোরে ত্রিপিটক পাঠ, সমবেত বুদ্ধ বন্দনা, জাতীয়, ধর্মীয় ও স্ব স্ব সংগঠনের পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল ও শীল গ্রহণ, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান, শীলধারীদের মধ্যাহ্নভোজ গ্রহণ, মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য আলোচনা, আলোক সজ্জা, বুদ্ধ কীর্তন, সন্ধ্যাকালীন প্রদীপ পূজা, দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং জীব জগতের মঙ্গল কামনায় সমবেত প্রার্থনা। আরটিভি/এফআই
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ
আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি। মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যুর পুণ্য স্মৃতিময় দিন। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে অর্থাৎ, ১২ রবিউল আউয়াল তিনি আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩ বছর বয়সে এই দিনেই ইন্তেকাল করেন তিনি। তাই দিনটি অত্যন্ত পবিত্র, মহিমান্বিত ও অনন্য। যুগে যুগে মানুষকে সঠিকভাবে পরিচালিত করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা নকি-রাসুল পাঠিয়েছেন। আমাদের প্রিয়নবি রাসুল (সা.) তাদের মধ্যে শেষ ও শ্রেষ্ঠ। সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য তিনি শান্তি ও কল্যাণের বাণী নিয়ে এসেছিলেন। মানবজাতির কল্যাণেই উৎসর্গীকৃত ছিল তার বর্ণাঢ্য ও কর্মময় জীবন। মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন ন্যায়নিষ্ঠ, সৎ, সত্যবাদী এক মহাপুরুষ। মানবের মুক্তি ও কল্যাণ কামনা করেছেন তিনি এবং সে লক্ষ্যেই ব্যয় করেছেন জীবনের সবটুকু সময়। নবুয়ত প্রাপ্তির আগেই তার সততা ও সত্যবাদিতা স্বীকৃতি পায়। আলামিন উপাধিতে ডাকা হতো তাকে। যে সময় রাসুলের (সা) আবির্ভাব হয় তখন আরব ছিল কুসংস্কারের অন্ধকারে আচ্ছন্ন একটি পশ্চাৎপদ জনপদ। সামাজিক অনাচার আর অবিচার ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। তখন মানুষের জীবনে শান্তি ছিল না। ছিল না ন্যূনতম স্বস্তি। দাস প্রথা আর গোত্র বিবাদ ছিল আরব জাতির অগ্রগতির প্রধান অন্তরায়। আর ছিল নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা। ছিল না শিক্ষার আলো। হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই ঘোর অন্ধকার থেকে মানব জাতিকে কল্যাণের পথে আনেন। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষে  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালন করা হবে। পাশাপাশি দেশজুড়ে নানা কর্মসূচিও পালিত হবে। আরটিভি/ এফএ
শিশুদের প্রতি নবিজির (সা.) ভালোবাসা
প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময়ে পৃথিবীতে আগমন করেন। তার আগমনে তৎকালীন সমাজ থেকে দূর হয়েছিল সকল পাপাচার, অন্ধকার এবং কুসংস্কার। রাসুল (সা.) শিশু-কিশোরদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। যেকোনো শিশুকে তিনি নিজের সন্তানের ন্যায় আদর-সোহাগ করতেন। শিশুদের কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন না করে তাদের সঙ্গে সব সময় ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। শিশুদের প্রতি নবিজির (সা.) ভালোবাসা রাসুল (সা.) যখন নামাজে সেজদা যেতেন নাতি হাসান-হোসেন তার পিঠে চড়ে বসতেন। যতক্ষণ তারা পিঠ থেকে না নামতে ততক্ষণ সেজদা থেকে উঠতেন না তিনি। এমনকি মেয়ে ফাতেমার ঘরে (রাসুল সা.) গেলে হাসান-হোসেন নবিজির পীঠে চড়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলতে আবদার করলে সানন্দে তাদের পীঠে চড়িয়ে আবদার রক্ষা করতেন। এক যুদ্ধে কয়েকজন শিশু মারা যায়। তারা ছিল শত্রুপক্ষের। এ খবর এসে পৌঁছলে রাসুল (সা.)-এর প্রাণ কেঁদে ওঠে। তিনি খুবই আফসোস এবং দুঃখ করতে থাকেন। এ অবস্থা দেখে একজন বললেন, ‘হে আল্লাহর নবি। আপনি যাদের জন্য এত মর্মবেদনা ভোগ করছেন তারা অমুসলিমদের সন্তান।  রাসুল (সা.) তার কথায় অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, ‘এখন থেকে সাবধান হও। কখনও শিশুদের হত্যা করবে না। প্রতিটি শিশুই নিষ্পাপ ফুলের মতো।’ একদিন নবি (সা.) নাতি হাসানকে চুমু খাচ্ছিলেন তা দেখে আকবা বিন হারেস নামে এক সাহাবি নবিজিকে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনি শিশুদের দেখে এত আনন্দিত হন এবং আদর স্নেহ করেন তারাও আপনার আদরে আপ্লুত হয়। আমার তো অনেক সন্তান কিন্তু তাদের আপনার মতো স্নেহ করতে পারি না। তখন নবিজি বলেন, তোমার হৃদয়ে স্নেহ মমতা না থাকলে আমার কী করার আছে?  একদিন এক শিশুকে তিনি জড়িয়ে ধরে বললেন, এই শিশুরাই তো আল্লাহর বাগানের ফুল। তিনি কখনও শিশুকে বিকৃত নামে ডাকতেন না। তিনি তাদের সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখতেন এবং মিষ্টি স্বরে সে নাম ধরে ডাকতেন। নবিজি শিশুদের যেমন আদর করতেন, তেমনি আবার তাদের সঙ্গে রসিকতাও করতেন। একবার সাহাবি আনাস-এর ছোট এক ভাইয়ের একটি পাখি মারা যায়। এতে তার মন খারাপ হয়। নবিজি তখন তাকে আদর করে কাছে ডেকে নিলেন। তিনি বললেন ‘ইয়া আবা উমায়েরু/ মা কা আলান নুগায়রু? হে আবু উমায়ের, তোমার পাখির ছানাটির কী হল? তখন নবিজির মুখে ছন্দ ও সুর শুনে হেসে ফেলল। নবির কাছে শিশুদের কোনো জাত-পাত মুসলিম-অমুসলিম কোনো বিভেদ ছিল না। সব শিশুর প্রতি তার সমান স্নেহবোধ ছিল। নবিজি বলেন ‘যে শিশুদের স্নেহ করে না আর বড়দের সম্মান করে না সে আমার উম্মত নয়’। তিনি বলেন ‘যে শিশুদের প্রতি দয়া করে না, তাকেও দয়া করা হয় না।’ দশ বছরের বালক জায়েদ ইবনুল হারেসাকে পালকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করে নিজ পরিবারভুক্ত করে রাখেন নবি (সা.)। একদা যায়েদকে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে লাকড়ি করার কুড়াল জাতীয় কিছু আনার জন্য পাঠিয়ে তিনি অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পার হলে যায়েদ ফিরছে না দেখে তিনি নিজেই সেখানে গিয়ে দেখেন যায়েদ সমবয়সীদের খেলা দেখছে আর মজা করছে। তিনি মুচকি হেসে যায়েদকে খেলা দেখতে সম্মতি দিয়ে নিজেই কুড়াল নিয়ে আসেন। পিতা যখন জানতে পারেন যায়েদ মক্কায় নবিজির পরিবারভুক্ত হয়ে আছেন, তখন তিনি মক্কা এসে তাকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে আসেন। নবিজি তার পিতার আবদার শুনে বলেন, আমার অধীনে আসার পরই যায়েদকে মুক্ত করে পালকপুত্র হিসেবে পরিবারভুক্ত করেছি। সে যদি আপনার সঙ্গে স্বেচ্ছায় চলে যেতে চায় আমার কোনো আপত্তি নেই। এ কথা শোনার পর যায়েদ কান্না শুরু করে বাবাকে বলে আব্বু আপনি চলে যান। মাকে গিয়ে আমার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলবেন আমি ভালো আছি। জন্মদাতা হিসেবে আমাকে নিয়ে যাওয়ার অধিকার আছে কিন্তু আমি নবিজির পরিবারে যে স্নেহমমতায় আছি তা ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছে না।  মদিনায় এক ঈদের দিন নবি দেখেন পথে একটি শিশু কাঁদছে। কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন সে পিতৃহীন বালক। সংসারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। তাই তার মা তাকে নতুন কাপড় দিতে পারছে না অথচ তার সমবয়সীরা রঙবেরঙের জামা-কাপড়ে সজ্জিত হয়ে ঈদগাহে যাচ্ছে। এজন্য মন খারাপ করে কান্না করছে। পরে নবিজি (সা.) তার মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে ঈদগাহে যাওয়া বাদ দিয়ে ঘরে ফিরে আয়েশাকে ডেকে বলেন, এ এতিম বালককে তোমার সন্তান হিসেবে গ্রহণ কর এবং নতুন জামাকাপড় পরিয়ে দাও। আমি তাকে নিয়ে ঈদগাহে যাব। সে যেন মনে না করে পিতা না থাকায় ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আরটিভি/ এফএ
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য
‘ঈদ’ শব্দটি আরবি। এর আভিধানিক অর্থ খুশি হওয়া, ফিরে আসা এবং আনন্দ উদযাপন করা ইত্যাদি। আর ‘মিলাদ’ শব্দের শাব্দিক অর্থ জন্মতারিখ, জন্মদিন, জন্মকাল ইত্যাদি। তাই ‘মিলাদুন্নবী’ (সা.) বলতে মূলত রাসুল (সা.) আগমনকে বোঝায়। আর ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ বলতে রাসুলের (সা.) আগমন উপলক্ষে আনন্দ উদযাপন করাকে বোঝায়। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবে  ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময়ে প্রিয় নবী (সা.) এই পৃথিবীতে শুভাগমন করেছেন। তার এই আগমনে সবাই আনন্দিত হয়েছিল। কেননা তার আগমনে সমাজ থেকে দূর হয়েছিল সব কুসংস্কার। হজরত ইরবাদ ইবনে সারিয়াহ (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন, তখন থেকে আমি আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবীকুলের সর্বশেষ নবী, যখন আদম (আ.) মাটির সঙ্গে মিশ্রিত ছিলেন। আমি তোমাদের আরও জানাচ্ছি যে, আমি হাবিব আমার পিতা নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়ার ফসল এবং নবী হজরত ঈসা (আ.)-এর সুসংবাদ, আর আমার মাতা (আমিনার) স্বপ্ন। নবীদের মাতাগণ এভাবেই স্বপ্ন দেখতেন। রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতা তাকে প্রসবের সময় এমন এক নূর প্রকাশ পেতে দেখলেন যার আলোয় সিরিয়ার প্রাসাদগুলো দেখা যাচ্ছিল। (ইবনু হিব্বান আস সহিহ-৬৪০৪, আল মুসতাদরাক-৩৫৬৬, তাবারানি)। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রসুল! আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তার দয়াপ্রাপ্ত হয়ে আনন্দ প্রকাশ কর। এটি উত্তম সে সমুদয় থেকে যা তারা সঞ্চয় করেছে।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত ৫৮)।  হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মতে, এখানে ফজল ও রহমত দ্বারা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  শুভাগমন উদ্দেশ্য। রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে মিলাদুন্নবী পালন করতেন। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সোমবার দিন রোজা পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি উত্তরে বললেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (মুসলিম -১১৬২)