• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
যে দোয়া পড়লে নিরাপদে থাকবেন রাস্তাঘাটে
জুলুমের শাস্তি
জুলুম শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো নির্যাতন, অবিচার, নিষ্ঠুর ও অন্যায় শোষণ ইত্যাদি। সাধারণ অর্থে কাউকে অন্যায়ভাবে শারীরিক, মানসিক বা আর্থিক অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে অবিচার বা নির্যাতন করাকে জুলুম বলে। কারও হক নষ্ট করাকেও জুলুম বলা হয়ে থাকে। তবে ব্যাপক অর্থে জুলুম মানে হলো কোনো জিনিসকে এমন স্থানে রাখা যেখানে তা থাকার কথা ছিল না। জুলুমের শাস্তি জুলুমের শাস্তি মানুষ দুনিয়াতেই পেয়ে যায়। যেমন: রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ জালিম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীদের দুনিয়াতেই শাস্তি দেন, আখেরাতের শাস্তি তো রয়েছেই। (সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিজি) পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, অচিরেই জালিমরা জানতে পারবে, তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল কোথায় হবে। (সুরা শুআরা, আয়াত: ২২৭) মহান আল্লাহ বলেন, তুমি কখনও মনে করো না যে, জালিমরা যা করছে সে বিষয়ে মহান আল্লাহ উদাসীন। আসলে তিনি সেদিন পর্যন্ত তাদের অবকাশ দেন, যেদিন সব চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। ভীত-বিহ্বল চিত্তে আকাশের দিকে চেয়ে তারা ছুটাছুটি করবে, আতঙ্কে তাদের নিজেদের দিকেও ফিরবে না এবং তাদের অন্তর হবে (ভয়ানক) উদাস। (সুরা ইবরাহিম, আয়াথ: ৪২, ৪৩)   আল্লাহ আরও বলেন, আমি জালিমদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি আগুন, যার বেষ্টনী তাদের পরিবেষ্টন করে রাখবে, তারা পানীয় চাইলে তাদের দেওয়া হবে গলিত ধাতুর মতো পানীয়, যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে, এটি কত নিকৃষ্ট পানীয়, জাহান্নাম কতই না নিকৃষ্ট আশ্রয়। (সুরা কাহফ, আয়াত: ২৯)   হাদিসে কুদসিতে নবীজি ঘোষণা করেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার বান্দারা! আমি আমার নিজের জন্যে জুলুম করা হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও জুলুম হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা একজন অন্যজনের ওপর জুলুম করো না।’ (মুসলিম, তিরমিজি) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই যারা মানুষকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তাদের শাস্তি প্রদান করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬১৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘দুটি পাপের শাস্তি আল্লাহ তাআলা আখিরাতের পাশাপাশি দুনিয়ায়ও দিয়ে থাকেন। তা হলো, জুলুম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১১) হাদিসে এসেছে, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না। তা হলো- ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া এবং মজলুমের দোয়া। আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া মেঘমালার ওপরে তুলে নেন এবং তার জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেন। মহান রব বলেন, আমার সম্মানের শপথ, কিছুটা বিলম্ব হলেও আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৯৮) রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা মজলুমের দোয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকো। কেননা মহান আল্লাহ ও তার দোয়ার মাঝে কোনো পর্দা থাকে না।’  (বুখারি, হাদিস : ১৪৯৬)
ইমাম হোসাইন (রা.)-এর মাথা মোবারক, কারবালা‌ থেকে কায়রো
পবিত্র আশুরা / রাজধানীতে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল শুরু
আজ পবিত্র আশুরা
সেদিন কী ঘটেছিল কারবালা প্রান্তরে
আশুরার রোজায় মাফ হবে এক বছরের গোনাহ
আশুরা শব্দটি আরবি। এর অর্থ হচ্ছে দশ। মূলত আরবি হিজরির প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখকে পবিত্র আশুরা বলা হয়। এটি একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দিন। ইসলামে এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আশুরার রোজা রাখলে বিগত এক বছরের গোনাহ আল্লাহ মাফ করে দেবেন। হাদিসে এসেছে- হজরত কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী, আল্লাহ তাআলা এর অছিলায় বিগত জীবনের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেবেন। (তিরমিজি ও মুসনাদে আহমাদ) আশুরা উপলক্ষে দুটি রোজা রাখা সুন্নত। রোজা রাখার পদ্ধতি হল- মহররমের ৯-১০ কিংবা ১০-১১ তারিখ রোজা রাখা। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখ এবং তাতে ইহুদিদের বিরোধিতা কর, আশুরার আগে একদিন বা পরে একদিন রোজা রাখো। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৫) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) হিজরতের পর মদিনার ইহুদিদের আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বলল, এটি একটি উত্তম দিন যেদিন আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের মুক্তি দিয়েছেন। তাই মুসা (আ.) এ দিন রোজা রাখতেন। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, আমি তোমাদের চেয়েও মুসার (আ.) অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিন রোজা রাখেন, অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন। (সহিহ মুসলিম: ২৫৪৮) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমজান মাসের রোজা ও আশুরার দিনের রোজার মতো অন্য কোনো রোজাকে এত বেশি গুরুত্ব দিতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি: ২০০৬) উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) কখনো চারটি আমল পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো, আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা, ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ। (সুনানে নাসাঈ: ২৪১৬)
আশুরার রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত
আশুরা শব্দের অর্থ হচ্ছে দশ। আরবি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখকে পবিত্র আশুরা বলা হয়। এটি একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দিন। ইসলামে এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আসমান-জমিন সৃষ্টিসহ পৃথিবীতে অনেক স্মরণীয় ও যুগান্তকারী ঘটনা এ মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ পবিত্র আশুরার দিন সংঘটিত হয়েছিল। আশুরার রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) হিজরতের পর মদিনার ইহুদিদের আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বলল, এটি একটি উত্তম দিন যেদিন আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের মুক্তি দিয়েছেন। তাই মুসা (আ.) এ দিন রোজা রাখতেন। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, আমি তোমাদের চেয়েও মুসার (আ.) অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিন রোজা রাখেন, অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন। (সহিহ মুসলিম: ২৫৪৮) উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) কখনো চারটি আমল পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো, আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা, ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ। (সুনানে নাসাঈ: ২৪১৬) হজরত কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী, আল্লাহ তাআলা এর অছিলায় বিগত জীবনের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেবেন। (তিরমিজি ও মুসনাদে আহমাদ) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমজান মাসের রোজা ও আশুরার দিনের রোজার মতো অন্য কোনো রোজাকে এত বেশি গুরুত্ব দিতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি: ২০০৬) আশুরা উপলক্ষে দুটি রোজা রাখা সুন্নত। রোজা রাখার পদ্ধতি হল- মহররমের ৯-১০ কিংবা ১০-১১ তারিখ রোজা রাখা। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখ এবং তাতে ইহুদিদের বিরোধিতা কর, আশুরার আগে একদিন বা পরে একদিন রোজা রাখো। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৫)
 আশুরার দিন যেসব আমল করতেন নবিজি (সা.)
আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য বিশেষ কিছু সময় ও মৌসুম দিয়েছেন যে সময়ে বান্দা অধিক ইবাদত ও ভালো কাজ করে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। মুমিনের জন্য এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। অতীতে ঘটে যাওয়া ছোট-বড় গুনাহসমূহ মার্জনা করানোর সুবর্ণ সুযোগ বটে। এই বরকতময় সময়ের মধ্য থেকে একটি হচ্ছে, ‘মহররম ও আশুরা’। আল্লাহ তাআলা বিশেষ মর্যাদার কারণেই এ মাসের নামকরণ করেছেন ‘মহররম’। ঐতিহাসিক আরবরা এ মাসকে ‘সফরুল আউয়াল’ তথা প্রথম সফর নামকরণ করে নিজেদের ইচ্ছে মতো যুদ্ধ-বিগ্রহসহ বিভিন্ন কাজকে হালাল ও হারাম করতো। অবশেষে আল্লাহ তাআলা এ অবস্থাকে নিষিদ্ধ করে এ মাসের ইসলামি নামকরণ করেন ‘শাহরুল্লাহিল মুহাররাম’ তথা মহররম আল্লাহর মাস। মহররমে রয়েছে আশুরার বিশেষ আমল। কী সেই আমল? মহররমের ১০ তারিখ পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ আশুরা। নিঃসন্দেহে আশুরার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদার দিন। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় হিজরত এবং হক তথা উত্তম প্রতিষ্ঠার জন্য এক সুমহান দিন আশুরা। এ কারণেই মুসলিম উম্মাহ এ দিনটিকে বিশেষ আমল তথা রোজা পালনের দিন হিসেবে শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে। নিম্নে আমরা এ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করব— আশুরার রোজা: ত্যাগ ও আদর্শের বার্তায় স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাস মহররম। যা প্রত্যেক মুমিন মুসলমান হৃদয় দিয়ে অনুভব করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বকরতপূর্ণ সিয়াম সাধনায় মাসটি আলোকিত হয়েছে। হাদিসে এসেছে- ১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ রোজা হল আল্লাহর মাস মহররমের রোজা।’ হাদিসে বর্ণিত মহররমের রোজাটি মূলত ১০ মহররম তথা আশুরার রোজা। এদিন রোজা রাখা মহররমের মর্যাদা ও বরকতের উৎসও বটে। ২. হজরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় আশুরার রোজা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন- আশুরার রোজা বিগত বছরের পাপসমূহ মোচন করে দেয়।’ সব নবি-রাসুলের যুগেই আশুরার রোজা আমল ছিল। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন। হিজরতের পর মদিনায় এসেও নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখতে পেলেন, ইহুদিরা এই দিনে রোজা রাখছে। তিনি রোজা রাখার কারণ জানলেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে বললেন, ‘মুসা আলাইহিস সালামের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইহুদিদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ ও অগ্রগণ্য। সুতরাং তোমরাও আশুরায় রোজা রাখো। তবে তাদের অনুকরণ বা সাদৃশ্য যেন না হয় সে জন্য তিনি আগের কিংবা পরের ১ দিন রোজা পালনের কথাও বলেছেন। দ্বিতীয় হিজরির রমজান মাসের আগ পর্যন্ত আশুরার রোজা ছিল বাধ্যতামূলক। কারণ দ্বিতীয় হিজরিতে রমজানজুড়ে রোজা পালন করা ফরজ সাব্যস্ত হয়। রমাজনের রোজা ফরজ হওয়ার পর আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়। তবে রমজানের রোজা রাখার পর আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। আশুরায় ২টি রোজা রাখা সুন্নাত: আশুরা উপলক্ষ্যে দুটি রোজা রাখা সুন্নত। রোজা রাখার পদ্ধতি হল- মহররমের ৯-১০ কিংবা ১০-১১ তারিখ রোজা রাখা। এ রোজা রাখলে পুরো এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন বলে আশাবাদী ছিলেন নবিজি। হাদিসে এসেছে- হজরত কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী, আল্লাহ তাআলা এর অছিলায় বিগত জীবনের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেবেন।’ (তিরমিজি ও মুসনাদে আহমাদ) বরকতময় মাস: আরবি মাস হিসেবে প্রথম মাস ‘মহররম’। এই মাসকে আল্লাহ তাআলা বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা যে চার মাসকে বিশেষ সম্মান দিয়েছেন তার মধ্যে মহররম অন্যতম। আল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে আল্লাহর কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুজে) মাসের সংখ্যা ১২টি, সেই দিন থেকে, যেদিন আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৩৬) আবু বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ... বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। জিলকদ, জিলহজ ও মুহররম। তিনটি মাস পরস্পর রয়েছে। আর একটি মাস হলো রজব, যা জুমাদাল আখিরা ও শাবান মাসের মাঝে অবস্থিত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১৯৭) অন্য হাদিসে এসেছে, (রমজানের পর) শ্রেষ্ঠ মাস হচ্ছে আল্লাহর মাস, যাকে তোমরা মহররম বলে থাকো। (সুনানে কুবরা, হাদিস : ৪২১৬) এ মাসের রোজা: রোজার জন্য রমজানের পর যে মাসকে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মাস বলা হয়েছে তা হচ্ছে মহররম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে, আল্লাহর মাস মহররমের রোজা...। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬৪৫) ইবনে রজব (রহ.) বলেন, আমাদের পূর্বসূরিরা তিন দশককে বেশি গুরুত্ব দিতেন—রমজানের শেষ ১০ দিন, জিলহজের প্রথম ১০ দিন এবং মহররমের প্রথম ১০ দিন। (লাতাইফুল মাআরিফ) আশুরার তাৎপর্য: এ মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। এ দিনের বিশেষ মর্যাদা ও ফজিলত রয়েছে। ইতিহাসের বহু স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছে এই দিনে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা রাখছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে রোজা রাখো কেন?) তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মুসা (আ.) রোজা রাখেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, আমি তোমাদের অপেক্ষা মুসার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এ দিনে রোজা রাখেন এবং রোজা রাখার নির্দেশ দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০০৪) আশুরার ফজিলত: এই বিশেষ দিনের কিছু ফজিলত রয়েছে। বিভিন্ন হাদিসের মাঝে তা বর্ণিত হয়েছে। আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহর নিকট আমি আশা পোষণ করি যে, তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ) ক্ষমা করে দেবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৫২) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এ দিন ব্যতীত রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো মাসকে এ মাসের (রমজান) তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করে রোজা রেখেছেন আমার জানা নেই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৫২) আশুরার রোজার হুকুম: রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আশুরার রোজা ওয়াজিব না মুস্তাহাব ছিল এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের দ্বিমত রয়েছে। তবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আশুরার রোজা ওয়াজিব ছিল। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর এ দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, (জাহেলি সমাজে) লোকেরা রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আশুরার দিন রোজা রাখত। এ দিন কাবায় গিলাফ জড়ানো হতো। এরপর যখন রমজানের রোজা ফরজ হলো তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, যে এ দিন রোজা রাখতে চায় সে রাখুক। যে না চায় না রাখুক। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫৯২) এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর এ দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। কোন দিন রোজা রাখব: মহানবী (সা.) ১০ মহররমের সঙ্গে ৯ বা ১১ মহররম মিলিয়ে দুটি রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ৯ তারিখে রাখতে পারলে ভালো। কারণ হাদিসে ৯ তারিখের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) যখন আশুরার রোজা রাখছিলেন এবং অন্যদের রোজা রাখতে বলেছিলেন তখন সাহাবারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ দিনকে তো ইহুদি-নাসারারা সম্মান করে? তখন নবীজি এ কথা শুনে বললেন, ইনশাআল্লাহ, আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও রোজা রাখব। বর্ণনাকারী বললেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এমতাবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকাল হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৬) এ জন্য ইবনে আব্বাস (রা.) বলতেন, তোমরা ৯ তারিখ এবং ১০ তারিখ রোজা রাখো এবং ইয়াহুদিদের বিরোধিতা করো। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৫) শিশুরাও এই রোজা রাখত: রুবায়্যি বিনতে মুআব্বিজ (রা.) বলেন, আমরা ওই দিন রোজা রাখতাম এবং আমাদের শিশুদের রোজা রাখাতাম। আমরা তাদের জন্য পশমের খেলনা তৈরি করে দিতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে ওই খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আর এভাবেই ইফতারের সময় হয়ে যেত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৬০) তাওবার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া: তাওবা-ইস্তিগফার যেকোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ আমল। তবে কিছু কিছু সময় এমন রয়েছে, যখন তাওবার পরিবেশ বেশি অনুকূল হয়। বান্দার উচিত সেই প্রত্যাশিত মুহূর্তগুলোর কদর করা। মহররমের এ মাসটি, বিশেষ করে ১০ তারিখ—এমনই এক মোক্ষম সময়। এদিনে তাওবা কবুল হওয়া, নিরাপত্তা এবং অদৃশ্য সাহায্য লাভ করার কথাও রয়েছে। এ জন্য এ সময়ে এমন সব আমলের প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত, যাতে আল্লাহর রহমত বান্দার দিকে আরো বেশি ধাবিত হয়। এক সাহাবি নবীজির কাছে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল! রমজানের পর আপনি কোন মাসে রোজা রাখতে বলেন? নবীজি বললেন, তুমি যদি রমজানের পর রোজা রাখতে চাও তাহলে মহররমে রোজা রাখো। কেননা মহররম হচ্ছে আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন এক দিন আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা (অতীতে) অনেকের তাওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও অনেকের তাওবা কবুল করবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৪১)
দেশে ফিরলেন ৬৯ হাজার ৭৪২ হাজি, মৃত্যু বেড়ে ৬৫
পবিত্র হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৭৪২ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। মারা গেছেন ৬৫ জন। সোমবার (১৫ জুলাই) হজ পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সৌদি থেকে ১৯৬টি ফ্লাইটে এসব হাজি বাংলাদেশে এসেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৯৪টি ফ্লাইটে ৩০ হাজার ৯৬৬ জন, সৌদি এয়ারলাইনসের ৭৪টি ফ্লাইটে ২৫ হাজার ৫১১ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২৮টি ফ্লাইটে ১০ হাজার ৩৪৭ হাজি দেশে ফিরেছেন। চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৫ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫২ এবং মহিলা ১৩ জন। হজ শেষে গত ২০ জুন থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হয়। ওইদিন বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ৪১৭ হাজি নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট অব্যাহত থাকবে। এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। হজে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে পুুরুষ ৩৬ এবং মহিলা ১১ জন। এদিকে, আগামী বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা দিয়েছে সৌদি আরব। বিষয়টি নিশ্চিত করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, নির্ধারিত সংখ্যার মধ্যে কতজন সরকারি ব্যবস্থাপনায় আর কতজন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন তা বাংলাদেশ সরকার পরে নির্ধারণ করে দেবে।  
দেশে ফিরলেন প্রায় ৬৯ হাজার হাজি
পবিত্র হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৯০৭ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। মারা গেছেন ৬৪ জন। রোববার (১৪ জুলাই) হজ পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সৌদি থেকে ১৯০টি ফ্লাইটে এসব হাজি বাংলাদেশে এসেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৯০টি ফ্লাইটে ৩০ হাজার ২২৫ জন, সৌদি এয়ারলাইনসের ৭২টি ফ্লাইটে ২৫ হাজার ৪১৯ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২৮টি ফ্লাইটে ১০ হাজার ৩৪৭ হাজি দেশে ফিরেছেন। চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫১ এবং মহিলা ১৩ জন। হজ শেষে গত ২০ জুন থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হয়। ওইদিন বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ৪১৭ হাজি নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট অব্যাহত থাকবে। এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। হজে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে পুুরুষ ৩৬ এবং মহিলা ১১ জন। এদিকে, আগামী বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা দিয়েছে সৌদি আরব। বিষয়টি নিশ্চিত করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, নির্ধারিত সংখ্যার মধ্যে কতজন সরকারি ব্যবস্থাপনায় আর কতজন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন তা বাংলাদেশ সরকার পরে নির্ধারণ করে দেবে।
শয়তানের বাঁধন ছিঁড়ে মুক্তির উপায় ফজরের নামাজ
ইহজগতে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু শয়তান। সে সর্বদা ফাঁদ পেতে বসে থাকে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য। মানুষকে পাপাচারে লিপ্ত করতে সব সময় ফাঁদ পেতে বসে থাকে সে। আদম সৃষ্টির পর আল্লাহর কাছ থেকে কেয়ামত পর্যন্ত মানুষকে সঠিক পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার এবং ভুল পথে পরিচালিত করার ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছে শয়তান। পরকালের বিনিময়ে দুনিয়াতে এ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছে সে। তাই শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচতে আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছেন। দিয়েছেন সঠিক দিকনির্দেশনা। ঠিক করে দিয়েছেন ইসলামের ৫টি স্তম্ভ, যার মধ্যে অন্যতম নামাজ। এই ইবাদত ছাড়া কিছুতেই সম্ভব না শয়তানকে পরাস্ত করা।   আর শয়তানের বাঁধন ছিঁড়ে দিন শুরুর একমাত্র উপায় ফজর নামাজ। এ ছাড়াও ফজর নামাজের আছে আরও বহু ফজিলত। এই নামাজ আদায় করলে বহু সওয়াব ও পুরস্কারের কথা উল্লেখ হয়েছে হাদিসে। নিম্নে ফজরের নামাজ পড়ার পুরস্কারের কথা আলোচনা করা হলো- রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো...। (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৯) আরেক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ ঘুমিয়ে পড়লে, শয়তান তার ঘাড়ের পেছনে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এই কথা বলে, তোমার সামনে দীর্ঘ রাত অপেক্ষা করছে; অতএব তুমি শুয়ে থাকো। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঁট খুলে যায়। অজু করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। অতঃপর নামাজ আদায় করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার সকাল হয় উত্ফুল্ল চিত্তে ও প্রফুল্ল মনে। না হয়, সে সকালে কলুষ কালিমা ও আলস্য নিয়ে ওঠে।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৪২) আল্লাহর রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৭৩) আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত (নফল) নামাজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল, সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করল।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৭) বুখারি শরীফে বর্ণিত আছে, রাসুল পাক (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও মসজিদে উপস্থিত হতো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭) আরেক হাদিসে বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের ও সূর্যাস্তের আগের নামাজ আদায় করে।’ অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামাজ। (মুসলিম, হাদিস : ১৩২২) বুখারির আরেকটি হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতারা পালাবদল করে করে তোমাদের মাঝে আসেন; একদল দিনে আসে, আরেক দল আসে রাতে। আসর ও ফজরের নামাজে উভয় দল একত্রিত হন। অতঃপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি আসমানে চলে যান। তখন আল্লাহ তাআলা তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এলে? অথচ তিনি তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। জবাবে তারা বলেন, আমরা তাদের নামাজে রেখে এসেছি। আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম, তখনো তারা নামাজরত ছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫)
দেশে ফিরেছেন ৬৮ হাজার হাজি
পবিত্র হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৯৭৪ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। সৌদি থেকে ১৮৪টি ফ্লাইটে হাজিরা দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৮৭, সৌদি এয়ারলাইনস ৬৯টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করে। শনিবার (১৩ জুলাই) হজ পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।  এদিকে, চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫১ এবং মহিলা ১৩ জন। তাদের মধ্যে মক্কায় ৫০ জন, মদিনায় ৫ জন, মিনায় ৭ জন ও জেদ্দায় ২ জন মারা গেছেন। বুলেটিনে বলা হয়, আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট অব্যাহত থাকবে। এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন।  এদিকে, আগামী বছর (২০২৫) বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা দিয়েছে সৌদি আরব। বিষয়টি নিশ্চিত করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, নির্ধারিত সংখ্যার মধ্যে কতজন সরকারি ব্যবস্থাপনায় আর কতজন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন তা বাংলাদেশ সরকার পরে নির্ধারণ করে দেবে।