• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ‘মুহাম্মদ’ নাম
যুক্তরাজ্যে হাসিনা-ঘনিষ্ঠদের বিপুল সম্পদের সন্ধান
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলয়ের মধ্যে থাকা সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ বেশ কয়েকজনের যুক্তরাজ্যে বিপুল সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে তারা ৪০ কোটি পাউন্ডের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা) বেশি পরিমাণ অর্থ আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। আর এই অর্থের পুরোটাই বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।  এর আগে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভার (দ্য গার্ডিয়ানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান) ও বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এ বিষয়ে যৌথ অনুসন্ধান চালায়।  এতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নামে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে সুবিশাল অট্টালিকা (ম্যানশন) পর্যন্ত রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও দেশটির বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (অফশোর কোম্পানি) নামে এই সম্পত্তির বেশিরভাগ কেনা হয়েছে। অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা ওই সম্পত্তির অনেকগুলোর মালিকানায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরও অনেক সম্পত্তির মালিকানা রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালমানের পরিবারের সদস্যদের লন্ডনের মেফেয়ার এলাকার গ্রোসভেনর স্কয়ারে সাতটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মালিকানা বা মালিকানায় অংশীদারত্ব রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা। এর মধ্যে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন সালমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান। সেখানে ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ডে কেনা তার একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে।  এ ছাড়া গ্রোসভেনর স্কয়ারে এবং এর কাছাকাছি এই পরিবারের আরেক সদস্য আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের আরও চারটি সম্পত্তি রয়েছে। এর মূল্য ২ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড। অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি কেনা।  এ বিষয়ে শায়ান রহমান ও শাহরিয়ার রহমানের আইনজীবীরা বলেছেন, মানি–লন্ডারিং আইনসহ আর্থিক বিধিবিধান পরিপূর্ণভাবে মেনেই সম্পত্তিগুলো কেনা হয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বর্তমানে দেশে কারাবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ছাড়া তার ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের ৩০০টির বেশি সম্পদ রয়েছে। এগুলোর মূল্য অন্তত ১৬ কোটি পাউন্ড।  এর আগে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বৈশ্বিক সম্পত্তি নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে থাকা সম্পত্তির মূল্য আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার। দেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবও জব্দ করেছে বিএফআইইউ। এ ছাড়া তার ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  একইসঙ্গে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ওপর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। পাশাপাশি অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজনীতিবিদদের বাইরে বাংলাদেশের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদেরও যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের সারে এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যদের দুটি সম্পত্তি রয়েছে। ১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড দিয়ে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকাটি পরিদর্শনের সময় আহমেদ আকবর সোবহানের এক ছেলের মালিকানাধীন একটি অট্টালিকার সন্ধান পেয়েছে অবজারভার। আহমেদ আকবর সোবহানসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের ওপর গত ২১ অক্টোবর সরকার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ ছাড়া তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বিএফআইইউ।  নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে সিআইডি। দেশটিতে তার সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছে। লন্ডনের কেনসিংটনে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা কীভাবে ৩ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডের পাঁচটি সম্পত্তি কিনেছেন তা খতিয়ে দেখতে চায় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায় অন্তর্বর্তী সরকার। শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নানা সংস্কার কাজে হাত দিয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুর্নীতির কারণে হারিয়ে যাওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে বিগত সরকারের অনেক মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন এমন অনেকেরও বিপুল সম্পত্তির খবর গণমাধ্যমে এসেছে। তাদের অনেকে বিপুল টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। পাচার করা সেই অর্থের কিছু গন্তব্য হয়েছে যুক্তরাজ্যে। আরটিভি/আইএম/এআর
স্বেচ্ছামৃত্যুর বিলে সমর্থন দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা
ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতিতে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা করছেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস
যুক্তরাজ্যে পা দিলে গ্রেপ্তার হতে পারেন নেতানিয়াহু
ইংলিশ চ্যানেলে ৪ জনের মৃত্যু
ব্রিটেনে যাওয়ার জন্য একটি ডিঙ্গিতে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করার সময় একজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ফরাসি উপকূলরক্ষী বাহিনী। একই দিনে আরও তিন অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃতদেহ একটি সৈকতে পাওয়া গেছে। বুধবার (৩০অক্টোবর) সকালে ফ্রান্সের আঞ্চলিক অপারেশনাল সেন্টার ফর সার্ভিলেন্স অ্যান্ড রেসকিউ (ক্রস) হার্দেলো ও একুইহে-প্লাজের মধ্যবর্তী এলাকায় অভিবাসীদের একটি নৌকা দুর্দশাগ্রস্ত হওয়ার খবর পেয়ে তাদের উদ্ধারে একটি উদ্ধারকারী জাহাজ ও একটি ফরাসি নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার প্রেরণ করে। উদ্ধারকারীদল প্রায় ১৫ জনকে হেলিকপ্টারে করে নিরাপদে স্থানে নিয়ে যাওয়ার পর একজন সেখানে মারা যান। একই দিন বিকেলে নিকটবর্তী সমুদ্র সৈকতে আরও তিনজনের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম ফ্রান্সইনফো ও লা ভোয়া দ্যু নর্দ জানিয়েছে। স্থানীয় এক প্রসিকিউটরকে উদ্ধৃত করে ফ্রান্সইনফো ও লা ভোয়া দ্যু নর্দ আরও জানিয়েছে, পূর্বের ঘটনাটির সঙ্গে যোগসূত্র আছে কি না তা দেখার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় তাৎক্ষণিক মন্তব্যের জন্য বার্তাসংস্থা রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।  এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক নৌপথ। প্রবল স্রোত থাকা সত্ত্বেও অনুপযুক্ত ও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌকায় করে চ্যানেল অতিক্রম করার প্রচেষ্টায় এ বছর কয়েক ডজন অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন। আরটিভি/এএইচ/এসএ
সাইফুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করে বাংলাদেশে পাঠাতে ব্রিটিশ এমপি আপসানার চিঠি
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা যুক্তরাজ্যে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ার যে অভিযোগ, তা নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবার তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো যথাযথভাবে খতিয়ে দেখার দাবি পৌঁছেছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থার (এনসিএ) কাছেও। সংস্থাটির নির্বাহী মহাপরিচালকের কাছে এমন দাবি সংবলিত একটি চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংসদ সদস্য আপসানা বেগম। চিঠিতে তদন্তের পাশাপাশি অবৈধভাবে অর্জিত সব সম্পদ জব্দ করে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পাঠানো ওই চিঠিতে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এ নেতা লিখেছেন, ‘আমি জানতে চাই, যুক্তরাজ্যে যেসব সম্পত্তি ও সম্পদ বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে, সেগুলোর বিষয়ে জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’ শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকাকালে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিদেশে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে আপসানা বেগম লিখেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কর জমা সংক্রান্ত তদন্ত চলছে। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি দাবি করেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে কোটি কোটি ডলার পাচার করেছেন।’ চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি এবং ইউকে কোম্পানি হাউসের রেকর্ডগুলোর বিষয়ে ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলো ১৫ কোটি পাউন্ডেরও বেশি মূল্যের কমপক্ষে ২৮০টি সম্পত্তি অর্জন করেছে। এর বাইরে আল-জাজিরার তদন্তে জানা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী আমার নির্বাচনী এলাকা পপলার ও লাইমহাউসে ৭৪টি সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।’ আপসানা বেগম বলেন, এসব সম্পত্তি বাংলাদেশের। আমি বিশ্বাস করি, সেগুলো বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত, যাতে তারা গণতন্ত্র ও নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত একটি সমাজের জন্য কাজ করতে পারে। দুর্নীতি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জীবনের মান, কর্মস্থলের অধিকার ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে বলে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে। এনসিএ মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে তিনি লিখেন, যেহেতু বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন অন্যায়ভাবে অর্জিত তহবিল পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইছে, আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকব যদি আপনি স্পষ্ট করেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এই দুর্নীতির তদন্তে অভিযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্যভিত্তিক সব সম্পদ তদন্ত ও ফ্রিজ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আপসানা তার চিঠিতে আরও লিখেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, এই তহবিল ফ্রিজ ও প্রত্যর্পণ করা শুধু ন্যায়বিচারের জন্যই নয়, বাংলাদেশের জনগণের অধিকারের ভবিষ্যতের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে, এটি যুক্তরাজ্যের সুনাম ও আন্তর্জাতিক অবস্থানের জন্যও অপরিহার্য।’ আরটিভি/এসএইচএম
আলজাজিরার অনুসন্ধান / যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার কোটির সম্পত্তি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে এই তথ্য। বুধবার (১৮  সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীভাবে সরকারি বেতন পেয়েও ভিনদেশে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫ কোটি ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান। ব্রিটেন ছাড়াও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত। সবমিলিয়ে তিনি পাঁচ শতাধিক বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০ কোটি ডলার। আল-জাজিরা বলছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে সখ্যতা ছিল সাইফুজ্জামানের। গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে তাকে নিজেই এই স্বীকারোক্তি দিতে দেখা যায়। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক… শেখ হাসিনা আমার বস… তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরও বাড়ে।  গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে তাদের সাংবাদিক সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যায়। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ সাংবাদিকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামী দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করে পরেন। এ ছাড়া ওই সময় লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান তিনি। যেটিতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া। সাইফুজ্জামান আল-জাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি।  এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান। আরটিভি নিউজ/এএএ    
যুক্তরাজ্যে ট্রেন চালক সমিতি ও সরকারের সমঝোতা
দীর্ঘ দুই বছর ধরে দফায় দফায় চলা কর্মবিরতি ও ধর্মঘট নিরসনে যুক্তরাজ্যের ট্রেন চালক ইউনিয়ন ও সরকার একটি বেতন প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হয়েছে৷ দুই পক্ষই আশা করছে আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকটের অবসান হবে৷ দেশটির সরকার এই চুক্তিকে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বর্ণনা করে অবশেষে রেল ধর্মঘটের অবসান ঘটতে চলেছে বলে বিবৃতি দিয়েছে৷ ট্রেন চালকদের ইউনিয়ন (এএসএলইএফ) জানায়, ২০২২/২৩ এর জন্য ৫%, ২০২৩/২৪ এর জন্য ৪.৭৫% ও ২০২৪/২৫ এর জন্য ৪.৫% বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব তাদের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ৷ সংস্থাটি মনে করে, সদস্যদের এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া উচিত৷ ঐতিহাসিকভাবে শ্রমিকবান্ধব হিসেবে পরিচিত লেবার পার্টি গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পর নতুন সরকার এএসএলইএফ-এর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে৷ এএসএলইএফ-এর সাধারণ সম্পাদক মিক ভেলান বলেন, আমরা আনন্দিত যে, অবশেষে আমরা একটি নতুন লেবার সরকার পেয়েছি, যারা রেলপথের কর্মী, যাত্রী ও করদাতাদের জন্য কাজ করতে চায়৷ এএসএলইএফ গত বছর চালকদের নিয়োগকারী ১৬টি ট্রেন সংস্থার একটি প্রস্তাবকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে প্রত্যাখ্যান করে দেয়৷ এতে বলা হয়, ২০১৯ সাল থেকে চালকদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি, যার ফলে পরবর্তীতে বেতন কাটা হয়েছে৷ রেল ধর্মঘট ও ভ্রমণ পরিকল্পনায় ব্যাঘাত গত দুই বছরে ব্রিটিশ জীবনের একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছিল৷ দুই বছরে ট্রেন চালকরা সর্বমোট ১৮ দিন ধর্মঘট পালন করেছেন৷ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালের জুন থেকে ধর্মঘটের কারণে রেলওয়ের রাজস্ব প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন পাউন্ড (১.০৯ বিলিয়ন ডলার) কম আদায় হয়৷
লন্ডনে ১১ বছরের শিশুকে ছুরিকাঘাত
লন্ডনের লাইচেস্টার স্কয়ারে ছুরিকাঘাতে ১১ বছরের এক নারী শিশু গুরুতর আহত হয়েছে৷ হামলার ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ হামলায় শিশুটির মা-ও সামান্য আহত হয়েছেন৷ পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার (১২ আগস্ট) করা শিশুটির আঘাত প্রাণঘাতী নয়৷ পুলিশ মনে করছে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা৷ ছুরিকাঘাতের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করছেন তারা৷ মধ্য লন্ডনের এই এলাকাটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়৷ ছুরিকাঘাতের পরপরই সেখান থেকে ৩২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ৷ এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, এখন একটি জরুরি তদন্ত চলছে এবং গোয়েন্দারা ঠিক কী ঘটেছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কাজ করছেন৷ ঘটনার আলামত দেখে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে না যে, সন্দেহভাজন ও ভুক্তভোগীরা একে অপরের পরিচিত ছিল৷ আগস্টের শুরুতে উত্তর ইংল্যান্ডে এক হামলায় তিন নারী নিহত হন৷ সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে ইসলামপন্থী অভিবাসী হিসাবে ভুলভাবে চিহ্নিত করে অনলাইনে গুজব ছড়ানো হয়৷ সেই ঘটনার পরপর সৃষ্ট দাঙ্গার কারণে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের পুলিশ উচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে৷
বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন: যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র।  সোমবার  (৫ আগস্ট) লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডাউনিং স্ট্রিটের অফিসিয়াল মুখপাত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনায় ‘গভীরভাবে দুঃখিত’। তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যেন গণতন্ত্র রক্ষা পায় এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র এমন সময় এ বক্তব্য দিলেন, যখন দেশত্যাগের পর শেখ হাসিনার সম্ভাব্য গন্তব্য নিয়ে জল্পনা চলছে। প্রসঙ্গত, দুপুরে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। সূত্রমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা। ইন্ডিয়া টুডে জানায়, নয়াদিল্লির গাজিয়াবাদে সেনাবাহিনীর হিন্ডন এয়ারবাসে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে অবতরণ করেন তিনি। সেখান থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। এর আগে দুপুরে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গণভবন দখল করে নেয় ছাত্র-জনতা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও দখল করে নেয় তারা। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে যান। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি।
গুজবের জেরে ইংল্যান্ডের মসজিদে হামলা, আহত ৩৯ পুলিশ
ইংল্যান্ডের সাউথপোর্টে শিশুদের নাচের কর্মশালায় হামলার ঘটনার পর হামলাকারীর পরিচয় ঘিরে গুজবে বিশ্বাস করে একটি মসজিদে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ একদল লোক। তাদের থামাতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হয়েছে পুলিশও। এতে অন্তত ৩৯ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর বিবিসির।  সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে সাউথপোর্টে শিশুদের একটি নাচের কর্মশালায় ছুরি হাতে অতর্কিত হামলা চালায় ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ। এতে দুই শিশু প্রাণ হারানোর পাশাপাশি আরও ৭ জন শিশু আহত হয়। তাদের সবার বয়স ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে এ সময় আহত হন আরও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। আহতদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।  হামলাকারী তরুণকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তবে ব্রিটেনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই তরুণের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি।  এরই মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, হামলাকারী ওই তরুণ মুসলিম। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় নিহতদের স্মরণে শোক মিছিল করে ঘটনাস্থলে যান হতাহতদের স্বজন ও সাধারণ লোকজন। তার কাছাকাছিই অবস্থিত একটি মসজিদ। হতাহত শিশুদের স্বজনদের শোক মিছিল শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর একদল উগ্র লোক মসজিদটিকে লক্ষ্য হামলা চালান। এসময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপর আক্রমণ করেন হামলাকারীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে অজস্র ইট-পাটকেল ও বোতল ছোড়েন তারা। এতে অন্তত ৩৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য আহত হন।  কয়েক ঘণ্টা সংঘাতের পর দাঙ্গাকারীদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে বলে জানিয়েছে বিবিসি। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, এই দাঙ্গাকারীরা ইংলিশ ডিফেন্স লীগ নামের একটি উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দলের কর্মী। এই দলটি এর আগেও মুসলিমদের লক্ষ্য করে একাধিকবার হামলা করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে পুলিশের রেকর্ডে। মার্সিসাইড পুলিশের মুখপাত্র এবং অ্যাসিসটেন্ট চিফ কনস্টেবল অ্যালেক্স গস এক বিবৃতিতে বলেন,  মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাউথপোর্ট পুলিশকে গুরুতর সহিংসতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। দাঙ্গাকারীদের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টার্মারও। বুধবার (৩১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেন, সাউথপোর্টের জনগণ এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। যারা শোকার্ত জনগণের একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে সহিংস ও গুণ্ডামিতে পরিপূর্ণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।