• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
গরমে স্বস্তি পেতে কাঁচা আমের ললি
রং মেশানো ভেজাল তরমুজ চিনবেন যেভাবে
গরমে তরমুজকে বলা যায় এক প্রকার আশীর্বাদ। কারণ এই ফলে পানি থাকে নব্বই ভাগের বেশি। তাই রমজানে শরীরে পানির যে ঘাটতি তৈরি হয় তার অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব তরমুজ খাওয়ার মাধ্যমে। শুধু পানির ঘাটতি পূরণ নয়, তরমুজের বীজকে বলা হয় সুপার ফুড। আর তাই রমজানেও তরমুজের চাহিদা বাড়ে। প্রতিদিনের ইফতারে তরমুজের জুস খেতে পছন্দ করেন রোজাদার মুসলিমরা। তাই এই সময় তরমুজের দামও থাকে চড়া। কিন্তু চড়া দাম দিয়েও অনেকে ভেজাল তরমুজ কিনে নেন। অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় তরমুজে কৃত্রিম রং মিলিয়ে বিক্রি করেন। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও সারাদিন রোজা রেখে ভেজাল তরমুজ খেলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়।  তাই তরমুজ কেনার আগে ভালোভাবে দেখে কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা জানান, গরমে প্রচুর ঘাম হয়। শরীর থেকে পানির পরিমাণ কমে যায়। যা পূরণ করতে পারে তরমুজ। কিন্তু ভেজাল তরমুজ খেলে উপকার পাওয়া যাবে না। এই বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কী করে চিনবেন আসল তরমুজ আর নকল তরমুজ –জেনে নিন কৃত্রিম লাল রং মেশানো থাকে সাধারণ মানুষ লাল তরমুজ খেতে পছন্দ করেন। কারণ লাল তরমুজ খেতে মিষ্টি হয়। তাই তরমুজকে পাকা বা বেশি লাল দেখাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা লাল এরিথ্রোসিন রং মিশিয়ে দেন। যা দেওয়ার পর তরমুজের ভেতরের অংশ লাল টকটকে হয়। এটি বুঝতে একটি তুলো নিয়ে পরীক্ষা করে নিন। আসল তরমুজের লাল অংশে তুলো ধীরে ধীরে ঘষুন। কোনও রং উঠবে না। কিন্তু নকল তরমুজে তুলো ঘষলে তা থেকে লাল রং উঠে আসবে। স্বাদ কম হবে ভেজাল তরমুজের রং যতই লাল হোক কোন স্বাদ হবে না। অন্যদিকে আসল তরমুজের স্বাদ থাকবে। এটি খাওয়ার পর মুখে তরমুজের আসল স্বাদ পাওয়া যাবে। তাই কেনার আগে একটু টুকরো খেয়ে দেখুন। দ্রুত পচে যাবে তরমুজ কিনে এনে সঙ্গে সঙ্গে না খেয়ে রেখে দিন। দুই একদিন পর খাবেন। এতে যদি তরমুজ পঁচে যায় তবে বুঝে নিবেন এটি ভেজাল ছিল। ভেজাল রং মেশানো ছিল বলে তা দ্রুত পচে গেছে। অন্যদিকে আসল তরমুজ দ্রুত পঁচবে না। বরং এর স্বাদও ঠিক থাকবে। পানিতে দিয়ে দেখুন বাজার থেকে তরমুজ কেনার পর বাড়িতে এনেই খাওয়া শুরু করবেন না। আগে পরখ করে দেখুন। তরমুজে রং মেশানো আছে কিনা তা বুঝতে একটি কড়াইয়ে কিছুটা পানি গরম করে নিন। এবার এতে এক টুকরো তরমুজ দিয়ে দিন।‌ দ্রুত পানি লাল হয়ে গেলে বুঝবেন তরমুজে রং মেশানো ছিল। ভালো তরমুজে কোনো রং উঠবে না।
ইফতারে যেসব খাবার পেট ঠান্ডা রাখবে
রমজানে সুস্থ থাকতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ পরামর্শ
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী যে খাবার
ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না
রোজায় পুষ্টি এবং শক্তি পাবেন যেসব খাবারে 
রোজায় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে পানির চাহিদা বেশি থাকে। আবার অনেকক্ষণ খাবার না খাওয়ার কারণে শরীরে শক্তিরও ঘাটতি হয়। যার কারণে রোজা রেখে আমরা অনেক খাবারই খাই; কিন্তু বিশেষ কিছু খাবারের দিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত। খাদ্যতালিকায় কিছু সুপারফুড যুক্ত করা হলে শরীর একই সঙ্গে পুষ্টি এবং শক্তি পাবে। এসব খাবার শরীরের জন্য বেশ উপকারী।  এ ধরনের কিছু খাবার হলো- প্রতিদিন দু-তিন লিটার পানি : দেহের একটি আবশ্যিক উপাদান পানি। শরীরের পুরো ওজনের প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ হচ্ছে পানি। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহে প্রায় ৪০ কেজি পানি থাকে। খাবার হজম ও শোষণে সাহায্য করা ছাড়াও দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ যেমন-ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া মূত্র ও ঘামের সঙ্গে নিষ্কাশন করে। এভাবে পানি দেহকে সুস্থ রাখে। রোজার সময় প্রতিদিন দু-তিন লিটার পানি পান করা উচিত। পানি গ্রহণের পরিমাণের সঙ্গে পানি ত্যাগের পরিমাণের (যেমন-মূত্র, মল, ঘাম) দিকে খেয়াল রাখতে হবে। উদাহরণস্বরূপ-খাবার পানির পরিমাণ ২০০০ মিলি হলে মূত্রের মাধ্যমে পানি ব্যয় হবে ২০০০ মিলি, এর বেশি ব্যতিক্রম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রতিদিন ইফতারে রাখুন ফলমূল : ইফতারে ফলের পরিমাণ বাড়ানো উচিত। ফল বলতে বিদেশিই হতে হবে বা দামি ফল হতে হবে তা নয়-দেশীয়, সস্তা মৌসুমি ফল প্রতিদিন ইফতারে রাখা যেতে পারে। আপেল-আঙুরের পরিবর্তে ইফতারে স্থান পেতে পারে আমড়া, পেয়ারা, গাব, জাম্বুরা, পাকা পেঁপে, আনারস, তরমুজ ইত্যাদি।
রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়
চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে প্রতি বছর ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা রাখেন সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারে বিরত থেকে। দীর্ঘ সময় পানি পান না করায় এবং ইফতারে পরিমাণমত পানি পান না করায় এ সময় হতে পারে খুব সহজেই পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতা হলে শরীরে কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন, অতিরিক্ত মুখ বা ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। এর থেকে তৈরি হতে পারে নানা জটিলতা। নিয়মিত পরিমাণমতো পানি ও পানি জাতীয় খাবার খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।  রোজার সুস্থ ও পানিশূন্যতামুক্ত থাকতে চাইলে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি- >> ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত সময়ে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি খেতে হবে অবশ্যই। প্রতিবেলা খাওয়ার ১০ মিনিট আগে ও কিছুক্ষণ পরে ১ গ্লাস করে পানি খেতে হবে। খাওয়ার মাঝখানে পানি খাবেন না কিংবা একবারে অতিরিক্ত পরিমাণ পানি খেয়ে ফেলবেন না। ঠান্ডা পানির তুলনায় দ্রুত শোষণ হয় বলে কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে। >> রোজায় সময় খাদ্য তালিকায় এমন খাবার রাখবেন যেগুলো সহজে হজম হয়। ভাজাপোড়া কিংবা রিচ ফুড শরীরকে আরও পানিশূন্য করে তোলে। >> ইফতার মেন্যুতে পানিজাতীয় খাবার ও ফল রাখুন। বেশি করে খেতে পারেন শসা ও তরমুজ। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। সঙ্গে থাকতে পারে শরবত।  >> ডাবের পানি খেতে পারেন প্রতিদিন। প্রয়োজনে স্যালাইন খান।  >> প্রয়োজন ছাড়া রোদে যাবেন না কিংবা রোজা রেখে ভারি ব্যায়াম করতে যাবেন না। এতে ঘাম বেশি হয়ে পানিশূন্যতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা থাকে। >> ইফতারের পর অতিরিক্ত চা কিংবা কফি খাওয়া অনুচিত। >> অনেকেই ইফতারের পর ফ্রিজে রাখা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করেন, এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। >> নিয়মিত গোসল করতে হবে, খুব খারাপ লাগলে চোখেমুখে পানির ঝাপ্টা দিতে পারেন। >> টকদই ও লাচ্ছি যোগ করতে পারেন ইফতারে। >> খেজুর, ফল, জুসের সঙ্গে ইফতারে রাখতে পারেন পান্তাভাত, যা সারাদিনের রোজার শেষে আপনার দেহে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। >> ডায়রিয়া বা জ্বর বা অতিরিক্ত বমি হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। >> গবেষণায় দেখা যায়, প্রচুর চিনি থাকায় মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে তৃষ্ণা বাড়ে। এর পরিবর্তে ফল খেতে পারেন, যা দেহে তরলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তৃষ্ণাও মেটায়।
রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে?
অনেকেরই শ্বাসজনিত রোগ থাকে, যেমন অ্যাজমা ও ফুসফুসের প্রদাহজনিত সিওপিডি ও কাশি থাকে। এ ধরনের সমস্যায় সাধারণ ইনহেলার ব্যবহার করা হয়। যা মুখ দিয়ে গ্রহণ করতে হয়। এ কারণে অনেক রোগীরই প্রশ্ন-রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে কি না। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফ হোসেন খান। এবার তাহলে রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক। ইনহেলার কী- এটি হচ্ছে শ্বাসের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণের জন্য ছোট্ট একটি যন্ত্র। এতে সালবিউটামল বা সালমেটেরল বা স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ থাকে। এই ওষুধ এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত থাকে, যা গ্যাস হিসেবে মুখ দিয়ে গ্রহণ করতে হয়। ওষুধ মিশ্রিত গ্যাস শ্বাসনালীতে প্রবেশ করার পর শ্বাসনালির সংকোচন প্রতিরোধ হয়। ইনহেলার ব্যবহার করলে কী রোজা ভেঙে যাবে: রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। তবে বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামিক পণ্ডিত একমত হয়ে জানিয়েছেন, যদি কারও শ্বাসজনিত দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকে যেমন, অ্যাজমা ও সিওপিডি থাকে, তাহলে তিনি ইনহেলার ব্যবহার করতে পারবেন এবং এতে রোজা ভাঙবে না। এ বিষয়টি বিভিন্ন মেডিকেল জার্নালেও প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া কেউ যদি রোজার সঠিক অংশ হিসেবে ঠিকভাবে ওষুধ গ্রহণ না করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে পারে। তখন ওই ব্যক্তির পক্ষে রোজা রাখা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তবে মূল কথা হচ্ছে, ইনহেলার খাদ্যের পরিপূরক নয়। ইনহেলার ব্যবহারের নিয়ম- অধিকাংশ অ্যাজমা ও সিওপিডির ওষুধ দিনে দুবার গ্রহণ বা সেবন করতে হয়। এ জন্য রোজার সময় চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে সেহরি ও ইফতারের সময় ইনহেলার নেয়ার সময় নির্ধারণ করে নিতে পারেন। আবার সালবিউটামলজাতীয় ইনহেলার যেসব উপসর্গ অনুযায়ী সেবন করতে হয়, সেসব রোজা রাখা অবস্থায় নিলে তাতে রোজা ভাঙে না। ধর্মীয়ভাবে এ ক্ষেত্রে যেহেতু কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, এ জন্য চিকিৎসার অংশ হিসেবে এই ধরনের রোগীকে যদি কোনো চিকিৎসক ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাহলে সেটি পালন করা উচিত।
সুস্বাদু লাউয়ের হালুয়া
সবজি হিসেবে লাউয়ের উপকারিতা উপেক্ষা করার কোনো উপায় নেই। লাউয়ে মধ্যে প্রচুর পানি থাকার পাশাপাশি এতে ফাইবার, ভিটামিন ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান থাকে। তবে সাধারণত বাঙালি বাড়িতে লাউ ডাল, লাউ চিংড়ির, লাউ ঘন্টই বেশি দেখা যায়। তবে এবার যুক্ত করুণ নতুন একটি পদ, আর তা হলো লাউয়ের হালুয়া। ভিন্ন স্বাদের এই রেসিপি রুটি বা পরোটার সঙ্গে খেতে ভালোই লাগে। খেতেও যেমন সুস্বাদু আর উপকরণও কম। আজই ইফতারে বানিয়ে ফেলুন অন্য স্বাদে লাউয়ের হালুয়া। জেনে নিন রেসিপি: উপকরণ : লাউ- ৩০০ গ্রাম, দুধ- ৫০০ মিলি, চিনি- ২০ গ্রাম, ছানা- ৫ গ্রাম, কিসমিস- ২ গ্রাম, কাজুবাদাম- ২ গ্রাম, ঘি- ৫ গ্রাম, এলাচ গুঁড়ো- ১ গ্রাম, প্রণালি : প্রথমে লাউয়ের খোসা ছাড়িয়ে টুকরা করে অতিরিক্ত পানি বের করে ফেলুন। এরপর একটি পাত্রে ৩ গ্রাম ঘি গরম করে নিন। এরপর লাউয়ের টুকরা দিয়ে নাড়তে থাকুন। লাউ নরম হয়ে এলে এর মধ্যে দুধ দিয়ে নাড়তে থাকুন। ২০ মিনিট পর লাউ দুধে মিশে গেলে চিনি দিয়ে দিন। একটি পাত্রে বাকি ঘি গরম করে নিন। গরম হলে অন্য পাত্রে হালুয়া ও ছানা দিয়ে দিন। এরপর কাজুবাদাম ও কিসমিস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মজাদার লাউয়ের হালুয়া।
ইফতারে বাসি ভাতের মজাদার পাকোড়া
রাতে খাওয়ার পর ভাত থেকে গেলে রোজার দিনে চিন্তায় পরে যান অনেকেই। কারণ, বাসি ভাত দিয়ে কী করবেন, ভেবে পান না। তবে এবার আর চিন্তা নেই, এবার বাসি ভাত দিয়ে খুব সহজেই বানিয়ে নিন ইফতারের জন্য পাকোড়া। সসে ডুবিয়ে কামড় দিলে কেউ বুঝবেই না এটা বাসি ভাত দিয়ে তৈরি করা। পাকোড়া বানাতে বেশি ভাতেরও প্রয়োজন হবে না। আগের দিনের থেকে যাওয়া অল্প ভাত দিয়েই এটি বানিয়ে নেওয়া যাবে। চলুন, জেনে নেই কীভাবে বাসি ভাত দিয়ে সুস্বাদু পাকোরা বানানো যাবে। যা যা লাগবে: ভাত, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচামরিচ, কর্নফ্লাওয়ার, বেকিং পাউডার, কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়ো, ধনেপাতা, লবণ ও তেল।   যেভাবে বানাবেন: প্রথমে একটি বাটিতে দেড় কাপ পরিমাণে ভাত নিন। পেঁয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচামরিচ ব্লেন্ড করে নিন। এগুলো ভাতের সঙ্গে ভালো করে মেখে নিন। এবার এতে দুটো সেদ্ধ আলু চটকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো লবণ দিন। এরপর ৪ চামচ কর্নফ্লাওয়ার, অল্প করে বেকিং পাউডার, হাফ চামচ কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়ো এবং ধনেপাতা দিয়ে মাখিয়ে নিন। এরপর সেখান থেকে পাকোড়া আকারে বানিয়ে নিন। সবগুলো বানানো হয়ে গেলে চুলায় পাত্র বসিয়ে তেল গরম দিন। এরপর তেল মাঝারি গরম হলে পাকোড়া ছেড়ে দিন। মাঝারি আঁচে ভেজে নিন। লালচে হয়ে এলে নামিয়ে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন। সস দিয়ে খেতে পারেন। আবার গরম ভাতের সঙ্গেই এই ভাত পাকোরা খাওয়া যাবে।
যে কারণে এড়িয়ে যাবেন মসলাদার ভাজা খাবার
নিয়মিত মসলাদার ভাজা খাবার খেলে দেহে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কার্বোহাইড্রেইটস, চর্বি ও প্রোটিনের মধ্যে চর্বি অনেক ধীরে হজম হয়। পেটব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া হতে পারে।  যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেল্থ’য়ের তথ্যানুসারে, মসলাদার ও ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে। ফলে পেট খালি হতে দেরি হয়। খাবার বেশিক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে বলে গ্যাস ‍সৃষ্টি হয়ে পেট ফোলা ও ব্যথা সৃষ্টি করে। যাদের বিভিন্ন রকম পেটের সমস্যা আছে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ে। ওজন বাড়াতে পারে- ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচ’য়ের তথ্যানুসারে, মসলাদার ভাজা খাবারে যেহেতু প্রচুর ফ্যাট বা চর্বি থাকে সেজন্য ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি স্থূলতার সমস্যা তৈরি করে এসব খাবার। যেমন- ১০০ গ্রামের একটি বেইকড করা আলু থেকে মিলবে ৯৩ ক্যালিরি ও ০.১ গ্রাম চর্বি। তবে একই পরিমাণ আলুভাজা বা ফ্রেঞ্চফ্রাই খেলে দেহে যাবে ৩১২ ক্যালরি ও ১৩ গ্রাম চর্বি। বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ মূলক গবেষণায় দেখা গেছে- ভাজাপোড়া খাবার ও ফাস্ট ফুড ওজন বাড়ায়। হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে- যে কোনো ভাজা খাবার রক্তচাপ বাড়ায়, ভালো কোলেস্টেরল ‘এইডিএল’য়ের মাত্রা কমায় আর স্থূলতার সমস্যা তৈরি করে। বস্টনের হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, কত ঘন ঘন ভাজা খাবার খাওয়া হচ্ছে সেটার ওপর ভিত্তি করে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এদিকে কানাডা’র ‘ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি’র ‘পপুলেইশন হেল্থ রিসার্চ ইন্সটিটিউট’য়ের ২২টি দেশের ওপর করা পর্যবেক্ষণে জানানো হয়, ভাজা খাবার, পিৎজা ও লবণাক্ত নাস্তা খাওয়ার জন্য তাদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে ১৬ শতাংশ। ডায়াবেটিস হতে পারে- ভাজা খাবার এবং মিষ্টি পানীয় পান- দেহের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ে যে কারণে বৃদ্ধি পায় ওজন, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমে, বাড়ে প্রদাহের মাত্রা। ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়- ইরানের শহীদ বেহেস্তি ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্থ’য়ের করা গবেষণায় এরকমই ফলাফল পাওয়া গেছে। ব্রণের সমস্যা বাড়ায়- জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অফ অসনাব্রুক’য়ের ত্বকবিজ্ঞান বিভাগের করা গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে- পরিশোধিত কার্ব, ফাস্ট ফুড ও মসলাদার খাবার ব্রণ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। আবার চীনের ‘হসপিটাল অফ চায়না মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র ত্বক-বিজ্ঞান বিভাগ ৫ হাজার চীনা তরুণদের ওপর পর্যবেক্ষণ করে জানায়- ভাজা খাবারের জন্য ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে তুরষ্কের ‘এস্কিসেহির ওসমানগাজি ইউনিভার্সিটি’র ত্বকবিজ্ঞান বিভাগ ২ হাজার ৩শ’ তরুণের ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে জানায় মসলাদার খাবার খাওয়ার জন্য তাদের মধ্যে ব্রণের সমস্যা বৃদ্ধি ঘটেছে ২৪ শতাংশ। এ ছাড়া মিষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় সমস্যা তৈরি করতে পারে- মসলাদার খাবার বেশি খাওয়া হলে দেখা দেয়- উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা। যা থেকে মস্তিষ্কের গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বার্মিংহামের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালাবামা’ ২ হাজার ৮৩ এবং যুক্তরাজ্যের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’ ১৮ হাজার ৮০ জনের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখতে পায়- মসলাদার খাবার খাওয়ার কারণে তাদের মস্তিষ্কের গঠন, কোষের ও কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মসলাদার খাবার এড়ানোর উপায়- নানান পন্থায় মসলাদার ভাজাপোড়া ও মিষ্টিযুক্ত খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায়। সেদ্ধ: সবজি, মাছ ও ডাম্পলিং তৈরির ক্ষেত্রে গরম পানিতে সেদ্ধ করা যায়। যা আসলেই স্বাস্থ্যকর। এয়ার ফ্রাই: খাবারে চারদিকে গরম বাতাসের ঘুর্ণি তৈরি করে এয়ার ফ্রায়ার যন্ত্র রান্না করে। ফলে ভাজা খাবার তৈরিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ তেল কম প্রয়োজন হয়। গ্রিল্ড: যে কোনো খাবার আগুনে পুড়িয়ে খেতে বেশি তেলের প্রয়োজন হয় না। মাংস ও সবজির ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়। ওভেন ফ্রাই: ২৩২ ডিগ্রি সে. তাপে খাবার রান্না করলে অল্প বা কোনো তেল ছাড়াই খাবার মচমচে করে তৈরি করা যায়। ফ্রেঞ্জ ফ্রাইয়ের পরিবর্তে বা বড়া না তৈরি করে আলু এভাবে খাওয়া যেতে পারে।
ভিন্ন স্বাদের অরেঞ্জ চিকেন
সারাদিন রোজা রেখে ইফতারিতে অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার না খেয়ে স্বাস্থকর খাবার খাওয়া উচিত। এ সময়টাতে বাহিরের খাবার না খেয়ে ঘরে তৈরি খাবার খেতে পারেন। অনেকেই ইফতারিতে ভিন্নরকম খাবার খেতে পছন্দ করেন, তারা কমলা দিয়ে চিকেন রান্নার এই রেসিপি জেনে নিতে পারেন। চলুন অরেঞ্জ চিকেন বানানোর প্রস্তুতি নেই। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় এই পদ তৈরির সহজ রেসিপি জেনে নিন। যা যা লাগবে- চিকেন, কমলা, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, পেঁয়াজ, শুকনো মরিচ, কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, চিনি, তেল, ডিম, ভিনিগার, কর্নফ্লাওয়ার, সাদা তিল, লবণ    যেভাবে বানাবেন- প্রথমে চিকেনটা কেটে ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর এতে হলুদ, ভিনিগার, লবণ, ডিম ও টমেটো কেচাপ দিয়ে ম্যারিনেট করুন। অন্তত ২ ঘণ্টা রেখে দিন। ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। রান্নার ১৫ মিনিট আগে ফ্রিজ থেকে বের করুন। এবার একটি কড়াইয়ে তেল গরম করুন। এতে পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটা দিন। একটু ভাজুন। আদা ও রসুনের ভাজা গন্ধ ছাড়বে। এরপর এতে টমেটো পেস্ট দিয়ে দিন। আবারও স্বাদমতো লবণ ও হলুদ, লাল মরিচের গুঁড়ো দিন। ভালোভাবে মশলা কষাতে থাকুন। মশলা কষে এলে বেশি করে কমলার রস দিন। মশলা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করবে। এরপর এতে ম্যারিনেট করা চিকেনটা দিয়ে দিন। আবারও ভালো করে কষিয়ে নিন। সামান্য গরম পানি দিন। এবার ঢাকনা দিয়ে রাখুন। মাংস সেদ্ধ হতে দিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে ওপর থেকে সাদা তিল ও কমলালেবুর  পাল্প ছড়িয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেল অরেঞ্জ চিকেন। ইফতারে রুটি বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।