• ঢাকা শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১
logo
বাজুস ফেয়ার স্থগিত
১৩৫৫ কোটি টাকার দুই কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
দুই দেশ থেকে ১ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকার দুই কার্গো তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮-অনুযায়ী আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আরব আমিরাতের মেসার্স ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড থেকে এক কার্গো (৬-৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সময়ের জন্য ষষ্ঠ) এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৭৯ লাখ ১৪ হাজার ৪৪৮ টাকা। এ ছাড়া পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮-অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে সিঙ্গাপুরের মের্সাস ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড থেকেই আরেক কার্গো (১৩-১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সময়ের জন্য সপ্তম) এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৬৩ কোটি ৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৮ টাকা ৮ পয়সা। আরটিভি/আরএ-টি
টিসিবির জন্য তেল-ডাল-চিনি কিনবে সরকার
যুগ্ম নামে কেনা যাবে না পরিবার সঞ্চয়পত্র, বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণ
নিত্যপণ্যে আরোপিত ভ্যাট রিভিউ হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা
তৈরি পোশাক ও মিষ্টির ওপর ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত
আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসে ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন শর্ত
আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে নতুন শর্ত দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পণ্য চালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডোর সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনো ধরনের সনাতনী সার্টিফিকেট গ্রহণ করবে না শুল্ক কর্তৃপক্ষ। ওই সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হলো- বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এনবিআর। এই আদেশের আমদানি- রপ্তানি কার্যক্রমে যেসব কাগজপত্র লাগে, তা ওই সব সংশ্লিষ্ট দপ্তর আমদানিকারক-রপ্তানিকারকদের সার্টিফিকেট, সনদ ইত্যাদি কাগজপত্র অনলাইন সিস্টেমে সংরক্ষণ করবে, যেন শুল্ক কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করতে পারেন। আগামী ১ মার্চ থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট ১৯টি সংস্থার সব কটিই এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আসবে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমের উদ্বোধনের সময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী মার্চ থেকে সরকারি ১৯টি দপ্তরের লাইসেন্স-সংক্রান্ত সেবা কাগজপত্র দিয়ে করা যাবে না। সব অনলাইনে করতে হবে। অন্যথায় আমাদের হাতেও অস্ত্র আছে। অনলাইনে আবেদন না হলে আমাদের অর্থসচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বরাদ্দ আটকে দেবেন। জানা গেছে, একজন আমদানিকারক-রপ্তানিকারক এখন থেকে সব রকমের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স, পারমিট সংগ্রহ ও পণ্য চালান খালাসের জন্য কেবল একটি সিঙ্গেল অনলাইন প্ল্যাটফরমে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দাখিল করতে পারবেন। দাখিলকৃত তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের মাধ্যমে পণ্য চালান দ্রুততম সময়ে খালাস নিতে পারবেন। এতে সময় ও খরচ বাঁচবে। ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএফএ) স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। চুক্তির ১০ দশমিক ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব সদস্যরাষ্ট্র সিঙ্গেল উইন্ডো স্থাপনের উদ্যোগ নেবে। এনবিআরের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প। প্রকল্পটি শেষ হলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজতর হবে, ব্যবসায়ীদের ব্যয় কমবে ও বন্দরে পণ্য চালান খালাসের সময় কমে যাবে। আরটিভি/এআর
ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি হচ্ছে এক লাখ টন চাল
আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান থেকে ১ লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার। পৃথক দুটি ক্রয় প্রস্তাবে এ চাল কেনা হবে। এতে মোট ৫৮১ কোটি ৪১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে। এরমধ্যে ভারতের ৫০ হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চালে ব্যয় হবে ২৭৭ কোটি ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। আর রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে বাকি ৫০ হাজার টন আতপ চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ৩০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।  বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব দুটি তোলা হবে। সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার টন আতপ চাল জিটুজি পদ্ধতিতে পাকিস্তান থেকে আমদানির জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হয়। বাংলাদেশের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে পাকিস্তান চাল সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে দুদেশ আলাপের মাধ্যমে প্রতি টন চাল ৪৯৯ ডলার নির্ধারণ করা হয়। একই উদ্দেশ্যে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ছয়টি দরপত্র জমা পড়ে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের মেসার্স গুরুদিও এক্সপোর্টস করপোরেশনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রতি টন ৪৫৪ দশমিক ১৪ ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ডলার সমপরিমাণ ২৭৭ কোটি ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও চাল আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এর আওতায় ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আরটিভি/একে/এস
সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভ্যাট থাকছে আগের মতোই
দেশের রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হতে যাচ্ছে। ফলে রেস্তোরাঁয় নতুন করে আর ভ্যাট বাড়বে না। আগের মতোই রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হবে।  বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআরের মূসক আইন ও বিধি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী। তিনি বলেন, গত ৯ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারি করে হোটেল, রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। তবে সেটি আবারও আগের হারে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ হোটেল, রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট ৫ শতাংশই থাকছে।   গত ৯ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারির পর নানা মহলে এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। বর্ধিত ভ্যাট হার কমানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে মানববন্ধন করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।   এ অবস্থায় বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রথম সচিব (মূসক নীতি) মশিউর রহমানের সই করা এক চিঠিতে এনবিআর জানায়, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির পাঠানো পত্র জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট হার পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায়, ভ্যাটের আওতাসহ রাজস্ব বৃদ্ধি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সমিতির বিশেষ সহযোগিতা কামনা করেছে এনবিআর।   এদিকে আরও কয়েকটি পণ্যে ভ্যাট কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে জানিয়ে মো. বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন, তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।    আরটিভি/এআর/এস
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
দেশে এই প্রথমবারের মতো মার্কেট রেট বা বাজারে প্রচলিত সুদ হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাঁচটি সঞ্চয় কর্মসূচির মুনাফার হার বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। স্কিমের ধরন অনুযায়ী নতুন মুনাফার হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এই মুনাফার হার কার্যকর হবে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে সই করেছেন উপসচিব মকিমা বেগম। মুনাফার হার বাড়ানো পাঁচ স্কিমের মধ্যে রয়েছে—পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র এবং পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট। সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের দুটি ধাপ রাখা হচ্ছে। প্রথম ধাপ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারী। আর দ্বিতীয় ধাপটি হলো ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপরের বিনিয়োগকারী। পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার কম বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা সাড়ে ১২ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পাবেন ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখা টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ লাখা টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ লাখা টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ ছাড়া পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিটে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার করা হচ্ছে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রের আগের ও বর্তমান সুদহার চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই মুনাফার হার কার্যকর হবে। ছয় মাস পর জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের বিনিয়োগের মুনাফার হার পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। তবে বিনিয়োগকারী ইস্যুকালীন সময়ে বিদ্যমান মুনাফার পর বিনিয়োগকালের পূর্ণ মেয়াদে পাবেন। অর্থাৎ ছয় মাস পর নতুন মুনাফার হার নির্ধারণ করা হলেও জানুয়ারি-জুন সময়ে যে মেয়াদ পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনা হবে, সেই সময় পর্যন্ত এখন যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই হারে মুনাফা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব এই চারটি স্কিমের মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এদিকে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে সঞ্চয়পত্র নগদায়নের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ, ৩ মাস অন্তর মুনাফা সঞ্চয়পত্রে ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, পরিবার সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং পেস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিটে ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যাবে। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা ৫ বছর বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরারা মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। পেনশনার সঞ্চয়পত্র প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। পরিবার সঞ্চয়পত্র প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা প্রথম বছরে ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। মুনাফার হার পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের প্রান্তিক বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন এবং জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন মর্মে আশা করা যায়। জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের মাধ্যমে মহিলা, অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবি, পেনশনার বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বিনিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে, যা সঞ্চয় স্কিম সংক্রান্ত এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে অধিকতর কার্যকর হবে মর্মেও প্রত্যাশা করা যায়। আরটিভি/একে
নতুন বছরের ১৫ দিন না যেতেই বাড়ল স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। নতুন বছরের ১৫ দিন না যেতেই ভরি প্রতি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৬৫৭ টাকা বাড়িয়েছে সংস্থাটি। এতে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের নতুন দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৫ টাকা। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বাজুসের মূল্যনির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার  ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে, সবশেষ গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩২ হাজার ১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ৮৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার। স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়। আরটিভি/এসএইচএম-টি  
ইআরএফের সেমিনারে অভিমত / সিস্টেম লসের নামে চুরি বন্ধ হলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না
গ্যাস সরবরাহে সিস্টেম লসের নামে ১০ শতাংশ চুরি বন্ধ করা গেলে নতুন করে গ্যাসের দর বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই পারে এ চুরি বন্ধ করতে। কারণ তাদের ভোটের প্রয়োজন নেই। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সেমিনারে এসব কথা বলেছেন বক্তারা। অর্থনৈতিকবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরাম (ইআরএফ) রাজধানীর পল্টনে নিজস্ব কার্যালয়ে এই সেমিনারটির আয়োজন করে। নতুন করে গ্যাসের দর বৃদ্ধি ও ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর সমালোচনা করে এ কে আজাদ বলেন, সরকার যে নীতি নিচ্ছে এগুলো বাস্তবায়িত হলে আমরা কোথায় যাব? গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির আগে অর্থনীতি ও জনজীবনে এর কী প্রভাব পড়বে তা খতিয়ে দেখা হয়নি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো আলোচনাও করা হয়নি।  তিনি বলেন, পণ্য আমদানি, রপ্তানি ও মূলধনী যন্ত্রের আমদানি কমেছে। এই চিত্র বলছে, বিনিয়োগ কমেছে। অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে তা চিন্তা করা উচিত। এ কে আজাদ বলেন, ব্যবসায়ী মানেই যেন অপরাধী। সবাই চুষে খেতে চায়। অনিয়মে অন্তত ৪০ শতাংশের মতো ব্যয় করতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে সব সরকারের চরিত্রই এক। গত সরকার বলেছিল গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করবে। কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি। ভ্যাট পরিস্থিতির বিষয়ে প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, ভ্যাটের বিষয়টি নিয়ে তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করবেন।  শিল্পে গ্যাস সরবরাহ সংকটে উদ্যোক্তাদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ‌রাষ্ট্রীয় বন্ধ শিল্পকারখানা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের জন্য ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ সুবিধা রয়েছে। গ্যাস ও ভ্যাট প্রসঙ্গে আবুল কাশেম খান বলেন, নীতির ধারাবাহিকতার অভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এসআরও জারি করে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর সুবিধার জন্য ঘনঘন নীতির পরিবর্তন করা হয়। নীতি গ্রহণে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা হয় না। দুর্নীতির কারণে সব খাত নষ্ট হয়ে গেছে। এসব ভেঙে দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্থার করতে হবে।  ‌‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ওই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের  (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।  বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, প্রশাসক হাফিজুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান, লাফার্জ হোল সিমের সি ইউর নাম মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী। আরটিভি/একে
কর বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের ওপর কতটা প্রভাব পড়বে
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে গত তিন বছর ধরে মানুষ তার আয় দিয়ে ব্যয় সামলাতে পারছে না। এর মধ্যে সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে নিত্যপণ্যের দাম আরেক দফা বেড়ে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বছরের পর বছর ধরে প্রগ্রেসিভ করের কথা বলা হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তানুযায়ী ১২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে গিয়েই কি তবে রিগ্রেসিভ করের পথেই হাঁটল সরকার?  জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরে ৪ দশমিক ৮০ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৩ শতাংশই আদায় হবে পরোক্ষ কর যেমন ভ্যাট ও বিভিন্ন ধরনের আমদানি শুল্ক থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাওয়া অনুযায়ী বাড়তি ১২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা আদায়ের পুরো চাপটাই দেওয়া হয়েছে পরোক্ষ করের ওপর, যা প্রগ্রেসিভ করব্যবস্থার মূলনীতির পরিপন্থি। কারণ, পরোক্ষ করের মাধ্যমে এই বাড়তি টাকা আদায়ের ফলে পরোক্ষ করের অংশ আরও বাড়বে। অন্যদিকে, আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে প্রগ্রেসিভ করব্যবস্থা। এনবিআরের উচিত ছিল প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো উল্লেখ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ডিস্টিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় সাধারণ মানুষের ওপর ব্যয়ের চাপই বাড়বে কেবল। এই সিদ্ধান্ত প্রগ্রেসিভ করের বদলে রিগ্রেসিভই হয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, এমনিতেই আয় বৈষম্য বাড়ছে। আয়কর বাড়ানো এবং কর ফাঁকি বন্ধের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চেষ্টা থাকা দরকার ছিল। অথচ তা দেখা যায়নি।  মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে কর বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দেবে। চাপ কতটা বেড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একসময় আমদানিতে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ৮৬ টাকা। এর ওপর ছিল ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট। আর এখন ডলারের মূল্য ১২০ টাকা। এর ওপর দিতে হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। তাহলে বুঝুন চাপ কেমন বেড়েছে, কতটা বেড়েছে। অর্থবছরের মাঝে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোকে ভালো চোখে দেখছেন না পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ। কারণ, এই চাপের বড় অংশই  যাবে নিম্ন-আয় ও সাধারণ ভোক্তাদের ঘাড়ে।   তার মতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে থাকা মানুষের ওপর এই সময়ে নতুন করে কর বাড়ানো ঠিক হয়নি। স্বল্প-আয়ের মানুষের খরচ আরও বাড়বে। পাশাপাশি ছোট পুঁজির ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ আরও বাড়াবে। মাসরুর রিয়াজ আরও বলেন, অর্থবছরের মাঝে এসে এভাবে ঢালাওভাবে কর বাড়ানো মোটেই উচিত হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর কারণে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। এখন দেখার বিষয়, আসলেই তেমনটি হয় কিনা! প্রসঙ্গত, সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক ও কর বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে ইন্টারনেট সেবা, মোবাইলফোনে কথা বলা, হোটেল-রেস্তোরাঁ সেবা, কোমল পানীয়, মিষ্টি, ওষুধ, এলপি গ্যাস, ফলের রস, ড্রিংকস, বিস্কুট, চশমার ফ্রেম, সিগারেটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় মানুষের ব্যয় বাড়বে। আরটিভি/আইএম/এআর