• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৭ জুলাই)
বেড়েছে চাল-পেঁয়াজ-আলুর দাম, সবজিতে কিছুটা স্বস্তি
আন্দোলন ও কারফিউর কারণে গত সপ্তাহে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বেশ ভেঙে পড়েছিল। এতে সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তবে গত বুধবার থেকে কারফিউ পরিস্থিতি শিথিল ও যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। তবে বেড়েছে চাল,পেঁয়াজ ও আলুর দাম। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের সরবরাহ বেড়েছে। তবে আগের মতো চড়া দামেই ভোক্তাদের চাল, পেঁয়াজ ও আলু কিনতে হচ্ছে। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩-৪ টাকা। গাজর, বেগুন, টমেটো ও করলা ছাড়া এখন বেশির ভাগ সবজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে কিনতে পারছেন ক্রেতারা। গত সপ্তাহে প্রায় প্রত্যেকটি সবজির দাম ছিল ৭০ টাকার উপরে। প্রতিকেজি পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, প্রতিকেজি চিচিঙ্গা ও ঢেঁড়শ ৬০ টাকায়, প্রতিকেজি পেঁপে ৫০ টাকায়, চাল কুমড়া প্রতিপিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতিকেজি ৪০ টাকায়, শসা প্রতিকেজি ৮০ টাকায়, কচুমুখী প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, টমেটো প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, গাজর প্রতিকেজি ২০০-২৩০ টাকায়, লাউ প্রতিপিস সাইজভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি করলা প্রায় ৫০-৭০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। বাজারে প্রতিকেজি গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ গত সপ্তাহে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে আজ প্রতিকেজি কাঁচামরিচ মিলছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। রাজধানীর কাঁচাবাজারের একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ রয়েছে। এ কারণে টমেটো আর গাজর ছাড়া সবধরনের সবজির দাম কমেছে। টমেটো আর গাজর আমদানি করে আনতে হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি রসুন প্রতিকেজি ২২০ টাকায়, আমদানিকৃত রসুন প্রতিকেজি ২০০ টাকায়, ছোট দানার মসুর ডাল প্রতিকেজি ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল প্রতিকেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একজন ক্রেতা বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ও আন্দোলনের পর সবজির বাজারে উত্তাপ কিছুটা কমেছে। তবে এখনও আলু, পেয়াজ, মাংস ও মশলার দাম চড়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমেছে মুরগির দাম। প্রতিকেজি ২০ টাকা পর্যন্ত কমে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালী মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আগের মতোই প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকায় আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকায়। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি ১ কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। প্রতিকেজি রুই মাছ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ টাকা করে। এছাড়া প্রতিকেজি তেলাপিয়া ২৬০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়, চিংড়ি ৭০০ টাকায়, দেশি টেংরা মাছ ৮০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে চালের দাম বাড়ার বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশের অস্থির অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যে কারফিউ জারি হয়েছে, এতে বিভিন্ন অটোরাইস মিলের উৎপাদন বন্ধ ছিল। গাড়ি চলতো না। বাজার বিপণন ব্যবস্থায় এর প্রভাবে পড়ে। এতে বাজার একটু বেড়েছে। বুধবার রাত থেকে আবার সরবরাহ শুরু হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে চাল ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ঢুকছে। আশা করি, বাজারে খুব শিগগির আগের রূপ ফিরে আসবে। এ মুহূর্তে আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত আছে। খাদ্যের কোন ঘাটতি নেই, ঘাটতি হবেও না। সহনশীল অবস্থা আগে যেমন ছিল তেমনই থাকবে।
চালের বাজার শিগগিরই আগের রূপে ফিরে আসবে: খাদ্যমন্ত্রী 
বিশ্ববাজারে কমেই চলেছে জ্বালানি তেলের দাম, নেপথ্যে কী
এক দিনে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
কারফিউতে সরবরাহ সংকট, বাজারে সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ
ক্রেডিট কার্ডের বিল ও কিস্তি পরিশোধে সুখবর
দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ক্রেডিট কার্ডের বিল, ঋণের বকেয়া ও বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি পরিশোধে সুখবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাড়তি সুদ ছাড়াই এসব গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধে ব্যবস্থা নিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (২৪ জুলাই) আলাদা দুই প্রজ্ঞাপনে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেক ঋণগ্রহীতা ও ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক ব্যাংকে তাদের বকেয়া অর্থ নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে সক্ষম হননি। এ ছাড়া অনেক আমানতকারী ডিপোজিট পেনশন স্কিমসহ (ডিপিএস) বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি নির্ধারিত সময়ে জমা দিতে পারেননি। এমন প্রেক্ষাপটে ১৮-২৫ জুলাই পর্যন্ত পরিশোধযোগ্য ঋণের বকেয়া অর্থ পরিশোধ, ক্রেডিট কার্ডের বিল এবং ডিপিএসসহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা কার্যকর হবে। এতে বলা হয়েছে, ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ডের পরিশোধযোগ্য অর্থ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করা হলে এই বকেয়া অর্থের ওপর কোনো প্রকারের সুদ বা মুনাফা এবং দণ্ড সুদ, অতিরিক্ত সুদ, অতিরিক্ত মুনাফা, বিলম্ব ফি কিংবা জরিমানা (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আদায় বা আরোপ করা যাবে না। ডিপিএসসহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি গ্রাহক ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করা হলে এর ওপর কোনো ধরনের বিলম্ব ফি বা জরিমানা আদায় অথবা আরোপ করা যাবে না। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এই সময়ে কোনো সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি পরিশোধে গ্রাহক ব্যর্থ হলে তা বন্ধ বা বাতিল করা যাবে না এবং পূর্বঘোষিত হারের তুলনায় কম সুদ অথবা মুনাফা প্রদান করা যাবে না। এ ছাড়া ইতোমধ্যে কোনো ঋণ বা ক্রেডিট কার্ডের ওপর সুদ বা মুনাফা ও দণ্ড সুদ বা বিলম্ব ফি এবং ডিপিএসসহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের ওপর কোনো প্রকারের বিলম্ব ফি বা জরিমানা আদায় অথবা আরোপ করা হয়ে থাকলে, তা ফেরত দিতে অথবা সমন্বয় করতে হবে।
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৫ জুলাই)
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য দিনকে দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখার জন্য তাই মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীরা নিয়মিত পাঠাচ্ছেন বৈদেশিক মুদ্রা। লেনদেনের সুবিধার্থে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সঙ্গে ২৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার তুলে ধরা হলো- বৈদেশিক মুদ্রার নাম বাংলাদেশি টাকা মার্কিন ১ ডলার ১১৯.৩৫ টাকা (▲) সৌদির ১ রিয়াল ৩১.৪৮ টাকা (▲) মালয়েশিয়ান ১ রিংগিত ২৫.২০ টাকা (●) ব্রুনাই ১ ডলার ৮৭.৪১ টাকা (▼) ইতালিয়ান ১ ইউরো ১৩০.৫৬ টাকা (▲) ব্রিটেনের ১ পাউন্ড ১৫৩.১৬ টাকা (▼) ইউরোপীয় ১ ইউরো ১৩০.৫৬ টাকা (▲) অস্ট্রেলিয়ান ১ ডলার ৭৯.৯৯ টাকা (●) নিউজিল্যান্ডের ১ ডলার ৭১.৩০ টাকা (●) সিঙ্গাপুরের ১ ডলার ৮৮.৫ টাকা (▲) ইউ এ ই ১ দিরহাম ৩২.৩০ টাকা (▲) ওমানি ১ রিয়াল ৩০৭.৫০ টাকা (●) কানাডিয়ান ১ ডলার ৮৬.৮৬ টাকা (●) কাতারি ১ রিয়াল ৩২.৩৬ টাকা (●) কুয়েতি ১ দিনার ৩৮৮.২০ টাকা (▲) বাহরাইনি ১ দিনার ৩১৪.৫৮ টাকা (●) দক্ষিণ আফ্রিকান ১ রান্ড ৬.৪২ টাকা (▼) জাপানি ১ ইয়েন ০০.৭৫৯ পয়সা (●) চাইনিজ ১ ইউয়ান ১৬.১৮ টাকা (●) সুইজারল্যান্ডের ১ ফ্রেঞ্চ ১৩০.৮৪ টাকা (●) ইন্ডিয়ান ১ রুপি ১ টাকা ৩৯ পয়সা (●) দক্ষিণ কোরিয়ান ১ ওন ০ টাকা ০৮৫৫২৭ পয়সা (▼) ইউক্রেন ১ রিভনিয়া ২.৯৭ টাকা (●)   (▲) গতদিনের তুলনায় আজ টাকার রেট বেড়েছে। (▼) গতদিনের তুলনায় আজ টাকার রেট কমেছে। ( ● ) টাকার রেট অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক
কারফিউ শিথিলের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক লেগেছে। টাকা জমা দেওয়ার গ্রাহক সংখ্যা একদমই হাতে গোনা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি ব্যাংক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টাকা তুলতে এসছেন সোহেলি খানম। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হাতে টাকা না থাকলে কী বিপদে পড়তে হয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। ব্যাংক বন্ধ থাকায় রীতিমতো অভাবের মধ্যে পড়তে হয়েছিল। তাই টাকা তুলে নিজের হাতে রাখছি। বাংলামোটরের ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্রাঞ্চে টাকা তুলতে আসা আরেক গ্রাহক রেজওয়ান বিশ্বাস বলেন, মানুষ বলাবলি করছে এমন সংকট ফের দেখা দিতে পারে তাই আগে থেকে টাকা তুলে হাতে রাখছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় বড় ধরনের ঝামেলা হয়েছে সেখানকার ভল্ট থেকে ক্যাশ সরিয়ে নিয়েছে কিছু ব্যাংক। আবার গ্রাহকরা টাকা তুলে নেওয়ায় ভল্টের ওপরেও চাপ কমছে।   ওই কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক খোলা থাকাকালীন অবস্থায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া সাধারণ গ্রাহকদের টাকা জমার দেওয়ার পরিমাণ খুবই কম। সিংহভাগ গ্রাহকই টাকা তুলতে এসেছেন।
ক্রেডিট কার্ড বিল ও কিস্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে নির্দেশনা
চলমান পরিস্থিতিতে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে অনেক গ্রাহক তাদের ক্রেডিট কার্ডের বিল, ঋণ ও সঞ্চয় স্কিমের কিস্তি দিতে পারেননি। বাড়তি সুদ ছাড়াই তাদের এ বিল বা কিস্তির অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশ মোতাবেক আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এসব টাকা পরিশোধ করতে পারবে গ্রাহকরা। যেসব ব্যাংক ইতোমধ্যে বাড়তি ফি নিয়েছে তা দ্রুত সমন্বয় করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৪ জুলাই) পৃথক দুই প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছে। ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেক ঋণগ্রহীতা ও ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক বকেয়া অর্থ নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে পারেননি। অনেক আমানতকারি ডিপোজিট পেনশন স্কিমসহ (ডিপিএস) বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি নির্ধারিত সময়ে জমা দিতে পারেননি। এ রকম অবস্থায় ১৮ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের পরিশোধযোগ্য অর্থ আগামী ৩১ জুলাইর মধ্যে পরিশোধ করলে বকেয়া অর্থের ওপর কোনো সুদ, দণ্ড সুদ, অতিরিক্ত সুদ, বিলম্ব ফি বা জরিমানা (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আদায় করা যাবে না। ইতোমধ্যে কোনো ব্যাংক বিলম্ব ফি আদায় বা আরোপ করলে গ্রাহককে তা ফেরত বা সমন্বয় করতে হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ডিপিএসসহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করলে এ ক্ষেত্রেও কোনো বিলম্ব ফি বা জরিমানা আদায় করা যাবে না। এ সময়ে কোনো সঞ্চয়ী স্কিমের কিস্তি পরিশোধে গ্রাহকের অসমর্থতার কারণে তা বন্ধ বা বাতিল করা যাবে না। আবার পূর্বঘোষিত হারের তুলনায় কম সুদও দেওয়া যাবে না। এতে বলা হয়েছে, ১৮ থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে যেসব ঋণের কিস্তি দেওয়ার তারিখ থাকলেও যারা দিতে পারেননি আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করলে আর বাড়তি ফি, সুদ, দণ্ড সুদ যে নামেই অভিহিত করা হোক নেওয়া যাবে না। সঞ্চয় স্কিমেও এ সময়ের কিস্তি দিতে না পারলে বিলম্ব ফি নেওয়া যাবে না কিংবা সুদ কম দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এই সময়ে অনেকে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে চাইলেও পরিস্থিতির কারণে পারেননি। ফলে এই সময়ের দায় কোনোভাবে গ্রাহকের ওপর পড়তে পারে না। এ জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
টাকা তুলতে ব্যাংকে উপচেপড়া ভিড় 
ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি হওয়ায় সারাদেশে সরকারের জারি করা কারফিউতে টানা তিন কার্যদিবস বন্ধ থাকার পর খুলেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এ সময়ের মধ্যে মোবাইল ফিন্যান্স কোম্পানি এবং এটিএম বুথেও কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলেনি। এ কারণে ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই শাখায় শাখায় গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বুধবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দু-একজন টাকা জমা দিতে এলেও বাকি সব গ্রাহকই এসেছেন টাকা উত্তোলন করতে।  বেলা ১২টার দিকে টাকা উত্তোলনের জন্য সোনালী ব্যাংকে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, গত কয়েক দিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় তারা টাকা তুলতে পারেননি। এতে তাদের বেশ সমস্যা পোহাতে হয়েছে। তাই আজ ব্যাংক খোলার কথা শুনেই তারা চলে এসেছেন।  এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, তিন কার্যদিবস ব্যাংক বন্ধ ছিল। এসময়ে হয়তো অনেক গ্রাহকই তাদের নগদ টাকা কেনাকাটায় শেষ করেছেন। এ কারণে আজকের বেশিরভাগ গ্রাহকই টাকা উত্তোলন করছেন। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। একই দিনে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে সব অফিস।
আগামী দুদিনও ৪ ঘণ্টা করে ব্যাংক খোলা
আগামী দুদিনও সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা করে সব বাণিজ্যিক ব্যাংক খোলা থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ সময়সূচিতেই ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।   তিনি বলেন, ‘বুধবার (২৪ জুলাই) ও বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) থেকে নির্ধারিত শাখার মাধ্যমে সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা থাকবে। এ সময়সূচি হবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।’   বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘নির্ধারিত শাখা নির্ধারণ করবে স্ব স্ব ব্যাংক। যেহেতু নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে, তাই ব্যাংকগুলোই সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোন এলাকায় কোন শাখা খোলা রাখবে।’   এর আগে বুধবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।  
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংক ঋণের সুদের হারের যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে, তা কিছুটা শ্লথ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আমদানি ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি বা বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) প্রকাশিত মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার আর না বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুদ্রানীতিকে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে, এই মুদ্রানীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। ইতোমধ্যে নীতি সুদহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরইমধ্যে সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবার প্রথম সংবাদ সম্মেলন না করে মুদ্রানীতিটি সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে গাড়ি, ফলমূল, ফুল ও প্রসাধনী আমদানির ক্ষেত্রে শুধু ঋণপত্রের বিপরীতে নগদ অর্থ জমা দিয়ে এসব পণ্য আমদানি করতে হবে। এর বাইরে অন্য পণ্য আমদানিতে অগ্রিম অর্থ জমার বিষয়টি শিথিল করা হবে। নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি আগের মতো রাখা হয়েছে। গত জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির এ হারই বহাল রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক খাত থেকে সরকারকে আরও বেশি ঋণ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন টাকা ছাপিয়ে (রিজার্ভ মানি) মুদ্রার সরবরাহ বাড়াবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। জুনে রিজার্ভ মানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ডিসেম্বরে এ প্রবৃদ্ধি কমিয়ে ২ শতাংশ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।