• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ফিলিস্তিন ইস্যুর স্থায়ী সমাধান চায় চীন
ছবি তুলতে গিয়ে আগ্নেয়গিরিতে পড়ে পর্যটকের মৃত্যু
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভায় একটি আগ্নেয়গিরির কিনারায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ২৫০ ফুট নিচে পড়ে মারা গেছেন হুয়াং লিহং নামে এক চীনা এক নারী। স্বামী ঝাং ইয়ংয়ের সঙ্গে নীল আগুনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ওই আগ্নেয়গিরি থেকে সূর্যাদয় দেখার ইচ্ছা ছিল তার।   শনিবার (২০ এপ্রিল) আইজেন নামে পূর্ব জাভার একটি আগ্নেয়গিরি পর্যটক পার্কে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। সোমবার (২৩ এপ্রিল) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।     স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, সূর্যদয় দেখার জন্য ওই দম্পতি আগ্নেয়গিরির একেবারে কিনারে চলে গিয়েছিলেন। যে ট্যুরিজম কোম্পানির মাধ্যমে তারা সেখানে গিয়েছিলেন সেই কোম্পানি ট্যুর গাইড বলেছেন, ছবি তোলার জন্য লিহং বারবার গর্তের কিনারে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হলেও শুনছিলেন না তিনি। পরে ফিরে আসার সময় নিজের পোশাকের সঙ্গে পা জড়িয়ে প্রায় ২৫০ ফুট নিচে পড়ে যান তিনি। প্রসঙ্গত, আইজেন তার নীল আগুনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা আসলে সালফিউরিক গ্যাসের দহন থেকে নির্গত নীল আলো। এর গহ্বরটি কাওয়াহ ইজেন নামে পরিচিত, যার অর্থ একাকী গহ্বর। পর্যটক এবং খনি শ্রমিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি সাইট এটি। প্রসাধনী থেকে দিয়াশলাই পর্যন্ত অনেক শিল্পেই এখানকার শক্ত হলুদ সালফার ব্যবহৃত হয়। আগ্নেয়গিরিটি থেকে নিয়মিত বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হলেও, তা সীমিত আকারের হওয়ায় সাইটটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রেখেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। ইন্দোনেশিয়ায় অন্তত ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। লাখ লাখ ইন্দোনেশিয়ান এসব আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বাস করে এবং কৃষিকাজ করে জীবন ধারন করেন, মূলত উর্বর চাষের মাটির কারণে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কাওয়াহ আইজেন পর্যন্ত পর্বতারোহণের সময় মৃত্যু হয় ৫৩ বছর বয়সী এক পোলিশ পর্যটকের। এর আগে ২০১৮ সালে আগ্নেয়গিরিটি বিষাক্ত গ্যাস নির্গত শুরু করার পরে আশপাশের অনেক লোককে তাদের বাড়িঘর খালি করতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং কমপক্ষে ৩০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে একজন ৬৮ বছর বয়সী সুইস ব্যক্তি মাউন্ট আইজেনে আরোহণ করতে গিয়ে পড়ে যান। মারা যাওয়ার আগে তিনি শ্বাসকষ্টের কথা জানান।
কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান
মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর দল পিএনসির বড় জয়
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট : চীন
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় নিহত ১৭, শিশুসহ আহত ৬০
ইসরায়েলকে সহায়তা করায় উত্তাল জর্ডান
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ৩০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান কিন্তু সেগুলো ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগে অনেকগুলো ভূপাতিত করে জর্ডান। আর এতেই সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে দেশটির জনগণ। তবে জর্ডান সরকার জানিয়েছে, আত্মরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ডয়েচে ভেলে। সরায়েলের পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে জর্ডানও ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করার দায়িত্ব নিলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জর্ডান সরকার জানিয়েছে আত্মরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, কারণ এগুলো আমাদের জনগণ ও জনবহুল এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জর্ডানের নাগরিকরা তাদের সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন। জর্ডানের রানিসহ প্রতি পাঁচজনের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত। হুসেইন নামে দেশটির একজন রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, জর্ডান যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে তাতে আমি খুবই বিরক্ত। বিপদের আশঙ্কা থাকায় তিনি তার পুরো নাম উল্লেখ করতে চাননি। এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছে না। আমরা ইরানকে সমর্থন করি না এবং গাজায় এখন যা ঘটছে তার পেছনে ইরানের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি৷ কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে এমন যে-কোনো পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা আছি। মারিয়াম নামে আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, জর্ডানে ইরানের জনপ্রিয়তা নেই। কিন্তু আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র জর্ডানের বাধা দেওয়া ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া প্রত্যাখ্যান করি। আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ ডিডাব্লিউকে বলেন, সপ্তাহান্তে যে ঘটনা ঘটেছে তাকে ‘কখনও ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে তেমনটা বলা যাবে না, বরং জর্ডানের সার্বভৌমত্ব এবং আকাশসীমা রক্ষার জন্য করা হয়েছে'৷ কারণ, ড্রোন বা মিসাইল কোথায় পড়বে তা জানা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ এদিকে জর্ডান সহায়তা করেছে বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে খুশির খবর প্রকাশ সম্পর্কে রিদাসাদ বলেন, এটা ইসরায়েলের প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছু নয়। ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশ্লেষক তাহানি মুস্তফা ডিডাব্লিউকে জানান, সপ্তাহান্তের ঘটনা নিয়ে জর্ডানের নাগরিকেরা বিভক্ত৷কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে জর্ডানের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে মানুষ বিস্তারিত জানে না, কারণ এসব বিষয় নিয়ে এখানে বেশি লেখা হয় না। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে জর্ডানের সংসদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য, পরিবহন ও বিমান বাধা ছাড়াই জর্ডানে ঢুকতে ও ঘুরে বেড়াতে পারবে৷ গাজা নিয়ে আম্মানে বিক্ষোভ শুরুর পর অনেকে জর্ডান থেকে মার্কিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে শুরু করেন বলে ডিডাব্লিউকে জানান মুস্তফা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আম্মানে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তারা ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যে সই হওয়া শান্তি চুক্তি বাতিলেরও আহ্বান জানান।
‘ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফল ইরান’
ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফলতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি। রোববার (১৪ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ইরনা। আইআরজিসি প্রধান বলেন, ইসরায়েলে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাত হেনেছে, সেগুলোর সবগুলোর সম্পর্কে তথ্য জানা যায়নি। তবে সেগুলোর একটি অংশ নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। মাঠপর্যায় থেকে যেসব তথ্য-প্রমাণ এসেছে তাতে দেখা গেছে, ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফলতা পাওয়া গেছে। তিনি জানান, ইসরায়েলে আরও বড় পরিসরে হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে ইরানের। তবে সে পথে হাঁটেনি তেহরান। চলতি মাসের শুরুতে দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালাতে ইসরায়েলের যে স্থাপনাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, শুধু সেগুলো নিশানা করেই হামলা চালানো হয়েছে। হোসেইন সালামি বলেছেন, ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েলের শিক্ষা নেওয়া উচিত। এখন ইসরায়েল যদি ইরানের হামলার পাল্টা জবাব দেয়, তাহলে তেহরান আরও শক্তিশালী হামলা চালাবে। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে নতুন ধাপে প্রবেশ করেছে ইরান। বিশ্বের যেকোনো অংশে ইরানের স্বার্থ, সম্পদ, উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও নাগরিকদের ওপর ইসরায়েল কোনো হামলা চালালে ইরানের তার মাটি থেকে দেওয়া হবে এর জবাব দেবে। এদিকে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, ইসরাইলের আকাশসীমায় পৌঁছানোর আগেই বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। তার দাবি ৯৯ শতাংশ হামলাই প্রতিহত করা হয়েছে। এতে ইসরাইলের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবে, ইরানের দাবি, হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি বিমান ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজার ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যা করে হামাস। পাশপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। এরপর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। দখলদারদের এমন হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ২৪ হাজারের বেশি। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ। ২২৯টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।  
ইরানের এক রাতের হামলা ঠেকাতে যত খরচ ইসরায়েলের
রাতভর ইরানের বিশাল ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকিয়ে দেওয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করতে ইসরায়েলের ১০০ কোটি ডলারের বেশি খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রিম আমিনোচ। রোববার (১৪ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে মিডলইস্ট আই। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়ানেত নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ খবর অনুমান করে জানান রিম আমিনো। তিনি বলেন, রাতারাতি ইরানের বিপুল সংখ্যক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রুখে দেওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করতে ইসরায়েলের ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ হয়েছে। অ্যামিনোচ বলেন, ইসরাইলে আক্রমণ পরিচালনার জন্য ইরান খুবই স্বল্প পরিমাণে ব্যয় করেছে। এই রাতে তাদের ব্যয় ইসরায়েলের ব্যয়ের ১০ শতাংশেরও কম।    গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দুই কমান্ডারসহ ৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হত্যা করে ইসরায়েল। সেই থেকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা চরম পর্যায়ে ওঠে। এরপর প্রতিশোধ হিসেবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েকশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর তথা আইআরজিসি। এছাড়া ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও রকেট হামলা চালানো হয়। ইসরায়েল বলছে, তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান।
ইরানের জব্দ করা ইসরায়েলি জাহাজে ১৭ ভারতীয় নাগরিক
সংযুক্ত আরব আমিরাত উপকূলে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের হাতে আটক ইসরায়েলি কন্টেইনার জাহাজের ২৫ জনের মধ্যে ১৭ জনই ভারতীয় নাগরিক। শনিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি। ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বার্তা সংস্থা ইরনার বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, ‘হেলিবোর্ন অপারেশন’ চালিয়ে হরমুজ প্রণালীর কাছে এমএসসি অ্যারিজ নামের কন্টেইনারবাহী জাহাজটি আটক করা হয়েছে এবং এটি এখন ইরানের আঞ্চলিক জলসীমার দিকে যাচ্ছে।  একটি সূত্র জানিয়েছে, এমএসসি অ্যারিজ নামে একটি কার্গো জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইরান। এতে ১৭ জন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। আমরা তেহরান ও দিল্লিতে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইরানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যাতে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা, কল্যাণ ও দ্রুত মুক্তি নিশ্চিত করা যায়।  জাহাজটির অপারেটর ইতালিয়ান-সুইস গ্রুপ এমএসসি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, ইরানি কর্তৃপক্ষ জাহাজটিতে জব্দ করেছে। আমরা দুঃখের সাথে নিশ্চিত করছি যে, জোডিয়াক মেরিটাইমের সাথে যুক্ত এবং এমএসসির চার্টার্ড গোর্টাল শিপিং ইনকর্পোরেটেডের মালিকানাধীন এমএসসি মেরিজকে ইরানি কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টারে করে জব্দ করেছে।  মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যেই জাহাজটি আটকের ঘটনা ঘটল। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সিরিয়ার দামেস্কে তাদের দূতাবাসের কনস্যুলার সেকশনে বিমান হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। বিমান হামলায় দুই জেনারেলসহ ইরানের ৭ জন নিহত হন। ইরান বলেছে, জাহাজটি উপসাগরীয় ইহুদিবাদী সরকারের (ইসরায়েল) সঙ্গে সম্পর্কিত। vesselfinder.com ও marinetraffic.com জাহাজ চলাচল ট্র্যাক করে এমন দুটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, এমএসসি অ্যারিজ একটি পর্তুগিজ পতাকাবাহী কন্টেইনার জাহাজ এবং এর সর্বশেষ রিপোর্ট করা অবস্থান উপসাগরীয় অঞ্চলে ছিল।   আইআরএনএ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ‘এমসিএস অ্যারিজ’ নামের একটি কন্টেইনার জাহাজ হেলিকপ্টারে অভিযান চালিয়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস নেভির স্পেশাল ফোর্সেস জব্দ করেছে। পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের মধ্যবর্তী হরমুজ প্রণালীর কাছে এই অভিযান চালানো হয়, যা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং 'এই জাহাজটি এখন ইরানের আঞ্চলিক জলসীমার দিকে পরিচালিত হয়েছে'। জাহাজটি জব্দের পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলে সংঘাত বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সতর্ক করে জানিয়েছে, ইরানকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।  
ইসরায়েলি জাহাজ জব্দ করল ইরান
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর নৌ কমান্ডোরা হরমুজ প্রণালীর কাছে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট এমএসসি এআরইএস কন্টেইনার জাহাজ জব্দ করেছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সি। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রথম প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কমান্ডোরা হেলিকপ্টারে করে গুরুত্বপূর্ণ জলপথের কাছে একটি জাহাজে অভিযান চালাচ্ছে। জাহাজটি ছিল পর্তুগিজ পতাকাবাহী এমএসসি মেষ, লন্ডন ভিত্তিক জোডিয়াক মেরিটাইমের সাথে যুক্ত একটি কন্টেইনার জাহাজ। জোডিয়াক মেরিটাইম ইসরায়েলি ধনকুবের আইয়াল ওফারের জোডিয়াক গ্রুপের অংশ। জোডিয়াক গ্রুপ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে এবং এমএসসিকে প্রশ্নগুলি উল্লেখ করেছে, যা তাত্ক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। এমএসসি মেষ সর্বশেষ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুবাই থেকে হরমুজ প্রণালীর দিকে যাচ্ছিল। জাহাজটি তার ট্র্যাকিং ডেটা বন্ধ করে দিয়েছিল, যা এই অঞ্চল দিয়ে চলাচলকারী ইসরায়েল-অনুমোদিত জাহাজগুলির জন্য স্বাভাবিক বিষয়।   Video purportedly from the IRGC boarding of the Israeli-linked MSC ARIES container ship in the Strait of Hormuz. pic.twitter.com/UXOS2EuxKU — Emanuel (Mannie) Fabian (@manniefabian) April 13, 2024 ভিডিওতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস এই হামলার কথা জানিয়েছিল। আমিরাতের বন্দর নগরী ফুজাইরাহের কাছে ওমান উপসাগরে জাহাজটি ‌‘আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে’ বলে জানিয়েছে তারা। ভিডিওতে দেখা যায়, কমান্ডোরা জাহাজের ডেকে বসে থাকা কন্টেইনারের স্তূপের ওপর নেমে পড়েন। জাহাজে থাকা এক ক্রু সদস্যকে বলতে শোনা যায়, 'বাইরে এসো না। ক্রু মেট তখন তার সহকর্মীদের জাহাজের সেতুতে যেতে বলে কারণ আরও কমান্ডো ডেকে নেমে আসে। একজন কমান্ডোকে সম্ভাব্য কভার ফায়ার সরবরাহের জন্য অন্যদের উপরে হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে দেখা যায়। ভিডিওটির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে এপি যাচাই না করলেও বিস্তারিত তথ্য মিলেছে এবং এতে জড়িত হেলিকপ্টারটি ইরানের আধাসামরিক বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডের ব্যবহৃত হেলিকপ্টারটি ব্যবহার করেছে বলে মনে হচ্ছে, যারা অতীতে অন্যান্য জাহাজে অভিযান চালিয়েছে। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাস কম্পাউন্ডের একটি ভবনে হামলা চালানোর পর ইসরায়েল তেহরান থেকে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে দুই জেনারেলসহ ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড ফোর্সের বেশ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হন। ইরান তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জাহাজ আটকের কথা স্বীকার করেনি এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও এ ঘটনা সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে, ২০১৯ সাল থেকে ইরান বেশ কয়েকটি জাহাজ আটকে রেখেছে এবং তার দ্রুত অগ্রসরমান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমের সাথে চলমান উত্তেজনার মধ্যে জাহাজগুলিতে হামলা চালিয়েছে। ওমান উপসাগর হরমুজ প্রণালীর কাছে অবস্থিত, যা পারস্য উপসাগরের সংকীর্ণ মুখ, যার মধ্য দিয়ে সমস্ত তেলের এক পঞ্চমাংশ প্রবাহিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ফুজাইরাহ এই অঞ্চলের একটি প্রধান বন্দর যেখানে জাহাজ নতুন তেলবাহী জাহাজ গ্রহণ করতে পারে, রসদ সংগ্রহ করতে পারে বা ক্রুদের বাণিজ্য করতে পারে। ২০১৯ সাল থেকে ফুজাইরাহ উপকূলের জলসীমায় একের পর এক বিস্ফোরণ ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন নৌবাহিনী ট্যাংকারের ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজে লিমপেট মাইন হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করেছে।
ইরানকে কড়া হুঁশিয়ারি ইসরায়েলের
ইরান যদি রকেট হামলা চালিয়ে যায় তাহলে ইরানকে পরিণামে ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার (১৩ এপ্রিল) আইডিএফের মুখপাত্র আর-এডিএম ড্যানিয়েল হাগারি এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইরানের হামলার মোকাবিলা করতে তৈরি ইসরায়েল। হামাস, হিজবুল্লাহর মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকে মদত দিচ্ছে ইরান। এতে তিনি দাবি করেন, ইরানের মদতেই ইসরায়েলের উপর হামলা চালাচ্ছে হামাস, হিজবুল্লাহ। ইরান সরকারিভাবে সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়। ইরানের জন্যই পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। এদিকে, ইসরাইলে ইরানের হামলার আশঙ্কার মধ্যেই তেল আবিবের একটি কনটেইনার জাহাজ জব্দ করেছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড। এ ঘটনায় ইরানকে পরিণাম ভোগের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরাইল। 
ইসরায়েলে হামলায় প্রস্তুত ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র
ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নিতে শতাধিক ড্রোন এবং কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করেছে ইরান। শনিবার (১৩ এপ্রিল) হতে পারে এ আক্রমণ। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম সিবিএস নিউজ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তজেনা বৃদ্ধি এড়াতে ইরান ছোট আকারের হামলাকে বেছে নিতে পারে। অন্যদিকে, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে গত ১ এপ্রিলে করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের দুই জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হন।  এবার সেই হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান হামলা চালাবে। যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হতে পারে তেহরানের হামলা। বিষয়টির সঙ্গে জানা আছে এমন একজন ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমটি। শুক্রবার  ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপি হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ইরানের হুমকি ‘বাস্তব’।  যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও ইরানের সম্ভাব্য হুমকিকে বাস্তব ও কার্যকর বলে মনে করি। যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের হুমকির আলোকে ওই অঞ্চলে তার নিজস্ব শক্তি পরীক্ষা করে দেখছে এবং পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এ অবস্থায় ইসরায়েলে কর্মরত নিজ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন দূতাবাসের বরাত দিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, নিজ কর্মীদের বৃহত্তর জেরুজালেমের বাইরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, তেল আবিব ও বির শেভা এলাকা এ সতর্কতার আওতামুক্ত থাকবে। টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ‘যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি’ সম্পর্কে একটি ‘বিস্তৃত’ মূল্যায়ন করেছে। আইডিএফ যে কোনো হুমকির বিরুদ্ধে আক্রমণ ও প্রতিরক্ষায় ভালোভাবে প্রস্তুত। তারা যুদ্ধে আছি এবং প্রায় ছয় মাস ধরে উচ্চ সতর্কতায় আছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজার ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যা করে হামাস। পাশপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। এরপর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। দখলদারদের এমন হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ২৪ হাজারের বেশি। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ। ২২৯টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।