• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর আন্দোলনে যাবে জাপা
ক্ষুধা-দরিদ্রতায় অগণিত মানুষ দিশেহারা : জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশের চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বিশ্ব আজ এক ভয়াবহ সংকট অতিক্রম করছে। ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও বৈষম্যে অগণিত মানুষ দিশেহারা। হিংসা, বিদ্বেষ, অসহযোগিতা ও অমানবিকতায় বিশ্ব পরিপূর্ণ। জরুরি ভিত্তিতে এসব সংকটের সমাধান প্রয়োজন। শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে শেরাটন হোটেলে কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। জিএম কাদের বলেন, গাজায় মর্মস্পর্শী দুঃখজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ, নারী, শিশু হতাহতের শিকার হচ্ছেন। তাদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা ও অসহায়-অনিশ্চিত জীবনের হৃদয়বিদারক ঘটনার ছবি ও বর্ণনা প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি বলেন, জেনেভা ঘোষণা অনুযায়ী, সশস্ত্র সংঘাত এবং সহিংসতার কারণে প্রতি বছর ৫ লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া লাখ লাখ মানুষ বছরের পর বছর নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে দেশান্তরিত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার ফলে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। তাদের জীবন অসম্মানজনক ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। ইফতার মাহফিলে আমেরিকান দূতাবাসের চার্জ দে অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস, সিঙ্গাপুরের কনস্যুল শিলা পিল্লাই, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ডেপুটি কাউন্সিলর (পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমি) আরতুরো হাইন্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডেপুটি রাষ্ট্রদূত বার্নড স্পেনিয়ার, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল. ওল্ডস, ডেপুটি চিফ অব পার্টি লেসলি রিচার্ডস, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সেলর ইরোজ রাব্বানী, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সেন্টুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি জাপা চেয়ারম্যান
৪৮ ঘণ্টা না যেতেই রওশনের পার্টি থেকে পদত্যাগ করলেন সেন্টু
নেতৃত্ব পরিবর্তনে ইসিতে চিঠি দিয়ে সাড়া পেল না রওশনপন্থীরা
আমরাই মূল জাতীয় পার্টি : চুন্নু
জি এম কাদের বেইমানি করেছেন : রওশন
জি এম কাদের দলের সঙ্গে বেইমানি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, নির্বাচনে সারাদেশের ২৫০ প্রার্থীকে কোরবানি দিয়েছেন তিনি। তাদের কোনো খোঁজ নেননি। শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে দলের দশম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এ কথা বলেন। রওশন এরশাদ বলেন, এরশাদ এদেশে যে নতুন ধারার রাজনীতির প্রবর্তন করেছিলেন, সেই রাজনীতি হারিয়ে যেতে বসেছিল। আজ এই কাউন্সিল যদি না হতো, তাহলে জাতীয় পার্টি হারিয়ে যেত। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো। আমরা আমাদের  হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আমরা হারিয়ে ফেলতাম। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে এরশাদের নীতি-আদর্শ এবং উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ও সংস্কারের রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের মনে আবার আমরা বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।’  তিনি বলেন, এরশাদের জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি এবং থাকব। অতীতে যারা পার্টি ছেড়ে গেছে, তারা কেউ এরশাদের নীতি-আদর্শ নিয়ে যায়নি। তাই জাতীয় পার্টি কখনো ভেঙেছে- তা আমি মনে করি না। লাঙ্গল প্রতীক এখনো আমাদের অনুকূলে আছে এবং আগামীতেও থাকবে। রওশন এরশাদ আরও বলেন, দলের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করার প্রস্তাব রেখেছি। জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্র চর্চার একটা নিদর্শন আমরা সৃষ্টি করতে চাই। সেই লক্ষ্যে গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটি প্রয়োজনীয় সংশোধনীর প্রস্তাব আনবে।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হলেন রওশন এরশাদ।  শনিবার (৯ মার্চ) দশম জাতীয় কাউন্সিলে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ।  সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত। এ ছাড়া পাঁচজন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।  কো-চেয়ারম্যানরা হলেন শাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়। সুনীল শুভ রায় জাতীয় পার্টির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে, শনিবার (০৯ মার্চ) জাতীয় সংগীত এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটসহ মৎস্যভবন এবং শাহবাগ এলাকা। নানা রংবেঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল। সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন। নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চুড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন।
বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে রওশনপন্থী জাপার সম্মেলন
জাতীয় পার্টির (জাপা) বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে সম্মেলন করছেন রওশন এরশাদ। শনিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউটের সামনে খোলামাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে রওশন এরশাদ ছাড়াও রয়েছেন, জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু। ফলে জাতীয় পার্টি নামে আরও একটি দলের সৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে জাতীয় পার্টি ভেঙে একই নামে পাঁচটি দল হয়েছে। রাজধানী ছাড়া ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেবর-ভাবির কোন্দলের মাত্রা চরমে ওঠে। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা সরাসরি পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেন। ফল বিপর্যয়ের জন্য দোষারোপ করেন। তাদের পদত্যাগও চান পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই। এ ঘটনা কেন্দ্র করে দলে থাকা দীর্ঘদিনের মিত্রদের একে একে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের। এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জাপার স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হন রওশন এরশাদ। মূলত রওশন অংশে তিনি ছাড়া বাকি শীর্ষ নেতাদের সবাই দল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়েই নতুন করে দল গঠন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা। তবে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রওশন এরশাদকে বহিষ্কার করেননি জিএম কাদের। দলটির একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপায় সবচেয়ে বড় ভাঙন হতে যাচ্ছে আজ শনিবার। যদিও ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না রংপুরসহ ১৭টি জেলা। অন্য জেলার নেতাকর্মীরাও কমবেশি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। বিভক্তি প্রসঙ্গে রওশনের সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব কাজী ফিরোজ রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অনেক চেষ্টা করেছি, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। জাপা ফের ভাঙছে। এজন্য কে দায়ী, তা হয়তো সময় মূল্যায়ন করবে। প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরু হয়। এরপর নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে অন্তত ছয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে দলটি। তারপর থেকে এরশাদ-রওশন ও জিএম কাদের জাপার মূল ধারায় ছিলেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনা প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই নেতৃত্ব নিয়ে রওশন ও জি এম কাদেরের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।
‘কোথাও কোথাও নির্বাচনি ফল পূর্বনির্ধারিত ছিল’
সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন ধরনের ভোট হয়েছে। কোথাও কোথাও ইলেকশন যেভাবেই হোক ফল পূর্বনির্ধারিত ছিল, শিট বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোথাও ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। কোথাও আবার টাকা, অস্ত্র ও পেশিশক্তির দাপটের নির্বাচন হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা ব্যাপকভাবে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পরে জিএম কাদের হেসে বলেন, এটা নাও হতে পারে। দ্রব্যমূল্যের সিমাহীন ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কিছুসংখ্যক ব্যক্তি আমদানি করছেন। এতে সিন্ডিকেট হওয়াটা স্বাভাবিক। এসব ব্যবসায়ী সরকারের নীতিনির্ধারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। বিকল্প না থাকার কারণে সরকার তাদের হাতে জিম্মি। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বক্তব্য তদন্তকাজকে বিলম্বিত করতে উৎসাহিত করতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, সংবিধান ও আইন যে কোনো ধরনের নির্বাচনকে বৈধতা দিতে পারে। কিন্তু সবক্ষেত্রে তা সঠিক বা ভালো নির্বাচন বলে গ্রহণযোগ্য হবে, সেটা সব সময় নিশ্চয়তা দিতে পারে না। জিএম কাদের বলেন, ষষ্ঠ নির্বাচনে ১৫ ফেব্র“য়ারি ২১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সব দল নির্বাচনে না এলে ভোট স্বতঃস্ফূর্ত হয় না। খুব গ্রহণযোগ্য হয়েছে সপ্তম, অষ্টম, নবম সংসদ নির্বাচনে ৭৫-৮২ শতাংশ ভোট পড়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির একটি দল না এলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা কঠিন। এতে মানুষ ভোট দিতে আসে না। যে প্রেক্ষাপটে ছিল তাতে ৪২ শতাংশ ভোট দিতে গেলে সব ভোটকেন্দ্রের সামনে ৮ ঘণ্টা লাইন থাকার কথা। কিন্তু তা ছিল না। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব বড় দল নির্বাচনে অংশ নিলে এই মুহূর্তে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভোট পড়বে। জিএম কাদের বলেন, অনেকে বলেছেন ঘণ্টায় তিন চারটার বেশি ভোট হয়নি। আমি আমার কথা বলছি না। ধারণার কথা বলছি। তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী বৈধ হিসাবে গণ্য করা যায়। আইন অনুযায়ী তা বৈধ হয়েছে। কেউ বেআইনি ঘোষণা করেনি। কিন্তু সিংহভাগ মানুষ মনে করে ভালো নির্বাচন হয়নি, সঠিকভাবে জনমতের প্রতিফলন হয়েছে বলে মনে করে না। আমি মনে করি, আইনকানুন ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। যারা দেখার কথা তারা এড়িয়ে গেছেন, অনেক সময় লঙ্ঘনে সহায়তা করেছেন। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে দুর্নীতির প্রসঙ্গ আসেনি উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দুর্নীতিতে দেশ সয়লাব হয়ে গেছে। এটা বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এটি প্রত্যেক সমাজের অভিশাপ। দুর্নীতির কারণে ভোগান্তি বাড়তে থাকে। এটা সমাজ উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করে। সরকার সাধারণত দুর্নীতি স্বীকার করে না। এ সময় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকের কথা তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, ২০০১ সাল থেকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। যার প্রথমে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের সময় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ১৩তম স্থানে ছিল বলে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, বর্তমানে আমরা ১০ম স্থানে আছি। মানে দুর্নীতি অবস্থান এখন নিচের দিকে নেমে গেছে। এটা হলো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট।
বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের দায় সরকারের : চুন্নু
রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের দায় সরকারের, সরকারের সংস্থা এবং সরকারের অফিসের বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।  মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘প্রত্যেকটা এলাকায় রাজউকের কর্মকর্তা থাকেন। সেই কর্মকর্তারা কোথায়? এক একটা ভবন তৈরি করা হয় একটা উদ্দেশ্যে, কিন্তু যায় আরেকটা উদ্দেশ্যে। এই যে মানুষগুলো মারা গেল এর জবাব দেবে কে? এর দায়দায়িত্ব সরকারের, সরকারের সংস্থা এবং সরকারের অফিসের।’ তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ কর দেয় সরকার পরিচালনার জন্য। সরকারের দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের ছয়টি সংস্থার ছাড়পত্র লাগে, ছাড়পত্র দেওয়ার পরে ভবনগুলোর নজরদারি নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক একটা সময় একটা ঘটনা হয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় তদন্ত করা হবে, তদন্ত টিম করা হয়। কিন্তু এরপর আর কোনো ফলোআপ নেই। এইভাবে দেশ চলতে পারে না। সরকারের জবাবদিহি করার দরকার। দায়দায়িত্ব নিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘ধানমন্ডির সাতমসজিদ এলাকায় একটা ভবনে ১৫টি রেস্টুরেন্ট। সেগুলোর কোনো অনুমতি নেই। ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোডের রাস্তার পাশে ভবনে কয়েকশ’ রেস্টুরেন্ট, কিন্তু সেগুলোর অনুমতি নেই। খিলগাঁওয়ের তালতলায় বহুতল ভবনে একই অবস্থা। আরও এরকম ঘটনা ঘটবে। যদি সরকার এ বিষয়ে সচেতন না হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে বলব, এ রকম ঘটনার জন্য যারা যারা দায়ী, সেটা রাজউক হোক, ফায়ার ব্রিগেড হোক কিংবা পরিবেশ হোক তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার ব্যবস্থা করুন।’
রোজায় বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি চুন্নুর
রোজা সামনে রেখে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ব্যাপারটি অসহনীয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তাই এই মুহূর্তে দাম না বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ দাবি জানান জাপা মহাসচিব।  মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আজকেই দেখলাম সরকার বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে ৪০ থেকে ৭০ পয়সা বাড়িয়েছে এবং গ্যাসের দামও বাড়িয়েছে। ডলারের ডি-ভ্যালুয়েশন এবং ভর্তুকি কমানোর দোহাই দিয়ে ভদ্র ভাষায় আবার সেটাকে আপনারা বলছেন সমন্বয়। কিন্তু আসলে তো মূল্যবৃদ্ধি। তিনি বলেন, আমরা জানি না, বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট উৎপাদন বা কিনতে কত খরচ হয় সরকারের। এটা আমাদের জানানো হয় না। কিন্তু, সব সময় বলে আসছেন যে, হাজার হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, সেই ভর্তুকি কমাতে হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি কমাবেন। কিন্তু কীভাবে কমাবেন? জনগণ নিষ্পেষিত বাজারে যেতে পারছে না, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি মানে এর সঙ্গে অনেক জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি হবে। কারণ, বিদ্যুৎ দিয়ে আমরা অনেক পণ্য উৎপাদন করি, সেই পণ্যগুলির দাম বৃদ্ধি পাবে। সরকারে উদ্দেশে চুন্নু আরও বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছেন। নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরে অনেক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গ্যাসনির্ভর। সেইসব ফ্যাক্টরিতে গ্যাস দিতেও পারছেন না সার্বক্ষণিক। এমনিতেই ব্যবসায়ীদের লোকসান হচ্ছে, উৎপাদন কমে যাচ্ছে, সেখানে আবারও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছেন।  জাপা মহাসচিব এরপর বলেন, একটি সরকার, জনগণ অনেক আশা করে মাত্র এক মাস আগে নির্বাচিত করলো। আর সেই সরকারই যদি এইভাবে জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো এভাবে রোজার আগে আগে বিদ্যুতের দাম, গ্যাসের দাম বাড়ায়, এটা অসহনীয়। আমি আমাদের দলের পক্ষ থেকে সরকারকে বিনীত অনুরোধ করব, অন্তত পক্ষে এই গ্যাসের দাম ও বিদ্যুতের দামটাকে এই মুহূর্তে বৃদ্ধি করবেন না। সরকার একটা স্থিতিশীলতায় আসুক, দেশের মানুষ একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আসুক, অর্থনীতি একটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসুক তখন চিন্তা করেন, এখন চিন্তটা বাদ দেন।