• ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১
logo
হাসনাত-সারজিসকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণার প্রতিবাদে জাপাকে আল্টিমেটাম  
সারজিস ও হাসনাতকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির নেতা ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। সোমবার (১৪ অক্টোবর) রংপুর সেন্ট্রাল রোড জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জেলা ও মহানগরের যৌথ সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ যে ঘোষণা দিয়েছে- তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।’ ফেসবুকে সারজিস ও হাসনাতের লেখার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রংপুরের মাটিতে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনও প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার- আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনও আলোচনা নয়। রংপুরে কোনও রাজনৈতিক সংলাপে যদি জাতীয় পার্টিকে ডাকা না হয়, সম্মান দেওয়া না হয়- তাহলে জাতীয় পার্টি নিজেই অধিকার আদায় করে নেবে। এর জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সংলাপ করছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।  গত ৭ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।  পোস্টে সারজিস আলম লিখেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টির মতো মেরুদণ্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদের প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে আলোচনায় ডাকে?’ হাসনাত লিখেছিলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’ আরটিভি/এসএপি
জাপা সংলাপে ডাক পেলে বিরোধিতা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
শেখ হাসিনা একদলীয় শাসন কায়েম করতে চেয়েছিলেন: জিএম কাদের
ভুল করে থাকলে জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী জাপা: জি এম কাদের
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পরিক্ষিত বন্ধু: জি এম কাদের
মামলা দিয়ে জাতীয় পার্টিকে নির্যাতন করেছে আ.লীগ ও বিএনপি: জি এম কাদের
মামলা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জাতীয় পার্টিকে নির্যাতন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জিএম কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করতে হবে। যারা আহত হয়েছে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে এবং ভবিষ্যতে তারা যেন হারিয়ে না যায়, সে জন্য রাষ্ট্রকে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসনকে দলীয়করণ মুক্ত করতে হবে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। ট্রুথ কমিশন গঠন করে স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের অর্থ সরকারী কোষাগারে ফেরত দেয়ার সুযোগ দেয়া যেতে পারে।  তিনি বলেন, আমরা চাই, সরকার রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। সাধারণ মানুষের ধারণা, নির্বাচিত সরকারের চেয়ে অনির্বাচিত সরকার বেশি সুশাসন দিতে পারে। আমরা মনে করি, দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। পুলিশের ভয়ভীতি দূর করে তাদের মাধ্যমে মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের যদি পেটের ভাত ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় তাহলে, তারা নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে রাজি আছে। সরকার যেভাবে চাইবে আমরা সংস্কারের জন্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে।  এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন জুলাই মাসের ১ তারিখে শুরু হয়েছে। ৩ তারিখে সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে আমি জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হিসেবে কোটার বিরোধিতা করে বক্তৃতা করেছি। আমরা সবসময় বলেছি, কোটা পদ্ধতি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি। আমরা বলেছি, বৈষম্যবিরোধী যেকোনো আন্দোলনে দেশের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। কোটা পদ্ধতি ছিল সংবিধান পরিপন্থি। কারণ, সংবিধানে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা বরাদ্দের কথা আছে কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের কথা নেই।  তিনি বলেন, গত ৬ জুলাই গাজীপুর জাতীয় পার্টির সম্মেলনে আমি ছাত্রদের উদ্দেশে বলেছি, তোমরা শহীদ মিনারে যাও, শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উজ্জ্বল প্রতীক। এ ছাড়া প্রতিদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বক্তৃতা ও বিবৃতি দিয়েছি। ছাত্র ও ছাত্রীদের ওপর পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানিয়েছি প্রতিদিন। আন্দোলন চলাকালে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে এবং উপযুক্ত বিচার চেয়ে বক্তৃতা ও বিবৃতি দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের যখন আটকে রাখা হয়েছিল আমরা তাদের মুক্তির জন্য কথা বলেছি। আওয়ামী লীগ সব সেক্টরেই বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল। যেহেতু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা আমাদের ব্যানারে সমর্থন চায়নি তাই, আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া ছিল তারা যেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও রংপুর সহ সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। এই আন্দোলনে রংপুরে আমাদের নেতাকর্মীরা অনেকেই কারাবরণ করেছে এবং অনেকেই আহত হয়েছে। আমরা সংসদে সত্যিকারের বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করেছি। তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা অংশ নেয়নি। ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে ২৭০ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছে। আমি সরকারের মন্ত্রী থেকেও নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। বিএনপি’র দায়ের করা একটি মামলা ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করেছে। আমার ভাবিকে (রওশন এরশাদ) দিয়ে সরকার জাতীয় পার্টির মধ্যে একটি বিভাজন সৃষ্টি করেছিল। জাতীয় পার্টির সকল সিদ্ধান্ত অমান্য করে তিনি জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে নিয়েছে। জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশ অনুযায়ী আমি সংবাদ সম্মেলন করে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। মামলা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জাতীয় পার্টিকে নির্যাতন করেছে। মঞ্জুর হত্যা মামলা দিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ফাঁসির ভয় দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি সহ সব দলই অংশ নিয়েছিল। আমরাও নির্বাচনে ছিলাম। ২০২৪ সালের নির্বাচন থেকে আমরা বার বার চলে আসতে চেষ্টা করেছি। আমাদের দেশের মিডিয়া এবং সচেতন মানুষ জানে জাতীয় পার্টির গলায় ফাঁস লাগিয়ে নির্বাচনে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আমাদের দলের রাজনীতি করতে দেয়নি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত হয়েছি। ২০২৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন অপশন ছিল না। আমাদের দল হয়তো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু দলটি বেঁচে গেছে। দল না থাকলে আমাদের রাজনীতি থাকবে না। তাই, দল বাঁচানো আমাদের কাছে জরুরি ছিল। নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরেও আমরা বলেছি, নির্বাচন সঠিক হয়নি। কোন কোন আসনে সরকার কোন হস্তক্ষেপ করেনি। যেমন আমার নির্বাচনী এলাকায়। কোথাও কোথাও সরকারের নির্দেশনা ছিল যে যেভাবে পারো জিতে আসো। সেখানে কালো টাকা বা পেশি শক্তি কোন বিষয় ছিল না। তৃতীয় নির্দেশনা ছিল নির্বাচনে যে যাই করুক তাদের তালিকা অনুযায়ী বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।  তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পর বক্তৃতা ও প্রবন্ধে আমরা প্রমাণ করেছি, ওই সময়ে কোনভাবেই এতো ভোট কাউন্ট হওয়া অসম্ভব। সংসদে এবং সংসদের বাইরে আমরা এসব কথা বলেছি। আমাদের দল ও সংসদীয় দলকে সবসময় আওয়ামী লীগ ডিস্টার্ব করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জনের জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন সংস্থা আমাদের সেই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে দেয়নি। মূল জাতীয় পার্টি সবসময় জনগণের সাথে ছিল, জনগণের সাথে থাকবে। আমরা নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচন হতো। আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে: প্রস্তাব জাপার
প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিটি দল সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার যে ব্যবস্থা এবং যেখান থেকেই স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব। এই জায়গায় যেন ভারসাম্য তৈরি করা হয়, সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে জাপা নেতারা এ প্রস্তাব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তার সঙ্গে ছিলেন দলের সিনিয়র নেতারা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তির দুই মেয়াদের বেশি না থাকার প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় পার্টি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদ এবং নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাবও দেওয়া। এছাড়া কোনো ব্যক্তি যেন‌ একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা হতে না পারে সেই প্রস্তাব দিয়েছে জাপা। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ছাত্র আন্দোলনের যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের বীর সেনা উপাধি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় জি এম কাদের প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি দুবারের বেশি সময় যেন না থাকেন। এ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে ব্যাপক হারে সংস্কার করা সম্ভব নয়। আপনি যেহেতু সুযোগটুকু পেয়েছেন তাই ব্যাপক সংস্কার করতে পারবেন। আর এই সংস্কার করতে গিয়ে যতটুকু সময় প্রয়োজন সেই সময় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেওয়ার হবে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, দেশের প্রশাসন বিচার বিভাগ এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্বাচিত সরকার হলে সেই কাজগুলো করতে চায় না। আমাদের চেয়ারম্যান বলেছেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকার জনগনের অকুন্ঠ সমর্থণ আছে। দেশের মানুষ আশা করে আপনারা কাজগুলো করবেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধতে ভারসাম্য আনতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সেসব নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভালো নির্বাচন হলে নির্বাচিত সরকার যে ভালো কাজগুলো করবেন সেটা অনেক সময় করেন না। দেশের স্বাধীনতার পর থেকে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তারাই কম বেশি ভুল-ত্রুটি করেছে বলে দাবি করেন চুন্নু। তিনি বলেন, আমাদের অনেক ভুল ত্রুটি আছে। যেটুকু সময় প্রয়োজন সেটুকু দেওয়া হবে।
ডিআইজিসহ ডিএমপির ১০ শতাংশ কর্মকর্তা এখনও অনুপস্থিত 
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দলের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আবার কেউ কেউ দেশেই রয়েছেন আত্মগোপনে। ডিএমপির সকল কার্যক্রম শুরু হলেও এখনও কিছু কর্মকর্তা অনুপস্থিত দেখা গেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বেঁধে দেওয়া শেষ সময় ছিল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) । কিন্তু সময় পার হয়ে গেলেও এখনও ডিএমপির উর্ধ্বতন ১০ শতাংশ কর্মকর্তারা অনুপস্থিত। এ তালিকায় রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারাও।  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে চাকরিতে যোগদান না করলে ধরে নেওয়া হবে তারা চাকরিতে ইচ্ছুক নন। তবে বেশির ভাগ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও এখনও কিছু কর্মকর্তাদের কক্ষের সামনে তালা ঝুলছে। বুধবার পর্যন্ত আওয়ামীপন্থি হিসেবে পরিচিত ডিএমপির ১০ শতাংশ কর্মকর্তা কাজে যোগ দেননি। ডিএমপি সূত্র বলছে, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ অন্তত ১০ শতাংশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কাজে যোগ দেননি। এর মধ্যে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। তবে উপপরিদর্শক ও পরিদর্শক পদমর্জাদার প্রায় শতভাগ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছে। তবে যারা এখনও অনুপস্থিত রয়েছে তাদের মধ্যে প্রায়ই অসুস্থ অবস্থায় আছেন। ডিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, ডিএমপি সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ ও প্রশাসন বিভাগসহ দুই-একটি ইউনিটের সদস্যরা পুরোদমে অফিস করছেন। বাকিদের কক্ষে তালা ঝোলানো দেখা যায়। আবার অনেকের ফোনও বন্ধ রয়েছে। 
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিতে হবে: চুন্নু
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ে সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) দলের চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর দিনই জাপার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রথম কাজ হচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। পুলিশ বাহিনীর যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। আন্দোলনে যেসব নেতা শহিদ হয়েছে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একইসাথে প্রত্যেক পরিবারে অন্তত একজনের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। থানা লুট ও পুলিশ হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। রফতানি বাণিজ্য অগ্রাধিকার, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ফ্রিল্যান্সারদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে। দ্রুততার সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। পাঠ্য বইয়ের অসঙ্গতি দূর করতে হবে। দ্রুততার সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে চুন্নু বলেন, পাঠ্য বইয়ের অসংগতি দূর করতে হবে। নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রভাবমুক্ত করারও দাবি জানানো হয় জাপার পক্ষ থেকে। বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ পৃথকীকরণ ব্যবস্থা এবং উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের আইন করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সংসদীয় পদ্ধতীতে প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করতে হবে। একজন নাগরিক যেন ২ বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। আবার যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি যেন সংসদ নেতা হতে না পারেন। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবিও জাপার। গত ১৫ বছরে দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি, আমলা, পুলিশসহ সবার দুর্নীতির তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইনের মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। উপরোক্ত এবং দেশের রাজনৈতিক শক্তি ও সরকার যদি আরও সংস্কার প্রয়োজন মনে করে, তা সম্পন্ন করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবিও জানান জাপা মহাসচিব। এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, নাজমা আকতার, আলমগীর শিকদার লোটন, মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হেলাল, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনূস আমাদের অহংকারের ধন: জি এম কাদের
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনূস আমাদের অহংকারের ধন। ক্ষুধা ও দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার যে ধারণা তিনি প্রবর্তন করেছেন তা সারা বিশ্বের সামনে এক অনন্য মডেল। বিশ্ববাসীর কল্যাণে ড. ইউনূসের প্রতিটি কর্মকাণ্ড ঈর্ষনীয় সাফল্য পেয়েছে। বুধবার (৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। জি এম কাদের বলেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিকল্প হয় না। ড. ইউনূসের নেতৃত্বকে সহায়তা দিতে জাতীয় পার্টি প্রস্তুত। বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে ড. ইউনূস সফল হবেন। তার নেতৃত্বেই ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা শুরু হবে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খুনাখুনি, চুরি, ডাকাতি ও হাইজ্যাকের খবর আসছে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আছে। স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া জাতির মাঝে আতঙ্ক থাকবে কেন? দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
কোটা সংস্কার করতে গিয়ে ছাত্ররা জাতিকে মুক্তি দিয়েছে: জি এম কাদের
কোটা সংস্কার করতে গিয়ে ছাত্ররা জাতিকে মুক্তি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের। সোমবার (৫ আগস্ট) এক অভিনন্দন বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জি এম কাদের আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্র সমাজকে বীরোচিত অভিনন্দন জানান। তিনি শহীদ ছাত্রনেতাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাতও কামনা করেন। সেই সঙ্গে শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান জি এম কাদের। এ ছাড়া আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং আন্দোলনে গ্রেপ্তার ও আটক রাজনৈতিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন তিনি। জি এম কাদের বলেন, কোটা সংস্কার করতে গিয়ে ছাত্ররা জাতিকে মুক্তি দিয়েছে। আন্দোলনের ছাত্ররাই আমাদের মুক্তির দূত। তাদের এই ত্যাগ জাতি কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণে রাখবে। দেশবাসীকে ধৈর্যের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আহ্বান জানান তিনি।
মানুষ প্রতিটি হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত বিচার চায়: জি এম কাদের
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে বিচারকার্য শুরু করতে হবে। শনিবার (৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। বিবৃতিতে জি এম কাদের বলেন, ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি চালু না হওয়ায় সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারছে না। এতে তথ্য আদান-প্রদান বিঘ্নিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। আবার, দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা স্বজনদের খোঁজ নিতে পারছে না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় না পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে। যা দেশের জন্য খুবই ভয়াবহ। তিনি আরও বলেন, অপরদিকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ গমেনেচ্ছু ছাত্ররা যোগাযোগ করতে পারছে না বিদেশের সঙ্গে। ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু না হলে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়ে, শতশত মানুষের জীবন নিয়ে রাষ্ট্র আবার শোক পালন করছে। দেশের মানুষ এ ধরনের রাষ্ট্রীয় শোক দেখতে চায় না, দেশের মানুষ চায় প্রতিটি হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সে অনুযায়ী বিচার। আমরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ভবিষ্যতে যেন এমনভাবে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা না হয় সেজন্য সরকারকে সতর্ক করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা।