• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে
পাকিস্তানে সাংবাদিক অপহরণের দায়ে দুই পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
ডেইলি জাংয়ের সাংবাদিক মোহাম্মদ নাদিমকে অপহরণ ও হয়রানির অভিযোগে পাকিস্তানের সিন্ধু কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্টের (সিটিডি) দুই কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদেরকে এ বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিটিডি পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) আসিফ এজাজ শেখ জানান, রেসকোর্সের কাছে একটি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পয়েন্ট থেকে ওই সাংবাদিক ও আরেক ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে সিটিডি সিভিল লাইনস থানায় নিয়ে আসে তারা। সিটিডির সিনিয়র পুলিশ সুপার ইমরান শওকত প্রাথমিক তদন্ত করেছেন। যার ভিত্তিতে সিটিডি সদস্য জয়নুল আবিদিন এবং কালাই খান নামে দুই কর্মীকে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ডিআইজি এজাজ শেখ বলেন, ১১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সিটিডির গোয়েন্দা শাখার দুই পুলিশ কনস্টেবল নাদিম ও মুহাম্মদ রিয়াজকে সন্দেহভাজন হিসেবে সিটিডি কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সিটিডি সদস্য জয়নুলের দাবি ২৯ জানুয়ারি অফিসে যাওয়ার সময় একটি বাস থেকে তার মোবাইল ফোনটি চুরি হয়েছিল। কনস্টেবল জয়নুল সেদিনই ফ্রেরে পুলিশকে চুরির বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ১১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩টায় একই বাসে ভ্রমণের সময় তিনি ‘দুই সন্দেহভাজনকে’ দেখতে পান, যারা সম্ভবত তার মোবাইল ফোন চুরি করেছিলো।  সিটিডি কমপ্লেক্সে পুলিশ অফিসারকে জানানো হয়েছিল যে, বিষয়টি সন্ত্রাস দমনের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং সন্দেহভাজনদের ফ্রেরে থানায় নিয়ে যাওয়া উচিত কারণ বিষয়টি মূলত সেখানে রিপোর্ট করা হয়েছিল। শেখ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাদিম ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তিনি অপরাধী নন এবং তিনি দৈনিক জাং সংবাদপত্রের জন্য কাজ করেন। নাদিমকে তার প্রেস ক্রেডেনশিয়াল যাচাইয়ের পরে সিটিডি গার্ড রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।  অন্য সন্দেহভাজনকে ফ্রেরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সন্ধ্যা ৭ টায় ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করার পরে তাকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ডিআইজি শেখ বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করেছেন।
পাইলট-ক্রুদের রোজা রাখায় নিষেধাজ্ঞা
বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট
শপথ নিয়েছে শাহবাজ শরিফের নতুন মন্ত্রিসভা
প্রথা ভেঙে পাকিস্তানের ফার্স্ট লেডি হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট কন্যা
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হলেন আসিফ আলী জারদারি
পাকিস্তানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি। শনিবার (৯ মার্চ) পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। সংবিধান অনুযায়ী, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ও চারটি প্রাদেশিক পরিষেদের নবনির্বাচিত সদস্যরা নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন। ৬৮ বছর বয়সী আসিফ আলী জারদারি পিএমএলএন এবং পিপিপির যৌথ প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সুন্নি ইত্তেহাজ কাউন্সিলের (এসআইসি) মাহমুদ খান আচাকজাই। নির্বাচনে আসিফ আলী জারদারি ২৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছেন ১১৯ ভোট। আসিফ আলী জারদারি এখন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভীর স্থলাভিষিক্ত হবেন। গত বছর আরিফ আলভীর প্রেসিডেন্ট পদে থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেকটোরাল কলেজ গঠিত না হওয়ায় তিনি আরও এক বছর দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে, জারদারি ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিন পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম বেসামরিক ব্যক্তি যিনি দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।
ইমরান খানের কারাগারে হামলার চেষ্টা, আটক ৩ 
পাকিস্তানের আদিয়ালা কারাগারে হামলার চেষ্টা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তবে, নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় হামলার চেষ্টাটি ব্যর্থ হয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি দেশটির কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্টের। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে এ ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় কারাগার এটি। এ কারাগারেই জেল খাটছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। খবর ডনের।  স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ কারাগারে ঢুকেছিলেন হামলাকারীরা। পরে তাদেরকে আটক করে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আটক সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তান থেকে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের এক মুখপাত্র।  স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ খালিদ হামদানি বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে-স্বয়ংক্রিয় ভারী অস্ত্র, হ্যান্ড গ্রেনেড, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) এবং জেলের মানচিত্র। জেলখানার আশপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এখনও তল্লাশি চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, কারাগারটিতে ইমরান খান ছাড়াও এই মূহুর্তে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বন্দি আছেন ।
ফের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পিএমএল-এনের সভাপতি শাহবাজ শরিফ। এতে তিনি ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন দেশটির। শাহবাজ শরিফ ২০১ ভোট পেয়েছেন। ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান পেয়েছেন ৯২ ভোট। রোববার (৩ মার্চ) দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক এ ঘোষণা দেন। খবর দ্য ডন। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে দেশটির ১৬তম সাধারণ নির্বাচনের প্রায় দু’মাস পর জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। এই অধিবেশনের কেন্দ্রে ছিল ২৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে সরাসরি ভোটগ্রহণ পর্ব। এবারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পেছনে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুতাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টিসহ ৭টি দলের সমর্থন পেয়েছেন।  পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী হতে হলে কোনো প্রার্থীকে জাতীয় পরিষদের ৩৩৬ সদস্যের মধ্যে ১৬৯ জনের ভোট পেতে হয়। যদি প্রধানমন্ত্রী পদে দুইয়ের অধিক প্রার্থী থাকেন এবং কোনো প্রার্থীই সংখ্যাগরিষ্ঠতা (১৬৯ ভোট) পেতে ব্যর্থ হন; তবে আবারও ভোট নেয়ার বিধান রয়েছে। প্রথম দফায় সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুজন পরবর্তী দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যিনি ৫১ শতাংশ ভোট পাবেন, তিনি পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। দেশটির জাতীয় পরিষদে মোট ৩৩৬টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৭০টি আসন সংরক্ষিত। নারীদের ৬০টি ও সংখ্যালঘুদের জন্য ১০টি। তবে সংরক্ষিত আসনের সদস্য নির্বাচন ছাড়াই আজ প্রধানমন্ত্রী পদে ভোট হয়। মিয়া মুহাম্মদ শাহবাজ শরীফ জন্ম ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫১। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১১ এপ্রিল তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিশিষ্ট রাজনৈতিক শরীফ পরিবারের সদস্য, তিনি মিয়া শরীফ এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের ভাই, যিনি পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এন) সভাপতিও ছিলেন। শাহবাজ শরীফ ১৯৮৮ সালে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত হন এবং ১৯৯০ সালে জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি আবার পাঞ্জাব অধিবেশনে নির্বাচিত হন এবং বিরোধীদলীয় নেতা হন। ১৯৯৭ সালে তৃতীয়বারের মত নির্বাচন করে শরিফ ২০০৫ সালে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর শরিফ কিছু বছর সৌদি আরবে স্ব-নির্বাসনে যান এবং ২০০৭ সালে পাকিস্তানে আসেন। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রদেশের পিএমএল-এন বিজয়ী হওয়ার পর শরীফ দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিন। ২০১৩ সালে তিনি তৃতীয়বার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে হেরে গেল ইমরানের দল
অবশেষে পাকিস্তান পেল নতুন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় নির্বাচনে ভালো করলেও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে হেরে গেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। আর এতেই মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর সভাপতি শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। এতে তিনি ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন দেশটির। শাহবাজ শরিফ ২০১ ভোট পেয়েছেন। ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান পেয়েছেন ৯২ ভোট। এর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ অচলাবস্থা থেকে বের হতে চলছে দেশটি। রোববার (৩ মার্চ) দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক এ ঘোষণা দেন। খবর দ্য ডন। নির্বাচনের আগে পিএমএলএন-পিপিপির নেতৃত্বে সাত দল জোট গঠন করে। তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সাবেক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের নাতি ও ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের মহাসচিব ওমর আইয়ুব খান। তিনি অবশ্য সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) ব্যানারে প্রার্থী হয়েছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী ইমরানপন্থি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এই দলের হয়েই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে উপস্থিত হন।
চার মামলায় জামিন পেলেন ইমরান খান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে চার মামলায় জামিন দিয়েছেন লাহোরের সন্ত্রাস বিরোধী আদালত।  শুক্রবার (০১ মার্চ) জিলে শাহ হত্যা, জামান পার্কের বাইরে পুলিশের ওপর হামলা, পিএমএল-এন’র অফিস এবং একটি কন্টেনারে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে করা মামলাগুলোয় জামিন পান ইমরান খান। শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুরের রায় দেন বিচারক আশাদ জাভেদ। একইসঙ্গে প্রতিটি মামলায় আবেদনকারীকে ৫ লাখ রুপির বন্ড প্রদানের নির্দেশ দেন তিনি। খবর ডনের।     শুনানি চলাকালে কারাবন্দি ইমরান খানের জামিন আবেদনের বিরুদ্ধে যুক্ততর্ক উপস্থাপনকারী বিশেষ আইনজীবী রানা শাকিল বলেন, গত বছরের ৯ মে’র হামলায় অন্যতম মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইমরান খান। এছাড়া তার নির্দেশেই সেনাবাহিনীর স্থাপনায় হামলা করা হয়।  এ সময় বিচারক আশাদ জাভেদ ওই আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, কর্মীরা যেন হামলা চালায় সেজন্য ইমরান খান কী তার এক্স হ্যান্ডেলে কোনও পোস্ট দিয়েছিলেন? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি আইনজীবী রানা শাকিল। তবে তিনি বলেন, ইমরান খান গ্রেপ্তারের আগে হামলা চালানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।  এদিকে ইমরান খানের আইনজীবী সালমান সাফদার বলেন, যে মামলায় ইমরান খানতে অভিযুক্ত করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইমরান খান পুলিশ স্টেশনে হামলা এবং জিলে শাহকে হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়।   
পাকিস্তানের নবগঠিত সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে বাইডেনকে চিঠি
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের ২১ দিন পর জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। অধিবেশনের প্রথম দিনে ব্যাপক হট্টগোল আর বিক্ষোভের মধ্যে শপথ নেন পার্লামেন্টের নতুন সদস্যরা। এদিকে দুদিন বাদেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের নবগঠিত সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি লিখেছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৩১ জন সদস্য। একই অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকেও।  শুক্রবার (১ মার্চ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে লেখা এক চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেসের ৩১ জন সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। এতে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও জালিয়াতির সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। চিঠিতে এই অনুরোধের পাশাপাশি রাজনৈতিক বক্তৃতা বা কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য যাদের আটক করা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দিতে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের এই ধরনের মামলার তথ্য সংগ্রহ করার এবং তাদের মুক্তির পক্ষে সোচ্চার হওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে চিঠিতে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে লেখা চিঠিটিতে কংগ্রেসম্যানরা আরও অনুরোধ জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে যেন স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয় যে, নির্বাচনে সহিংসতা ও জালিয়াতির ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক ও অন্যান্য সহযোগিতা স্থগিতের মতো পদক্ষেপ ব্যবহার করতে পারে। রয়টার্স বলছে, মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৩১ জন ডেমোক্র্যাটিক সদস্যের স্বাক্ষরিত ওই চিঠির নেতৃত্বে রয়েছেন প্রতিনিধি গ্রেগ ক্যাসার এবং সুসান ওয়াইল্ড। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরও আছেন প্রমিলা জয়পাল, রাশিদা তালাইব, রো খান্না, জেমি রাসকিন, ইলহান ওমর, কোরি বুশ এবং বারবারা লির মতো আইনপ্রণেতারা। প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিনে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের পাশাপাশি ভোট ঘনিয়ে আসার আগে গ্রেপ্তার, সহিংসতা এবং ভোটগ্রহণের পর অস্বাভাবিক বিলম্বিত ফলাফল ঘোষণার পর ভোটে ব্যাপক কারচুপি অভিযোগ ওঠে। পরে দেশটির নির্বাচনী অনিয়ম সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে তদন্তের আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে, নির্বাচনের পূর্ণ ফল ঘোষণার আগেই আবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানে যারাই সরকার গঠন করুক, তাদের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।   
পাকিস্তানে যৌন নির্যাতনের শিকার ৪২০০ শিশু
পাকিস্তানে ২০২৩ সালে প্রতিদিন ১১টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই পরিচিত ও আত্মীয়স্বজন এই জঘন্য কাজে জড়িত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনসিএইচআর) সহায়তায় বৃহস্পতিবার চালু হওয়া শিশুদের কল্যাণে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাহিলের স্বাক্ষর প্রকাশনা ‘ক্রুয়েল নাম্বারস ২০২৩’-এ এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে চারটি প্রদেশের পাশাপাশি ইসলামাবাদ ক্যাপিটাল টেরিটরি (আইসিটি), আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে) এবং গিলগিট-বালতিস্তানে (জিবি) মোট ৪,২১৩টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। মোট মামলার মধ্যে শিশু যৌন নির্যাতন, অপহরণের ঘটনা, শিশু নিখোঁজ এবং বাল্যবিবাহের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। লিঙ্গ-বিভাজন বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, মোট রিপোর্ট করা কেসগুলির মধ্যে ২,২৫১ জন (৫৩ শতাংশ) মেয়ে এবং ১,৯৬২ (৪৭ শতাংশ) ছেলে ছিল। রিপোর্টে দেখিয়েছে যে, ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে শিশুরা নির্যাতনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ, যেখানে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বেশি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল। তাছাড়া ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। নির্যাতনকারীর ক্যাটাগরি ক্রুয়েল নাম্বার ২০২৩ ইঙ্গিত দিয়েছে যে, আত্মীয়স্বজন, পরিবারের সদস্য, অপরিচিত এবং মহিলা প্ররোচনাকারীদের সাথে পরিচিতরা এখনও শিশু যৌন নির্যাতনের সাথে সবচেয়ে বেশি জড়িত। ভৌগোলিক বিভাজনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোট ৪,২১৩ টি মামলার মধ্যে ৭৫ শতাংশ পাঞ্জাবে, ১৩ শতাংশ সিন্ধু, ৭ শতাংশ ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চলে, ৩ শতাংশ খাইবার পাখতুনখোয়া (কেপি), ২ শতাংশ বেলুচিস্তান, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে) এবং গিলগিট-বালতিস্তান (জিবি) থেকে ২ শতাংশ পাওয়া গেছে। রিপোর্টে দেখা গেছে, মোট রিপোর্ট করা মামলার মধ্যে ৯১ শতাংশ পুলিশের কাছে নিবন্ধিত হয়েছে। যা এই সমস্যা সমাধানে পুলিশের ‘সক্রিয় ভূমিকার ইঙ্গিত দেয়’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ২,০২১টি ক্ষেত্রে উভয় লিঙ্গ থেকে শিশুদের যৌন নির্যাতন করা হয়েছে, ৬১টি ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের পরে তাদের হত্যা করা হয়েছে এবং কমপক্ষে ১,৮৩৩টি ক্ষেত্রে অপহরণ সম্পর্কিত হয়েছে। একইভাবে নিখোঁজ শিশুর সংখ্যা ৩৩০ এবং বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে ২৯টি। এ বছর সাহিল ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত যেসব শিশুর আঘাত বা মৃত্যু হয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও পর্যবেক্ষণ করেছেন। এনজিওটির পর্যবেক্ষণে থাকা মোট ২১৮৪টি মামলার মধ্যে ৬৯৪ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে, ৪০১ জন দুর্ঘটনায় মারা গেছে, ২৮৬ জন খুন হয়েছে, ১২১ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ১১১ জন আহত হয়েছে, ১১০ জন আত্মহত্যা করেছে এবং ১০৩ জন বৈদ্যুতিক শকে মারা গেছে। ৮১টি জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র পর্যবেক্ষণ করে ‘ক্রুয়েল নাম্বার ২০২৩’ সংকলন করেছে সাহিল। এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কিত পরিস্থিতির তথ্য উপস্থাপন করা এবং পাকিস্তানে শিশু যৌন নির্যাতনের বিদ্যমান তথ্যে অবদান রাখা। এর পাশাপাশি, গবেষণার লক্ষ্য ছিল সমাজের সকল বিভাগে শিশু যৌন নির্যাতনের বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে সচেতনতা এবং তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার দিকে গুরুত্ব দেয়া।