• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে হামলা, ৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্রে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে ধারাবাহিক হামলা, ভাঙচুর ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনায় থানা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট আবেদন করেও ফলাফল না পেয়ে অবশেষে চাঁদপুর আদালতে ঘটনায় জড়িত ৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন মোহনপুর পর্যটন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান।  মামলায় প্রধান আসামি হলেন মো. বোরহান খালাসীসহ ২৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫ জন। এদের সবার বাড়ি মোহনপুর এলাকায়। এই প্রসঙ্গে কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ধারবাহিকভাবে চলতি মাসের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংঘবদ্ধ আসামিরা মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্রের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে প্রায় ৮০ লাখ টাকা মূল্যমানের জিনিসপত্র নিয়ে যায় এবং প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিসাধন করে। এই প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় দুই শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান। স্থানীয়ভাবে কোনো সহযোগিতা না পেয়ে আদালতে এসে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।  তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার যে কথা বলেছেন, আমরা সে আলোকে কাজ করে যাচ্ছি। এরকম ধারবাহিক হামলা অব্যাহত থাকলে এই প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আমি প্রতিষ্ঠানটি ধরে রাখার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। এদিকে পর্যটন কেন্দ্রে হামলা হওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাক ও পুলিশ সুপারের নিকট ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। সে আলোকে মামলাও করা হয়।  এছাড়া শুরু থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হামলা, লুটপাটসহ পর্যটন কেন্দ্রের সকল ঘটনার বিবরণসহ চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের নিকট আজ আরেকটি আবেদন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেন, এসব ঘটনা আমি অবগত। আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে কয়েকবার ব্যবস্থা নিয়েছে। পর্যটন কর্তৃপক্ষ ট্যুরিস্ট পুলিশ চেয়ে আবেদন করেছে। এটি কোম্পানি হওয়ার কারণে ট্যুরিস্ট পুলিশ দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, পর্যটন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে লোকদের সঙ্গে বিরোধ আছে। তারা যদি স্থানীয়ভাবে এটি সমাধান না করে এবং আমাদের কাছে নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিযোগ না করে তাহলে আমরা কিছুই করতে পারবো না। এই প্রতিষ্ঠানে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে এমন সংবাদও গণমাধ্যমে দেখলাম। যদিও আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি।   
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৫

ফেসবুক লাইভে এসে মোহনপুর পর্যটনে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্রে ফেসবুক লাইভে এসে প্রকাশ্যে পর্যটনের দেয়াল ও গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।  রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ নাম ব্যবহার করে একদল সন্ত্রাসী এ হামলা চালায়।  পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রায় তিন থেকে চারশ’ নারী-পুরুষ এই হামলা চালায়। এ সময় বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এমনকি অবিলম্বে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের জন্য কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাজী মিজান জানান, মো. সোহরাব নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে প্রকাশ্যে রোববার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সারারাত পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রসহ সজ্জিত হয়ে এ হামলা চালানো হয়। চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার অনুসারী দাবি করা প্রায় তিন-চারশ’ নারী-পুরুষসহ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা পর্যটনের ১ ও ২ নং গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর থিমপার্কের বিভিন্ন রাইড ভাঙচুর করে এবং পার্কের দোকানে দফায় দফায় ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ওসির সঙ্গে কয়েকবার কথা হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। তবে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কোনো পরিবেশ ছিল না। তিনি আরও বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রায় তিন থেকে চারশ’ নারী—পুরুষ এই হামলা চালায়। এ সময় বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এমনকি অবিলম্বে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের জন্য  মৌখিকভাবে হুঁশিয়ারি দেয়। মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যটন ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত মতলববাসী। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণেই এই হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের মাত্রা বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দফায় দফায় পার্কে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে। তখন সন্ত্রাসীরা হামলা করে পর্যটনকেন্দ্রটি চিরতরে বন্ধ করার জন্য কর্মচারী-কর্মকর্তাদের উপর চড়াও হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে পর্যটন কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক সহায়তা পেতে তখন আইনের আশ্রয় নেন। এমনকি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। কিন্তু দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও তদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আবারও হামলা করার সাহস দেখিয়েছে ।  স্থানীয়রা বলছেন, সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে মোহনপুর পর্যটনে কয়েক দফায় ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এ সময় সিসি ক্যামরা, দ্যা শিপইন-এর গ্লাস, থিমপার্কের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। এ ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও চিহ্নিত এসব সন্ত্রাসীদের কিছুই বলছে না স্থানীয় প্রশাসন। এই নিয়ে  এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পর্যটনের উপর নির্ভরশীল বিভিন্ন পেশার মানুষের ভেতরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আইনশৃঙ্খলার চরম বিপর্যয় ঘটবে। এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ইনস্পেক্টর শহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো প্রকার অভিযোগ করেননি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৩৫
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়