ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে বস্তা বস্তা টাকা আদায় করা হতো (ভিডিও)
দোকানে ব্যবসায়ীকে রেখে দরজায় বাইরে থেকে ঝালাই করে আটকে দেওয়া হতো। এরপর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো প্রভাবশালী চক্র। এভাবেই জিম্মি করা হতো রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের।
অভিযুক্ত ঢাকা দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন বলেন, আদায় করা টাকা চলে যেতো বড়কর্তা সাইদ খোকনসহ সমিতির কর্মকর্তাদের পকেটে। ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে এবং সরকারি পদ ব্যবহার করে যারা এভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা বলেন, তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন, সাহাব উদ্দিন, রহিম ও সাজু। এই চারজন সবচেয়ে বড় ক্রিমিনাল। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন রইলো, তিনি যেন এই ঘটনার সঠিক বিচার করেন।
দোকানে আটকে রাখা ব্যবসায়ীদের টাকা দেওয়ার পরই মুক্তি পেতো জিম্মি ব্যবসায়ীরা। ডিজিটাল যুগে এসেও সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা লুটে নেওয়ার পদ্ধতি যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।
এই মার্কেটের বহু দোকানে দরজায় ঝালাই করে তালা লাগিয়ে টাকা নিয়েছে চক্রটি। এছাড়া মার্কেটের বাথরুম, সিঁড়ি ও লিফটের নির্ধারিত স্থানে নকশার বাইরে গিয়ে দোকান নির্মাণ করেই ক্ষান্ত হয়নি; সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মকর্তা আর স্থানীয় প্রভাবশালীরা সেই দোকানে তালা ঝুলিয়ে জিম্মি করেও টাকা নিয়েছে বার বার।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন, সাহাব উদ্দিন, সোহেল জামান এমপির পিএস রনি এরা চাঁদাবাজি আর মানুষদের জিম্মি করে শত শত কোটি টাকা নিয়েছে। শুধু এই মার্কেট থেকে তিনশ কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য ছিল। তারা বস্তায় বস্তায় হাজার কোটি টাকা নিয়েছে এখান থেকে। রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
অভিযুক্ত মেয়র সাঈদ খোকনসহ দায়ীদের রাজনৈতিক পদ থেকে অপসারণ করে বিচার চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অভিযোগের কারণে শোকজ পাওয়া কাউন্সিলর রতন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
ডিএনসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অভিযুক্ত কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন আরটিভি নিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশনের বড় কর্তা কে? যার সাইন ছাড়া কিছু হয় না সে কে? মেয়র। মেয়র তো সাঈদ খোকন ছিল। এসবের লিখিত প্রমাণ থাকে না। এ টাকাগুলো বহু ভাগে ভাগ হয়েছে। বিশেষ করে তিন ভাগে ভাগ হয়েছে। বড় সাহেবের একটি, ছোট সাহেবের একটি, আরেকটি হলো সমিতির কর্মকর্তাদের।
এ বিষয়ে জানতে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল কেটে দেন। অপরদিকে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা লুটে নেওয়া বন্ধ হবে না বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
জিএম/পি
মন্তব্য করুন