• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ডিজিটাল যুগেও হাতের ইশারায় চলছে ট্রাফিক ব্যবস্থা (ভিডিও)

শরিয়ত খান

  ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩৪

হাতের ইশারায় চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশের রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা। বছরের পর বছর চেষ্টা করেও স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি ট্রাফিক বিভাগ। হাতের ইশারায় নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। আবারো স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করতে হলে আগে প্রধান সড়কে অযান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধ করতে হবে।

রাজধানীর বিজয় সরণী মোড়। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ৮-১০ জন ট্রাফিক সদস্য। ভিভিআইপি চলাচল আর যানবাহনের চাপ থাকায় আছেন সিনিয়র কর্মকর্তারাও। তবে সবই চলছে হাতের ইশারায়।

এ বিষয়ে বিজয় সরণী মোড়ের এক গাড়িচালক বলেন, আগের ট্রাফিক লাইটই ভালো ছিল। আমরা দুর থেকে দেখ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতাম। কিন্তু এখন ট্রাফিক পুলিশের হাত দেখতে অসুবিধা হয়। ঠিক সময় ব্রেক করতে পারিনা। আমাদের টাইমিংয়ে সমস্যা হয়।

অপর এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, গাড়ি এবং বাইকের সবসময় গতিটা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা ফলো করা যায় না। ফলে সিগন্যাল অবমাননা বেশি হয়।

বিজয় সরণী মোড়ে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে।

অপর এক পুলিশ সদস্য বলেন, সিগন্যাল লাইটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে। বর্তমানে ফোর্স দিয়ে সিগন্যাল চালাচ্ছি।

ওই সদস্য কথা বলা অবস্থায় একটি বাস ও প্রাইভেটকারের মধ্যে একটি ছোট দুর্ঘটনা ঘটে।

রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ট্রাফিক সিগনালের বাতিগুলো। কিছু জায়গায় যা ঢাকা পড়েছে গাছের আড়ালে। বাতিগুলো শেষ কবে জ্বলেছে তাও মনে করতে পারেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম সামসুল হক বলেন, উন্নতির এই সময় এসে যখন দেখি আমাদের রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থাপনায় হাত দিয়ে পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণ করছে, মোড় নিয়ন্ত্রণ করছে, এটা আমার কাছে বেমানান লাগে। দিনের বেলা হাত দিয়ে চালাচ্ছি। রাতের বেলা আমি ঝুঁকিপূর্ণ লেজার পয়েন্টার ব্যবহার করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করছি। আমার মনে হয়, বিজ্ঞান থেকে আমরা অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। লেজার লাইট ব্যবহার নিয়ে বৈধতার বিষয়েও প্রশ্ন রাখা যায়। কারণ, মানুষের চোখের জন্য এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর।

স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করতে কয়েকবার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। আবারও তা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। রাজধানীর ১১০টি সিগনালের মধ্যে গুলশান-২ নম্বর মোড়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থা চালু করেছে উত্তর সিটি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল আলম বলেন, গুলশান-২ ইন্টার সেকশনে পাইলোটিং হচ্ছে, মোটামুটিভাবে সেটি সফল হয়েছে। এটিকে বর্ধিত করার জন্য আমরা টেন্ডার আহ্বান করেছি। এরপর আরও ছয়টি স্থানে আমরা বর্ধিত করব। এটি টেন্ডারিং পর্যায়ে আছে ইতোমধ্যে ইউআই সাবমিট হয়েছে। এরপর পুরো সিটিজুড়ে এটি বর্ধিত করা হবে, এবিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদি হাসান বলেন, ট্রাফিক কনজেশনের মুল কয়েকটি কারণের ভিতরে একটি হচ্ছে সিগন্যাল অটোমেশন। এটি আমাদের হাতে নেই। বিভিন্ন সংস্থার এটি স্টাবলিশ করেন রক্ষণাবেক্ষণ ও করেন। শুধুমাত্র গুলশান-২ ছাড়া আর কোথাও এই সিগন্যাল অটোমেশনের সুযোগ নেই। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত পুরো ঢাকায় সিগন্যাল অটোমেশন হয়ে যাবে।

অন্যদিকে, অধ্যাপক এম সামসুল হক জানিয়েছেন, অযান্ত্রিক যানবাহনের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে অযান্ত্রিক যান চলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা কাজ করবে না। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে সবার আগে সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জরুরী।

পিটিসি-ঢাকার যানজট নিরসনে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যালের কাজে গত দুই যুগে কয়েকটি প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু যানবাহন চলে ট্রাফিক পুলিশের হাতের ইশারায়। নতুন করে দুই সিটি করপোরেশন দেখাচ্ছে আশার আলো।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজধানীর বাড্ডায় দীর্ঘ লোডশেডিং, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী
তাপদাহের মধ্যে পানি সংকট রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়
রাজধানীতে ৩৫ হাজার রিকশাচালক পাচ্ছেন ছাতা ও খাবার স্যালাইন 
সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
X
Fresh