• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
১৩৫ বছর বয়সে হাঁটছেন কারও সাহায্য ছাড়াই, লাগছে না চশমা 
মাছ কেটে জীবন চলে তাদের
পায়ে বটি রেখে কাঠের ওপর সারাক্ষণ মাছ কাটেন। এই মাছ কাটতেই দিন শুরু হয়, মাছ কাটতে কাটতেই দিন কাটে। অন্যের মাছ কাটা পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এই শ্রমজীবীরা। যদিও এ পেশায় আসার পেছনে রয়েছে নানা ঘটনা। মাছের আকার ভেদে কেজিপ্রতি মাছ কাটতে তারা নেন ২০ থেকে ৩০ টাকা। এতে দিনে আয় হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। এই টাকা থেকে বসার জায়গা, ময়লা ফেলা ও ছাই কিনতে দৈনিক খরচ হয় ৯০ টাকারও বেশি। পরিবারের উপার্জনক্ষম যখন নারী তখন এই সামান্য আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। যদিও সপ্তাহের বন্ধের দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা। তাই ঠান্ডা-জ্বরে অসুস্থ হলেও কাজে আসেন এই মাছ কাটিয়ারা।  কর্মব্যস্ত এই শহরে বিত্তবান ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে বাজার থেকে কাটানোর প্রবণতা বাড়ছে। গৃহস্থালির কাজে সময় বাঁচাতে মাছ কাটার জটিলতা এড়িয়ে যান তারা। এমনিতে সারাদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। বাসায় কাজের লোকের সমস্যা রয়েছে। মেয়েরা রান্নাবান্না আর ঘরের জরুরি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই সময় বাঁচাতে, বাজার থেকে মাছ কিনে পরিষ্কার করে নিয়ে যায় তারা। এতে করে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। তাই এই মাছ কাটিয়াদের চাহিদা বাড়ছে। সময় বাঁচাতে ২০ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে বাজার থেকে ছোট ও বড় মাছ কাটিয়ে নেন চাকরিজীবী ও মেসে থাকা লোকজন। এ পেশায় যেমন হতদরিদ্র নারীদের অর্থনৈতিক ভাবে করছে স্বাবলম্বী তেমনি ব্যস্ত নগরীর মানুষের গৃহস্থালির কাজকেও সহায়তা করছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের এই খোলা স্থানে মাছ কাটায় নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।  
নোংরা বরফের শরবতে প্রাণ জুড়াচ্ছেন ঢাকাবাসী! (ভিডিও)
নিত্যপণ্যের মতোই লাগামহীন ওষুধের দাম
লোভনীয় অফার, অনলাইনে সক্রিয় প্রতারক চক্র
জোরেশোরে চলছে কারওয়ান বাজার সরিয়ে নেওয়ার কাজ (ভিডিও)
‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারাদেশে প্রস্তুত হাসপাতালগুলো’
দখল ও দূষণে জর্জরিত রাজধানীর খালগুলো হচ্ছে মশার সবচেয়ে নিরাপদ আবাসস্থল। ফলে বংশবিস্তারও ঠেকানো যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারাদেশে প্রস্তুত রয়েছে হাসপাতালগুলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতালে মশক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার কমাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা মহানগরে যত খাল রয়েছে, তার বেশির ভাগই এখন ময়লার ভাগাড়। বৃষ্টির পানি নির্গমনের পথগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা যেমন বাড়ছে তেমনই বাড়ছে মশা। রাজধানীর মশার অন্যতম উৎপত্তিস্থল এসব খালে মাঝেমধ্যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হলেও তা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছু নয় বলে মনে করছে নগরবাসী। তাদের অভিযোগ, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অনেক আগে এসেছিলেন। এরপর আর তাদের দেখিনি। অথচ এখানে প্রচুর মশা। মশার কামড়ে বাচ্চাদের ডেঙ্গু হয়ে যায়। জনগণের অসচেতনতা আর সিটি করপোরেশনের উদাসীনতার বলি হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাই। ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত যেখানে ডেঙ্গুতে মারা যায় ৮৬৮ জন, সেখানে ২০২৩ সালে এক বছরেই মারা যায় এক হাজার ৭০৫ জন। দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। রোগীর উপচে পড়া ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যন্ত্রপাতির সক্ষমতা বাড়িয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাসপাতালগুলো। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় শুধু রাজধানী নয়, সারাদেশেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার জন্য আমাদের চিকিৎসকরা এখন অভিজ্ঞ। তারা সব জানেন। তাই ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোকে সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হবে।
সক্ষমতার অভাবে দুই যুগেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি (ভিডিও)
রাজধানীর নির্মাণাধীন ভবনগুলো যেন একেকটা মশা উৎপাদনের কারখানা। ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিলে কিছুটা নজরদারি বাড়লেও এখন যেন দেখার কেউ নেই। মাঝে মধ্যে ওষুধ ছিটানো হলেও তা কাজে আসে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশক নিধনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের ঘাটতি আর সক্ষমতার অভাবে দুই যুগেও দেশে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। গত কয়েক দশক ধরে রাজধানীতে চলছে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রতিযোগিতা। নির্মাণাধীন এসব ভবনে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। গত বছর রাজধানীতে ৫০ শতাংশ ডেঙ্গু রোগের জন্য নির্মাণাধীন ভবনকে দায়ী করা হয়। এবারের চিত্রও আগের মতো। ডেঙ্গু মোকাবিলায় নেওয়া হয়নি আগাম কোনো ব্যবস্থা। ভবন মালিকদের অসচেতনতার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের উদাসিনতাকে দায়ী করছেন নগরবাসী। তারা জানান, যেখানে মশা তৈরি হয় সেখানে ওষুধ দেওয়া হয় না। মাঝে মধ্যে মশার ওষুধ প্রয়োগ করা হলেও তা কাজে আসছে না। আর ওষুধ দেওয়া হলেও এর ভেতরে থাকে কেরোসিন। কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. গোলাম সারোয়ার বলছেন, সঠিক পদ্ধতিতে ওষুধ প্রয়োগ না করায়, মশা মরছে না। তিনি বলেন, যে দূরত্ব থেকে স্প্রে করা দরকার, এর থেকে বেশি হলে মশা বাড়বে। আর স্প্রের কারণে মশার প্রাকৃতিক শত্রুরা মারা যাবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেনজির আহমেদ জানান, গত বারের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
নাজুক ট্রাফিক ব্যবস্থায় বছরে ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি (ভিডিও)
নাজুক ট্রাফিক ব্যবস্থা, অনিয়ন্ত্রিত যান, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তা দখলসহ নানা করণে নিয়ন্ত্রণহীন রাজধানীর যানজট। এর সাথে প্রতিদিন বাড়ছে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা। বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর এখন ঢাকা। এতে রাজধানীতে প্রতিদিন ৮০ লাখের বেশি কর্ম ঘণ্টা নষ্ট হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। সব মিলে প্রতিদিনের ক্ষতি ১৫২ কোটি টাকার বেশী। আর বছরে তা ৫৫ হাজার কোটির বেশি। তবে আশার আলো দেখাচ্ছে মেট্রোরেল। সবগুলো রুট চালু হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।  চারদিক স্থবির, নড়ছে না যানবাহনের চাকা, ট্রাফিক পুলিশের প্রাণান্তকর চেষ্টা। তবে সবই যেন ব্যর্থ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকাই যেন রাজধানীবাসির নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহরের রেকর্ড গড়েছে রাজধানী ঢাকা। যানজট নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও বুয়েটের গবেষণা বলছে, ২০২২ সালে রাজধানীর সড়কে যানবাহনের গড় গতি নেমেছ ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারে।  অপ্রতুল ও সরু রাস্তাঘাটের কারণে যানজট বাড়ছে। সাথে দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থা, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তা ও ফুটপাথ দখল, বিশৃঙ্খল যান চলাচল পরিস্থিকে আরও নাজুক করেছে।  বুয়েটের দুর্ঘটনা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী, যানজটের কারণে রাজধানীতে প্রতিদিন ৮০ লাখের বেশি কর্ম-ঘণ্টা নষ্ট হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। সব মিলে প্রতিদিনের ক্ষতি ১৫২ কোটি টাকার বেশী। যানজটের কারণে বছরে জিডিপির ক্ষতি ২.৯ শতাংশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, গত ১২ বছরে আমার ঢাকায় অনেক অবকাঠামো তৈরি করে ফেলেছি। এর মধ্যে  ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে। মেট্রোও চালু করে ফেলেছি কিন্তু যানজটের যে পেরেনিয়াল পরিস্থিতি তা থেকে বের হতে পারিনি। আমরা একটা বৃত্তের মধ্যে পড়ে গেছি। গবেষণা বলছে ২০১৭ সালে যানজটে  প্রতিদিন ১০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতো, তা এখন দেড়শ কোটিতে ঠেকেছে। একদিকে বিনিয়োগ বাড়ছে অন্যদিকে যানজটের কারণে গতি কমছে। যানজট নিরসনে ১৮টি সংস্থা থাকলেও তারা আশার আলো দেখাতে পারছে না।  ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদি হাসান বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি সড়কের প্রায় ৬৪ শতাংশ জায়গা দখল করে রাখে। মানে একটি গাড়ি একজন মানুষ। এসব মানুষকে আমরা যদি মেট্রো মাস ও মেট্রো ট্রেনে শিফট করতে পারি, তাহলেই আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার সুফল পাব। তবে যানজটের নগরীতে আশার আলো দেখাচ্ছে মেট্রোরেল। আরও পাঁচটি রুট চালু হলে যানজট কমবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের। তবে অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, গণপরিবহনকে আমরা যদি ঢেলে সাজাতে না পারি তবে মেট্রো দিয়ে ঢাকা শহরে যানজট নিরসন করা যাবে না। ২০৩৫ সাল নাগাদ আমরা যদি পুরো মেট্রোর নেটওয়ার্কও তৈরি করে ফেলি তাও ১৫ শতাংশের বেশি যাত্রী আমরা মেট্রোতে পরিবহন করতে পারব না। সড়কের ৮৫ শতাংশ যাত্রীর কথা ভুলে গেলে এতো হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ কোন কাজে আসবেনা।  তিনি বলেন, যানজট নিরসনে আমাদের নীতির পরিবর্তন আনতে হবে। রাজধানীর ৩০ শতাংশ মানুষ হেটেই অফিসে যান। ফুটপাতগুলোকে ঠিক করলে নিরবিচ্ছিন্ন ফুটপাত করলে যানযট ৩০ শতাংশ কমে যাবে।
ডিজিটাল যুগেও হাতের ইশারায় চলছে ট্রাফিক ব্যবস্থা (ভিডিও)
হাতের ইশারায় চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশের রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা। বছরের পর বছর চেষ্টা করেও স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি ট্রাফিক বিভাগ। হাতের ইশারায় নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। আবারো স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করতে হলে আগে প্রধান সড়কে অযান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধ করতে হবে।  রাজধানীর বিজয় সরণী মোড়। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত ৮-১০ জন ট্রাফিক সদস্য। ভিভিআইপি চলাচল আর যানবাহনের চাপ থাকায় আছেন সিনিয়র কর্মকর্তারাও। তবে সবই চলছে হাতের ইশারায়। এ বিষয়ে বিজয় সরণী মোড়ের এক গাড়িচালক বলেন, আগের ট্রাফিক লাইটই ভালো ছিল। আমরা দুর থেকে দেখ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতাম। কিন্তু এখন ট্রাফিক পুলিশের হাত দেখতে অসুবিধা হয়। ঠিক সময় ব্রেক করতে পারিনা। আমাদের টাইমিংয়ে সমস্যা হয়। অপর এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, গাড়ি এবং বাইকের সবসময় গতিটা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা ফলো করা যায় না। ফলে সিগন্যাল অবমাননা বেশি হয়। বিজয় সরণী মোড়ে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। অপর এক পুলিশ সদস্য বলেন, সিগন্যাল লাইটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে। বর্তমানে ফোর্স দিয়ে সিগন্যাল চালাচ্ছি। ওই সদস্য কথা বলা অবস্থায় একটি বাস ও প্রাইভেটকারের মধ্যে একটি ছোট দুর্ঘটনা ঘটে। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ট্রাফিক সিগনালের বাতিগুলো। কিছু জায়গায় যা ঢাকা পড়েছে গাছের আড়ালে। বাতিগুলো শেষ কবে জ্বলেছে তাও মনে করতে পারেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম সামসুল হক বলেন, উন্নতির এই সময় এসে যখন দেখি আমাদের রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থাপনায় হাত দিয়ে পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণ করছে, মোড় নিয়ন্ত্রণ করছে, এটা আমার কাছে বেমানান লাগে। দিনের বেলা হাত দিয়ে চালাচ্ছি। রাতের বেলা আমি ঝুঁকিপূর্ণ লেজার পয়েন্টার ব্যবহার করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করছি। আমার মনে হয়, বিজ্ঞান থেকে আমরা অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। লেজার লাইট ব্যবহার নিয়ে বৈধতার বিষয়েও প্রশ্ন রাখা যায়। কারণ, মানুষের চোখের জন্য এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করতে কয়েকবার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। আবারও তা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। রাজধানীর ১১০টি সিগনালের মধ্যে গুলশান-২ নম্বর মোড়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থা চালু করেছে উত্তর সিটি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল আলম বলেন, গুলশান-২ ইন্টার সেকশনে পাইলোটিং হচ্ছে, মোটামুটিভাবে সেটি সফল হয়েছে। এটিকে বর্ধিত করার জন্য আমরা টেন্ডার আহ্বান করেছি। এরপর আরও ছয়টি স্থানে আমরা বর্ধিত করব। এটি টেন্ডারিং পর্যায়ে আছে ইতোমধ্যে ইউআই সাবমিট হয়েছে। এরপর পুরো সিটিজুড়ে এটি বর্ধিত করা হবে, এবিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদি হাসান বলেন, ট্রাফিক কনজেশনের মুল কয়েকটি কারণের ভিতরে একটি হচ্ছে সিগন্যাল অটোমেশন। এটি আমাদের হাতে নেই। বিভিন্ন সংস্থার এটি স্টাবলিশ করেন রক্ষণাবেক্ষণ ও করেন। শুধুমাত্র গুলশান-২ ছাড়া আর কোথাও এই সিগন্যাল অটোমেশনের সুযোগ নেই। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত পুরো ঢাকায় সিগন্যাল অটোমেশন হয়ে যাবে। অন্যদিকে, অধ্যাপক এম সামসুল হক জানিয়েছেন, অযান্ত্রিক যানবাহনের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে অযান্ত্রিক যান চলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা কাজ করবে না। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে সবার আগে সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জরুরী।  পিটিসি-ঢাকার যানজট নিরসনে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যালের কাজে গত দুই যুগে কয়েকটি প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু যানবাহন চলে ট্রাফিক পুলিশের হাতের ইশারায়। নতুন করে দুই সিটি করপোরেশন দেখাচ্ছে আশার আলো।
ব্যর্থ হলো রাজধানীর ট্রাফিক ডিজিটালাইজের প্রকল্প (ভিডিও)
ব্যর্থ হয়েছে রাজধানীর ট্রাফিক সংকেতব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করার প্রকল্প। ৫২ কোটি টাকা খরচ করে ফলাফল ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঢাকা ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প। ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাবে এটি কার্যকর হয়নি বলে দাবি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএ’র। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্প নেয়ার কারণে এমন ব্যর্থতা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর চত্বরের চারপাশে বসানো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেমের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, অত্যাধুনিক শব্দধারণ যন্ত্র, বাতি, বিশেষায়িত তার ও খুঁটি। এমন আয়োজন দেখে মনে হতেই পারে উন্নত বিশ্বের কোনো মোড়।   কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ছবি ও শব্দের ভিত্তিতে যানবাহনের চাপ নির্ধারণই ছিল উদ্দেশ্য। অথচ পাঁচ বছরের বেশি সময় অলস পড়ে আছে অত্যাধুনিক এসব যন্ত্র। সংকেতবাতি বন্ধ, খুঁটিতে ঝুলছে অলস ক্যামেরা। আধুনিক বাতির নিচে দাঁড়িয়ে হাতের ইশারায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। গুলিস্তান মোড়ে ডিজিটাল সিস্টেমের অবস্থা পুরাই নাজুক। এখানে কয়েকটি বাতি ছাড়া পাওয়া যায়নি কিছুই। বাকি দুটি মোড় মহাখালী ও পল্টনের অবস্থাও অনেকটা একই। বেশিরভাগ যন্ত্র পাওয়া যায়নি এসব মোড়েও। অথচ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, সবকিছুই বসানো হয়েছিল। ২০১৫ সালে রাজধানীর গুলশান-এক, মহাখালী, পল্টন ও গুলিস্তান মোড়ে পরীক্ষামূলকভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ট্রাফিক সংকেতব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ‘ঢাকা ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট’ নামে প্রকল্প নেওয়া হয়। নয় বছরে চার দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ কোটির প্রকল্পে ৫২ কোটি টাকা খরচ করেও কোনো সুখবর দিতে পারেনি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ-ডিটিসিএ।  ঢাকায় এই পদ্ধতির সংকেতবাতি আদৌ চালু করা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, অযান্ত্রিক যানবাহন যদি সিগনালে থাকে এবং যখন সবুজ সংকেত পায় তখন তাদের গতি কিন্তু কাছাকাছি থাকতে হবে। রিকশার গতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার আর মোটরসাইকেলে গতি যদি ৬০ কিলোমিটার হয় তাহলে এই সিগনাল কোনোভাবেই কাজ করার সুযোগ নেই। একেবারে অযৌক্তিকভাবে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক।
পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে চলছে অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা (ভিডিও)
রাজধানীতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশা। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চলছে ধূসর বা রূপালী রঙের এসব অটোরিকশা। শুধু তাই নয়, নিয়ম ভেঙে আশপাশের জেলার অটোও ঢুকছে অবাধে। ১৫ হাজার বৈধর সঙ্গে নগরে এখন অবৈধ সিএনজি ২২ হাজারের বেশি। পুলিশকে মাসোহারা দিয়েই চলছে অবৈধ এই কারবার। রাজধানীতে ধূসর সিএনজি অটো আছে প্রায় চার হাজার। যার বেশির ভাগের মালিক ট্রাফিক বা পুলিশ সদস্য। ফলে ব্যক্তিগত যান অবলীলায় হয়ে যাচ্ছে ভাড়ায়চালিত। রাজধানীর কাওরান বাজার সিএনজি স্ট্যান্ডে দেখা গেল বেশির ভাগ অটোরিকশাই ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রেশন করা। শুধু তাই না, রাজধানীতে অন্য জেলার অটোও চলছে অবাধে। অথচ মহানগরে বাইরের যান চলার কথা নয়।  রাজধানীতে অবৈধ সিএনজিচালিত অটো রয়েছে ২০ হাজারের বেশি। যেখানে বৈধর সংখ্যা সাড়ে ১৫ হাজার। এরমধ্যে অনেকগুলোর আবার বৈধ কাগজ নেই। বলতে গেলে অবৈধদের ভিড়ে বৈধরাই এখন কোণঠাঁসা।  চালক ও মালিকদের অভিযোগ, অবৈধ অটোর বড় অংশের মালিক ট্রাফিক পুলিশ। তাই তারা থাকেন নির্ঝঞ্ঝাট।  ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি হাজী বরকতুল্লাহ বুলু বলেন, প্রাইভেট সিএনজির ৮৫ শতাংশই ট্রাফিক পুলিশের মালিকানায়। এই গাড়িগুলো দাপটের সঙ্গে চলে। অথচ, বৈধ গাড়িগুলো মোড়ে মোড়ে চেক করে।   রাজধানীতে হাজার হাজার অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা থাকলেও তা জানা নেই ট্রাফিক বিভাগের কর্তাদের। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, সাদা প্রাইভেট সিএনজিগুলো কমার্শিয়ালি চলার কোনো অনুমতি নেই। কেউ ধরা পড়লে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।  বিশেষজ্ঞরা বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু সদস্যদের যোগসাজোস ছাড়া এটি সম্ভব নয়। তাই সরকারে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় অটোরিকশার ভিন্ন রং থাকলেও ব্যতিক্রম কেবল রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলো। এখানে সব সবুজ মিলেমিশে একাকার।
ঈদ এলেই শুরু হয় মেয়াদহীন লঞ্চ মেরামতের হিড়িক (ভিডিও)
পদ্মা সেতু চালুর পর লঞ্চ ব্যবসায় ভাটা পরলেও ঈদ এলেই শুরু হয় মেয়াদহীন এ নৌযান মেরামতের হিড়িক। জরাজীর্ণতা ঢাকতে দেওয়া হয় রংয়ের প্রলেপ। ঝালাই দিয়ে ঢাকা হয় ক্ষতচিহ্ন। তবে বিআইডব্লিউটিয়ের দাবি, ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলতে দেওয়া হবে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জ ডকইয়ার্ডে সারি সারি রাখা লঞ্চগুলো ঈদ যাত্রার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। কোথাও রংয়ের প্রলেপ, আবার কোথাও ঝালাই করে ভাঙা অংশ ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন পড়ে ছিল পটুয়াখালী রুটের এমভি সাত্তার লঞ্চ। এর বয়স ২৫ বছর। ঈদ উপলক্ষে লঞ্চটিকে ঘষেমেজে ফিটফাট করা হচ্ছে। শরীয়তপুর রুটে চলছে ৫০ বছর ধরে এমভি মানিক ৪ নামের লঞ্চটি। ঈদের আগে এ লঞ্চটিকেও প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফলে শ্রমিকদের যেন দম ফেলবার সময় নেই।  পুরনো এই লঞ্চগুলোকে কিছু সংস্কারের পর নতুন করে রং করা হচ্ছে। ফলে কালবৈশাখীর মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ নৌযানগুলো কর্তৃপক্ষের চোখ এড়িয়ে যাত্রী পরিবহনে নেমে পড়বে। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. আলমগীর কবীর বলেন, পদ্ম সেতু চালু হওয়ায় লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আর আমরা ফিটনেসবিহীন চঞ্চগুলোকে চলাচলে অনুমতি দিই না। তাই  কালবৈশাখীর একটি আশঙ্কা থাকলে কোনো সমস্যা হবে না।