• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে দিশেহারা গ্রাহক
যেভাবে ঢাকা থেকে হারালো ২০০ বছরের ভিস্তি পেশা
ভিস্তি আবে ভিস্তি, এ রকম হাঁকিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানি সরবরাহ করা এখন যেন রূপকথার গল্প। মাথায় কিস্তি টুপি, মিশমিশে কালো চাপদাড়ি আর কোমরে জড়ানো ভেজা গামছা। এসবই একসময় ছিল ভিস্তিওয়ালাদের প্রতিচ্ছবি। মুঘল সম্রাটের সময় থেকেই ছিল এর চর্চা। জানলে আশ্চর্য হবেন, এক ভিস্তিওয়ালা পুরো মুঘল সাম্রাজ্য শাসনের মুকুট পেয়েছিলেন দান হিসেবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভিস্তি কি? এবং ভিস্তিওয়ালাই বা কীভাবে মুঘল সম্রাটের জীবন বাঁচিয়ে উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন শাসন মুকুট? একসময় প্রতিদিন চামড়া দিয়ে তৈরি পাত্র মশক ভরে দুইবেলা পানি শহরের বাড়ি বাড়ি বিতরণ করা হতো। আর যারা দিয়ে যেতেন সেসব পানিওয়ালাদের বলা হতো ভিস্তিওয়ালা। কালো মেষের পেটের মতো চামড়ার এসব মশক পিঠে বয়ে আনতেন ভিস্তিওয়ালারা। তারপর মশকের মুখ খুলে পানি ঢেলে দিতেন মাটি কিংবা পিতলের কলসির ভেতর ৷  ভিস্তিওয়ালা ও তাদের স্থান কারা দখল করেছে সে সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশই জানেন না।  কথায় আছে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে না। তেমনি পানির তৃষ্ণাও যেন অন্য কিছুতে মেটে না। তাই সবসময় হাতের কাছেই পানি রাখা ছাড়া উপায় কি? আর বর্তমানে পানি সরবরাহের বড় মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে প্লাস্টিকের নানা ধরনের পাত্র ও বোতল। এখন যেমন ভ্যানে করে বাসা-বাড়ি কিংবা অফিস আদালতে বিতরণ হয় পানির জার, ঠিক ওই সময়টাতে পানি বিতরণে একমাত্র ভরসা ছিল শহরের ভিস্তাওয়ালারা।     ভিস্তিওয়ালাদের কাঁধে থাকা পানিভর্তি চামড়ার ব্যাগই ছিল মূলত ভিস্তি। যা ছিল ছাগলের চামড়ার তৈরি বিশেষ এক ধরনের ব্যাগ। এটি মশক নামেও পরিচিত ছিলো। এ মশকে যিনি জল বহন করে শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে দিতেন তাকে বলা হতো ভিস্তিওয়ালা।    বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত ঢাকার রাস্তায় দেখা যেতো ভিস্তিওয়ালাদের আনাগোনা। ভারতবর্ষের অন্য অঞ্চলের মতোই ঢাকায়ও খাবার পানির জন্য নির্ভর করতে হতো খাল, নদী বা কুয়ার ওপর। নিরাপদ পানির জন্য তাই শহর অধিবাসীদের অনেক দূরে দূরে ঘুরে বেড়াতে হতো। সেইসময় ভিস্তিওয়ালারাই তাদের কাছে থাকা একটি চামড়ার বিশাল মশকে করে পানি সরবরাহ করতেন বাড়িতে বাড়িতে। তাদেরকে সুক্কাও বলা হতো।   বর্তমানে পুরান ঢাকার যে সিক্কাটুলি দেখা যায় তা ছিল ভিস্তিওয়ালাদের এলাকা। ইসলাম ধর্মাবলম্বী এসব ভিস্তিরা বেশির ভাগই ছিল সুন্নি মুসলিম। মহররমের মিছিলে রাস্তায় পানি ছিটিয়ে পরিষ্কার রাখার দায়িত্বে তাদেরকে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করতে দেখা যেতো। এই ভিস্তিওয়ালারা বিভিন্ন ঐতিহাসিক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন। যুদ্ধের সময় তারা তাদের বিশেষ পানির ব্যাগ মশক নিয়ে যোদ্ধাদের কাছে গিয়ে তাদের তৃষ্ণা নিবারণ করতেন।  একবার মুঘল সম্রাট বাবরের ছেলে হুমায়ুন কোনো এক যুদ্ধে আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন এক খরস্রোতা নদীতে। জলের প্রচণ্ড স্রোতে যখন হুমায়ুনের প্রাণ যায় যায়, তখন এক ভিস্তিওয়ালা তার জীবন বাঁচিয়েছিলেন। হুমায়ুন তাকে কথা দিয়েছিলেন, যদি কখনও তিনি সিংহাসনে বসতে পারেন, ওই ভিস্তিওয়ালা যা উপহার চাইবেন, তাই দেবেন। পরে যখন হুমায়ুন সম্রাট হলেন, তখন সেই ভিস্তিওয়ালা তার কাছে চেয়ে বসলেন সম্রাটের সিংহাসন। বাদশাহ হুমায়ুন নিজের মুকুট পরিয়ে দিলেন ভিস্তিওয়ালার মাথায়, তাকে বসালেন নিজের সিংহাসনে। তখন ভিস্তিওয়ালা সম্রাটকে আলিঙ্গন করে ফিরিয়ে দিলেন তার মুকুট আর সিংহাসন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় একসময়ের ঐতিহ্য আর ঐতিহাসিক এ পেশা হারিয়ে এখন শুধু ঠাঁই হয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়।
সড়ক কাটা নিয়ে ওয়াসার সঙ্গে দ্বন্দ্বে ডিএসসিসি, ভোগান্তি নগরবাসীর
সহসাই চালু হচ্ছে না শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল
‘দুঃখ-কষ্ট-বঞ্চনার জীবনে এত পরমায়ু সৃষ্টিকর্তা আমাকে কেন দিল?’
রসগোল্লার চা বানিয়ে মাসে আয় ২ লাখ
বেনজীরের চেয়েও ‘ক্লাব প্রেমে’ এগিয়ে পরীমণিকাণ্ডে আলোচিত নাসির
দুর্নীতির অভিযোগে আলোচনায় আসা সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের চেয়েও ক্লাব প্রেমে এগিয়ে আছেন পরীমণিকাণ্ডে আলোচিত ব্যবসায়ী ও ঢাকা বোট ক্লাবের ফাউন্ডার মেম্বার নাসির ইউ মাহমুদ। নাসির উত্তরা ক্লাব, বোট ক্লাব ও গুলশানসহ প্রায় ১৫টি ক্লাবের মেম্বার আর বেনজীর আহমেদ ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, উত্তরা ও বনানী ক্লাবের মেম্বার। দুজনই কোটি কোটি টাকা খরচ করে এসব ক্লাবের মেম্বার হয়েছেন।  অবসরের পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মূলত আলোচনার শীর্ষে আসেন বেনজীর আহমেদ। বাদ যায়নি তার স্ত্রী সন্তানদের নামও। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হয়ে আইনভঙ্গ করে তথ্য গোপনের মাধ্যমে নিজেই ব্যবহার করেছেন সাতটি পাসপোর্ট। অভিযোগ উঠেছে, অবসরের মাসখানেক আগে ঢাকা বোট ক্লাব ছাড়াও প্রায় তিন কোটির বেশি টাকা খরচ করে চারটি অভিজাত ক্লাবের মেম্বার হয়েছেন বেনজীর। প্রশ্ন উঠেছে সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ক্লাবগুলোর মেম্বার হওয়ার টাকার উৎস নিয়ে। ঢাকা বোট ক্লাব প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাসির জানান, আমার জানামতে ঢাকাতে প্রায় সব ক্লাবেই বেনজীর সদস্য হয়েছেন। আইজিপি থাকা অবস্থায় এসব ক্লাবের সদস্য হন তিনি। তবে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে বেনজীরকে বোট ক্লাবে যুক্ত করা হয়েছিল পরে তা হতাশায় পরিণত হয়।  এদিকে, নাসির উই মাহমুদ নিজেও বহু অভিজাত ক্লাবের সদস্য। তিনি আলোচনায় আসেন মূলত পরীমণিকাণ্ডে। এরপর তাকে গ্রেপ্তারও করা হরেছিল। সেই নাসিরও ক্লাব প্রেমে হার মানিয়েছেন বেনজীরকে। তিনি গুলশান, বারিধারা, বনানী, ধানমন্ডিসহ প্রায় ১৫টি ক্লাবের মেম্বার।  নাসির বলেন, নিজেকে অভিজাত্যের জানান দিতেই এসব দামি ক্লাবের মেম্বার হন অনেকেই। আমি নিজেও ঢাকার বেশিরভাগ ক্লাবের সঙ্গে জড়িত। সদস্য হয়ে কোনো লাভ নেই, তবে সম্মান আছে। তার দাবি, ক্লাবগুলোতে অবৈধ উপায়ে নয়, বৈধভাবেই মদের বেচা-কেনা চলে। তবে ক্লাবগুলোতে মাদকের বাণিজ্য ও কর ফাঁকির বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিৎ বলে মনে করেন সচেতন মহল।
শশী বলতেই দৌড়ে আসে হরিণ, খায় চা-বিস্কুট ভাত নুডুলস 
মানুষের মতোই খায় ভাত, নুডুলস, সেমাই, মুড়ি-চানাচুর, চা-বিস্কুটসহ নানা খাবার। প্রায় সাড়ে ৫ মাস বয়সী হরিণ শাবকের নাম শশী।  নাম ধরে ডাকলেই শশী ছুটে যাচ্ছে সবার কাছে।  মানুষের ভালোবাসায় বড় হয়ে উঠছে সাবকটি।  শাবকটির মা-বাবা এখন বন বিভাগের বোটম্যান নূরউল্ল্যাহ।  গত ৩০ জানুয়ারি সকালের দিকে তজুমদ্দিন উপজেলার হানু দালাল বাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় খাবারের সন্ধানে ছুটে আসে একটি মা হরিণ সঙ্গে জন্ম দে এ শাবক।  ওইদিনই দুপুরের দিকে স্থানীয়দের আনাগোনার শব্দ শুনে শাবকটিকে রেখে পালিয়ে যায় মা হরিণ। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি জানান বন বিভাগকে।  এরপর হরিণটিকে লালনপালন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় বন বিভাগের বোটম্যান নূরউল্ল্যাহকে।  পরম যত্নে হরিণটিকে লালনপালনের সাথে তার নাম দেন শশী। প্রায় ৩ মাস পর্যন্ত হরিণ শাবকটিকে দৈনিক দেড় লিটার করে গরুর দুধ খাওয়ানো হয়।  পরে আস্তে আস্তে  ভাতের মাড় ও ঘাস খাওয়ানো হয়।  বর্তমানে হরিণটি ঘাসের পাশাপাশি ভাত, নুডুলস, সেমাই, মুড়ি-চানাচুর, চাসহ বিভিন্ন ধরনের মানুষের খাবার খায়। চাকরি জীবনের মাত্র ৬ মাসের মধ্যে শশীকে পেয়ে নূরউল্ল্যাহ যেন তার পরিবার থেকে দূরে থাকার কষ্টটা ভুলে গেছেন।  তবে মায়ায় কষ্ট হলেও নিয়ম অনুযায়ী হরিণ শাবকটিকে বনে অবমুক্ত করতে হবে বলে মনে করেন নুরউল্লাহ ।  
ভূতের গলি-পরীবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানের নামকরণের রহস্য
ভূতের গলির মানে কি গলি ভরা ভূতের সমারোহ, পরীবাগ মানে কি বাগান ভরা পরী? স্বামীবাগে কি শুধু স্বামীরাই থাকেন? আরামবাগের মানুষ কি সারাদিনই আরাম করেন? এলিফেন্ট রোড কি শুধু হাতিদের জন্য?  রাজধানী ঢাকা কারো কাছে ভালোবাসার শহর, কারো কাছে মায়ার শহর আবার কারো কারো কাছে জাদুর শহর। এ শহরের বিভিন্ন জায়গার রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। শুনতে মজার হলেও এসব নামের পেছনে রয়েছে এক একটি ইতিহাস। আসুন জেনে নেই রাজধানীর অতি পরিচিত বেশ কয়েকটি স্থানের নামকরণের নেপথ্য— ভূতের গলি এ এলাকায় Mr. boot নামে একজন ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন, তার নাম থেকে বুটের গলি, পরবর্তীতে বুট থেকে প্রচলিত হয়ে যায় ভুতের গলি নামে।   গেন্ডারিয়া  ইংরেজি শব্দ Grand Area থেকে এসেছে।  এ এলাকায় অভিজাত ধনী ব্যক্তিরা থাকতেন বলে এর নাম ছিল Grand Area।  কিন্তু লোকমুখে ইংরেজি শব্দ গ্র্যান্ড এরিয়া হয়ে যায় গেন্ডারিয়া। মহাখালী এ এলাকায় মহাকালী নামের একটি মন্দির ছিল।  সেই মহাকালি থেকে জায়গার নাম হয়ে যায় মহাখালী। গোপীবাগ এ এলাকায় গোপীনাগ নামক এক ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন।  নিজ খরচে তৈরি করেন ‘গোপীনাথ জিউর মন্দির’। এর পাশেই ছিল হাজারো ফুলের বাগান।  আর সর্বোপরি বাগান আর গোপীনাগ থেকে জায়গার নাম হয়ে যায় ‘গোপীবাগ’   পুরানা পল্টন, নয়া পল্টন: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ঢাকাস্থ সেনানিবাসে এক প্ল্যাটুন সেনাবাহিনী ছিল, তবে বাঙালীর বাংলা বলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই প্ল্যাটুন থেকে নাম হয়ে যায় পল্টন। পরবর্তীতে আগাখানিরা এই পল্টনকে দুইভাগে ভাগ করেন, নয়া পল্টন ছিল আবাসিক এলাকা আর পুরানো পল্টন ছিল বাণিজ্যিক এলাকা। পিলখানা, হাতিরঝিল, এলিফ্যান্ট রোড ও হাতিরপুল  ইংরেজ শাসনামলে প্রচুর হাতি পালা হতো বলে জায়গার নাম হয় পিলখানা।  হাতিগুলো যেখানে গোসল করানো হত তার নাম হয় হাতিরঝিল।  আর পিলখানা হতে ঝিলে যাওয়ার জন্য হাতিরা যে রাস্তা দিয়ে ব্যবহার করত তার নামকরণ করা হয় এলিফ্যান্ট রোড।  আর এর মাঝে ছোট্ট একটি কাঠের পুল ছিল, যার নামকরণ হলো হাতিরপুল।  স্বামীবাগ এ এলাকায় ত্রিপুরালিঙ্গ স্বামী নামে এক ধনী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ছিলেন।  এলাকায় স্বামীজি নামেও পরিচিত ছিলেন তিনি।  তার নামানুসারে এলাকার নাম হয় স্বামীবাগ। পরীবাগ পরীবানু নামে নবাব আহসানউল্লাহর এক মেয়ে ছিল।  ধারণা করা হয় পরীবানুর নামে একটি বড় বাগান করা হয়।  পরবর্তীতে তার নাম ও বাগানুসারে এর নামকরণ হয় পরীবাগ।  ধানমন্ডি এককালে এ এলাকায় বড় একটি হাট বসতো।  হাটটি ধান ও অন্যান্য শস্য বিক্রির জন্য বিখ্যাত ছিল।  আর তা থেকে এর নাম হয়ে যায় ধানমন্ডি।  কাকরাইল ঊনিশ শতকের শেষ দশকে ঢাকার কমিশনার ছিলেন মি. ককরেল।  নতুন শহর তৈরি করে নামকরণ হলো "কাকরাইল"। আরামবাগ এখানে প্রচুর ফল ও অন্যান্য গাছের বাগান ছিল।  মানুষ সেসব গাছের ছায়ায় আরাম করার পাশাপাশি ফল পেড়ে খেতো।  আর সর্বোপরি বাগান সমৃদ্ধ এলাকার নাম হয়ে যায় আরামবাগ।       
শুধু বাজেট প্রণয়ন করেই চলমান সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়
শুধু বাজেট প্রণয়ন করেই চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। এমনকি প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলেও মত অর্থনীতিবিদদের। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে রেমিট্যান্স প্রবাহ, রপ্তানি প্রবৃদ্ধিসহ অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক চাপে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে কমতে থাকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে বিশ্বজুড়ে বেড়ে যায় জ্বালানির দাম, দ্রব্যমূল্য আর পরিবহন ভাড়া। এতে দেশে দেখা দেয় ডলার সংকট। গেল মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৮ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ডলার সংকট কাটাতে বিদেশি বিনিয়োগ টানার আভাস দিয়েছে সরকার। তবে ঠিক কীভাবে রিজার্ভ বাড়বে তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। ডলার সংকট ছাড়াও ঋণ ও কর খেলাপি, অর্থ পাচারসহ নানা কারণে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেজন্য বাজেট বহির্ভূত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভরশীলতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ সিপিডির বিশেষ ফেলো ডক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের। ডলার সংকট কমাতে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে আমানতকারীদের হিসাবের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্ক অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয় বাজেটে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি, রিজার্ভ ও এলসি খোলার সংকট সমাধানসহ বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।  তবে শুধু কর অব্যাহতি দিয়ে নয়, এর জন্য মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করা জরুরি বলে অভিমত সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের।
বাজেট প্রস্তাবের পরদিনই বাজারে পণ্যের দামে উত্তাপ
প্রায় আট লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবের পরদিনই বাজারে পণ্যের দামের উত্তাপে হাঁসফাঁস অবস্থা ক্রেতার। কোনো কারণ ছাড়াই খরচে বাড়ছে টাকার অঙ্ক। বাড়তি সব ধরনের সবজির দাম। পেঁয়াজ-রসুনের দামের হেরফেরে একটু বেশি টান পড়ছে ক্রেতার পকেটে। তবে কিছুটা সহনীয় মাছের দাম। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট প্রস্তাব ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পার হয়নি এখনো। প্রস্তাবনায় রয়েছে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমার আভাস। অথচ এরই মধ্যে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম।    গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিক্রি হওয়া ৪০ টাকা কেজির ঢেঁড়স আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। করলা ৭০ থেকে ৮০ আর বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সেঞ্চুরি হাকিয়েছে কাকরোল ও ঝিঙা। বেড়েছে টমেটোর দামও। ক্রেতারা বলছেন, গতকাল বাজেট হয়েছে, আজ কাঁচা বাজারে সব কিছুর দাম বাড়তি। প্রত্যেকটা সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়তির ফলে কম বাজার করতে হচ্ছে এখন।  সবে মাত্র প্রস্তাব, এখনো পাস হয়নি বাজেট। এরই মধ্যে বাজারের এমন উত্তাপ দুশ্চিন্তায় ফেলছে ক্রেতাদের। বাদ যায়নি, বাজেট নিয়ে সমালোচনাও। কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সামান্য কিছু কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করতে বলা হয়েছে। আমি মনে করি যারা চাকরি করি, ইনকাম করে কর দিই তাদের জন্য এটা অন্যায় করা হয়েছে।  পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ ও রসুন ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর বাজারে দাম কমতে থাকায় কিছুটা স্বস্তিতে ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, আলুর দাম কিছুটা কমেছে। সামনে আরও কমার সম্ভাবনা আছে, তবে বাড়বে না হয়তো।   ৭৮০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হলেও মুরগি আগের দামেই রয়েছে। সহনশীল রয়েছে মাছের বাজার। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাজারে ক্রেতা কম বলে জানায় বিক্রেতারা। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ক্রয়সীমার মধ্যে রাখতে কঠোর মনিটরিংয়ের দাবি সাধারণ মানুষের।   
ফুটপাতে ছোলার বিরিয়ানি বিক্রি করে ঢাকায় বানালেন বাড়ি
না আছে বড় ডেগ, না আছে চাল। ফুটপাতে বিক্রি করছেন ছোলার বিরিয়ানি। ছোলা দিয়ে তৈরি বলে বিশেষ এই খাবারটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ছোলা-বুটের’ বিরিয়ানি নামে। সুস্বাদু এই বিরিয়ানি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইদ্রিস মিয়া নামের এক বিক্রেতা। তার বিরিয়ানির স্বাদ নিতে দেখা গেছে ভোজনরসিকদের উপচেপড়া ভিড়। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ের পাশে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বড় থালিতে করে ছোলার এ বিরিয়ানি বিক্রি করছেন ইদ্রিস মিয়া। সকাল ১১টায় বিক্রি শুরু করেন তিনি। দুপুর ২টা বাজতেই মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায় তার বিরিয়ানি। তাই তো এক প্লেট বিরিয়ানির স্বাদ নিতে লেগেই থাকে ভোজন রসিকদের হুড়োহুড়ি।   ছোলার বিরিয়ানির স্বাদ নিয়েছেন এমন কয়েকজন জানান, ছোলার মধ্যে আছে ডিম আর চিকেনের পিস। এই মুখরোচক খাবারটির অসাধারণ স্বাদ। এমন ব্যতিক্রমি খাবার এর আগে কোথাও খাইনি। ছোলাগুলো অনেক নরম যা মুখে দিলেই গলে যায়। ছোলা সাধারাণত যেমন থাকে, এই ছোলার বিরিয়ানি তেমন না, পুরোই অন্যরকম।  প্রায় ৪০ বছর ধরে ছোলার বিরিয়ানি বিক্রি করছেন ইদ্রিস মিয়া। শুরুতে সাধারণ ছোলা বিক্রি করতেন অন্যদের মতো। একটু ব্যতিক্রম স্বাদ আনার জন্য ভিন্নভাবে রান্নার চেষ্টা করেন তিনি। তার এই চেষ্টা বিফলে যায়নি। তৈরি করেন এই বিশেষ ছোলা বিরিয়ানি। ইদ্রিস মিয়া এই ছোলার বিরিয়ানি বিক্রি করেই সন্তানদের বড় করেছেন, ঢাকায় কিনেছেন বাড়িও। এই বিরিয়ানি খেতে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন ছুটে আসেন ভোজনরসিকরা। বিশেষ এই মজার খাবার খেয়ে হন সন্তুষ্ট। বিরিয়ানি নিতে দাঁড়াচ্ছেন দীর্ঘ লাইনে। কেউ কেউ আবার কয়েক বাটি ছোলা বিরিয়ানি একাই করেন সাবাড়।  তথ্য ও ভিডিও: সাকিব হাওলাদার  
বাংলাদেশের সব খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের এনার্জি, খাদ্য, আধুনিক অর্থনীতি, কৃষিসহ সব ধরনের খাতেই বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল। এদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্পে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান; যা নতুন করে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের নজর কেড়েছে। তাই এবার ঢাকা সফরে এসেছে ৩০টিরও বেশি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। যেখানে আছে অ্যামাজান প্রাইম, উবার থেকে শুরু করে এক্সসেলারেট এনার্জির মত কোম্পানিও। আরটিভির সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি অতুল কেশাপ। তিনি জানান, করনীতি যত ব্যবসাবান্ধব হবে তত বেশি বিনিয়োগ আসবে। তিনি আরও জানান, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য অসীম সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে। এ দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কোনো বিষয় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।  ফ্রিল্যান্সিং খাতে বাংলাদেশ যে অভূতপূর্ব অবস্থান গড়ে তুলেছে, তা দেখার মতো বলে মন্তব্য করেন অতুল কেশাপ। বর্তমানে এ পেশায় বাংলাদেশের প্রায় ৭ লাখ লোক কাজ করে, যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে নেই। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে মার্কিন এই কূটনৈতিক কাজ করেছেন দক্ষিণ এশিয়ায়। তার ভাষ্য, অন্যদের যেখানে সঠিক নীতি গ্রহণে হিমশিম অবস্থা, তখন সগৌরবেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে যেতে কাদের বিনিয়োগ বেশি নেবে, সে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন অতুল কেশাপ।