• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
যে ব্যক্তির রোজা আল্লাহর কাছে মূল্যহীন
রমজানের বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে মুসলমানগণ অবহিত আছে। অবহিত আছে এই মাসের বিশেষ করণীয় সম্পর্কে। রসুলুল্লাহ (সা.) এই মাসটি অধিক গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতেন। এই মাসে ইবাদত-বন্দেগিতে তিনি সময় বেশি দিতেন। কোরআন তিলাওয়াত ও দান-সদকা সবই অধিক পরিমাণে পালন করতেন।  রোজা ফারসি শব্দ, অর্থ উপবাস থাকা। কোরআন-হাদিসে এটিকে সিয়াম বলে। রোজা শব্দটিই প্রচলিত। সাওম বা সিয়াম শব্দের অর্থ বিরত থাকা। শরিয়তের পরিভাষায়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া, পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম, সিয়াম বা রোজা বলে।  তবে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকলেই রোজার হক আদায় হয়ে যাবে না। পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে এবং অন্যান্য আমল ও ইবাদতে নিজেকে মশগুল রাখতে হবে, তবেই রোজার পূর্ণ হক আদায় হবে।  কিন্তু আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ দেখতে পাই, যারা রোজা রেখেও আরেকটি ফরজ ইবাদত নামাজ ছেড়ে দেয়। রোজা রাখা সত্ত্বেও অন্যের ওপর জুলুম থেকে বিরত হয় না। সুদ, ঘুষ ও হারাম ভক্ষণের মতো ভয়াবহ পাপ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখতে পারে না। রোজা রেখেও কিছু মানুষ মাপে কম দেয়। রোজার মতো মহান আমলটি করা সত্ত্বেও গিবত ও পরনিন্দা, চোগলখুরি, অপর ভাইয়ের সম্মানহানি ইত্যাদিতে কিছু মানুষ ব্যস্ত সময় কাটায়। সত্যি কথা হলো, এ ধরনের রোজাদারদের রোজার কোনো মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। বরং এটি নিছকই কিছু সময় ক্ষুধার্ত থাকা। আর কিছু নয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখেও অশ্লীল কাজ ও পাপাচার ত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ করার কোনো মূল্য নেই।’ (বুখারি, হাদিস, ৬০৫৭, ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৬৮৯) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা হলো বান্দার জন্য ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ না এটাকে সে ভেঙে না ফেলে।’ বলা হলো, ‘এটা কীভাবে ভাঙা হয়?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘মিথ্যা অথবা গিবত তথা পরনিন্দার মাধ্যমে।’ (আল মুজামুল আওসাত: ৪৫৩৬) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরেক বর্ণনায় বলেন, নবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, রোজা থেকে তার প্রাপ্য কেবলই ক্ষুধার্ত থাকা ও পিপাসার্ত থাকা। এবং অনেক রাতের নামাজ আদায়কারী এমন আছে, যাদের এ নামাজের অংশ শুধুই দাঁড়িয়ে থাকা।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৪৮১)  অর্থাৎ রোজার শিষ্টাচার বজায় না রাখার কারণে এবং রোজার সম্মান বিনষ্ট করার কারণে আল্লাহর কাছে সেটা আর গৃহীত হয় না। ফলে সেটা একেবারেই মূল্যহীন হয়ে যায়। রোজা তাকওয়া অবলম্বনের মাধ্যম : আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীরুতা) অবলম্বন করতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৩) যেহেতু রোজা আল্লাহর বিধান এবং আমাদের জন্য তা ফরজ করা হয়েছে, তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে রোজা পালন ও রোজার অন্যান্য হক যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, রোজা একমাত্র আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দিব। (মুসলিম, হাদিস, ২৭৬০) রমজান পেয়েও যে হতভাগা : জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। তার কথার সাথে একমত পোষণ করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমিন বলেছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রমজানের হক আদায় করার তাওফিক দান করুন এবং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামমের অভিশাপ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন। আমিন।  
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪১

ফেনীতে আল্লাহর ৯৯ নাম সম্বলিত ভাস্কর্য উদ্বোধন
ফেনী পৌরসভার নান্দনিক সৌন্দর্যের মধ্যে আরও একটি সংযোজন হলো আল্লাহ তা’আলার ৯৯টি নাম সম্বলিত ইসলামিক ভাস্কর্য।  রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শহরের মিজান রোড়ের মাথায় (সোনালী ব্যাংকের সামনে) ইসলামিক ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। এ সময় চত্বরটির নাম করণ করা হয় শান্তি চত্বর। এমন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য বলেন, মিজান ময়দানে জেলার সব বড় বড় প্রোগ্রাম হয়। এখানে ঈদের জামাতসহ আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলন হয়। সে ময়দানের সম্মুখে আল্লাহর নাম সম্বলিত এ শান্তি চত্বর নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।  তিনি বলেন, আমরা ধর্মপ্রাণ মুসলমান আমাদের জন্য এসব আবেগের। এমন ভাস্কর্য পৃথিবীর কোথাও নেই। এই প্রথম ফেনীতে এটি স্থাপন হয়েছে। ফেনীর মানুষ শান্তিতে বিশ্বাসী আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। এ সময় পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ফেনী পৌরসভার অর্থায়নে ইসলামিক ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। মুসলিম দেশ হিসেবে ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শন, আল্লাহ ও রাসূলের নাম মানুষের সামনে উপস্থাপন করা মুসলমান হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকে এই ভাস্কার্যটি স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এগুলো দেখে মানুষ যাতে আল্লাহ ও রাসূলের এবং ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। এ ছাড়াও ফেনী পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ইসলামিক ভাস্কর্যের মাধ্যমে শহরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে কাজ করছি। আশা করছি, শহরের আরও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ইসলামিক নিদর্শন স্থাপনের মাধ্যমে মুসলিম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এখান থেকে আরও বেশি উন্মোচিত হবে। এ ছাড়াও ভাস্কর্যটি ওপরে চারটি এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে। যার মাধ্যমে কোরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল, বিভিন্ন ইসলামিক প্রোগ্রাম ও সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম প্রচার করা হবে বলে জানান তিনি। পৌরসূত্রে জানা যায়, ২ মাসে এর কাজ সমাপ্তি করেন নিউ স্মার্ট জেনারেল সার্ভিস নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ভাস্কার্যটিতে ৭ হাজার এলইডি লাইট রয়েছে। এ সময় ফেনী আলিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, প্যানেল মেয়র জয়নাল আবেদিন লিটন হাজারী, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুর রহমান, ১২নং কাউন্সিলর হারুন মজুমদার, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন বাহার, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কহিনুর আলম, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খালেদ খান, ফেনী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি সাইফুল্লাহ, কোর্ট মসজিদের খতিব মাওলানা মীর হোসেন, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মাদরাসা শিক্ষকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৭

যেসব জিকিরে সহজ হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ
জিকির মানে আল্লাহ তা'আলার স্মরণ। আর আল্লাহকে স্মরণই হচ্ছে যাবতীয় ইবাদতের প্রধান ও অন্যতম লক্ষ্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন। ’ -সূরা আনকাবুত ৪৫ পবিত্র কোরআনে কারিমের অন্যত্র আল্লাহ তা'আলা আরও ইরশাদ করেন, ‘এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী- এদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন ক্ষমা ও মহা প্রতিদান। ’ -সূরা আহজাব ৩৫ তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত বেশি বেশি আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের জিকির করা। জিকির বিষয়ে অভিজ্ঞ আলেমরা বলেছেন, নিম্নে উল্লেখিত জিকিরগুলো নিয়মিত আদায় করলে মৃত্যুর পর জান্নাতপ্রাপ্তি ও আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন সহজ হয়। জিকিরগুলো হলো- এক. প্রতিদিন ১০০ বার করে ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করলে ১ হাজার সওয়াব লেখা হয় এবং  ১ হাজার গুনাহ ক্ষমা করা হয়। -সহিহ মুসলিম ৪২০৭৩ দুই. ‘আলহামদুলিল্লাহ’র জিকির মিজানের পাল্লাকে ভারী করে দেয় এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। - তিরমিজি ৫৪৬২ ও ইবনে মাজা ২১২৪৯ তিন. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সর্বোত্তম জিকির। -তিরমিজি ৫৪৬২ ও ইবনে মাযা ২১২৪৯ চার. ‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ; ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ এই বাক্যগুলো আল্লাহতায়ালার নিকট অধিক প্রিয় এবং নবী করিম (সা.) বলেন, পৃথিবীর সমস্ত জিনিসের তুলনায় আমার নিকট অধিক প্রিয়। -সহিহ মুসলিম ৩১৬৮৫ ও ৪২০৭২ পাঁচ. যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করবে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ (সগিরা) গুনাহ থাকলেও তাকে মাফ করে দেওয়া হবে। -সহিহ বোখারি ৭১৬৮ ছয়. নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লিল আজিম’ এই কালেমাগুলো উচ্চারণে খুব সহজ, মিজানের পাল্লায় ভারী ও দয়াময় আল্লাহতায়ালার নিকট অতি প্রিয় । -সহিহ বুখারি ৭১৬৮ সাত. যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহিল আজিমি ওয়াবিহামদিহি’ পাঠ করবে প্রতিবারে তার জন্য জান্নাতে একটি করে (জান্নাতি) খেজুর গাছ রোপন করা হবে । -তিরমিজি ৫৫১১ আট. নবী করিম (সা.) বলেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ’ হচ্ছে জান্নাতের গুপ্তধনসমূহের মধ্যে একটি গুপ্তধন। -সহিহ বুখারি ১১২১৩ নয়. নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ’- এই কালেমাগুলো হচ্ছে অবশিষ্ট নেকআমলসমূহ। -আহমাদ ৫১৩ দশ. হজরত নবী করিম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, দরুদের মধ্যে সর্বোত্তম দরুদ হচ্ছে দরুদে ইব্রাহীম (সালাতের মধ্যে যে দরুদ পাঠ করা হয়)। এছাড়া ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ পাঠ করলেই দরুদ পাঠের বরকত পাওয়া যায়। নবী করিম (সা.) আরও বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি সকালে দশবার এবং বিকেলে দশবার দরুদ পাঠ করবে সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ পাবে। -আত-তারগিব ওয়াত তারহিব ১২৭৩ ওপরে বর্ণিত ফজিলত ও প্রতিশ্রুত পুরস্কারসমূহ অর্জন করার অভীষ্ট লক্ষ্যে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত উল্লেখিত জিকিরগুলো নিয়মিত আদায় করা।  
০৮ মার্চ ২০২৪, ১৭:৩২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়