• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
রেকর্ড উৎপাদনেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না লোডশেডিং
বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সময় উপযোগী উদ্যোগে ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে বিদ্যুৎ খাত। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতাও বেড়েছে আগের তুলনায়। এরই মধ্যে দুদিন আগে উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এরপরও বেতাল ভূতের মতো ঘাড়ে চেপে আছে লোডশেডিং। হিসাব বলছে, উৎপাদনে রেকর্ডের কয়েক দিন না যেতেই রেকর্ড হয়েছে লোডশেডিংয়েও। রোববার দেশে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছাড়িয়েছে এক হাজার ৮৬০ মেগাওয়াট, গত এক দশকের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।  পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্য অনুযায়ী, গত ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশজুড়ে লোডশেডিং অব্যাহত। ২৮ এপ্রিল দুপুর ১২টায় এই লোডশেডিং  পৌঁছায় এক হাজার ৮৬৪ মেগাওয়াটে। পিজিসিবি কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লেও তাপপ্রবাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ ও তার চাহিদার মধ্যে পার্থক্যের কারণেই লোডশেডিংয়ের সৃষ্টি হয়। এদিকে আবার বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থার গ্রামীণ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লোডশেডিংয়ের মাত্রা এনএলডিসির দেখানো সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থানীয়ভাবে হওয়া বিঘ্নগুলো সবসময় তালিকাভুক্ত হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) একজন কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় বিভ্রাট বিবেচনায় নিলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ দুই হাজার মেগাওয়াটের চেয়েও বেশি হতে পারে। তার তথ্যমতে, গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এত ঘনঘন হয় যে, কোনো সমস্যা হলে গ্রাহকদের দিনে ও রাতে উভয় ক্ষেত্রেই কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় বিদ্যুৎ ফিরে পেতে।  বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে দিনের চাহিদার পূর্বাভাস নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট এবং সান্ধ্যকালীন চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। আর বিআরইবি বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোর বাসিন্দাদের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে। এদিকে রেকর্ড উৎপাদনের মধ্যেও লোডশেডিং বৃদ্ধির কারণ খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসে গ্যাস সংকটের ব্যাপারটিও। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে দেশে বর্তমানে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে তিন হাজার ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট। উৎপাদিত এ গ্যাসের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ ব্যবহার করে বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।  বিশেষ করে যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, গ্যাস সংকটের কারণে তাদের বেশিরভাগেরই উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। রোববারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুই হাজার ৩১৭ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে ওইদিন এক হাজার ৪২৩ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এ ছাড়া যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো আমদানিকৃত জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল, চলমান ডলার সংকটের কারণে তাদের উৎপাদনও অদূর ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে, চলতি বছর দেশের সার্বিক বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকারের আরও কৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।  
১ ঘণ্টা আগে

আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ২ মে পর্যন্ত ছুটি বহাল
দেশে তীব্র তাপদাহের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদরাসার পাঠদান আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত স্কুল-মাদরাসায় ছুটি বহাল থাকছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের আপিল না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের আদেশের পর অসন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানান। ওইদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। সবকিছুতেই কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আদালতের নিদের্শনা নিয়ে আসতে হবে? সাংবিধানিকভাবে যার যা দায়িত্ব তা পালন করা বাঞ্ছনীয় বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। সোমবার আদেশে আদালত বলেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) রয়েছে সেগুলোতে যথারীতি পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে। এ ছাড়া যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার দিন ধার্য করা থাকে সেক্ষেত্রে সিডিউল অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান জামান আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রেণিকক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা এসি নেই, তীব্র গরমের কারণে এ ধরনের প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলো বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আইনজীবী আরও জানান, কোনো প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার দিন ধার্য থাকলে নির্ধারিত সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়া যাবে। 
২ ঘণ্টা আগে

ন্যায্য মজুরি না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে শ্রমিকরা: মির্জা ফখরুল
দেশের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মে দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক বাণীতে এ মন্তব্য করেন তিনি। মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধি ও নিরাপদ জীবন কামনা করি। আজও শ্রমিকরা তাদের সব ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত। শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না, দ্রব্যমূল্যের প্রকোপে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তিনি বলেন, বিএনপি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আগামীতেও আমরা একইভাবে শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের কাজের পরিবেশ নিরাপদ এবং তাদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাবো। শ্রমজীবী মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। শ্রমিকের ঐতিহাসিক অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙা হয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, মে দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘সকলের জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মর্যাদাপূর্ণ কাজ’। মে দিবসে এই নীতি বাস্তবায়ন করতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ গতিশীল চিরায়ত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার জরুরি। নিশ্চিত করতে হবে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন। সবশেষে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল ও উদ্যোগী হওয়ার জন্য আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
৪ ঘণ্টা আগে

বাকি না দেওয়ায় দোকানিকে কুপিয়ে হত্যা
মুন্সীগঞ্জে বাকিতে চিপস-সিগারেট না দেওয়ায় মোশারফ হোসেন (৫৫) নামে এক মুদি দোকানিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রুবেল মিয়া (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সদর উপজেলার মিরকাদিমের কাগজীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়ির পাশেই মোশারফের মুদির দোকান। প্রতিদিন তিনি দোকানেই ঘুমাতেন। রাত দেড়টার দিকে রুবেল মিয়া সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে ডেকে তোলেন এবং চিপস-সিগারেট চান। কিন্তু দোকানি বাকি দেওয়া যাবে না বলে জানালে কথা-কাটাকাটি হয় দুজনের। একপর্যায়ে মোশারফকে দোকান থেকে টেনে বের করে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন রুবেল।  পরে স্থানীয়রা মোশারফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্ডার খায়রুল ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার সঙ্গে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
৭ ঘণ্টা আগে

উপজেলা নির্বাচন / ছাড় পাচ্ছেন না স্বজনকে প্রার্থী করা মন্ত্রী-এমপিরা
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী ও দলীয় এমপির তালিকা তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। অভিযুক্ত মন্ত্রী এবং দলীয় এমপিকে শোকজ করা হতে পারে। সাংগঠনিক শাস্তির পাশাপাশি কেড়ে নেওয়া হতে পারে দলীয় পদ-পদবি। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয় ও নিজস্ব লোক উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা পেয়ে ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠক করেন। বৈঠকে এ ধরনের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয় এবং পরে তা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়।  আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। তবু মন্ত্রীসহ দলের কয়েকজন এমপির স্বজন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগে শুধু ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক এবং নাটোরের সিংড়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাজহারুল ইসলাম সুজন এমপির দুই চাচা মোহাম্মদ আলী, সফিকুল ইসলাম ও ভাতিজা আলী আফসার রানা, নীলফামারীর ডিমলায় আফতাব উদ্দিন সরকার এমপির চাচাতো ভাই আনোয়ারুল হক সরকার ও ভাতিজা ফেরদৌস পারভেজ, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সাহাদারা মান্নান এমপির ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল, সোনাতলায় এমপির ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন, পাবনার বেড়ায় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ভাই আবদুল বাতেন ও ভাতিজা আবুল কালাম সবুজ, কুষ্টিয়া সদরে মাহবুবউল-আলম হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় আলী আজগর টগর এমপির ভাই আলী মুনসুর বাবু, পিরোজপুরের নাজিরপুরে শ ম রেজাউল করিম এমপির ভাই এস এম নুর ই আলম সিদ্দিকী, মাদারীপুর সদরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান, নরসিংদীর পলাশে ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ এমপির শ্যালক শরীফুল হক, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রার্থী হয়েছেন শাহাব উদ্দিন এমপির ভাগনে সোয়েব আহমদ, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপির ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী, কক্সবাজারের মহেশখালীতে আশেক উল্লাহ রফিক এমপির চাচাতো ভাইয়ের ছেলে হাবিব উল্লাহ। আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, লাকসামে মন্ত্রীর শ্যালক মহব্বত আলী এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক এমপির ভাই সালাম মল্লিক। এ পরিস্থিতিতে স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী ও দলীয় এমপির তালিকা তৈরি করা হয়। এর মধ্যে আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলা নির্বাচনে যেসব মন্ত্রী ও এমপির স্বজন প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তালিকা চূড়ান্ত করেন দলের আট সাংগঠনিক সম্পাদক। দলের নির্দেশ না মানায় বহিষ্কারের নিয়ম রয়েছে। তবে নানাভাবেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দলের সংশ্লিষ্ট এমপি ও মন্ত্রীকে তিরষ্কার করার পাশাপাশি দলীয় পদ-পদবি কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে জোর আলোচনা রয়েছে। এমনকি সাংগঠনিক যোগ্যতা থাকার পরও তারা নতুন করে দলের পদ-পদবি নাও পেতে পারেন। সেই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়াটা তাদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।  আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম জানান, মন্ত্রী ও দলের এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। আর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অভিযুক্ত মন্ত্রী এবং দলীয় এমপিকে শোকজ করা হতে পারে। এ ছাড়া মন্ত্রী–সংসদ সদস্যরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও নানাভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশে এখন ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। এবার চার ধাপে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫টিতে ভোট হবে, পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৮ মে থেকে প্রথম পর্যায়ের ভোট শুরু হবে।
২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৭

শীর্ষে মোস্তাফিজ, তবুও পাচ্ছেন না পার্পল ক্যাপ
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সেরা বোলারের স্বীকৃতি পার্পল ক্যাপ। অন্যদিকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের জন্য আছে অরেঞ্জ ক্যাপ। এবারের আসরের শুরুর দিকে টাইগার পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে একাধিকবার এই পার্পল ক্যাপ নিয়ে মাঠ মাতাতে দেখা গেছে।  বরাবরই সেরার তালিকায় আধিপত্য দেখিয়েছেন কাটার মাস্টার। এবার তিন ম্যাচ পর ফের শীর্ষে উঠেছেন দ্য ফিজ। তবে ওপরের সারিতে থাকলেও এই টুপি পাচ্ছেন না তিনি।  রোববার (২৮ এপ্রিল) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে জোড়া উইকেট শিকারের দিনে ফের শীর্ষ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষে উঠেছেন লাল-সবুজের এই প্রতিনিধি। এদিন ইনিংসের ১৯তম ওভারে শাহবাজ আহমেদ এবং জয়দেব উনাদকাটের উইকেট নেন দ্য ফিজ। এতে ৮ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি। শীর্ষে উঠলেও হারানো পার্পল ক্যাপটা মেলেনি তার। ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর কাছেই থাকছে বিশেষ এই স্বীকৃতি। উইকেট প্রতি রান খরচা বিবেচনায় এই মালিকানা নিজের ঝুলিতে পুরেছেন বুমরাহ। উইকেট প্রতি রান খরচ বিবেচনায় বেশ খরুচে মোস্তাফিজ। প্রতিটি উইকেট নিতে ২১ দশমিক ১৪ রান দিয়েছেন কাটার মাস্টার। অন্যদিকে বেশ মিতব্যয়ী বুমরাহ। ১৭ দশমিক ৭ গড়ে রান দিয়ে ১৪ উইকেট নিয়েছেন ভারতীয় এই পেসার। ১৪ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় পাঞ্জাব কিংসের হার্শাল প্যাটেলও আছেন। তবে রান দেওয়ায় ফিজকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। প্রতিটি উইকেট নিতে ২৩ দশমিক ৩৮ গড়ে রান দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ৬ ম্যাচে ১৩ উইকেট শিকার করে পার্পল ক্যাপের দৌড়ে মাথিশা পাথিরানাও টিকে আছেন। ইনজুরির কারণে আসরের শুরুর দিকে তিন ম্যাচে খেলা হয়নি তার।
২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:১৬

জ্যোতির ফিফটিতেও রক্ষা পেল না টাইগ্রেসরা, এগিয়ে গেল ভারত
আসন্ন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে এসেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল। সিরিজে প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের মেয়েদের ৪৪ রানে হারিয়েছে হারমানপ্রিত কৌরের দল। এতে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে গেল সফরকারীরা। রোববার (২৮ এপ্রিল) আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ১৪৬ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এতে ৪৪ রানের জয় পায় ভারত। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় টাইগ্রেসরা। দলীয় ৩০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফেরেন দিলারা আক্তার (৪)। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি সোবহানাও। ৮ বলে ৬ রান করেন তিনি। ১৮ বলে ১৩ রান করে আউট হন আরেক ওপেনার মুর্শিদা। এরপর উইকেটের মিছিলে যোগ দেন ফাহিমা খাতুন (১), স্বর্ণা আক্তার (১১) এবং রাবেয়া খাতুন (২)। কিন্তু একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে থাকেন দলপতি নিগার সুলতানা জ্যোতি। তাকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন নাহিদা। ১৮ বলে ১১ রান করে নাহিদা আউট হলেও ৪৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন টাইগ্রেস অধিনায়ক। ৪৮ বলে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত মারুফা আক্তার (১) এবং সুলতানা খাতুন (০) অপরাজিত থাকলেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এতে ৪৪ রানের জয় পায় ভারত। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন রেণুকা সিং। এ ছাড়াও পূজা ভাস্ত্রকার দুটি এবং দীপ্তি শর্মা, শ্রেয়াঙ্কা পাতিল ও রাধা যাদব একটি করে উইকেট নেন। এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। ৯ বলে ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন স্মৃতি মান্ধানা। এরপর ইয়াস্তিকা ভাটিয়াকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন শেফালি ভার্মা। তবে ২২ বলে ৩১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শেফালি। এরপর ক্রিজে এসে ব্যাট চালাতে শুরু করে হারমনপ্রিত। ২২ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরেন ভারতীয় এই অধিনায়ক। ২৯ বলে ৩৬ রান করে তাকে সঙ্গ দেন ইয়াস্তিকা। শেষ দিকে রিচা ঘোষ (২৩), সজানা সজীবন (১১) এবং পূজা ভাস্ত্রকার ৪ রানে আউট হলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রানের বড় পুঁজি পায় ভারত। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন রাবেয়া খাতুন। এ ছাড়া মারুফা আক্তার দুটি এবং ফারিহা তৃষা ও ফাহিমা খাতুন একটি করে উইকেট নেন।
২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১

নামছে স্তর, রাজবাড়ীতে কোথাও মিলছে না পানি
সারাদেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রাজবাড়ীর জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। একদিকে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে জেলার মানুষ অন্যদিকে নতুন করে প্রায় সব উপজেলাতে দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। এতে যেমন বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন, তেমনি ব্যহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন। জানা গেছে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে খরায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। যার ফলে নলকূপে (টিউবওয়েল) পানি উঠছে না। পানির অভাবে গৃহস্থালী কাজকর্ম যেমন ব্যহত হচ্ছে তেমনি জমিতে সেচ দিতে পারছে না কৃষক। সেচের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফসলাদি। বালিয়াকান্দি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভৌগোলিক কারণে বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলাটি ভিন্ন। আশপাশের তুলনায় এই অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ স্তর বেশ নিম্নমুখী। যে কারণে প্রতি বছর পানির স্তর ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি নিচে নেমে যাচ্ছে। বালিয়াকান্দিতে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫০ হাজার। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৫টি পরিবারের জন্য কমপক্ষে একটি নলকূপ থাকা জরুরি। সে অনুযায়ী বালিয়াকান্দিতে প্রয়োজন প্রায় ১০ হাজার নলকূপ। কিন্তু সরকারি ভাবে ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৬০টি সাবমারসিবল পাম্প ও ২০১৯ সাল থেকে ৫২০টি তারা টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য।  ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেসব বাসাবাড়িতে টিওবয়েল বসানো হয়েছে সেগুলোতেও এখন আর পানি উঠছে না। পানি না ওঠার কারণ হিসেবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বলছে, বালিয়াকান্দিতে বর্ষা মৌসুমে পানির স্তর ১৫ থেকে ২২ ফুট নিচে চলে যায়। আর শুষ্ক মৌসুমে বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৩২ ফুট নিচে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো নলকূপগুলোর পাম্পিং ক্ষমতা ২০ থেকে ২৪ ফুট। যার কারণে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পানি থাকে না। শুধুমাত্র সরকারিভাবে বসানো তারা ও সাবমারসিবল পাম্প দেওয়া নলকূপে পানি থাকে। বালিয়াকান্দির সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা অনিক শিকদার, সবুজ শিকদার, নারুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মিঠুন, রিয়াদসহ অনেকেই জানান, গত কয়েক দিন হলো বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্নস্থানে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েল পানি উঠছে না। বাড়ির গৃহস্থালি কাজ করার জন্য অন্য জায়গা থেকে পানি আনতে হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তি বেড়েছে বাড়ির মা-বোনদের। পানির এ সমস্যা শুধু বালিয়াকান্দিতেই নয়। রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালীতেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই উপজেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। গত কয়েকদিন ধরে পানি ওঠা বন্ধ হয়েছে। তীব্র খরায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে পানি উঠছে না বলে জানান স্থানীয় অনেকেই। কিছু নলকূপে পানি উঠলেও পারিমাণে অনেক কম। সমস্যা বেশি সৃষ্টি হয়েছে পুকুর ও বিভিন্ন জলাশয় পানি শূন্য হয়ে যাবার কারণে। অনেক পরিবার পানির সমস্যা সমাধানে মোটর বসিয়েছে। সেখান থেকে পানি নিয়ে চাহিদা মেটাচ্ছে অন্য পরিবারগুলো। পানির সংকটে প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। স্যালো মেশিনেও পানি উঠছে না। ফলে পাটের জমিতে সেচ দিতে পারছে না কৃষক। অনেক জমির পাট পানির অভাবে মারা যাচ্ছে। অনেক কৃষক স্যালো মেশিনে পানি তুলতে ১২ ফুট গর্ত করেছে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের আটদাপনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এখানে কোনো নলকূপে পানি উঠছে না। অনেকে নলকূপের সাথে মোটর বসিয়েছে। তারপরও পানি উঠছে না। পাংশা উপজেলার সরিষা, বাবুপাড়া, কলিমহর, মৌরাট, পাট্টা ইউনিয়নেও চলছে পানির সংকট। পাশাপাশি এসব এলাকার চাষিরা পানির অভাবে পাটের জমিতে সেচ দিতে পারছে না। রাজবাড়ী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাকারিয়া বলেন, গ্রীষ্মকালে খরায় পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে টিউবওয়েল থেকে পানি ওঠে না। আমাদের এ অঞ্চলে বেশির ভাগ পানির লেয়ার ২৫ ফুটের নিচে নেমে গেছে। ফলে এখন টিউবওয়েল ও চাপকল দিয়ে পানি উঠছে না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে যারা সাবমারসিবল পাম্প অথবা তারা টিউবওয়েল বসিয়েছে তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:১৬

‘বিয়ে না করানোয় মাকে কুপিয়ে হত্যা করেন ছেলে’
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাকে কুপিয়ে হত্যার ৬ ঘণ্টা পর পলাতক আসামি মো. রাসেলকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যমে উপজেলার কেরোয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামের খান বাড়িতে ছেলে রাসেল হোসেন তার মা রানু বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সে বিষয়টি তার বাবা আতর খানকে মুঠোফোনে জানিয়ে পালিয়ে যায়। রাসেলের দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করে পুলিশ। খুন হওয়া রানু বেগম (৫৫) খান বাড়ির আতর খানের স্ত্রী। ঘাতক ছেলে রাসেল (২২) ঘটনার পর পালিয়ে যায়। জানা যায়, রাসেল গত কয়েক বছর পূর্বে ঢাকার একটি বাসায় দারোয়ানের চাকরি করতো। তার মানসিক সমস্যা থাকায় তাকে ওই বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সে গ্রামের বাড়িতে এসে থাকতো। এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, হত্যার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে থেকে নিহত রানু বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার শিকার রানু বেগমের স্বামী আতর খান ও তার মেয়ে শাহিনের বক্তব্যনুযায়ী নিজের ছোট ছেলে রাসেল কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলামসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।  
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪২

সাত খুনের ১০ বছর : বিচার শেষ না হওয়ায় হতাশ স্বজনরা
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের দশ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচারকার্য শেষ না হওয়ায় হতাশায় ভুগছে ভুক্তভোগীর পরিবার। স্বজনহারার কষ্ট বুকে চেপে কান পেতে আছে বিচারের শেষ রায় শোনার প্রতীক্ষায়। আর সচেতন মহল বলছে, নৃশংস এ ঘটনার দ্রুত রায় হলে মানুষ বুঝবে অপরাধ করে পার পাওয়া যায় না।   নিম্ন আদালতে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হলেও আপিল করে উচ্চ আদালতে হয় এ মামলার নিষ্পত্তি। এর মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডাদেশ দেন উচ্চ আদালত। তবে আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির শুনানি বন্ধ থাকায় এখনও কার্যকর হয়নি চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রায়। এতে নিহতের স্বজনরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির শুনানি হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। আলোচিত এই সাত খুনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামকে খুন করা হয়। তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এ মামলার বাদী। মামলার রায়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। মামলার রায়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির শুনানি নিয়ে সাত খুনের এ মামলার বাদী ও নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আসলে এখন আমাদের আর কিছু চাওয়ার নেই। আমরা শুধু বিচারটুকুই চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ তিনি যাতে সন্তান হারানো মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে বিচারটা করেন।’ নজরুল ইসলামের স্ত্রী আরও বলেন, ‘নানা দুঃখ-দুর্দশা ও ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে আমার মতোই দীর্ঘ দশ বছর পার করেছেন নিহত অন্য ৬ জনের পরিবারের সদস্যরাও। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিচার এখনও কার্যকর না হওয়ায় আমরা সবাই হতাশ।’ এ প্রসঙ্গে নিহতদের স্বজনরা জানান, সরকার যদি বিচার করত, সেটা দেখে মরতে পারলেও কিছুটা শান্তি পেতেন তারা। তারা একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা।  আসলে কি এ মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন নিহতদের স্বজনরা। এ নিয়ে নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীরের মেয়ে রোজা বলে, ‘আমার জন্মের পর বাবাকে দেখিনি। বাবার আদর-ভালোবাসা পাইনি। আমার জন্মের আগেই বাবাকে হারিয়েছি।’ নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নূপুর বলেন, ‘আমার বাচ্চা প্রতিরাতে কান্না করে। ওর চাচারা তাদের ছেলে মেয়েকে কত আদর করে। অথচ আমার মেয়েকে কেউ একটু আদর করে না। আমার মেয়ে বাবার আদর কেমন সেটা জানে না।’ তথ্যসূত্র বলছে, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল আদালতে হাজিরা শেষে প্রাইভেটকারযোগে বাড়ি ফিরছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম। পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে সাদা পোশাক পরিহিত র‌্যাব সদস্যরা তাদের অপহরণ করেন। আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার গাড়িচালক ইব্রাহিম পেছন থেকে এ চিত্র মুঠোফোনে ভিডিও করলে ওই র‌্যাব সদস্যরা তাদেরও ধরে নিয়ে যায়। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা থেকে তাদের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে আলাদা দুটি হত্যা মামলা করেন। পরে দুই মামলায় ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সাত খুনের এই হত্যা মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‍্যাব-১১ এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ হোসেন, চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত।  পরে ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট উচ্চ আদালত ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন।  ২০১৮ সালের নভেম্বরে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১৯ সালে র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম মাসুদ রানা, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেনসহ দণ্ডিত আসামিরা আলাদাভাবে আপিল করেন।   তবে আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির শুনানি এখনও হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবীর সাখাওয়াৎ হোসেন খান। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের যাতে বিচার না হয় সে চেষ্টা কিন্তু হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা চাই, যে রায় হয়েছে সেটি দ্রুত কার্যকর করা হোক। উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ২৩ জন কারাগারে এবং ১২ জন আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন।
২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১৫
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়