• ঢাকা শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
নায়ক দেবের হেলিকপ্টারে আগুন
টলিউড সুপারস্টার ও ভারতের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেবকে বহকারী হেলিকপ্টারে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৩ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ (মালদা) জেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে পুরোপুরি সুস্থ আছেন দেব। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, দেবকে বহনকারী হেলিকপ্টারটিতে মালদহ হেলিপ্যাড থেকে ওড়ার পরই আগুন লাগে। পরে তৎক্ষণাৎ মালদহ হেলিপ্যাডেই জরুরি অবতরণ করেন এর পাইলট। হেলিকপ্টারে আগুন লাগলেও অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন দেব। তবে দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেয়েও থেমে থাকেননি তৃণমূলের তারকা প্রার্থী। বথুয়ায় তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন পশ্চিম মেদেনীপুরের ঘাটালের দুবারের সংসদ সদস্য তথা এবারের প্রার্থী দেব। তৃণমূলের একনিষ্ঠ সৈনিকের মতোই ছুটে বেড়াচ্ছেন দলীয় কর্মসূচিতে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ফোনে দেবের খোঁজখবর নিয়েছেন।
১৬ ঘণ্টা আগে

মসজিদে পুত্রের আজানে উচ্ছ্বসিত নায়ক সাইমন
ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়ক সাইমন সাদিক প্রায়ই পরিবারসহ ছবি পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। জানান নিজের অনুভূতির কথাও। এবার বড় সন্তান সাইয়ান সাদিকের আজান দেওয়ার একটা ভিডিও প্রকাশ করেছেন তিনি। যা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন ভক্তরা।  বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সন্তানের সেই ভিডিও প্রকাশ করে লেখেন, ‘প্রথমবার মসজিদে আজান দিলেন টুকটুক সাহেব। মাশাআল্লাহ। আপনারা সবাই দোয়া করবেন। টুকটুক মাম্মা তুমি দারুণ।’   বিষয়টি নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে সাইমন বলেন, ‘আমার আমার বড় ছেলে প্রথমবার মসজিদে আসরের আজান দিয়েছে। এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের বিষয়। পড়াশোনার পাশাপাশি ধর্ম চর্চাতেও সে মনোযোগী। ছেলের এমন কাজে, একজন বাবা হিসেবে আমি গর্বিত।’ উল্লেখ্য, এবারের ঈদে সাইমন অভিনীত ‘মায়া’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। যা দর্শক মহলে সাড়া ফেলেছে। বর্তমানে এই নায়ক নতুন একটি সিনেমার কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।  
২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৯

ছবি নিয়ে রাজনীতি, কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
আসছে ঈদে মুক্তির তালিকায় আছে প্রায় ডজন খানেক সিনেমা। সেই তালিকায় আছে  আদর আজাদ ও পূজার লিপস্টিক ছবিটি। সিনেমা নিয়ে রাজনীতির শিকার হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সিনেমাটির নায়ক। ছবিটি যেন হল না পায় সে ব্যবস্থা করেছে একটি চক্র, এমনই দাবি নায়কের।  আদর আজাদ বলেন, অনন্য মামুন শাকিব খানকে নিয়ে প্যান ইন্ডিয়ান ছবি বানিয়েছেন। সেই ছবির গল্প লিপস্টিক সিনেমার অনুকরণে করা। তো আগেই যদি লিপস্টিক রিলিজ হয়ে যায় তাহলে দরদ সিনেমার ওপর প্রভাব পড়বে।  আক্ষেপ করে এই নায়ক আরও বলেন, যে জায়গায় আমি তিনদিন আগ পর্যন্ত জানি আমার এতগুলো হল, কী পরিমাণ হল পাচ্ছি। সেটা ঘটেনি, বিভিন্নভাবে হয়ে ওঠেনি। আমার জোরে ছবিটা আমি বানিয়েছি। এখনো টুইস্ট পার্ট হচ্ছে আমার গল্পের সঙ্গে আরেকটা সিনেমার গল্পের মিল আছে। আমরা যখন গল্পের শুটিং শুরু করেছি, তখনো কিন্তু সেই গল্পের শুটিং শুরু হয়নি। এবং আপনারা জানেন সেন্সর বোর্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যে যে জায়গায় কারেকশন দিয়েছে, আমরা করে দিয়েছি কিন্তু...।   অনন্য মামুনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি তো ভাই প্যান ইন্ডিয়ান ছবি বানাইছেন। আপনার তো ওভারসিজ মার্কেট, এই মার্কেটে ডিস্টার্ব করার দরকার নেই। ১৩টা-১৪টা ছবি আসতেছে সবাই এখন মাসেল পাওয়ার, পলিটিক্যাল পাওয়ার, টাকার পাওয়ার খাটাচ্ছে। কিন্তু আমি তো আমার সবকিছু উৎসর্গ করে এই ছবিটা করছি, তাহলে আমি কই যাবো? শুধু আমার টাকা না, আমার মায়ের টাকা পর্যন্ত এই ছবিতে লগ্নি করা আছে।  আদর জানান শুধু নিজের টাকা না, নিজের গাড়ি বিক্রি করে, মায়ের জমানো টাকা দিয়ে এই ছবিটা বানিয়েছেন।    প্রসঙ্গত, রোমান্টিক থেকে সাইকো থ্রিলার এই ছবির গল্প। এতে আরও অভিনয় করেছেন পূজা চেরি, শহীদুজ্জামান সেলিম, মিশা সওদাগর, মনিরা মিঠু প্রমুখ।  
১০ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩৬

কেমন ছিল নায়ক মান্নার ভিজিটিং কার্ড
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় প্রয়াত নায়ক মান্না। দুই যুগেরও বেশি সময় বাংলা চলচ্চিত্রে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন মান্না; যা আজও দাগ কেটে আছে সিনেমাপ্রেমীদের মনে। কিন্তু জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় মান্না ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪৪ বছর বয়সে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে।   সম্প্রতি এই চিত্রনায়কের দুটি ভিজিটিং কার্ড প্রকাশ্যে এসেছে। এর মধ্যে একটি কার্ডে দেখা যাচ্ছে, মান্নার পুরো নাম লেখা— এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। কার্ডে তার পদবি হিসেবে দেওয়া আছে— মুভি স্টার, প্রডিউসার, ও ডিস্ট্রিবিউটর জেনারেল সেক্রেটারি। ওই সময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতেন মান্না।   কাকরাইলের ঠিকানাসহ ৯ ডিজিটের একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া আছে মান্নার সেই ভিজিটিং কার্ডে। তবে ধারণা করা হয়, ২০০৮ সালে তিনি মারা যাওয়ার আগের সময়ের ভিজিটিং কার্ড এটি।      ওপর ভিজিটিং কার্ডটি হালকা ধূসর রঙের। খুব সম্ভবত এই কার্ডটি মান্নার ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি সময়ের হতে পারে। যে কার্ডে শুধুই তার মান্না নামটি ব্যবহার করেছেন। নামের নিচেই রয়েছে নায়কের পদবি মুভি স্টার এবং ফিল্ম প্রডিউসার। কার্ডের এক পাশে আছে মান্নার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কৃতাঞ্জলী কথাচিত্রের নাম ও ঠিকানা এবং আরেক পাশে তার ফোন নম্বর দেওয়া।  মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিনশ’র বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন মান্না। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও। কিন্তু এই নায়কের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘পাগলী’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমার মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা পান মান্না। পরবর্তীতে কাজী হায়াত নির্মিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমা দিয়ে মান্না হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের নির্ভরযোগ্য নাম।     মান্নার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো— ‘আম্মাজান’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’, ‘লাল বাদশা’, ‘বীর’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘লুটতরাজ’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘পিতা মাতার আমানত’সহ ইত্যাদি। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন মান্না।       
২১ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৯

হত্যা করা হয়েছিল নায়ক মান্নাকে!
বাংলা চলচ্চিত্রের অনবদ্য এক নাম মান্না। সালমান শাহর মৃত্যুর পর ঢাকাই সিনেমার হাল একাই ধরেছিলেন এই তারকা। সামাজিক, রোমান্টিক, অ্যাকশন- সব ঘরানার সিনেমা দিয়ে দর্শকের মন জয় করে নেওয়া প্রয়াত এ অভিনেতা এখনও ভক্তদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ঢালিউডের এই মহাতারকা। মান্নার পরিবারের দাবি, স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং ভুল চিকিৎসায় মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে মান্নাকে।  ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে মামলা করেন নায়ক মান্নার শ্যালক রেজা কাদের। আরটিভির সঙ্গে আলাপকালে নায়ক মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না বলেন, ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে মামলা করেছি। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। আমি মান্না হত্যার বিচার চাই। মান্না হত্যার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ তিনি স্বজন হারিয়েছেন। স্বজন হারানোর মর্মটি তিনি ভালো বোঝেন।  শেলী মান্না বলেন, আমি একজন ডাক্তারের মেয়ে। আমার বাবা একজন ডাক্তার। বাংলাদেশে এমবিবিএস তখনো চালু হয়নি। আমার বাবা কলকাতা থেকে পাস করেছেন। সেই আমলের ডাক্তার। আমার বাবা যেহেতু আক্তার, সেহেতু আমি ডাক্তারদের খাটো করে কিছু বলছি না। বলতে গেলে আমাদের দেশের সিস্টেম, প্রক্রিয়ার কথা বলতে হয়। আমার বাবা ডাক্তার, সেহেতু আমি কিছুটা জানি।  তিনি বলেন, মান্না মাঝরাতে যখন বাসায় ফিরেছে তখন বুকে হালকা ব্যথা করছিল। রাতে খাওয়া-দাওয়া করেছে, কিন্তু ব্যথা যায়নি। তিনি নিজের সাস্থ্য নিয়ে অতি সতর্ক ছিলেন। আমরা হলে হয়তো এতটা হতাম না। একটা অ্যালার্জি হলেও ডাক্তারের কাছে যায়। ওর অসুখবিসুখ বলতে কিছু ছিল না, শুধু এসিডিটি ছিল। যেহেতু ব্যথা কমছে না, মান্না ভাবল ইউনাইটেড হাসপাতালে যাই। কেন ইউনাইটেডে যাবে, কারণ ‘পিতা-মাতার আমানত’ ছবির শুটিং ইউনাইটেড হাসপাতালে করা হয়েছিল। তখন মনে হয়েছিল, ইউনাইটেড হাসপাতালটি ভালো, ওয়েল অর্গানাইজড। সেদিন  হাসপাতালে মান্নার সঙ্গে যা ঘটে তার বর্ণনা দিয়ে শেলী বলেন, ডাক্তারের ভাষায় অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। যদি কারো কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় সে কোনোভাবেই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবে না। একটা স্টেপও নিতে পারবে না। ইউনাইটেড হাসপাতাল আমাদেরকে যেসব ফুটেজ দিয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে মান্না হেঁটে গিয়েছে। তার বিভিন্ন টেস্ট করিয়েছে। তারপর ভর্তি হয়েছে। তাকে কিন্তু কেউ ধরেও নেয়নি, কিছু না। সে একজন স্বাভাবিক মানুষ গিয়েছে। গ্যাসের পেইন, হার্টের পেইন সেইম। ডাক্তাররাও একইভাবে ট্রিটমেন্ট করেন।  তিনি বলেন, মান্না যখন হাসপাতালে ভর্তি হলো তখন ভোর পৌনে ৫টা। আমি যদি বাংলাদেশে থাকতাম তাহলে কী করতাম? যে হার্টের স্পেশালিস্ট তাকে দেখাতাম। আমার যখন হাত ভেঙে গিয়েছিল তখন আমি অর্থোপেডিকস ডাক্তারের কাছেই গিয়েছিলাম। সাধারণ ডাক্তাররা কিন্তু আমার হাত জোড়া লাগাতে পারবে না। মান্নার চিকিৎসা কিন্তু সাধারণ ডাক্তাররা করেছে। ট্রিটমেন্ট করে যখন কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে। ৭টা ৪০-এর দিকে তারা হার্টের একটা ইনজেকশন দেয়। ইনজেকশনের নাম এসকে। অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই এসব করা হয়েছে। আমরা কেস করেছি, এগুলো পয়েন্ট আছে। উন্নত দেশে অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত রেখে, কার্ডিওলজিস্ট সঙ্গে রেখে তারপর ওই এসকে ইনজেকশন দেওয়া হয়। মান্নার বেলায় এসব করা হয়নি। ওই ইনজেকশন দেওয়ার পর মান্না গোঙরাচ্ছিল। এক পর্যায়ে মান্না বমি করে দেয়। তাদের ডাক্তার রুটিন অনুযায়ী ৯টায় এসেছে। ডাক্তার ফাতেমার আন্ডারে ট্রিটমেন্ট। ওই হাসপাতালে কি প্রোসিডিউর ছিল না বলেন? ওই সময় ইমার্জেন্সিতে নিয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে রাইট টাইমে রাইট চিকিৎসাটা করত, দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটের হিসাব কিন্তু দিতে পারেনি।  প্রসঙ্গত, নায়ক মান্নার প্রথম ছবি ‌‌‌'তওবা'। ১৯৮৬ সালে নায়করাজ রাজ্জাকের এক বন্ধুর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত ‘তওবা’ সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ ঘটে মান্নার। শুরুতে একের পর এক অ্যান্টি হিরো হিসেবে অভিনয় করেছেন মান্না। আশির দশকে মান্না যখন ছবিতে অভিনয় শুরু করেন, সে সময় রাজ্জাক, আলমগীর, জসীম, ফারুক, জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়ক হিসেবে বেশ দাপট। সেই দাপুটে অভিনেতাদের মাঝেও ‘তওবা’, ‘পাগলী’, ‘ছেলে কার’, ‘নিষ্পাপ’, ‘পালকি’, ‘দুঃখিনী মা’, ‘বাদশা ভাই’-এর মতো ব্যবসা-সফল ছবি উপহার দিয়েছেন মান্না।  মান্না অভিনীত প্রথম ছবি ‘তওবা’ হলেও প্রথম মুক্তি পাওয়া ছবির নাম ‘পাগলী’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাশেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন মান্না। এ ছবিটি সুপার হিট হওয়ার কারণে একের পর এক একক ছবিতে কাজ করার সুযোগ পান মান্না। এরপর কাজী হায়াতের ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে নাঈম-শাবনাজ, সালমান-শাবনূর, সানী-মৌসুমি জুটি বেশ সফল। তাদের পাশাপাশি  মান্নাও দাঁড়িয়ে যান। ১৯৯৬ সালে সালমান শাহের হঠাৎ মৃত্যুতে প্রযোজক-পরিচালকেরা দিশেহারা হয়ে পড়লে সে সময়ে পরিচালকদের চোখে একমাত্র আস্থার নায়ক হিসেবে ধরা দেন মান্না। মান্নাও পুরো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার মতো কঠিন দায়িত্বটি নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করেন। ১৯৯৭ সালে নায়ক থেকে প্রযোজনায়ও আসেন মান্না। মান্নার প্রথম ছবি ‘লুটতরাজ’ সুপারহিট ব্যবসা করে। এরপর বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে শুরু হয় মান্না-অধ্যায়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মান্না একাই লড়ে গেছেন। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে তার নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে।  
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৫

নায়ক মান্নার প্রয়াণের ১৬ বছর আজ
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় প্রয়াত নায়ক মান্না। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এই অভিনেতার চলে যাওয়ার ১৬ বছর পূর্ণ হলো। ২০০৮ সালের আজকের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই অভিনেতা। মাত্র ৪৪ বছর বয়সেই নিভে যায় তার জীবনপ্রদীপ।     তবে মান্নার মৃত্যুর ১৬ বছর পার হলেও তার জনপ্রিয়তার এতটুকুও ভাটা পড়েনি। এখনও শ্রদ্ধাভরে তাকে স্মরণ করেন ভক্তরা। আজও অভিনেতার সিনেমাগুলো দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছে।      ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল মান্নার। ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। মূলত এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই রুপালি জগতে পা রাখেন মান্না। এসময় ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত ছিলেন তিনি।  মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম ‘পাগলি’। তবে ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকডের নজরে আসেন মান্না।  এরপরই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন মান্না। কাজী হায়াত নির্মিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের ভরসার নাম।    মোস্তফা আনোয়ার নির্মিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ সিনেমাগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে মান্নাকে।  ১৯৯৯ সালে মান্না ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপার-ডুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় এ সুপারস্টার।   অভিনেতা হিসেবে সফলতা পাওয়ার পর নিজে প্রযোজক হয়ে কৃতাঞ্জলি কথাচিত্র থেকে একাধিক সুপারহিট সিনেমা প্রযোজনা করেছিলেন মান্না। সিনেমাগুলো হচ্ছে— ‘লুটতরাজ’,  ‘লাল বাদশা’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা মাতার আমানত’।  সিনেমায় অবদানের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, পাঁচবার বাচসাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন মান্না।  তবে মৃত্যুর এতো বছর পরও নায়ক মান্নার শেষ সিনেমা ‘জীবন যন্ত্রণা’ আলোর মুখ দেখেনি। শোনা যাচ্ছে, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান প্রযোজক।   যৌথভাবে মান্না অভিনীত ‘জীবন যন্ত্রণা’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু এবং জাহিদ হোসেন। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন— মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগর প্রমুখ।   ১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাংগাইল জেলার কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন মান্না।  ব্যক্তিগত জীবনে শেলী কাদেরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এই দম্পতির সিয়াম ইলতিমাস মান্না নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৫৬

কোন ধর্মের অনুসারী আলোচিত-সমালোচিত নায়ক আলেকজান্ডার বো
দেশীয় চলচ্চিত্রের পরিচিত নাম আলেকজান্ডার বো। অসংখ্য ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে বিনয়ী, ভদ্র লোক হিসেবেই পরিচিতি তার। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে এই নায়ক আসলে কোন ধর্মের তা জানিয়েছেন।  আলেকজান্ডার বো সেই ভিডিওতে বলেন, আসলে আমার ধর্ম ইসলাম। আমার নাম শুনে অনেকেই আমি কোন ধর্মের মানুষ তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। আসলে আমার পারিবারিক নাম নজরুল ইসলাম স্বপন। আমি যখন প্রথম চলচ্চিত্রে আসি তখন আমার ‘ম্যাডাম ফুলি’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন ও ফরীদি ভাই মিলে আমার আলেকজান্ডার বো নামটি দেন। যেহেতু চলচ্চিত্র এসেছি কাজ করতে সেই ক্ষেত্রে আমার পারিবারিক নামটি নায়কখচিত মনে হতো না। নামটির মাঝে একটু কবি কবি ভাব ছিল। তাই তারা সবাই মিলে নামটি পরিবর্তন করেন। আর আমার নির্মাতার পছন্দের একজন নায়ক ছিল। যিনি হংকংয়ের মার্শালাটের একজন হিরো ছিলেন। সুতরাং সেই সময় তার নামের সঙ্গে মিল রেখেই আমার নাম রাখা হয় আলেকজান্ডার। আর আমি যেহেতু মার্শালাট থেকে এসেছি সেই ক্ষেত্রে আমাদের যে সম্মান দেওয়া হয় মার্শালাটে সেটাকে জাপানি ভাষায় বো বলা হয়। সেই জায়গা থেকেই বো নিয়ে আলেকজান্ডার বো নামকরণ করা হয়। আর এরপর থেকেই এই নামেই আমি দর্শকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠি।  এদিকে চলচ্চিত্র শিল্পসংশ্লিষ্টদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব লিমিটেডের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আলেকজান্ডা বো। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিএফডিসিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি শামসুল আলম ও মো. ইকবাল হোসেন জয়ের প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন। এই প্যানেলে থেকে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, মোজাহারুল ইসলাম ওবায়েদ, এম এ কামাল, শবনম পারভীন, আবদুল্লাহ জেয়াদ, কামাল উদ্দিন আহমেদ, রকিবুল আলম রাকিব, আলেকজান্ডার বো ও জাহাঙ্গীর শিকদার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন নিয়ে আলেকজান্ডার বো বলেন, ক্লাব মেম্বারদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ সমন্বয় রেখে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালিয়েছি। আশা রাখছি, আমি মেম্বারদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে নির্বাচনে জয় লাভ করতে সক্ষম হবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। প্রসঙ্গত, আলেকজান্ডার বো ১৯৯৫ সালে শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘লম্পট’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা করেন। পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘ম্যাডাম ফুলি’ ছবিতে শিমলার বিপরীতে আলেকজান্ডারের অভিনয় দারুণ প্রশংসিত হয়। জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত টানা ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন আলেকজান্ডার। প্রতিবারই গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। ১৯৯৭ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়া সাউথ এশিয়ান কারাতে চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে রাশিয়াতে ইউরোপিয়ান কারাতে প্রযোগিতায় অংশ নিয়ে রানারআপ হয়েছিলের। ১১তম দক্ষিণ কোরিয়া ওপেন এবং ৩০ তম বুসান মেয়রস কাপ কারাতে প্রতিযোগিতা-২০১৮ তে স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়াসহ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ১৩টি দেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমক দেখিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ১৩৫টিরও অধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন আলেকজান্ডার বো। বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এ অভিনেতা।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৪

নির্বাচন করা নিয়ে যা বললেন নায়ক সাইমন সাদিক
দরজায় কড়া নাড়ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। আগামী ১৯ এপ্রিল নির্বাচনী মাঠে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন শিল্পীরা। এবারের নির্বাচনে কেউ সরে দাঁড়াচ্ছেন, আবার কেউ আগের প্যানেল থেকে সরে অন্য প্যানেল গড়ছেন। এরইমধ্যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বিদায়ী কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক এবার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। তবে কোনো প্যানেলে যোগ দেবেন না তিনি। হবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ বিষয়ে কথা সাইমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গুঞ্জনটি সত্যি নয়। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি না। তাছাড়া এই মুহূর্তে নির্বাচন নিয়েও কিছু ভাবছি না। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী যে হচ্ছি না এটা নিশ্চিত। নির্বাচন যদি করি প্যানেল থেকেই করব। কারণ, আমি সবার সঙ্গে থেকে কাজ করতে চাই। এদিকে গেল মাসে বিদেশি ছবি মুক্তিতে অনিয়ম এবং এতে সমিতির নিস্ক্রিয়তাকে দায়ী করে শিল্পী সমিতির সহসাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছিলেন। শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে গ্রহণ করা হয়নি সাইমনের পদত্যাগপত্র। প্রসঙ্গত, আগামী ১৯ এপ্রিল এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও মিশা সওদাগর থাকবেন এক প্যানেলে। অন্যদিকে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। সে কারণে বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার নিজের প্যানেলের জন্য সভাপতি পদপ্রার্থী খুঁজে বেড়াচ্ছেন। 
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:০৭

এবার ‘রুখে দাঁড়াবেন’ নায়ক কায়েস আরজু
ঢাকাই সিনেমার বর্তমান প্রজন্মের নায়ক কায়েস আরজু। এবার তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন! তবে বাস্তবে নয় সিনেমায়। আগামী ২৬ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে ঢালিউডের নায়কের ‘রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামের সিনেমাটি। সামাজিক ঘরানায় নির্মিত সিনেমাটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে প্রেম ও সংঘাতের অনবদ্য গল্পে। এতের আরজুর নায়িকা তানহা তাসনিয়া। মোহনা মুভিজের ব্যানারে নির্মিত ও দেবাশীষ সরকারের কাহিনি সংলাপ, চিত্রনাট্য ও গীত রচনায় ছবিটি পরিচালনা করেছেন সুকুমার চন্দ্র দাশ। ছবি প্রসঙ্গে আরজু বলেন, মাটির গল্প, কৃষ্টি-কালচারের গল্প ও আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে, পরিবারে ও সমাজে ঘটে যাওয়া গল্পের কারণে সিনেমাটি সব শ্রেণির দর্শকদের ভালো লাগবে। আমি সিনেমাটির সফলতার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। ছবিটিতে আরও অভিনয় করেছেন আঁখি চৌধুরী, কাজী হায়াৎ, আশিক, নাদের চৌধুরী, সুব্রত, গাংগুয়া প্রমুখ। এদিকে আরজু অভিনীত আরও কয়েকটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। সেগুলো হলো—‘মুক্তি’, মেহেদী হাসানের ‘আগুনে পোড়া কান্না’। মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের ‘অপুর বসন্ত’ ইত্যাদি।
২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:১৯

ভারতে দাঙ্গায় পড়ে ঢাকায় এসে দেশ সেরা নায়ক রাজ রাজ্জাক
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক নায়ক রাজ রাজ্জাক। যে মানুষটি একাধারে একজন অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র অঙ্গনে ভূমিকা রেখেছেন।গুনী এই অভিনেতার মঙ্গলবার (২৩শে জানুয়ারি) জন্মদিন। আরটিভি পরিবারের পক্ষ থেকে রইলো জন্মদিনের শুভেচ্ছা।  নায়করাজ রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালে কলকাতায়। কিশোর বয়সে কলকাতার মঞ্চ নাটক দিয়ে অভিনয় জগতে যাত্রা শুরু করেন নায়ক রাজ রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে আলে দাঙ্গার উত্তাল সময়ে নতুন জীবন গড়তে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে রাজ্জাক পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন প্রায় অসহায় অবস্থায়। কঠোর পরিশ্রম আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সাথে সংগ্রাম করে হয়েছেন আজকের নায়ক রাজ রাজ্জাক। তৎকালীন পাকিস্তান আমলে টেলিভিলশনে ঘরোয়া নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে ছিলেন রাজ্জাক। জীবনে নানা সংগ্রামের পথ অতিক্রম করেন তিনি। বেহুলা চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে প্রথম উপস্থিত হন এবং সবার মন জয় করে নেন। দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি নায়করাজ হিসেবে পরিচিতি পান। কি যে করি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেছেন। এই প্রর্যন্ত তিনি চার বার জাতীয় সম্মাননা লাভ করেন। চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি হয়েছেন, এটা যে কারো কাছেই গল্প বলে মনে হতে পারে। মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। রাজ্জাক অসীম মনোবল, অমানষিক পরিশ্রম আর মমতার মাধ্যমে ঠিকই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। রাজ্জাকের জন্ম কলকাতার সিনেমাপাড়া টালিগঞ্জে। অর্থাৎ জন্মের পর থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে তার সখ্যতা। মঞ্চের সঙ্গে জড়িত থাকলেও স্বপ্ন ছিল সিনেমাকে ঘিরে। টালিগঞ্জের সিনেমা শিল্পে তখন ছবি বিশ্বাস, উত্তম কুমার, সৌমিত্র, বিশ্বজিতদের যুগ। সেখানে হালকা-পাতলা সাধারণ রাজুর অভিনয় সুযোগ পাবার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। এর মধ্যে শুরু হলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এক সময় কলকাতায় থাকাটাই মুশকিল হয়ে পড়ে। তখন এক সুহৃদ রাজ্জাককে পরামর্শ দিলেন ঢাকায় চলে আসতে। বললেন, ঢাকার চলচ্চিত্র নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে। সেখানে গেলে হয়তো কিছু একটা হবে। ভদ্রলোক ঢাকার প্রথম চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ-এর প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা আবদুল জব্বার খানের পরিচিত। তিনি রাজ্জাককে পাঠালেন তার কাছে একটা চিঠি দিয়ে। তিনি রাজ্জাক কে বলে দিলেন ঢাকার কমলাপুরে থকেন আবদুল জব্বার খান। তখন রাজ্জাক প্রথম এসে কমলাপুরে বাসা নেন। এর পর চিঠি নিয়ে জব্বার খানের কাছে যান তিনি রাজ্জাককে একবাল ফিল্ম লিমিটেড এর কাজ করার সুযোগ করে দেন। উজালা ছবির মধ্যদিয়ে রাজ্জাকের শুরু হল ঢাকার চলচ্চিত্র জীবন। পরিচালকের পাশাপাশি বেশ কিছু ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। এসব ছবির মধ্যে ডাক বাবু, ১৩নং ফেকু ওস্তাগার লেন, আখেরী স্টেশন উল্লেখযোগ্য। পর্যায়ক্রমে তিনি জহির রায়হানের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দান করেন। আর তখন থেকেই তার ভাগ্য খুলে যায়। সহকারী হিসাবে কয়েকটি ছবি পরিচালনা করার পর হঠাৎ এক দিন তিনি নায়ক হওয়ার সুযোগ পান। লোক কাহিনী নিয়ে জহির রায়হান তখন বেহুলা ছবির নির্মাণ কাজ করেছেন। জহির রায়হান তাকে বললেন আপনিই আমার ছবির নায়ক। ঐসময় রাজ্জাকের চেহারার মধ্যে কলকাতার বিশ্বজিৎ-এর ছায়া খুজে পাওয়া যেত। জহির রায়হানের সুনিপুণ হাতের ছোয়ায় অসাধারণ লক্ষ্মীন্দর হয়ে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হলেন রাজ্জাক। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন অপূর্ব সুন্দরী বেহুলারূপী সুচন্দা। বেহুলা ছবিটি ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায়। দর্শকের কাছে ছবিটি সুপার হিট হয়। এই ছবির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পায় আরেক জন নায়ক যিনি চলচ্চিত্র শিল্পের অপরিহার্য নায়ক। ঢাকার সিনাম হলগুলোতে তখন পাক-ভারতীয় ছবির দাপট। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলী, জেবা, সুধির, শামীম আরা, ওয়াহিদ মুরাদ এবং কলকাতার ছবি বিশ্বাস, উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, বিশ্বজিৎ, সৌমিত্র এবং ভরতের রাজ কাপুর, নার্গিম, দিলীপ কুমার এদের ছবির সঙ্গে পালা দিয়ে চলতে শুরু করল ঢাকার নির্মাতাদের নির্মিত ছবি। আব্দুল জব্বার খান, রহমান, শবনম, খলিল, ফতেহ লোহানী, খান আতা, সুমিতা দেবী, আনোয়ার হোসেন, সুচন্দা তাদের সাথে আরো একটি নাম যোগ হল আর তা হচ্ছে রাজ্জাক। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এখানে নির্মিত বেশিরভাগ ছবির নায়ক রাজ্জাক। দুই ভাই, আবির্ভাব, বাঁশরী, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, যে আগুনে পুড়ি, পায়েল, দর্পচূর্ণ, যোগ বিয়োগ, ছদ্মবেশী, জীবন থেকে নেয়া, মধুর মিলন ইত্যাদি ছবির সাফল্যে রাজ্জাক হয়ে ওঠেন চলচ্চিত্রের অপরিহার্য নায়ক। দেশ যখন পাকিস্তান থেকে ভাগ হয়ে যায় তখন বাংলাদেশে পাক ভারতীয় ছবির প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাদের উপর দয়িত্ব পরে রাজ্জাক তাদের মধ্যে একজন। এর পর সড়ক দুর্ঘটনায় রহমান পা হারালে চলচ্চিত্রে রোমান্টিক নায়কের শূন্যতা দেখা দেয়। তখন রাজ্জাক একাই তা সামাল দেন। খুব দক্ষতা এবং নৈপুন্যতার সাথে রাজ্জাক একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম মুক্তি পায় রাজ্জাক অভিনীত মানুষের মন ছবি। ছবিটি ব্যবসা সফল হওয়ার কারণে নতুনভাবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র জেগে উঠে। ছবিটি পরিচালনা করেন মোস্তফা মাহমুদ। এই ছবির মধ্য দিয়ে শুরু হল চলচ্চিত্রে নয়ক রাজ্জাকের যুগ। তার পর মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে প্রথম ছবি চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ওরা ১১ জন, এসএম শফির ছন্দ হারিয়ে গেল, বাবুল চৌধুরীর প্রতিশোধ এবং কাজী জহিরের অবুঝ মন ছবিতে অভিনয় করে রাজ্জাক হয়ে যান বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আইকন। ১৯৭৩ সালে জহিরুল হকের রংবাজ ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করে রাজ্জাক বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন ধারা প্রবর্তন করেন। তিনি সূচনা করেন চলচ্চিত্রের আধুনিক অ্যাকশন যুগেরও। রংবাজ দিয়েই রাজ্জাক তার অভিনয় জীবনে বৈচিত্র নিয়ে আসেন। রংবাজ ছবির সাফল্যের পর দর্শকদের একঘেয়েমি থেকে মুক্ত রাখতে সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি। শুধু অ্যাকশান, রোমান্টিক নয় ত্রিরত্নের মতো কমেডি ছবিতেও অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। আজিজুর রহমানের অতিথি ছবিতে সেক্রিফাইসিং চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৭৪ সালে নতুন পরিচালক মাসুদ পারভেজ পরিচালিত সিনেমাতে অতিথি শিল্পী হিসেবে একটি গানের দৃশ্যে অভিনয় করেন। এতে নায়ক হিসাবে অভিনয় করেন সোহেল রানা, তার জীবনেও এটি প্রথম ছবি। অভিনেতা হিসেবে নিজেকে অন্য সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্জাককে তেমন কোনো কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়নি। রাজ্জাক বরাবরই মানুষকে যথাযোগ্য সম্মান আর ভালোবাসা দিয়েছেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নামীদামী প্রযোজক-পরিচালকদের সম্মানে পার্টির আয়োজন করেছেন বছরের পর বছর। রাজ্জাকের স্ত্রী লক্ষী রাত জেগে স্বামীর বন্ধুদের পছন্দ মতো রান্নাবান্না করে খাইয়েছেন। নির্মাতারাই তাকে নিয়েছে-বাদি থেকে বেগম, সমাধি, কি যে করি, সেতু, আগুন-এর মতো জনপ্রিয় ছবির সেরা চরিত্রে। এক সময় পরিচালকগণ মনে করতেন পর্দায় নায়ক মারা গেলে ছবি চলবে না। ঠিক এমন সময়ই বেঈমান, সমাধি আর সেতু ছবির শেষ দৃশ্যে জার্জাক মৃত্যুবরন করেন, এতে দর্শকদের খুব কষ্ট দিয়েছেন ঠিকই তবে ছবির সাফল্যও আদায় করে নিয়েছেন। ১৯৭৭ সালে রাজ্জাক যখন পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, তখন তিনি বেছে নেন প্রেমের গল্পকে। ছবি করেন অনন্ত প্রেম এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ববিতা। গল্প, গান, চিত্রায়ন, অভিনয় সবকিছু মিলিয়ে ছবিতে তারা দর্শকদের যা উপহার দিয়েছে দর্শক কি তা কখনো ভূলতে পারবেন? প্রেমের ছবির মূলমন্ত্র হচ্ছে মান অভিমান, প্রেম ভালোবাসা এবং সর্বশেষে মিলন। এসব ছবি দেখে দর্শক হাসতে হাসতে বাড়ি ফেরেন। অভিনেতা রাজ্জাকের বৈচিত্রময় সাহসী চরিত্রে অভিনয়ের কথা স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭৮ সালে রাজ্জাক যখন খুবই জনপ্রিয় এক অভিনেতা তখনও তিনি আজিজুর রহমানের অশিক্ষিত ছবিতে গ্রামের পাহারাদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন, লুঙ্গি আর শার্ট পরে, যা আজো ভুলবার নয়। ছবিটির শেষ প্রর্যায়ে মাস্টার সুমনের মৃত্যু পর পুলিশের খাতায় রাজ্জাকের স্বাক্ষর করার দৃশ্য আজো মনে পরলে চোখে পানি এসে যায়। এর দুই বছর পর একই পরিচালক আজিজুর রহমানের ছুটির ঘণ্টা ছবিতে স্কুলের দপ্তরির চরিত্রে রাজ্জাকের অসাধারণ অভিনয় কি মন থেকে মুছে ফেলা সম্ভব? বড় কথা ওই সময় যে অবস্থানে থেকে রাজ্জাক পাহারাদার কিংবা স্কুলের দপ্তরির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সেটা আজকের কোনো জনপ্রিয় নায়কের কাছ থেকে আশা করা যায় ? রাজ্জাক তার দুই পুত্র বাপ্পারাজ এবং সম্রাটকে নিয়ে এক সঙ্গে অভিনয় করেছেন কোটি টাকার ফকির ছবিতে। দুই ছেলেকে নিয়ে অভিনয় করাটাকেই রাজ্জাক তার জীবনের সেরা প্রাপ্তি হিসেবে মনে করেন। তিনি বলেছিলেন, আমার কোনো অপ্রাপ্তি নেই। সবকিছুই আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। তবে একটা কষ্ট আছে, সেটা হলো আমার বড়মেয়ে শম্পার অকাল মৃত্যু। ও বেঁচে থাকলে আমরা সম্পূর্ণ এবং পরিপূর্ণ পরিবার নিয়ে গর্ববোধ করতে পারতাম। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১৩মিনিটে রাজধানী ঢাকায় একটি হাসপাতালে সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়