• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
তরুণ বিলিয়নিয়ার যেভাবে তৈরি হচ্ছে
সম্প্রতি ফোর্বস ম্যাগাজিন বিশ্বজুড়ে যে ধনী ব্যক্তিদের তালিকা দিয়েছে, তাতে বেশ কিছু তরুণ মুখ রয়েছেন। তাদের অনেকেই এখনও কাজই করতে শুরু করেনি বা কোনো ক্যারিয়ারে ঢোকেনি। এদের মধ্যে সাতজন নিজ চেষ্টায় ও পরিশ্রমে সম্পদের মালিক হয়েছেন। সবমিলে যে ২৫ জন বিলিয়নিয়ার তালিকায় দেখা যাচ্ছে যাদের বয়স ৩৩ বছর বা তার কম। ২০০৯ সালের পর প্রথমবার সমস্ত বিলিয়নিয়ার যাদের বয়স ৩০ এর নিচে, তারা সবাই উত্তরাধিকার সূত্রে এই সৌভাগ্যের মালিক হয়েছেন। ধারণা করা হয় যে ২০২৯ সালের শেষ নাগাদ, ৮.৮ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলারের বেশি অর্থ বর্তমান বিলিয়নিয়ার থেকে তাদের পরবর্তী উত্তরাধিকারের হাতে যাবে। ‘দ্য গ্রেট ওয়েলথ ট্রান্সফার’ অর্থাৎ একটা সময় বিশ্বের বেশির ভাগ ধনীর সম্পদের হস্তান্তর হবে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে, সেটারই ইঙ্গিত ফোর্বসের এই তালিকায় এত তরুণ উত্তরাধিকারের উপস্থিতি বলে মনে করে বিবিসি। বিবিসিকে সুইস ব্যাংক ইউবিএসের এস্টেট প্ল্যানিং ম্যানেজার আইনজীবী ইউরি ফ্রেইতা বলেন, আর আমরা কিন্তু শুধু টাকা-পয়সার কথা বলছি না, একইসঙ্গে কোম্পানিরও হাতবদল ঘটবে। এই জগতে নিজের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায়, ফ্রেইতাস একমত হন যে বৈশ্বিক সম্পদের ‘গ্রেট ট্রান্সফার’ এরইমধ্যে বেশ দ্রুতগতিতেই এগিয়ে চলছে, আর বিশ্বের বিলিয়নিয়ার এখন যে কোন বয়সেই, একটু তাড়াতাড়িই, সম্পদ পরবর্তী প্রজন্মকে দিয়ে দিচ্ছে। দ্য ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদ হস্তান্তর – বইটির লেখক এবং বিষয়টি নিয়ে কাজ করা কেন কস্টা বলেন, এটা পরিষ্কার যে ‘রিয়েল এস্টেট, ল্যান্ড, স্টক এবং শেয়ারে আগে কখনোই এত টানা ছিল না – আর হঠাৎ করে সেটা এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে চলে গিয়েছে।’ কস্টা নিজেও একজন বিলিয়নিয়ার এবং তার প্রধান থিসিস হলো, তরুণ যারা দীর্ঘদিন তাদের আগের প্রজন্মের সম্পদ ভোগের কারণে বঞ্চিত হয়েছে, তারা বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ওপর বিরক্ত। বিবিসির প্রতিবেদককে তিনি বলেন, এই অবশ্যম্ভাবী ঘটনা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই, আর এরইমধ্যে হাতবদল আসলে শুরু হয়ে গিয়েছে এবং তা বেশ দ্রুতগতিতে ঘটছে। আর এই ঘটনা কিন্তু চুপচাপ ঘটবে না। এটার একটা বিরাট প্রলয়ংকরী প্রভাব পড়বে অর্থনীতি, প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতিতে। আর এর ফলাফল কী হবে তা পুরোটাই নির্ভর করছে নতুন প্রজন্মের ওপর। আমার আশা যে তারা একটা টেকসই ও উন্নত অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ অর্জন করে নেবে, এবং আমি মনে করি আমাদের বুমারদের এটা দায়িত্ব তাদের সেই অর্জনে সাহায্য করা। নতুন বিলিয়নিয়ার উত্তরাধিকার আসাটা এমন এক সময় হতে যাচ্ছে, যখন বেশির ভাগ সম্পদ কয়েকটি মাত্র পরিবারের হাতে থাকায় পৃথিবীর একটা বড় অংশ জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ছে। এ বছরের শুরুর দিকে অক্সফ্যামের প্রকাশিত ইনইকুয়েলিটি এসএ রিপোর্টে উঠে আসে, ২০২০ সালের পর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী পাঁচ বিলিয়নিয়ারের সম্পদের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে, যখন মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগ– প্রায় ৫ বিলিয়ন মানুষের সম্পদ এই একই সময়ে কমে গিয়েছে। যখন বিশ্বের প্রতি ১০টির মধ্যে সাতটি কোম্পানির সিইও বা প্রধান মালিকপক্ষ বিলিয়নিয়ার, তখন বিশ্বের বৃহৎ ও প্রভাবশালী ১৬০০ টিরও বেশি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ০.৪% কোম্পানি তার কর্মীদের ভালো বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই প্রতিবেদনে বলা হয় অসমতার এই প্রভাবটা ব্যাপক। অক্সফ্যামের এই প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, ২০২০ এর শুরুটা হয় কোভিড-১৯ মহামারি দিয়ে, এরপর যুদ্ধ ও সহিংসতা দেখা যায়, জলবায়ু বিপর্যয় দ্রুতগতিতে ঘটতে থাকে ও মানুষের জীবন ধারণের খরচও বেড়ে যায়, সবমিলে এই দশকটা বিভেদের দশক হয়ে পড়ে। স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে দরিদ্রতা ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি। বিশ্বজুড়ে আয় অনুপাতে ব্যয় অনেক বেড়ে গিয়েছে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ এ নিয়ে সংগ্রাম করছে। ব্রাজিলের অ্যাপ্লাইড ইকোনমিক্সের গবেষক ড্যানিয়েল ডুকিউ ব্যাখ্যা করে বলেন, এই যে যারা অনেক ধনী তাদের সম্পদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে তুলে দেয়ার যে ব্যাপারটা বিভিন্ন দেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটার কারণ হতে পারে তাদের ট্যাক্স প্রক্রিয়া নিয়ে নানান আলোচনা ওঠা ও নতুন ট্যাক্স মডেল কার্যকর করা। কারণ, এই বিলিয়নিয়াররা দীর্ঘসময় এক্ষেত্রে ছাড় পেয়ে এসেছেন। তার মতে, বেশ কিছু দেশে বৃহৎ সম্পদের উপর বৃহৎ ট্যাক্স এরকম একটা আন্দোলন লক্ষ্য করা যায়, ফলে সুপার-রিচ যারা তাদের ওপর একটা চাপ তৈরি হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সম্পদের পালাবদল করার। এছাড়া আরেকটি বিতর্ক যেটা জি-২০ দেশগুলো ঘিরে চলমান তা হচ্ছে বিশাল সম্পদের উপর একটা গ্লোব্যাল ট্যাক্স আরোপ করা, এই বিষয়টিও এসব বিলিয়নিয়ারদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে থাকতে পারে। এ ধরণের ট্যাক্স এসব অতি ধনী ব্যক্তিদের জীবন অনেক কঠিন করে দেবে। ফলে ততদিনে দেখা যাবে, যখন একটা ট্যাক্স আরোপ হবে, সে তখন অর্থটা অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলেছে, বলেন এই গবেষক। অর্থের এই যে এককেন্দ্রীকরণ গোটা বিশ্বেই এক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করে, একইসাথে ডুকিউ মনে করেন, যাদের অর্থ সম্পদ কম তাদের জন্য এতে করে সুযোগ সীমিত হয়ে আসে ও অসামঞ্জস্যতার পরিবেশ তৈরি হয়। আরেকটা প্রধান ঝুঁকি হলো এই যে সীমিত সংখ্যক মানুষের কাছে এত ক্ষমতা তাদের মুখোমুখি কীভাবে হওয়া যায়। অতীতে ধনীদের রাজনীতিতে প্রভাব রাখার ব্যাপারটা ছিল খুবই সীমিত, ক্ষমতায় কে আসবে কে যাবে সে ব্যাপারে খুব কমই ভূমিকা থাকতো তাদের। কিন্তু সম্পদ যত কেন্দ্রীভূত হয়েছে এই অবস্থার তত পরিবর্তন এসেছে এবং এখন আমরা দেখতে পাই যে একজনই চাইলে খেলা উল্টে দিতে পারে। প্রজন্ম নিয়ে যেকোনো বিতর্কের মতোই এখানেও সব ক্ষেত্রের পেশাদাররাই এসব তরুণ উত্তরাধিকারদের আচরণ অনুমানের চেষ্টা করছে, যে তারা বিশ্ব বাণিজ্যে কী ধরণের পরিবর্তন আনতে পারে। বিশেষ করে ব্যাংকগুলো, যারা বছরের পর তাদের ক্রেতার সম্পদ, অর্থ ও শেয়ার তৈরিতে সাহায্য করার পর এখন তাদেরই হারানোর ঝুঁকিতে আছে। এটা এরইমধ্যে জানা যাচ্ছে যে এই নতুন প্রজন্মের বিলিয়নিয়াররা অনেক বেশি সামাজিকভাবে সংযুক্ত, অনেক বেশি ডিজিটাল। তাদের বিভিন্ন বক্তব্য থেকে অন্তত এটা বোঝা যায় যে তারা তাদের বিনিয়োগ এই পৃথিবীর জলবায়ু ও সমাজে কী প্রভাব ফেলছে সে ব্যাপারে তাদের বাবা-মার চেয়ে বেশি চিন্তা করে। কনসাল্টিং ফার্ম ইওয়াই তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ধারণা করে যে মিলেনিয়াল বিনিয়োগকারীরা, যে সমস্ত কোম্পানি সমাজ ও পরিবেশের পরিবর্তনে কাজ করে তাদের ওখানে বিনিয়োগের ব্যাপারে দ্বিগুণ আগ্রহী। এ ছাড়াও ১৭% মিলেনিয়াল বিনিয়োগকারী বলছে যে তারা সে সমস্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে যারা পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করে, যেটা নন মিলেনিয়াল বিনিয়োগকারীদের বেলায় ছিল ৯%। ইউবিএসের এক রিপোর্টে দেখা যায়, অনেক হাই-প্রোফাইল বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী যদিও তাদের সম্পদের একটা বিরাট অংশ দান করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদের উত্তরাধিকাররাও একই পথে হাঁটবে কি না সে বিষয়টি জানা যায় না। এতে বলা হয়, যেখানে দুই তৃতীয়াংশ (৬৮%) প্রথম প্রজন্মের বিলিয়নিয়ার বলে যে তাদের সেবামূলক কাজের লক্ষ্য পূরণ এবং পৃথিবীতে একটা অবদান রেখে যাওয়াই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য, সেখানে এক তৃতীয়াংশেরও কম (৩২%) উত্তরাধিকার প্রজন্মকে একই উদ্দেশ্যের কথা বলতে শোনা যায়। ইউবিএসের অভিজ্ঞতা বলে যে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ দান করার ব্যাপারে নতুন প্রজন্ম খুব একটা আগ্রহ দেখায় না এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তারা হয়তো পারিবারিক ফাউন্ডেশনে বিনিয়োগ করে থাকে। তবে যেসব কোম্পানি পরিবেশগত ও সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ ও চালনার আগ্রহ দেখা যায় বাণিজ্যিক এবং কল্যাণকর দুই উদ্দেশ্যেই, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগে

কচুরিপানায় তৈরি হচ্ছে উন্নত সার, খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার
কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈবসার। দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় এতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। ব্যবহারে সুফল পাওয়ায় বাজারজাত করে বিক্রিও করা হচ্ছে এ সার। এর ফলে কমছে রাসায়নিক সারের ব্যবহার। রিজার্ভের এ সংকটে মুহূর্তে সাশ্রয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার।  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে তৈরি হচ্ছে জলকমল নামে পরিচিত এ সার। এটি  সবুজ শাকসবজি চাষে ব্যবহারে হচ্ছে। ব্যবসার পাশাপাশি এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে স্থানীয় বেকার যুবকদের। মূলত অতিরিক্ত কচুরিপানার ফলে জেলার নৌপথ সংকুচিত হয়ে আসছিলো। পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়ে ওই এলাকার বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ। নৌপথ স্বাভাবিক রাখতে কচুরিপানা পরিষ্কার করে তা উৎপাদনশীল কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ।   এই সার কীভাবে উৎপাদন হয়? প্রথমে নদী থেকে কচুরিপানা সংগ্রহ করা হয়। এরপর শেকড়ের অংশ কেটে দেড় টন পরিমাণ স্তূপ সাজনো হয়। ওই স্তুপে ১৫ সেন্টিমিটার পর পর ২শ’ গ্রাম করে ইউরিয়া, ট্রাইকোডার্মা ছত্রাক ও চুন ছিটানো হয়। এভাবে ধাপে ধাপে তৈরি হচ্ছে কচুরিপানার জৈবসার জলকমল। নবীনগর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু নোমান বলেন, এই সার তৈরিতে সময় লাগে মাত্র দুই মাস। প্রাথমিকভাবে ১০ জন কৃষকের সমন্বয়ে তৈরি প্ল্যান্ট থেকে প্রতিমাসে ৫ টন সার উৎপাদন করা যায়। নবীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, উপজেলায় এ জৈবসার ব্যবহারে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে ২৫ ভাগ। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ও হচ্ছে। এ দিকে এ প্রকল্পটি উদ্ভাবনী মেলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। বাণিজ্যিকভাবে ১০টি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলে প্রতিমাসে ৫০টন জৈব সার উৎপাদন সম্ভব, যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। 
২৬ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:০৭

গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরি করছে আমেরিকা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে৷ মে মাসেই সেখান থেকে মানবিক সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে৷ ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে স্থলপথে গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাঠানোর কাজ অত্যন্ত কঠিন৷ তাই মানবিক সাহায্য পাঠাতে মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলের কাছে সমুদ্রের উপর অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে৷ আগামী মে মাসেই সেটি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মার্চ মাসে এই ঘোষণা করেছিলেন৷ তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই উদ্যোগের আওতায় গাজার মাটিতে কোনো মার্কিন সেনা পা রাখবে না৷ মার্কিন সেনাবাহিনীর তৈরি অস্থায়ী বন্দর গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য বাস্তবে কত পরিমাণ ত্রাণ পাঠাতে সাহায্য করবে এবং সেই সহায়তা স্থলপথে কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না৷ বিশেষ করে গাজার উত্তরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বেড়ে চলায় জরুরি সহায়তার প্রয়োজনের কথা বলছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, অস্থায়ী বন্দরে পাঠানো মানবিক সাহায্য ইসরায়েলি চেকপোস্টের অনুমোদনের পর গাজার অভ্যন্তরে পাঠানো যাবে৷ হামাসের যোদ্ধাদের কাছে কোনো ধরনের ত্রাণ যাতে না পৌঁছয়, ইসরায়েল তা নিশ্চিত করতে চায়৷ জাতিসংঘের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ইসরায়েল গোটা প্রক্রিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায়৷ জাতিসংঘের সূত্র অনুযায়ী, ইসরায়েলি চেকপয়েন্টে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর কাজ বর্তমান সংকটের শুরু থেকেই বেশ কঠিন ছিল৷ এমনকি সাইপ্রাসের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ সেই ত্রাণ সহায়তা পরীক্ষা করার পরেও সেই বিলম্ব এড়ানো যাচ্ছে না৷ অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শেষ হলে প্রথম পর্যায়ে দিতে ৯০টি ট্রাক সেখান থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারবে৷ কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ১৫০ ট্রাক সেই বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে৷ ইসরায়েলি চেকপোস্টের উপর ট্রাক চলাচলের গতি অনেকটাই নির্ভর করবে৷ ইসরায়েসি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সেখানে নিরাপত্তা ও লজিস্টিক্স ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে৷ মার্কিন সৈন্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কয়েক হাজার সৈন্যের এক বিশেষ ব্রিগেড সক্রিয় রয়েছে৷ উল্লেখ্য, নির্মীয়মাণ অস্থায়ী বন্দরের কাছাকাছি বুধবার মর্টার হামলা ঘটেছে৷ অস্থায়ী বন্দরের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে মানবিক সাহায্য পাঠানো সম্ভব হলেও রাফায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ঘোষিত অভিযানের কারণে গাজার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে৷ সে ক্ষেত্রে ত্রাণ বণ্টনের কাজ আরো বিপজ্জনক ও কঠিন হয়ে উঠতে পারে৷ প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর৷ সেই অভিযান শুরু হলে গাজার উত্তরের পর দক্ষিণ অংশেও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি আশঙ্কা করছে৷
২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫৭

ঘরে বসে টেলিস্কোপ তৈরি করল কিশোর ফারাবী 
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে এক যুবক নিজ হাতে টেলিস্কোপ তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এখন তার বাড়িতে এটি দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয়রা। রাজারহাটের সেই যুবকের নাম ফাহাদ আল ফারাবী (১৬)। এত কম বয়সে টেলিস্কোপ তৈরিতে সফলতা পাওয়ায় সে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। পোষা বিড়ালের নামে টেলিস্কোপটির নাম দিয়েছে সে এনইকেও-কে-১।  ফাহাদ তার মেধা ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে টেলিস্কোপ বানিয়েছে। আর তাই তার এমন প্রতিভা দেখে খুশি এলাকাবাসী ও তার স্বজনরা। তার আবিষ্কৃত টেলিস্কোপের মাধ্যমে খালি চোখে চাঁদ, সূর্যের স্পষ্ট ছবি দেখতে পাওয়ায় প্রতিদিন তার বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড় দেখা যায়। ফাহাদ আল ফারাবী রাজারহাট উপজেলার মেকুটারী গ্রামের জয়নুল আবেদীন ও পারভীন খন্দকারের ছোট ছেলে। সে রাজার হাট পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের বর্তমানে মাত্র দশম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে বলে জানা গেছে।  ফাহাদ আল ফারাবী ছোটবেলা থেকে মহাকাশ সম্পর্কে জানতে অত্যন্ত আগ্রহী ছিল। বইয়ের পাতায় গ্রহ, নক্ষত্র ও উপগ্রহের অবস্থান পড়ে দেখার খুব ইচ্ছে হয় তার। ২০২১ সালের শেষে টেলিস্কোপ বানানো সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে থাকে সে। একপর্যায়ে সে পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে টেলিস্কোপ কিনতে পাওয়া যায়। বাজারে একটি টেলিস্কোপের দাম ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। শিক্ষার্থী হয়ে এত টাকা সংগ্রহ করতে পারবে না বলে ২০২৩ সালে নিজেই টেলিস্কোপ তৈরির প্রকল্প হাতে নেয় সে। এ কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিলেন ফাহাদ আল ফারাবীর বড় ভাই ফাহমিদ আল জাবের। তিন মাসের মধ্যে টেলিস্কোপ বানাতে পেরে খুশি ফাহাদ আল ফারাবী।  ফাহাদ আল ফারাবীর ইচ্ছে, সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে টেলিস্কোপ নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহীদের মাঝে স্বল্প দামে তা সরবরাহ করবে।  এ বিষয়ে ফারাবী জানায়, আমি ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ নিয়ে কাজ করছি। এস্ট্রোনমি ইন্সট্রুমেন্ট না থাকায় কাজ করতে পারিনি। ২০২৩ সালে ঢাকার এক এস্ট্রোনমি হাউজ থেকে যন্ত্রপাতিগুলো সংগ্রহ করে টেলিস্কোপটি বানাতে সক্ষম হই। আমি এখন অত্যন্ত খুশি। ছড়িয়ে দিতে চাই এটি সবখানে।
২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৬

সরকারকে বিচারের জন্য তৈরি হতে বললেন রিজভী
নিজেদের নেতাকর্মীদের গুমের পেছনে সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আর এজন্য সরকারকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।  রিজভী বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি এম ইলিয়াস আলীসহ গুমের শিকার সব নেতাকর্মীকে অক্ষত অবস্থায় যার যার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। অন্যথায় একদিন প্রতিটি গুম-খুনের দায়ে বিচারের জন্য তৈরি হোন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। প্রতিটি গুমের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকারই জড়িত দাবি করে রিজভী বলেন, বিভিন্ন সময় তাদের মুখ থেকেই এ কথা বেরিয়ে আসছে। তাদের কেউ কেউ স্বীকারও করেছেন। গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা মানবতার সবচেয়ে ভয়াবহতম অপরাধ। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এক সময়ের জনপ্রিয় ছাত্রনেতা এম ইলিয়াস আলীর গুমের আজ ১২ বছর পূর্ণ হলো। তাকে ফিরে পাওয়ার অধীর অপেক্ষায় আজও প্রহর গুনছেন তার স্ত্রী, সন্তান, পরিবারসহ দেশের অগণিত নেতাকর্মী। শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গাড়িচালক আনসার আলীসহ তুলে নিয়ে যায় ইলিয়াস আলীকে। এরপর গাড়িটি পাওয়া গেলেও হদিস মেলেনি তাদের। একথা আজ জনগণের সামনে স্পষ্ট যে, এই ফ্যাসিবাদী সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।  তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম আর টিপাইমুখ বাঁধ ও সীমান্ত আগ্রাসনের প্রতিবাদে সিলেট অঞ্চলে গড়ে উঠা গণ—আন্দোলনে নেতৃত্বের কারণে ইলিয়াস আলী রাষ্ট্রযন্ত্র ও দেশি, বিদেশি অপশক্তির গাত্রদাহের প্রধান কারণ ছিলেন। ইলিয়াস আলী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় ঈর্ষান্বিত সরকার তাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে গুম করে রেখেছে।  
১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৭

পহেলা বৈশাখে ঘরেই তৈরি করুন উৎসবের আমেজ
আসছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা বছরের নতুন দিনটি বরণ করে নেওয়ার জন্য বাঙালির ঘরে ঘরে থাকে বৈশাখী আয়োজন। এবার ঈদুল ফিতরের দুইদিন পরেই পহেলা বৈশাখ। যার কারণে অনেকেই এবার পরিবারের সঙ্গে অনেক বছর পর বৈশাখ উদযাবন করার সুযোগ পাবে। দুইটা উৎসব কাছাকাছি হওয়াতে আনন্দের মাত্রাটা একটু বেশিই বলা যায়। পরিবারের সঙ্গে যেহেতু এবারের বৈশাখ তাই এবারের উৎসবের আনন্দে ঘরেই তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে বৈশাখী আমেজ। ঘরেই পয়লা বৈশাখের আমেজ তৈরি করবেন যেভাবে: ভোজন আয়োজন- বৈশাখ মানেই পান্তা-ইলিশ। তবে ইলিশ খিচুড়িও বৈশাখের ভোজন আয়োজনে যোগ করতে পারে ভিন্ন মাত্রা। তবে পান্তা ভাত হলো বাঙালির জনপ্রিয় খাবার। বাংলাদেশে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা উৎসবের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার সংস্কৃতি চালু ও পরিব্যাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া চলমান গরমের মোকাবিলা করতে বা শরীরকে চাঙা রাখতে পান্তা ভাতের জুড়ি মেলা ভার। তাই জেনে নিন পান্তা ভাতের রকমারি রেসিপি। ১. টক ঝাল পান্তা ভাত উপকরণ: বাসি ভাত- ১ বাটি, আলু- ১টা, ছোট পেঁয়াজ- ১টা, কাঁচামরিচ ২টা, লবণ- ১ চামচ, সরিষার তেল- ৬ চামচ, গন্ধরাজ লেবু- ১ টুকরো, তেঁতুল-আধা চা চামচ। প্রণালী: প্রথমে আলু খোসা ছাড়িয়ে সরু সরু করে কেটে ধুয়ে লবণ মাখিয়ে রাখুন। এরপরে একটা ননস্টিক প্যানে ৪ চামচ সরিষার তেল দিয়ে গরম করে আলুর টুকরোগুলো দিয়ে ভেজে তুলে নিন। এরপর পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ কুচি কুচি করে কেটে রাখুন। এবারে বাসি ভাতটা একটা বাটিতে নিয়ে পানি মিশিয়ে একটু পানি রেখে বাকি পানিটা ফেলে দিন। এবারে পানি ভেজানো ভাতের মধ্যে বাকি ২ চামচ সরিষার তেল, কাঁচামরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লবণ ও গন্ধরাজ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবারে আলু ভাজার থেকে কিছুটা রেখে দিয়ে সবটা ভাতের সাথে মিশিয়ে নিন। এবারে ভাতের ওপরে বাকি আলু ভাজাগুলো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। ২. ডাল পোড়ার ভর্তা দিয়ে পান্তা উপকরণ: মুসুর ডাল- ১/২ কাপ, পেঁয়াজ- ১টি বড়, শুকনো মরিচ- ২টি, কাঁচামরিচ- ২টি, লবণ- স্বাদমতো, হলুদ- ১/২ চা চামচ, সরিষার তেল- ৩ টেবিল চামচ। প্রণালী: মশুর ডাল ভালো করে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন আধ ঘণ্টা। কড়াই গরম করে এক চামচ তেল দিন। পানি ঝরিয়ে মশুর ডাল দিয়ে নাড়াচাড়া করুন যতক্ষণ না ডালের রং বদলে ফ্যাকাসে হয়ে যায়। এতে দেড় কাপ পানি আর হলুদ দিন। আধা সেদ্ধ হলে ভালো করে কাঁটা দিয়ে ঘেঁটে দেবেন। সম্পূর্ণ সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত মাঝারি আঁচে রান্না করুন। দরকারে আরও গরম পানি দিতে পারেন। এবার অন্য কড়ায় শুকনো মরিচ পেয়াঁজ হালকা করে ভেজে নিন। ডাল মাখার মতো শুকনো হলে পেয়াঁজ, শুকনো মরিচ, কাঁচা মরিচ, লবণ দিয়ে ভালো করে মেখে পান্তা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। এক্ষেত্রে বাসি ভাতে পানি ঢেলে অন্তত ১২ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। ৩. চিংড়ি মাছ-মলা দিয়ে পান্তা ভাত উপকরণ: মাঝারি মাপের নদীর বা পুকুরের চিংড়ি মাছ- ২৫০ গ্রাম (ভাল করে পা, খোসা, পিঠের নোংরা ফেলে ধুয়ে নিন), পেঁয়াজ- ১টি বড়, কাঁচামরিচ- ৩টি, লবণ- স্বাদমতো, হলুদ- ১/২ চা চামচ, সরিষার তেল- ২ টেবিল চামচ। প্রণালী: মাছে লবণ হলুদ মাখিয়ে রাখুন অন্তত ১৫ মিনিট। এই ফাঁকে পেয়াঁজ আর মরিচ কুচিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে মাছ দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে ভাজুন পানি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত। তুলে একটু ঠান্ডা করুন। এবার এতে পেঁয়াজ আর কাঁচামরিচ সামান্য লবণ দিয়ে ভালো করে মাখুন। মাছ যাতে একেবারে মিশে যায়। এবার ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা বাসিভাত বের করে তার সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করুন। যেমন স্বাদ, তেমন গরম থেকেও রেহাই পাবেন। ভর্তার নানা আয়োজন- ১. ডাল ভর্তা: ১ কাপ ডাল, ৫-৬টি কাঁচামরিচ, ৩-৪ কোঁয়া রসুন দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। এবার পরিমাণ মতো সরিষার তেল ও লবণ দিয়ে মেখে নিন ৷ ২. কচু ভর্তা: মোটা কচুর সবুজ অংশ কেটে লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। কড়াইতে ২ টেবিল-চামচ সরিষার তেল গরম করে সিদ্ধ কচু দিয়ে, আধা চা-চামচ কালজিরার ফোঁড়ন, ১ টেবিল-চামচ রসুন কুচি ১ টেবিল-চামচ পেঁয়াজ কুচি ৪-৫টি কাঁচা-মরিচ ফালির সঙ্গে সামান্য লবণ দিয়ে হলুদ, মরিচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া ছিটিয়ে নেড়েচেড়ে ভর্তা করে নিন। ৩. মরিচ ভর্তা: ৮-১০টি শুকনা মরিচ ভেজে নিন। ২টি পেঁয়াজ কুচি করে নিন। ১ টেবিল-চামচ সরিষার তেল দিয়ে, স্বাদমতো লবণসহ একসাথে মেখে নিন। শরবত- পোড়া আমের শরবত: কাঁচা আম ৪টি, পরিমাণমতো চিনি, বিট লবণ, কাঁচা মরিচ, বরফ কুচি, পুদিনা পাতা ও পানি। আমগুলো প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার খোসাসহ মাঝারি আঁচে পুড়িয়ে নিন। চুলা থেকে তুলে ঠান্ডা হলে আমের খোসা ছাড়িয়ে নিন। হাতে চটকে আমের ভেতরের নরম ক্লাথ বের করুন। আমের সঙ্গে সব উপকরণ দিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। তৈরি আপনার পোড়া আমের শরবত। পছন্দমতো স্বচ্ছ গ্লাসে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।   কাঁচা আমের জুস: ২টি আম ফালি করে ২ গ্লাস পানি দিয়ে জ্বাল করে নিন। ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা কুচি ২ টেবিল-চামচ করে, ১টি কাঁচামরিচ কুচি, স্বাদমতো লবণ, চিনি আর অল্প বিট লবণ মিশিয়ে আরও ২ গ্লাস পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে জ্বাল করা আমসহ ব্লেন্ড করে নিন ৷ এবারে একটি প্লেটে গরম ভাতের সাথে সব রকমের ভর্তা ও মাছ দিয়ে পরিবেশন করুন। সাথে পরিবেশন করুন এক গ্লাস কাঁচা আমের জুস। এ ছাড়াও খাবার টেবিলে গ্রামবাংলার ছোঁয়া আনতে মণ্ডা-মিঠাই, কদমা, বাতাসা মুরলি, নিমকি দিয়ে সার্ভিং ট্রে সাজিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যদি স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা চিন্তা করেন কিংবা পরিবারের বয়স্ক কেউ থাকলে দই, চিড়া, খই, মুড়ি আর ফল দিয়েই করতে পারেন ভোজের আয়োজন। আর হাতে সময় থাকলে পিঠাপুলি আর মোয়া আয়োজনে রাখতে পারেন।
০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:২১

ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক নিতে (আমদানি) ব্রাজিলকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (এপ্রিল ৮) সকালে গণভবনে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান। পরে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরাকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ সীমিত আকারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে। ব্রাজিল যদি বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করে, সেটা তাদের জন্য আরও সাশ্রয়ী হবে। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্কে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য বিশেষ করে পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে ব্রাজিলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন জি টুয়েন্টি সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ব্রাজিল সফরে সম্মত হন। ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রাজিল তার আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায়। সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম সংবলিত ব্রাজিলের একটি জার্সি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে ব্রাজিলের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ব্রাজিল উভয় দেশই ক্ষুধা-দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ইস্যুতে একই পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বৈঠকে প্যালেস্টাইন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে নৃশংসতা চালাচ্ছে সেটা গণহত্যা। সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:০৫

আটা-ময়দা-সুজি দিয়ে তৈরি হতো অ্যান্টিবায়োটিক
দেশে যেসব ওষুধ কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে, অথবা যে কোম্পানি দেশে নেই, সেসব কোম্পানির ওষুধ একটি অসাধু চক্র নকল করে বাজারজাত করে আসছে। নকল মোড়কে এসব ওষুধ বাজারে ছাড়া হতো। মোড়কের ভেতরে থাকত আটা–ময়দা ও সুজি দিয়ে তৈরি ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট। ভয়ংকর এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (৩১ মার্চ) মতিঝিল ও বরিশাল কোতোয়ালি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগ।  গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— শহীদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, শাহীন, হৃদয় ও হুমায়ুন। তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ পিস নকল অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। সোমবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, চক্রটি ঢাকার সাভার ও কুমিল্লায় কারখানা তৈরি করে এ ট্যাবলেট তৈরি করত। পরে সেগুলো নিয়ে বরিশালে গুদামজাত করত। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় কুরিয়ারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হতো। চক্রটি গত ৮-১০ বছর ধরে এ প্রতারণা করে আসছিলে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয়কর্মীর চাকরির পাশাপাশি এ প্রতারণা করছে। যেসব ওষুধের ভালো বাজার ছিল, কিন্তু কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর পাওয়া যায় না, সেসব ওষুধ তারা টার্গেট করত। নকল মোড়কে আসল ওষুধ বলে বিক্রি করত। এ ছাড়া যেসব ওষুধ কোম্পানি বাংলাদেশে নেই, বাজারে নেই, সেগুলোই তারা তৈরি করে বাজারজাত করত। হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার শহীদুল দীর্ঘদিন ধরে বরিশালের নথুল্লাবাদ এলাকায় নকল বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক মজুত করে শাহীনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করে আসছিলেন। হুমায়ুন অপসোনিন কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্মেসিতে নকল অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় করতেন। এ ছাড়া সিরাজুল ও হৃদয় নকল ওষুধ বিক্রয়ের যাবতীয় কাজ করতেন। কারখানায় নকল ওষুধ তৈরি করে সেগুলো কুমিল্লার আবু বক্কর বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ করতেন। এভাবেই চক্রটি নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করত। এর আগেও এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। জামিনে বের হয়ে তারা আবার একই কাজ শুরু করেন। ডিবিপ্রধান বলেন, চক্রটি বাজারে থাকা ও বাজার থেকে বিলুপ্ত এমন ওষুধের মধ্যে রিলামক্স-৫০০ ট্যাবলেট, মক্সিকফ-২৫০, সিপ্রোটিম-৫০০ এমজি, এমোক্সস্লিন, জিম্যাক্স, মোনাস-১০ নকল করে বাজারে ছাড়ত। তারা কাফকা ফার্মাসিউটিক্যালস, ডক্টর টিমস ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস, কুমুদিনী ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধ নকল করত। চক্রটি ১০ বছর ধরে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আসছে। তাদের নামে এ পর্যন্ত ১৫টি মামলা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮০টি ইউনানি ওষুধ কোম্পানির ভেজাল ওষুধ তৈরির বিষয়ে তথ্য তারা ওষুধ প্রশাসনকে দিয়েছেন। চক্রটির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ২২:১৬

জাল টাকা তৈরি চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৩
ঈদুল ফিতর টার্গেট করে জাল টাকা তৈরি করা একটি চক্রের মূলহোতাসহ আরিফ ব্যাপারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভোরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শরীয়তপুরের নড়িয়ার চরমোহনপুর এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জাল টাকা প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতা আরিফ ব্যাপারীসহ তিনজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ বিপুল পরিমাণ জাল নোট জব্দ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন লে. কর্নেল আরিফ।
২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৪

পোশাক শিল্প নিয়ে ভুল তথ্য যাচ্ছে বিদেশে 
ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনকারী পোশাকশ্রমিক যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, তাদের মুক্তি এবং হয়রানি বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ)। তবে তাদের আহ্বান ভুল তথ্যের উপর নির্ভর বলে মনে করেন পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা। কারণ, সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনও আটকের ঘটনা চলমান নেই এবং গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্ত শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার জামিনে মুক্ত।  এএএফএ’র চিঠিতে সংগঠনটির সভাপতি স্টিফেন লামার বলেছেন, ‘আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পক্ষ থেকে আমি আবারও ২০২৩ সালে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ ঘিরে হাজার হাজার শ্রমিকের বিরুদ্ধে চলমান আটক ও আটকের হুমকি বন্ধের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিক্ষোভের সময় সহিংসতায় প্রাণহানি ও শ্রমিক আহত হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’ চিঠিতে স্টিফেন ল্যামার লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের তৃতীয় বৃহৎ সরবরাহকারী বাংলাদেশ। তা ছাড়া বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে জুতা ও ভ্রমণে ব্যবহৃত পণ্য সরবরাহও দ্রুত বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিরাট গুরুত্ব রয়েছে।’ তিনি বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করছেন। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সুবিধাজনক সম্পর্ক উভয়ের জন্য সমৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এসেছে।’ এএএফএর চিঠিতে বলা হয়, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে শ্রমিকদের বিষয়ে তাদের আবারও আহ্বান জানাতে হচ্ছে। ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার সব ব্যক্তিকে মুক্তি প্রদান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনা সব ফৌজদারি অভিযোগ প্রত্যাহার এবং আরও হাজার হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তারের হুমকি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া গত বছর গ্রেপ্তার হওয়া জুয়েল মিয়ার মতো যেসব শ্রমিক সংগঠকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় এএএফএ।  দেশের রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পে প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন মজুরিকাঠামো ঘোষিত হয়। গত বছর ন্যুনতম মজুরি পুনরায় নির্ধারণের সময়কালে হঠাৎ করেই শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয় গাজিপুর-আশুলিয়া এলাকায়। মজুরি নির্ধারণের পর থেমে যায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন। আন্দোলনের সময় গাড়ি পোড়ানো হয়, অনেক কারখানা ভাংচুর করা হয়। আগের মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়িয়ে নতুন মজুরি নির্ধারণ করে সরকার। আন্দোলনে কারখানা ভাংচুর করা হলেও আন্দোলনকারী শ্রমিকদের পূর্ণ বেতন দিয়ে আবারো কাজে ফিরিয়ে নেয় কারখানা মালিকরা। আন্দোলন চলাকালে কিছু শ্রমিক নেতার ইন্ধনে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা কারখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার ছিল, তার বিরুদ্ধে আন্দোলনচলাকালীন সময়ে গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন।  চিঠিতে ন্যুনতম মজুরির দাবিতে আন্দোলন করার কারনে শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে – এমন তথ্য ভুল। মুলত আন্দোলনের নামে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। শ্রমিক সংগঠনের কিছু নেতৃবৃন্দ ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।  এর আগেও কয়েকজন শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৪ সালে জুন মাসে জুন মাসে ভালুকায় পাইওনিয়ার গার্মেন্টসের কয়েক মাইল দূরে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘাত হয়। এ ঘটনায় গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ কোনোভাবে জড়িত ছিলো না। তারপরও বিজিএমইএ, শ্রম মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাউকে অবহিত না করে এ ঘটনা প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনে চিঠি দেয় কিছু শ্রমিক নেতা। শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, বিদেশ থেকে ফান্ডিং এনে সংগঠন চালানোর জন্য কিছু শ্রমিক নেতা মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে। একই অভিযোগ ছিল বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধেও।  সেই প্রসঙ্গে একজন শ্রমিক নেতা জানান, শ্রমিক সংগঠন চলবে নিজেদের টাকায়, তা না হয়ে যদি তা বিদেশি অর্থপুষ্ট হয় তাহলে এমনই ঘটবে। কারণ বিদেশিরা তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই টাকা দেয়। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা মালিক ও সরকার পক্ষ থেকে অনেক আগেই বলা হয়েছে।   পোশাক শিল্প নিয়ে অনেকদিন ধরেই চলছে ষড়যন্ত্র। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেশের পোশাক শিল্প নিয়ে বিভিন্ন সময়ে চালান হয়েছে নানা অপপ্রচার। এমনকি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৈরি পোশাকখাতে মার্কিন স্যাংশন নিয়ে অপপ্রচার চালান হয়েছে।  এই চিঠির আগে তৈরি পোশাক খাত নিয়ে চিঠি দিয়েছিল মার্কিন ৮ কংগ্রেসম্যান। পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে বেতন-ভাতা সমন্বয় করার পরও সংশোধিত বিষয়টি নিয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা। তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য চিঠি দেয় আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যারকে (এএএফএ)। তবে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির আগেই বিজিএমইএ  তাদেরকে চিঠি দিয়ে বেতন সমন্বয়ের তথ্য জানান।  শ্রমিকদের যাপিত জীবন নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে ফ্রিল্যান্সার লেখক তাসলিমা দাবি করেছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে নারী পোশাক শ্রমিকরা সন্তান ও নিজের জীবন বাঁচাতে যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে শ্রমিক সংগঠনগুলো। দেশের কয়েকটি পত্রিকা সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও বিভ্রান্তিকর বিবেচনায় পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়।  গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের পর বিক্ষোভ করে প্রতিবাদ জানায় শ্রমিক সংগঠনগুলো। সেসময় সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা নাহিদুল হাসান নয়ন বলেন, ‘কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের দেশের পোশাক খাত এবং নারী শ্রমিকদের নামে গুজব ছড়িয়ে বিশ্বের দরবারে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’-এর সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যে শ্রমিকদের শ্রমের ঘামে ঘোরে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা, যে নারী শ্রমিকদের বলা হয় গোল্ডেন গার্ল সেই নারী শ্রমিকদের হেয় প্রতিপন্ন করে যৌনকর্মী হিসেবে আখ্যায়িত করে নারী-নীতি, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা ও আইএলও কনভেনশন-১৯০ লংঘন করেছে।’   গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেএমইএ। সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান জানান, এরকম একটা সংবাদ আমাদের জন্য সত্যিই বিব্রতকর। এটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বাস্তবতা বিবর্জিত ও মনগড়া ।  তিনি বলেন, ‘এই নিউজের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এ ধরণের নিউজ করে এই সেক্টরে যেসব মেয়েরা কাজ করছে তাদেরকে আসলে নিচু করা হয়েছে, অপমান করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের নারীদের অসমান করা হয়েছে।’  বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘বর্তমান সরকারের শ্রমবান্ধব প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর শ্রমিকদের মাসিক ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারন করেন যা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। মজুরি বাস্তবায়নের এই সময়েই দুটি গণমাধ্যম গার্মেন্টস শ্রমিক ও নারী শ্রমিকদের নিয়ে বানোয়াট ও অপমানজনক সংবাদ প্রকাশ করে। আমরা উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে উক্ত প্রত্যাখান করছি।’ শ্রমিকদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায় নিজেদের কোন্দলের মাধ্যমেও। শহিদুল ইসলাম বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। তিনি বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি ও পাওনা বেতন আদায় করে দিতে কাজ করতেন। এই শ্রমিক নেতা হত্যার পর দেশে বিদেশে সমালচনার ঝড় বয়ে যায়। মুলত গাজীপুরে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার অভিযোগ তদন্ত করে মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছে,  শ্রমিকদের বেতনভাতার সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আসামিদের হাতে নিহত হন শহিদুল। মামলার অন্যান্য আসামিরা কেউ শ্রমিক নেতা কেউ স্থানীয় বাসিন্দা।  হত্যা মামলার তদন্ত কমিটির প্রধান ও গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইমরান আহম্মেদ জানিয়েছেন,একজনের এলাকায় আরেকজনের প্রবেশ নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে স্থানীয় কয়েকজনের ইন্ধনেই শ্রমিক নেতা শহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে। এরইমধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের ইশারায় অন্য আসামিরা শহিদুলের ওপর হামলা চালায়। তদন্ত ও যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগপত্রটি অনলাইনে আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। মামলায় যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।  দ্য আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিজিএমইএকে চিঠি দিয়েছিল গত বছর।  এর আগে ২০১২ সালে শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড আলোচিত হয়েছিল দেশে বিদেশে। তিনি শহিদুলের সংগঠনেরই নেতা ছিলেন। সরকার এই হত্যাকান্ডের বিচার নিশ্চিত করেছে। আমিনুল ইসলাম হত্যাকান্ডে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। 
২৪ মার্চ ২০২৪, ১৪:০১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়