• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী নবাবের পুকুরে ৫ টাকায় দিনভর গোসল
৫ টাকায় গোসল। তাও আবার ২০০ বছরের পুরোনো পুকুরে! এক টিকিটেই দিনভর চরম উদ্দীপনায় চলে ডুবোসাঁতার, সঙ্গে জলকেলি। এমন একটি পুকুর আছে পুরান ঢাকার আহসানমঞ্জিল সংলগ্ন এলাকায়। নবাবী আমলের এই জলাশয় গোল তালাব পুকুর নামে পরিচিত। স্থানীয়রা ডাকেন নবাব বাড়ির পুকুর।  রোববার দুপুরে সরেজমিনে এই পুকুরের কাছে গিয়ে দেখা যায়, প্রখর রোদে পুড়ছে চারপাশ। কাঠফাঁটা রোদে যখন জনজীবন দুর্বিষহ তখন এই পুকুর দিচ্ছে সামান্য স্বস্তি ।  গোল তালাবের চারপাশের আম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ নানা ফল ও ঔষধি গাছে ঘেরা, যার ফলে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মাঝেও এর পানি থাকে ঠান্ডা। প্রচণ্ড তাপদাহে স্বস্তি পেতে দূরদূরান্ত দেখে গোসলের জন্য আসছে অসংখ্য মানুষ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোল তালাব। এই পুকুর শহরের কর্মব্যস্ত মানুষকে দিচ্ছে গ্রামের সুনিবিড় শীতল ছোঁয়া। মনে করিয়ে দিচ্ছে দুষ্টু মিষ্টিতে ভরা ছেলে বেলাকে।  শত বছর পরেও এই পুকুর এখনো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। প্রতিদিন শতশত মানুষ গোসল করার পরও এর পানি টলটলে স্বচ্ছ। এর পেছনের রহস্য, ৫ টাকায় পুকুরে গোসল করতে পারলেও ব্যবহার করা যায় না সাবান-শ্যাম্পু । কাচতে পারে না কাপড়। প্রয়োজন হলে পাশেই রয়েছে আলাদা গোসলখানা ও পোশাক পরিবর্তনের জায়গা। পুকুরে নামায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সাঁতার না জানা লোকদের।   নবাববাড়ি ট্যাংক কমিটির সদস্য রেহানুল হক রেহান জানান, সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে পুকুরের গেট। যে কেউ চাইলেই এখানে গোসল সেরে নিতে পারেন । রেহানুল হক অভিযোগ করেন, তবে শত বছরের এই ঐতিহ্যের দিকে নজর পড়েছে কিছু দখলদারদের। জাল দলিল তৈরি করে একাধিকবার চেষ্টা হয় দখলের।  নবাব বাড়ির পুকুরের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, পুরান ঢাকার বাংলাবাজার এলাকায় কুমার সম্প্রদায়ের লোক, মাটি দিয়ে তৈরি করেন বিভিন্ন সামগ্রী। তাদের প্রয়োজনে এ স্থান থেকে মাটি নেওয়া হতো। মাটি কাটতে কাটতে এক পর্যায়ে সৃষ্টি হয় ছোট আকারের গর্তের। এ গর্ত পরবর্তী সময়ে রূপ নেয় জলাশয়ে। তখন জমিদার মোগল শেখ এনায়েত উল্লাহ এটিকে জলাশয় হিসেবে ব্যবহার করতেন। পরে ১৮৩০ সালে নবাব খাজা আলিম উল্লাহ জলাশয়টি কিনে নেন। এরপর ৮ বিঘা জমির মধ্যে জলাশয়টি সংস্কার করে বানানো হয় পুকুর।  পাঁচ টাকায় শুধু গোসলই নয়, কর্মব্যস্ত জীবনে এ পুকুর দিচ্ছে শীতল প্রশান্তি। এখন আর নবাবরা না থাকলেও মাত্র ৫ টাকায় স্বচ্ছ পানির এই পুকুরে যে কেউ এসেই ব্যবহার করতে পারছে অনায়াসে।  
১৬ ঘণ্টা আগে

সুলতান মেলায় ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই
নড়াইলে সুলতান মেলায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে।  মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) শহরের কুড়ির ডোব মাঠে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ প্রতিযোগিতা।  বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সুলতান মেলায় ঐতিহ্যবাহী এ ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়।  জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২৬টি ষাঁড় অংশ নেয়। লড়াইয়ে অংশ নেওয়া প্রতিটি ষাঁড়ই ছিল সুঠাম দেহের ও বাহারি রঙের। লড়াই দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন নানা বয়সী মানুষ। এ সময় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠটি।  যশোরের অভয়নগর থেকে আসা সূর্য কুমার বলেন, অনেক কষ্ট করে প্রতিবছর সুলতান মেলায় ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসি। ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে এসেছি। সমীরণ বিশ্বাস বলেন, ষাঁড়ের লড়াই আগে অনেক জায়গায় হতো, এখন হয় না। এই সুলতান মেলায় প্রতিবছর হয়। তাই অনেক মানুষ এসেছে। ষাঁড়ের লড়াই দেখছি, খুব ভালো লাগছে।  এ দিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে হারিয়ে যাওয়া বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া উৎসবের নবজাগরণের উদ্দেশ্যে সুলতান মেলায় এসব খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।  সুলতান মেলার ‘কিউট গ্রামীণ’ ক্রীড়া উৎসব উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মন্নু বলেন, এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির হারিয়ে যাওয়া যে ক্রীড়া উৎসব রয়েছে সেগুলোর নবজাগরণ সৃষ্টি করা। নতুন প্রজন্মকে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। তারা মাদক থেকে সরে এসে খেলাধুলা, লেখাপড়ার ভেতরে আসুক এবং নিজেরা আলোকিত মানুষ হিসেবে তৈরি হোক সেই প্রত্যাশা নিয়েই আমাদের এই প্রচেষ্টা। উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল নড়াইলের সুলতান মঞ্চে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলা মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। মেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী কুড়ির ডোব মাঠে ‘কিউট গ্রামীণ’ ক্রীড়া উৎসব শিরোনামে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে আগামী ২৯ এপ্রিল এ মেলা শেষ হবে।
২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৭

জমে উঠেছে ৫১৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ঐতিহ্যবাহী গোপিনাথপুর মেলায় ঘোড়ার হাট জমে উঠেছে। বাহাদুর, মহারাজা, রানি, সুইটি, সোনার চাঁদ, সোনার তরী আরও কত যে বাহারি নাম! ঘোড়াগুলোর চলনে বিদ্যুৎ গতি, চোখের পলকে যেন মাইল পার। এমন নানামুখী গুণের কারণে দেশি-বিদেশি ঘোড়াগুলোর কদরও যথেষ্ট। পছন্দের ঘোড়া পেতে ক্রেতাদের মধ্যেও রীতিমতো কাড়াকাড়ি। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে জয়পুরহাটে শুরু হয় মাসব্যাপী মেলা। মূল মেলা ১৩ দিন হলেও পশুর মেলা হয় পাঁচ দিন। ঘোড়া ছাড়াও মহিষ, গরু, ভেড়া ও ছাগল বেচাকেনা হয় এ মেলায়। আয়োজকরা বলছেন, দেশের একমাত্র ঘোড়া বেচাকেনার হাট এটি। এ কারণে সারাদেশ থেকে আনা কয়েক হাজার ঘোড়া জড়ো করা হয় এখানে। একে ঘোড়ার মিলনমেলা বললেও অত্যুক্তি হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর মেলার ঘোড়ার হাট। দরদাম ঠিকঠাকের পর একটি খেলার মাঠে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়ার দৌড়। দোল পূর্ণিমা মেলা কমিটি জানায়, ৫১৫ বছরের পুরনো এ মেলা শুরু থেকেই ঘোড়ার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। স্বাধীনতার পরও মেলায় নেপাল, ভুটান, ভারত, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে উন্নত জাতের ঘোড়া আসতো। বর্তমানে সেসব এখন স্মৃতির পাতায় হলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘোড় সওয়ারি ও ঘোড়া মালিকরা এ মেলায় আসেন। স্থানীয়রা জানান, এ মেলায় ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘোড়ার আমদানি হয়। এখানে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৯ লাখ টাকার পর্যন্ত ঘোড়া রয়েছে। ক্রেতারা দেখেশুনে পছন্দ মত কিনছেন ঘোড়া। এদিকে মেলায় ঘোড়া ছাড়াও গরু-মহিষ, গৃহস্থালি সামগ্রী, মণ্ডা-মিঠাইসহ নানা দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। নওগাঁ থেকে মেলায় এসেছেন আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, বাড়িতে ঘোড়া পালন করি। আর প্রতিবছর এ মেলায় আসি ঘোড়া বিক্রি করার জন্য। আমার সবচেয়ে বড় ঘোড়ার নাম বাহাদুর। এটি তাজি জাতের একটি ঘোড়া। দাম চাচ্ছি ৯ লাখ টাকা। কিন্তু ক্রেতারা দাম বলছে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মহারাজা নামে একটি ঘোড়া নিয়ে এসেছেন আব্দুল বারী নামে একজন। তিনি বলেন, বড় ঘোড়া নিয়ে আসছি তিনটা ও ছোট ঘোড়া দুইটা। আমাদের সবচেয়ে বড় ঘোড়া মহারাজা। এর দাম ৭ লাখ টাকা। বিভিন্ন জন বিভিন্ন দাম বলছে, ৩ লাখ-৪ লাখ। এখন শেষ পর্যন্ত দেখি দামে হলে বিক্রি করবো। গোপীনাথপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির প্রধান কর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি মেলা কমিটিও সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। এত বড় পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ মেলা উত্তরবঙ্গের কোথাও নেই। আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, মেলায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩০ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩২

ছুটির দিনে জমজমাট ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার
ছুটির দিনে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজধানীর চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার। শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেলে চকবাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রচুর মানুষের ভিড়। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ইফতার করার জন্য চকবাজারে এসেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ইফতার বিক্রির দোকানগুলোতে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। ছুটির দিনে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসায় ব্যবসায়ীদের বিক্রি হচ্ছে অনেক ভালো। প্রায় ৫০-৬০ বছরের পুরোনো এই ইফতার বাজার নানার মুখরোচক খাবারের জন্য বিখ্যাত। ছোলা-বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি, শাহী জিলাপি, কাচ্চি বিরিয়ানি, ছাড়াও নানার আইটেমের বিরাট সমাহার রয়ছে এই বাজারে। সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ চার-পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের ইফতার আইটেম রয়েছে চকবাজারে। এর মধ্যে সুতি কাবাব, শামী কাবাব, আস্ত মুরগি, হাঁসের রোস্ট, খাসির লেগ রোস্ট সর্বনিম্ন ৮৫০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  কেরানীগঞ্জ থেকে আসা তানভীর আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে এখানে ইফতার করতে এসেছি। চকবাজারের ইফতারের অনেক নাম শুনেছি। সেজন্য আজকে টেস্ট করার জন্য এসেছি। সব ঘুরে দেখছি। এখনও কিছু কেনা হয়নি। শেষ সময়ে কিনব।  ফার্মগেট থেকে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে চকবাজারের ইফতার বাজারের ভিডিও দেখে আজকে কিনতে এসেছি। খাসির লেগ রোস্ট, আস্ত হাঁস রোস্ট আর শরবত নিয়েছি। নেওয়াজ গাজী নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, শরবত থেকে শুরু করে ইফতারের অভিজাত সব আইটেম চকবাজারে পাবেন। সারাদেশ ঘুরে যেসব খাবার পাবেন না, সেগুলো এখানে পাবেন। এ ছাড়া দামও মানুষের হাতের নাগালে। এখন বাজারে সব কিছুর দামই বাড়তি। তবুও আমরা এমনভাবে দাম রাখছি যেন ক্রেতাদের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
২২ মার্চ ২০২৪, ১৮:৪৬

বুলগেরিয়ার পোমাকদের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের অনুষ্ঠান
বুলগেরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের রডপি পর্বতমালায় অবস্থিত রিবনভো গ্রামের মানুষেরা মনে করেন, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের ঐতিহ্যটা অনন্য৷ তাই তারা একে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে আবেদন করেছেন৷ প্রায় আড়াই দিন ধরে বিয়ের অনুষ্ঠান চলে৷ এই সময়ে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন রীতি, অভ্যর্থনা ও নাচে অংশ নেন হবু বর ও কনে৷ অনুষ্ঠানের প্রথম দিন বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনেরা কনের যৌতুক কাঠের ফ্রেমে ঝুলিয়ে দেন৷ বিশেষ করে কম্বল, বিছানার চাদর, লাল হারেম প্যান্ট ইত্যাদি৷ গ্রামবাসীর দেখার জন্য এটি করা হয়৷ দ্বিতীয় দিন বিয়ের মিছিল গ্রাম প্রদক্ষিণ করে৷ এদিন অনুষ্ঠানে আরো অনেককিছু হয়৷ নবদম্পতিকে উপহারের টাকা দিয়ে সাজানো হয়৷ পুরো গ্রাম অনু্ষ্ঠানে অংশ নেয়৷ রিভনভোর মানুষেরা তাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত৷ কারণ, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের ঐতিহ্য অনন্য৷ তাই তারা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হতে আবেদন করেছে৷ ইউনেস্কো অ্যাপ্লিকেশন ইনিশিয়েটিভের মুস্তফা আমিন বলেন, ‘‘এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, রিভনভোর বিয়ের অনুষ্ঠানের ঐতিহ্যকে বুলগেরিয়া ও ইউনেস্কো, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিক৷ তাহলে বুলগেরিয়ার অন্য সম্প্রদায়ের মতো আমরাও পরিচিত হয়ে উঠতে পারবো৷'' কনের বাড়িতে গেলিনা নামে একটি অনুষ্ঠান হয়, যা বিশুদ্ধতা আর নতুন শুরুর প্রতীক৷ সেই সময় কনেকে খুব নিখুঁতভাবে, দক্ষতার সঙ্গে সাজানো হয়৷ প্রাচীনকাল থেকে এটা চলে আসছে বলে জানা যায়৷  এরপর বাড়ির সামনে জড়ো হওয়া মানুষদের সামনে কনেকে হাজির করানো হয়৷ ঐতিহ্য মেনে এই সময় তাকে চোখ বন্ধ রাখতে হয়।
০৩ মার্চ ২০২৪, ১৬:৩২

ইরানের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে জয়া আহসান
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ঢালিউড-টালিউডে অভিনয়ের দ্যুতি ছড়ানোর পর বলিউডেও বাজিমাত করেছেন এই অভিনেত্রী। এবার ইরানের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দেখা গেল জয়াকে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) পর্দা উঠেছে ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। ইরানের বিখ্যাত এই চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী সিনেমা হিসেবে প্রদর্শিত হয় জয়া অভিনীত সিনেমা ‘ফেরেশতে’। এটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে বাংলাদেশ-ইরান। এদিন সেখানে জয়াসহ আরও উপস্থিত ছিলেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, সুমন ফারুক, তেহরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান, পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম ও গল্পকার মুমিত আল রশিদ। উৎসবে জয়া ও শিমু হাজির হয়েছিলেন ইরানের ঐতিহ্যবাহী ইসলামি পোশাকে। নীল রঙের বোরকা ও মাথায় স্কার্ফ পরতে দেখা গেছে জয়াকে। এ প্রসঙ্গে জয়া বলেন, ‘ফেরেশতে’ সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে। চলচ্চিত্র উৎসবে বিশ্বের অনেক দেশের পরিচালকরা এবং সিনেমা সংশ্লিষ্টরা সিনেমাটি দেখবেন। এটা ভালো লাগছে।   ইরানে অবস্থান প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ইরানের বড় চলচ্চিত্র উৎসবে এসে খুব ভালো লাগছে। সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে তেহরানের ঐতিহ্য। ‘ফেরেশতে’ সিনেমায় একজন সংগ্রামী নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া। ইতোমধ্যে এটি ভারতের  আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। ঢাকায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও দেখানো হয়েছে সিনেমাটি।   প্রসঙ্গত, সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন মুর্তজা অতাশ জমজম। চলতি বছর মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে জয়ার নতুন সিনেমা ‘ভূতপরী’। তেহরান থেকে সরাসরি কলকাতা যাবেন তিনি। এ ছাড়া একই দিনে বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত ‘পেয়ারার সুবাস’। 
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫২

হাওরাঞ্চলে চলছে ৯৪তম ঐতিহ্যবাহী চৌদ্দমাদল
আবহমানকাল ধরে বাঙালির চিত্ত-বিনোদন, সামাজিক মেলবন্ধনে অন্যতম ধারক গ্রামীণ লোকজ ও ধর্মী উৎসবগুলো। আধুনিক সংস্কৃতির স্রোতে ইতোমধ্যে বহু উৎসব হারিয়ে গেছে। নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এখনও কিছু ‘গ্রামীণ মেলা’, ‘লোকজ উৎসব’, ‘বান্নি’ যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। তারই অন্যতম কিশোরগঞ্জ অষ্টগ্রামে ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ‘চৌদ্দমাদল’ পালিত হচ্ছে শত বছর ধরে। গত শুক্রবার থেকে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নে শ্রী শ্রী নিতাই গৌর মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ‘চৌদ্দমাদল’ মেলা। চৌদ্দমাদল বা মেলা ঘিরে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর, কাস্তুল, অষ্টগ্রাম, কলমা ইউনিয়ন ও বাজিতপুর, মিঠামইন, ইটনা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর, চাতলপাড়, খাগালিয়া, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লাখো মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্যতা নিয়ে ভিড় করেন এই মেলায়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আনন্দ ভাগাভাগি করেন তারা। চৌদ্দমাদল কেন্দ্রিক মন্দিরের আশেপাশে বিভিন্ন এলাকার মানুষ কয়েক শত অস্থায়ী দোকানে, শিশুদের খেলনা, কসমেটিকস, মিষ্টি, জিলাপি, মুড়িমুড়কি ও মিঠাই-মন্ডা, বিভিন্ন ফলসহ নিত্য ভোগ্যপণ্য, মাটির তৈজসপত্র, কাঠ ও স্ট্রিলের আসবাবপত্র, কাপড়, ফলমূল, গৃহস্থালি জিনিসপত্র, কৃষি উপকরণ বেঁচা-কেনা হচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই মেলায় বাঙ্গালপাড়া গ্রামের বাইরে থাকা কর্মজীবী মানুষ ও আত্মীয়স্বজনরা সারা বছর গ্রামে না-এলেও চৌদ্দমাদলে বেড়াতে আসেন ঠিকই। এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ অংশগ্রহণ করে। স্থানীয়রা জানান, ১৯৩১ (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ) সালে বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের প্রয়াত চার বন্ধু, প্রকাশ চন্দ্র সাহা, রায়চরণ রায়, রাধাকান্ত দেবনাথ ও নদীয় চাঁদ রায়, ভারতে হিন্দু সম্প্রদায়ের তীর্থালয় ‘নবদ্বীপ’ ভ্রমণ করেন। সেখানে ‘চৌদ্দমাদল’ নামক অনুষ্ঠান দেখে তারা মুগ্ধ হন। পরে, দেশে ফিরে তারা শ্রী শ্রী নিতাই গৌর নাট মন্দির স্থাপন করে, প্রতি বছর মাঘ মাসে পূজা ও হরিনাম সংকীর্তন আয়োজন করেন। এই কীর্তনে ১৪টি খুল (বাদ্যযন্ত্র) ও ১৪ জোড়া কর্তাল ব্যবহার করা হয় বলে এই উৎসবের নাম ‘চৌদ্দমাদল’ হিসেবে পরিচিতি পায়। আগামী মঙ্গলবার সকালে দধিমঙ্গল কীর্তনের মাধ্যমে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী ৯৪ তম এই লোকজ উৎসব।  তবে কাঠের তৈরি আসবাবপত্র কেনা-বেচা চলবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:০৬

আখাউড়ায় ঐতিহ্যবাহী ‘পৌষ মেলা’য় মানুষের ঢল
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলা যুগ যুগ ধরে উদযাপন হয়ে আসছে। মাঘ মাসের প্রথম দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় একাধিক স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পৌষ সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দিনব্যাপী উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কালীবাড়ি ও মঠ খোলা এলাকায় বসে এই মেলা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শত শত দর্শনার্থীর ভিড়ে মিলন মেলায় পরিণত হয় মেলা আঙিনা। নারী, পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ আর শিশু-কিশোরের কোলাহলে মুখর হয় মেলা প্রাঙ্গন। গ্রামীণ জনপদের এই মেলায় বসে জিলাপি, বাতাসা, মিষ্টির দোকান, ভাজা পেয়াজো, চানাচুর, বাদাম, মাটির তৈজষপত্র, বাঁশ-বেতের পণ্যসহ বিভিন্ন খেলনার দোকান। মেলায় আসা ক্রেতারা কিনেছে তাদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তৈজষপত্র, খেলনা ও বিভিন্ন পদের মিষ্টান্ন আর বাহারি ফুলের গাছ। 
১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:০৬

ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলায় দেড় কোটি টাকার মাছ বিক্রি
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইলে প্রতি বছর পৌষের শেষ দিন বসে মাছের মেলা, যেটি এলাকায় জামাই মেলা নামে বিখ্যাত। এদিন এ মেলা থেকে মাছ কিনে জামাইরা শ্বশুরবাড়িতে যান। মেলায় জামাই-শ্বশুরের মধ্যে চলে বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা। এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসবে মেতে ওঠেন সাধারণ মানুষ। দিনব্যাপী এ মেলায় অন্তত দেড় কোটি টাকার মাছ কেনা বেচা হয়। আর দেশি বিদেশি মাছ কিনতে বিভিন্ন জেলার মানুষ ভিড় করেন এখানে।  এক বছর, দুই বছর নয়, প্রায় আড়াইশ বছর ধরে উপজেলার জামালপুর, জাঙ্গালীয়া ও বক্তারপুর ইউনিয়নের বিনিরাইল এলাকায় বসে এই ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। নামে জামাই মেলা হলেও মূলত এখানে বিক্রি হয় ছোট বড় দেশি বিদেশি নানা পদের মাছ। মেলা উপলক্ষে সকাল থেকেই সহস্রাধিক দোকানে মাছের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন মাছ বিক্রেতারা। মেলায় চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। সামুদ্রিক চিতল, বাগাড়, আইড়, বোয়াল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইকলা, রূপচাঁদা, শাপলাপাতা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশি মাছ। বড় আকারের মাছকে ঘিরেই জটলা বেশি ক্রেতাদের। জামাই-শ্বশুরদের মধ্যেও হয় সে মাছ কেনার নীরব প্রতিযোগিতা। বিক্রেতারা বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা মেলায় মাছ বিক্রি করতে এসেছেন। এখানে উৎসবের আমেজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ক্রেতারা মাছ কিনেন। মেলায় গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন। মাছের সঙ্গে মেলায় আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি, বস্ত্র, হস্ত ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যের হাট বসেছে। ৪০, ৫০ ও ১২০ কেজি ওজনের নানা পদের মাছের ঠাঁই হয়েছে মেলায়। আর এসব দেশি বিদেশি মাছ সাশ্রয়ী দামে কিনতে পেরে খুশি এখানে আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। একদিনের এই মেলায় অন্তত দেড় কোটি টাকার বিক্রি শুধু মাছ কেনা বেচা নয়, হরেক রকমের মিষ্টি, নানা ধরনের তৈজসপত্রসহ রকমারি পণ্যের হিসাবে।
১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়