• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
কসবায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন কলেজছাত্রী
সাগরে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ মিলল সৈকতে
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমুদ্র সৈকত থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে ফৌজদারহাট সমুদ্র উপকূলের কিং শিপ ইয়ার্ডের পাশ থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইলিয়াস (২৭) নামের যুবক বরগুনার বামনা উপজেলার বড় তালেশ্বর এলাকার খালেকের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেলে ফৌজদারহাট উপজেলার সমুদ্র উপকূলে অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ দেখে স্থানীয়রা নৌ পুলিশকে খবর দেয়। পরে নৌ পুলিশ ও গাউছিয়া কমিটির মানবিক টিমের সহায়তায় উদ্ধার করা হয় মরদেহটি। তার পকেটে একটি আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। নিহতের পরিবার জানায়, ১৫ দিন আগে আমার ভাই নাগরীর স্টিলমিল এলাকায় সমুদ্র উপকূলে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুমিরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করি। গাউছিয়া কমিটির মানবিক দলের সদস্যরা আমাদের মরদেহ উদ্ধারে সহায়তা করেছে। তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আসামি ধরতে গিয়ে ১০ পুলিশ সদস্য আহত
যুবলীগ নেতার চোখ উপড়ে ফেলল দুর্বৃত্তরা
মেঘনা থেকে ৭০ মণ জাটকা জব্দ 
সেনবাগে সড়কের বেহাল দশা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী 
ফেনীতে আল্লাহর ৯৯ নাম সম্বলিত ভাস্কর্য উদ্বোধন
ফেনী পৌরসভার নান্দনিক সৌন্দর্যের মধ্যে আরও একটি সংযোজন হলো আল্লাহ তা’আলার ৯৯টি নাম সম্বলিত ইসলামিক ভাস্কর্য।  রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শহরের মিজান রোড়ের মাথায় (সোনালী ব্যাংকের সামনে) ইসলামিক ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। এ সময় চত্বরটির নাম করণ করা হয় শান্তি চত্বর। এমন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য বলেন, মিজান ময়দানে জেলার সব বড় বড় প্রোগ্রাম হয়। এখানে ঈদের জামাতসহ আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলন হয়। সে ময়দানের সম্মুখে আল্লাহর নাম সম্বলিত এ শান্তি চত্বর নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।  তিনি বলেন, আমরা ধর্মপ্রাণ মুসলমান আমাদের জন্য এসব আবেগের। এমন ভাস্কর্য পৃথিবীর কোথাও নেই। এই প্রথম ফেনীতে এটি স্থাপন হয়েছে। ফেনীর মানুষ শান্তিতে বিশ্বাসী আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। এ সময় পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ফেনী পৌরসভার অর্থায়নে ইসলামিক ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। মুসলিম দেশ হিসেবে ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শন, আল্লাহ ও রাসূলের নাম মানুষের সামনে উপস্থাপন করা মুসলমান হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকে এই ভাস্কার্যটি স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এগুলো দেখে মানুষ যাতে আল্লাহ ও রাসূলের এবং ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। এ ছাড়াও ফেনী পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ইসলামিক ভাস্কর্যের মাধ্যমে শহরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে কাজ করছি। আশা করছি, শহরের আরও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ইসলামিক নিদর্শন স্থাপনের মাধ্যমে মুসলিম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এখান থেকে আরও বেশি উন্মোচিত হবে। এ ছাড়াও ভাস্কর্যটি ওপরে চারটি এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে। যার মাধ্যমে কোরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল, বিভিন্ন ইসলামিক প্রোগ্রাম ও সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম প্রচার করা হবে বলে জানান তিনি। পৌরসূত্রে জানা যায়, ২ মাসে এর কাজ সমাপ্তি করেন নিউ স্মার্ট জেনারেল সার্ভিস নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ভাস্কার্যটিতে ৭ হাজার এলইডি লাইট রয়েছে। এ সময় ফেনী আলিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, প্যানেল মেয়র জয়নাল আবেদিন লিটন হাজারী, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুর রহমান, ১২নং কাউন্সিলর হারুন মজুমদার, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন বাহার, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কহিনুর আলম, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খালেদ খান, ফেনী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি সাইফুল্লাহ, কোর্ট মসজিদের খতিব মাওলানা মীর হোসেন, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মাদরাসা শিক্ষকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা / ৭ ঘণ্টায় উদ্ধার হয়নি একটি বগিও
কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনায় ৯টি বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় ৭ ঘণ্টায় একটি বগিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রোববার (১৭ মার্চ) রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলছে। দুর্ঘটনার ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ১২টি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে আছে। চট্টগ্রামস্থ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হওয়ার পর রাত সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধারকারী ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তিনি বলেন, আমাদের কাজ চললাম রয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) ভোর ৫টায় বগিগুলো উদ্ধারের কাজ সম্পন্ন হতে পারে। তবে, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে সকাল হবে। এদিকে দুর্ঘটনার কারণ জানতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে প্রধান করে ৫ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে, রোববার দুপুর পৌনে ২টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গরমে রেললাইন বেঁকে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেসের নয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ যাত্রী আহত হয়।
কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুর যাওয়ার পথে বিজয় এক্সপ্রেসের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। রোববার (১৭ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের তেজের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার (১৭ মার্চ) রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ময়মনসিংহ অভিমুখী বিজয় এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। চৌদ্দগ্রামের গুণবতী স্টেশন পার হয়ে নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে প্রবেশের সময় আউটারে ট্রেনটির ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। হঠাৎ গরমের কারণে এমন হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন এবং অন্তত তিন থেকে চার জন গুরুতর আহত হয়েছেন।  নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি এটা বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন। হাসানপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে নাঙ্গলকোটের আগে ঘটনাটি ঘটেছে। ইঞ্জিন লাইনে আছে। তবে ৬ থেকে ৭টি কোচ লাইনচ্যুত হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে এ বিষয়টুকু জেনেছি। রিলিফ ট্রেন পাঠানোসহ আরও কিছু প্রাথমিক কাজ আছে, সেগুলো আমরা এই মুহূর্তে করছি। নাঙ্গলকোট রেল স্টেশন মাস্টার জামাল হোসেন বলেন, বগিগুলো ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের উভয় লাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর, চট্টগ্রাম-জামালপুর রোডে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। হতাহতের বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।   প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর জানা যায়নি। তবে দুর্ঘটনার বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে ট্রেনটির কয়েকটি বগি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। 
মেলেনি ধর্ষণের আলামত, বাদী নিজেই কারাগারে
আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধার জন্য ভাড়াটিয়া হয়ে পুরুষদের নামে ধর্ষণ মামলা করে এখন নিজেই এখন কারাগারে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালগিরি গ্রামের কোহিনুর আক্তার (৩৩)। শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে কচুয়া থানা পুলিশ তাকে চাঁদপুর আদালতে পাঠায়। এর আগে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পালগিরি উত্তর পাড়া বাড়ী থেকে কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করে কচুয়া থানা পুলিশ। পুলিশ জানায়, পুরুষদের নামে ধর্ষণ মামলা করাই তার পেশা। এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ধর্ষণ মামলার বাদী কোহিনুর। মামলায় তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের স্বামী দাবী করে যৌতুক মামলা করেন। তার এমন মিথ্যা ধর্ষণ মামলার শিকার একই উপজেলার রহিমানগর এলাকার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে নাজির উল্লাহ স্বপন। এই মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় এখন শ্রীঘরে কোহিনুর। এসআই মিন্টু কুমার জানান, তথ্য নিয়ে জানতে পারি কোহিনুর এর বিরুদ্ধে আগেও শাহরাস্তি থানায় ২৯০ ধারায় মামলা হয়েছে। তিনি নাজির উল্লাহ স্বপনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। ওই মামলাটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় খারিজ করেন এবং বাদী কোহিনুরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত কচুয়া থানাকে অভিযোগটি মামলা আকারে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। সে আলোকে মামলাটি থানায় গ্রহণ এবং নামীয় আসামী কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার বাদী নাজির উল্লাহ স্বপন বলেন, আমার আপন ভাই বুলন এর সাথে সম্পত্তিগত বিরোধ আছে। ওই বিরোধকে আমার ভাই কাজে লাগানোর জন্য যৌন কর্মী কোহিনুর আক্তারকে দিয়ে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলা করেন। ওই মামলায় আমি ৩ মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত হই। এরই মধ্যে আদালত আমার ডিএনএ টেস্ট করে ধর্ষণের আলামত পায়নি। যার ফলে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি মামলাটি খারিজ করে। এরপর আমি নিজে তার বিরুদ্ধে একই আদালতে চলতি মাসের ৪ তারিখে ১৭ ধারায় অভিযোগ করি। তার এই মামলায় আমি আর্থিক, মানসিকভাবে হয়রানি ও সম্মান হানি হয়। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে অনেক পুরুষ হয়রানি থেকে রক্ষা পাবে। কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা নাজির উল্লাহ স্বপনের মামলাটি এফআইআরভুক্ত করি। ওই মামলায় কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে তাকে চাঁদপুর আদালতে পাঠানো হয়।
কক্সবাজার উপকূলে জলদস্যুর কবলে এমভি আকিজ
কক্সবাজারে এমভি আকিজ লজিষ্টিক-২৩ নামের একটি জাহাজে দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে।  মঙ্গলবার (৭ মার্চ) কুতুবদিয়া চ্যানেলে সিমেন্টের ক্লিংকারবাহী ওই জাহাজে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কুতুবদিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে সিমেন্টের ক্লিংকার লোড করে এমভি আকিজ লজিষ্টিক-২৩ জাহাজটি কুতুবদিয়া বাতিঘরের প্রায় ৪ কিলোমিটার পশ্চিমে নোঙর করে। পরদিন রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে বড় একটি ফিশিং ট্রলার যোগে দেশীয় তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জাহাজে উঠে মুখোশধারী ২৫-৩০ জন ডাকাত। এ সময় জাহাজের মাস্টারসহ ১২ জন কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারধর করে স্মার্ট ফোন, নগদ টাকা, ব্যাটারি, ইঞ্জিন- রাডার-ইকোসাউন্ডের মনিটর, জিপিএস, সোলার প্যানেলসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মুখোশধারী ডাকাতদের চিহ্নিত করা না গেলেও সকলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষায় কথাবার্তা বলেছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার আকিজ শিফিং লাইন লিমিটেডের অপারেশন বিভাগের সিনিয়র অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে কোম্পানির পক্ষে কুতুবদিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কবির সাগরে জাহাজ ডাকাতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাগরে অপরাধ নির্মূলে আলাদা একটি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তবুও ওই ঘটনায় আমাদের সীমানার কোন জলদস্যু জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শারীরিক আকৃতি দমাতে পারেনি ৩ ফুট ১০ ইঞ্চির সোনিয়াকে
কিছু দুঃখ মানুষকে হতাশায় তলিয়ে দেয়। শারীরিক বাধা এমনি এক কষ্ট। আবার এমন প্রতিবন্ধকতাই কারও জীবনে শক্তি হয়ে অনুপ্রেরণা দেয়। এমনি এক শিক্ষার্থী নোয়াখালীর কবিরহাট সরকারি কলেজের জান্নাতুল ফেরদাউস সোনিয়া। পড়ছেন দ্বাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে। সোনিয়া দেখতে শিশুর মত হলেও তার বয়স (২১)। লম্বায় তিন ফুট ১০ ইঞ্চি। বয়স বাড়লেও তার শারীরিক গঠন বাড়েনি। শরীরের গঠন শিশুদের মতো দেখায়।  তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সোনিয়া। ছোটবেলা থেকেই সে পড়াশোনায় বেশ আগ্রহী ছিল। ২০১৬ সালের ঘটনা। ছোট বোন জান্নাতুল নাঈমের সাথে স্থানীয় রাজুরগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন পঞ্চম শ্রেণি ছাত্রী সোনিয়া। যখন ছোট বোনের শারীরিক গঠন বাড়তে থাকে, তখনই তার শারীরিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। এরপর শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে তাকে পড়তে হতো কটু কথার বেড়াজালে। রাস্তাঘাটে হয়রানির বিরুদ্ধে তার লড়াই ছিল ব্যতিক্রমী। সে মানুষের কোনো উপহাস বা টিপ্পনী কখনোই কানে লাগাননি। কোনো কটু কথা তাকে দমাতে পারেনি। সোনিয়া নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের সগির ফাইক গ্রামের জমিদার বাড়ির নুরুল হকের মেয়ে।      এভাবে বাড়ির পাশের প্রাথমিকের গন্ডি শেষ করে ২০২২ সালে স্থানীয় মিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩.৫৬ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর কলেজে ভর্তি হতে বাধা হয়ে দাঁড়ান মা রহিমা খাতুন। একাধারে তিন দিন কান্নার পর মেয়ের প্রবল ইচ্ছার কাছে হার মানেন মা। দিনমজুর বাবার একান্ত সহযোগিতায় কলেজে ভর্তি হন সোনিয়া। এখন বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে কলেজে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বপ্ন দেখেন প্রতিবন্ধকতাকে ছিন্ন করে একজন ব্যাংকার হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্ত দিনমজুর বাবা পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাক করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোনিয়ার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন ভেস্তে যেতে বসেছে।   জান্নাতুল ফেরদাউস সোনিয়া বলেন, আমার বাবা একজন দিনমজুর, পরিবারে ছিল আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য। বাবা পরপর দু’বার স্ট্রোক করার কারণে পরিবারে অভাব অনটন দেখা দেয়। এতে আমার পড়ালেখার খচর এখন বহন করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার স্বপ্ন পড়ালেখা শেষ করে একজন ব্যাংকার হওয়া। আমি চাই সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষ আমার পাশে দাঁড়াক।   মা রহিমা খাতুন বলেন, আমার বড় কোনো ছেলে নেই। আমার মেয়ে যেন তার পড়ালেখা আরেকটু চালিয়ে যেতে পারে। সরকার ও বিত্তবান মানুষের সহযোগিতায় আমার মেয়ে যেন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।     মামা জাকির হোসাইন বলেন, সোনিয়া আমার বড় বোনের মেয়ে। সে ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছে। আর্থিক সংকটে পড়ে তার লেখা পড়া এ পর্যন্ত এসে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।    নোয়াখালীর কবিরহাট সরকারি কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ নূরুল হক মিলন বলেন, সোনিয়া আমাদের একজন নিয়মিত ছাত্রী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সে পড়াশোনা করে আসছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটা অনুকরণীয় বিষয়।   কবিরহাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, এ অবস্থায় সোনিয়ার যে উদ্যম, তা কলেজের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। তার উচ্চ শিক্ষার সুবিধার জন্য যদি সম্ভব হয় আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সাহায্য করার চেষ্টা করব। একই সঙ্গে আমি আহ্বান জানাই সমাজের হৃদয়বান, বিত্তবান মানুষ যেন তার পাশে দাঁড়ায়।