• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
বইমেলায় ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি
‘ফারাক’ বইটি হতে পারে জীবন রক্ষার হাতিয়ার
কানাডার টরেন্টো শহরের স্থানীয় একটি হোটেলে প্রবাসী লেখক মোস্তফা আকন্দ ও নেসার আহমেদ প্রণীত ফারাক গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেছেন অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় উপনেতা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এমপিপি ডলি বেগম।  শনিবার (২ মার্চ) আলোচনা অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও কানাডা প্রবাসী আসমা আহমেদ। ডলি বেগম তার বক্তৃতায় বলেন, টরেন্টোতে বাংলাদেশীদের মধ্যে প্যারিন্টং একটি জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘ফারাক’ বইটির লেখকদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তারা কমিউনিটির জন্য নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন। টরেন্টোতে বাঙালী যুবকদের আত্মহত্যা বিষয়ে তারা গবেষণা করেছেন কয়েক বছর আগে। খুব ভালো কাজ ছিলে সেটা।   তিনি আরও জানান, সম্পূর্ণ বাংলায় লিখিত ফারাক বইটি টরেন্টো বাঙালী কমিউনিটির প্যারেন্টসদের প্যারেন্টিং সমস্যা সমাধানে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কমিউনিটির সবাইকে বইটি পড়া উচিত। ফারাক গ্রন্থটির ওপর আলোচনায় অংশ  নিয়ে  বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোর প্রাক্তন সাংবাদিক ও টরেন্টো ভিত্তিক অনলাইন পত্রিকা নতুন দেশের সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, ফারাক গ্রন্থটি লেখকদ্বয়ের প্যারেন্টিং বিষয়ের ওপর লিখিত একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ যেখানে আমাদের প্যারেন্টিং এর চ্যালেঞ্জগুলোকে গল্পের ঢংয়ে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। গল্পগুলো সুখপাঠ্য। পড়তে পড়তে মনে হবে আমি এই শহরেরই কোন গল্পের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছি আর  মানসিক স্বাস্থ্য ও প্যারেন্টিং বিষয়ে শিখছি। এই শিক্ষণটা আমাদের ও আমাদের সন্তানদের মধ্যকার দূরত্ব কমাতে সাহায্য করবে। টরেন্টো প্রবাসী কবি, গল্পকার ও টরেন্টো ডিসট্রিক্ট স্কুল বোর্ডের স্পেশাল নিডস্ শিশুদের শিক্ষিকা সঙ্গীতা ইয়াসমিন বইটির ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, শুধু সন্তান জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায়না। বাবা-মা হতে গেলেও কিছু দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ থাকা দরকার হয়। ‘ফারাক’ অনেকটা গবেষণা-ধর্মী তথ্য সম্বলিত এবং বাস্তব ঘটনার প্রতিচ্ছবি নিয়ে রচিত গ্রন্থ। সেসব ঘটনা বিশ্লেষণ করলেই আমাদের মত হাজারো বাবা-মা অন্তত নিজেদেরকে প্রশ্ন করতে শিখবেন। এই গ্রন্থ পাঠে যদি নিজে থেকেই আমরা কিছু শিক্ষণ নিতে পারি সেটা আমাদের সবার জন্য মঙ্গল। না-ও যদি পারি, তবুও আমরা আমাদের মুদিত চক্ষুকে মুক্ত করতে পারি! সুস্থ থাক জগতের সব সন্তান। সুখি হোক পরিবার। ঘুচে যাক সব দূরত্ব! যেখানে আছে 'ফারাক'। টরেন্টোর আইনজীবী ব্যারিস্টার জাকির হোসেন বলেন, কোন বই যে এভাবে লেখা যায়, আমি  কখনো দেখিনি। বইটি প্যারেন্টিং এর ওপর লিখিত বই। কিন্তু লেখকদ্বয় গল্প বলেছেন আর প্যারেন্টিং শিখিয়েছেন। শেষে প্যারেন্টিংয়ের ওপর একাডেমিক আলোচনাও করেছেন। বইটি পড়া শুরু করলে আপনি শেষ না করে ছাড়তে পারবেন না। কমিউনিটির মানুষদের বইটি পড়া  উচিৎ। টরেন্টোর চিকিৎসক নিলান্জনা দত্ত বলেন, মোস্তফা আকন্দর লেখা আমার খুবই ভালো লাগে।  তিনি আমাদের সমাজের সমস্যাগুলোকে এমন সুন্দরভাবে তার লেখা গল্পে তুলে ধরেন যে, মনেই  হয়না এটা কোন তথ্যবহুল আলোচনা। আর বইটির সহ-লেখক নেসার আহমেদের প্রফেশনাল লেবেল  অনেক উঁচু। ফারাক বইটি সবাইকে পড়ার আহবান করছি। অন্টারিওর গুয়েলফ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর মাহতাব শাওন বলেন, ফারাক নামটাই একটা সার্থক নাম। আপনারা বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন যে কেন এই নামটি রাখা হয়েছে? বইটির পটভূমি আমার জানা। যে গবেষণা লেখকদ্বয়কে বই লিখতে উৎসাহ যুগিয়েছে সেই গবেষণাটির সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা ছিল। কয়েক বছর আগের টরেন্টোর বাঙালী তরুণদের আত্মহত্যার কাড়ন অনুসন্ধানের গবেষণার মুল ফলাফল ছিল মা-বাবার সাথে সন্তানের যোগাযোগের অভাব’ বা প্যারেন্টিং ইস্যু। এ বিষয়টি কখনো আমাদের কমিউনিটিতে এড্রেস করা হয়নি। তিনি সবাইকে বইটির অষ্টম অধ্যায়টি ভালোভাবে পড়ার অনুরোধ করেন।  সমাজসেবা মূলক কাজের উদ্যোক্তা ড্যানিয়েল হাকিম সবাইকে ফারাক বইটি পড়তে অনুরোধ করে বলেন, সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের প্যারেন্টিং স্টাইল চেঞ্জ হয়নি। বাবা-মা ও সন্তানদের মধ্যে সম্পর্ক এর ফারাক তৈরিতে এটাই ভূমিকা রাখছে। বইটা আমাদের মধ্যে বিদ্যমান সেই দূরত্ব পুরনে সহায়তা করতে পারে। প্রথম আলোর প্রাক্তন সাংবাদিক ও কানাডা প্রবাসী লেখক সুব্রত নন্দী বলেন, আমরা আগে জানতামই না যে প্যারেন্টিং বলে একটি বিষয় আছে। যাদের ক্ষতি হয়ে গেছে তাদেরতো গেছেই। আর আমাদের যাদের এখনো সুযোগ আছে, তারা যদি গুড প্যারেন্টিং করতে পারি তাহলে আমাদের বাচ্চাদের ক্ষতি হবেনা। আমি মনে করি, সবাইকে বাচ্চাদেরকে সময় দিতে হবে। আমাদেরকে চাপিয়ে দেয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। টরেন্টোর বিশিষ্ট সমাজকর্মী মোস্তফা কামাল বলেন, বাবা মা হিসেবে আমাদের চিন্তার জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। তারা যেভাবে চায় সে মোতাবেক সহায়তা করতে হবে। তাহলেই দূরত্ব কমবে। টরেন্টো ভিত্তিক অলাভজন দাতব্য সংস্থা বেঙ্গলী ইনফরমশেন এন্ড এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসের (বিআইইএস) নির্বাহী পরিচালক ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘ফারাক’ বইটিতে যে বিষয়গুলো তুলে আনা হয়েছে তার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা যত টাকা পয়সার মালিকই হয়না কেন, বাচ্চারা যদি ঠিকমত বেড়ে না ওঠে তাহলে সব সম্পদ অর্জন বৃথা হয়ে যাবে। নিজের সন্তানদেরকে লালনপালন করতে গিয়ে তিনি কী কী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন, এবং তা তিনি কীভাবে মোকাবেলা করেছেন- তার বিবরণ তুলে ধরেন। সমাজকর্মী বদিউজ্জামান মুকুল বলেন, ‘এলিফ্যান্ট ইন দ্য রুম’ এখন আমাদের ঘরের মধ্যে হাতি। এটাকে আর গুরুত্বহীনভাবার অবকাশ নেই। সন্তানরা বাবা-মাকে হত্যা করছে। কেন? একটু ভাবুন। যেভাবে সন্তান লালন-পালন করছেন ঠিক আছে তো ? আপনি বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যায় থাকলে ‘ফারাক’ বইটি আপনাকে সহায়তা করতে পারে। কারণ বইটির গল্পগুলো খুবই বাস্তব এবং আমার প্রফেশনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। টরেন্টোর নারী উদ্যোক্তা সাবিনা শারমিন বলেন, ‘ফারাক’ হতে পারে কারো কারো জন্য জীবন রক্ষার হাতিয়ার। আপনি আপনার ঘরের মধ্যে কোন দানবকে বড় করে তুলছেন নাতো? ঢাকার ঔশি মেয়েটি কেন তার বাবামাকে হত্যা করল? মুল কারণ প্যারেন্টিং। তার বাবা-মা তাকে কীভাবে মানুষ করেছেন। তাকে কতটুকু সময় দিয়েছেন? তা নিয়ে কী আমরা ভেবেছি? ফারাক কেন সৃষ্টি হল? অনেক প্রশ্ন।  নিজেকে প্রশ্ন করুন। টরেন্টো ডিসট্রিক্ট স্কুল বোর্ডের  শিক্ষক ডঃ ফখরুদ্দীন, লেবানিজ-আমেরিকান কবি ও দার্শনিক কাহলিল জিবরানের একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, তোমাদের সন্তানেরা তোমাদের নয়। তারা সময়ের সন্তান। তারা তোমাদের মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছে।  তোমরা তোমাদের সন্তানদের নিজের সম্পত্তি মনে করিও না। অর্থাৎ সন্তান হলেই যে সব কিছু তাদের ওপর চাপিয়ে দিতে হবে তাদের মতামতের কোন দাম দেয়া যাবেনা-এটা ঠিক নয়। তারা ছোট হতে পারে কিন্তু তারাও সব বোঝে বলে তিনি মন্তব্য করেন। অন্টারিওর নিবন্ধিত সমাজকল্যাণ কর্মী ও উপন্যাসিক জাকারিয়া মুইনুদ্দিন বলেন, আমাদের বাঁচতে হলে জানতে হবে, অনুশীলন করতে হবে। মেন্টাল হেলথ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্যারেন্টিং আমাদের শিখতে হবে। ফারাক প্যারেন্টিং শিখতে সহায়তা করবে নিশ্চয়ই। বইটির সহ-লেখক নেসার আহমেদ উপস্থিত অতিথিদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘ফারাক’ বইটি সময়োপযোগী বই। বইটি গল্প সমৃদ্ধ হলেও সবগুলো গল্পই সত্য ঘটনার ওপর ভিত্তি করে লেখা। সময়ের সাথে সাথে আমাদের নিজেদের প্যারেন্টিং স্টাইলে পরিবর্তন আনতেই হবে। বইটি আমাদের সেই পরিবর্তন আনতে সহায়কের ভূমিকা পালন করবে।  মোস্তফা আকন্দ বইটির ওপর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমরা সবাই আমাদের বাচ্চাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চাই। কিন্তু নতুন দেশ নতুন সময়ের চাহিদারে সাথে তাল মিলিয়ে আমরা নিজেরা নিজেদের পরিবর্তন করতে ইস্ততঃবোধ করি। ফলে আমাদের সাথে আমাদের সন্তানদের ফারাক তৈরি হয়। নতুন দেশের রীতিনীতি ও সংস্কৃতির সাথে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। বিদেশী সংস্কৃতি ও আমাদের সংস্কৃতির চাপে আমাদের বাচ্চারা স্যান্ডউইচ বেবি হিসেবে বেড়ে উঠবে অথবা হারিয়ে যাবে। আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কী করবো।কারণ বাচ্চাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। বইটি বাবা-মায়েদের পয়েন্টিং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হবে সন্দেহ নেই। আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো মতামত ব্যক্ত করেন,  বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টর এডভোকেট ও কানাডা প্রবাসী আক্তার মোসাম্মাৎ, ক্যানবাংলা টেলিভিশনের কর্নধর ড, মো. হুমায়ন কবির চৌধুরী, পিল ডিসট্রিক্ট স্কুল বোর্ডের সিনিয়র শিক্ষক এমডি হাসান তারিক, বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা সেলিমা আহমেদ, আবাসন ব্যবসায়ী নাসিমা পারভীন ও মেফিল্ড হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মেহরীন মুস্তারীসহ অনেক।
বইমেলায় যারা পেলেন গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার
বইমেলায় ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি
শেষ সময়ে প্রাণবন্ত বইমেলা
বইমেলায় সাড়া জাগিয়েছে ‘নদী পেরোলেই সাততারা’
এপিএল এর ২টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
একাডেমিয়া পাবলিশিং হাউজ লিমিটেড (এপিএল) প্রকাশিত দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় বৃহস্পতিবার, বিকালে গ্ৰন্থ উন্মোচন মঞ্চে এ মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রকাশিত নতুন বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল লতিফ মাসুম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অনারারী প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সাত্তার।  ড. সৈয়দ শহীদ আহমেদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার সাবেক ট্রেজারার প্রফেসর ড. আনোয়ারুল করীম, এনইউবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, শের-ই-বাংলা: জীবন ও কর্ম গ্রন্থের লেখক প্রফেসর মো. মোসলেম উদ্দীন শিকদার এবং শিল্পকলা সাহিত্য ও ইসলাম গ্রন্থের লেখক প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পরিচালক মো. সোলায়মান মিয়া, গবেষক ও সাংবাদিক আনিসুর রহমান এরশাদ, এপিএল’র ম্যানেজার মো. আখতারুজ্জামান এবং প্রচ্ছদশিল্পী এম এম হোসেন। প্রফেসর ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, এ কে ফজলুল হক ছিলেন যথার্থ অর্থে বাংলার কিংবদন্তি জননায়ক। তিনি ছাত্র-শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদদের নায়ক। বাংলার গণমানুষের অবিসংবাদিত বর্ষীয়ান জাতীয় নেতা। সমকালীন বিশ্বনেতাদের মধ্যে কামাল পাশা (আতাতুর্ক), লেলিন, মাওসেতুং কিংবা জিন্নাহ-গান্ধীর ন্যায় তিনি জাতির পিতা বলে আখ্যায়িত না হলেও এবং তাঁর পক্ষে কোনো প্রচার, প্রকাশনা, বিলবোর্ড তেমন কিছু না থাকা সত্ত্বেও মৃত্যুর অর্ধশতাব্দী পরেও তিনি স্মরণীয় বরণীয় নেতা, জনগণের মুকুটহীন সম্রাট। প্রফেসর মো. মোসলেম উদ্দীন শিকদার বলেন, ‘শের-ই-বাংলা: জীবন ও কর্ম’ গ্রন্থটি, ‘বাংলার বাঘ’ খ্যাত আবুল কাশেম ফজলুল হক-এর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনালেখ্য। তাঁর সময়কালে (১৮৭৩-১৯৬২) দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা এবং পার্লামেন্টে (১৯১৩-১৬) ও বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণসমূহের মসিচিত্র সংক্ষেপে বিবৃত হয়েছে। প্রায় শতবর্ষ আগে ভারতীয় হিন্দি ও উর্দুভাষী অবাঙালিদের প্রদত্ত খেতাব ‘শের-ই-বাংলা’ উপনামটি মূল নামের সাথে বহুল পরিচিত। প্রায় শতাব্দী ব্যাপী কর্মময় জীবনে তিনি যতসব উচ্চপদে সমাসীন ছিলেন, তার মধ্যে অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী (১৯২৪), প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-৪৩), কলকাতা করপোরেশনের প্রথম মুসলিম মেয়র (১৯৩৫), অন্যতম জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানী, সোহরাওয়ার্দীসহ গঠিত যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪), নিখিল পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (১৯৫৫) এবং পূর্ব পাকিস্তানের ১০ম ও প্রথম বাঙালি গভর্নর (১৯৫৬-৫৮)। উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে সৃজনশীল একাডেমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস সংশ্লিষ্ট বই প্রকাশ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। বইমেলায় এপিএল এর স্টল নং ১৭৬। অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ উপলক্ষে এই দুটিসহ মোট ১১টি নতুন বই প্রকাশ করেছে এপিএল।
পল্লীগীতিই ধ্যানজ্ঞান শিল্পী শাহীনের
ভাওয়াইয়া গানকে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চান সংগীত শিল্পী মো. শাহীন হোসেন। এই ধরনের গান গাইতে পছন্দ করেন ‘দুই চাকার গাড়ি’ খ্যাত এই শিল্পী। পল্লীগীতিকেই ধ্যানজ্ঞান করেছেন শিল্পী শাহীন। যশোর জেলার খাজুরা বাজারের মো. তবিবুর রহমানের ছেলে মো. শাহীন হোসেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে আধুনিক গানের এবং বাংলাদেশ বেতার আগারগাঁও, ঢাকা কেন্দ্রে লালন সংগীত ও পল্লীগীতিতে তালিকাভুক্ত সংগীত শিল্পী। ২০১১ সাল থেকে এই দুই মাধ্যমে নিয়মিত সংগীত পরিবেশ করে আসছেন তিনি। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির তালিকাভুক্ত এই শিল্পী ঢাকার সরকারি সংগীত কলেজ থেকে লোক সংগীতে বি মিউজ, এম মিউজ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি এস এম মিডিয়া ভিশনের নিয়মিত সংগীত শিল্পী। এই প্রতিষ্ঠানে ৫টি মৌলিক ভাওয়াইয়া গান রেকর্ড করেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশর অন্যতম নাট্যদল লোক নাট্যদলে ২০১৩ সাল থেকে নিয়মিত নাটক ও সংগীত শিল্পী হিসেবে যুক্ত আছেন। মাটির গান সংগীত দলের পরিচালক শাহীন হোসেন। শিল্পী ২০১৭ সালে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় লোক সংগীতে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হন। শিল্পী সংগীত শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশে নাটক সংগীত ও অঙ্কন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন শাহীন। এখন পর্যন্ত সংগীত শিল্পী শাহীন হোসেনের ৭টি মৌলিক গান রেকর্ড হয়েছে। সেগুলো হলো- দুই চাকার গাড়ি, ও নদীয়ার চাঁদ, তোমার চোখে হাজার ফাগুন, একটি সপ্ন দেখবো বলে, রাগ করিস না, নাজানি ভাব নদীর কেমন ধারা, মধুমতী কর্ণফুলী। বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করে আসছেন এই শিল্পী। এ ছাড়া দেশে-বিদেশে অসংখ্য মঞ্চে সুর-ছন্দে দর্শকদের মোহিত করেছেন তিনি। ঢাকাস্থ সুইট কনভেনশন হলে ভাওয়াইয়া সংরক্ষণ ও গবেষণা পরিষদ কতৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগীতে অবদানের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয় শাহীন হোসেনকে।
স্বরচিত দুই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘ ও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের ওপর নিজের রচিত দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে বই দুটির মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ এবং ‘আবাহন’ শিরোনামে বই দুটি প্রকাশিত হয়েছে। বই দুটির গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম।  এর মধ্যে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ বইয়ে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ১৯টি ভাষণ এবং সেগুলোর ইংরেজি অনুবাদ স্থান পেয়েছে। আর অপর গ্রন্থ ‘আবাহন’-এ স্থান পেয়েছে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতির উদ্দেশে দেওয়া তার গুরুত্বপূর্ণ ভাষণগুলো।   এদিন মন্ত্রিসভা বৈঠকের শুরুতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ট্যুরিস্ট গাইড ‘জাতির পিতার সমাধিসৌধ’-এর মোড়ক উন্মোচনও করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।  একইদিন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার রচিত ‘রাজনীতির পরম্পরা’ বইয়েরও মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার এবং বাংলাদেশের রাজনীতির পালাবদল সম্পর্কে অসাধারণ পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে।  এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মুক্তাগাছার মণ্ডা, জামালপুরের নকশিকাঁথা এবং জিআই সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা।   
বইমেলায় মারুফ হোসেন সজীবের ‘অলিতে গলিতে’
অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তরুণ চিত্রনাট্যকার ও নির্মাতা মারুফ হোসেন সজীবের গল্পের বই ‘অলিতে গলিতে’। এটি তার প্রথম বই। প্রচ্ছদ করেছেন জুলিয়ান। বইটি প্রকাশ করছে দুয়ার প্রকাশনী। এর মুদ্রিত মূল্য রাখা হয়েছে ২৭০ টাকা। বইটি রকমারি ডটকমসহ বইমেলায় প্রকাশনীর ৩৫৭ নাম্বার স্টলে পাওয়া যাবে। বইটি সম্পর্কে লেখক মারুফ হোসেন সজীব বলেন, বইটি ১১টি ছোটগল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে। শহরের অলিগলির ছোট ছোট গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে। গল্পে আছে প্রেম, সংসার, সমাজের বিভিন্ন ধরনের অবক্ষয়ের ছোটাছুটি। ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা প্রতিটি গল্পই আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে। প্রসঙ্গত, ‘বিলোপ’ নাটকের চিত্রনাট্যের জন্য পেয়েছেন মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার-২০২১ ও দুই ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ট নাট্যকার ও শ্রেষ্ট নাট্যপরিচালক হিসেবে ‘চ্যানেল আই ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১।  
আরও দুইদিন বাড়লো বইমেলার সময়সীমা
আরও দুই দিন বাড়ানো হয়েছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর সময়সীমা। ফলে ২৯ ফেব্রুয়ারির পর আগামী ১ ও ২ মার্চ শুক্রবার এবং শনিবারও অনুষ্ঠিত হবে মেলা। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদের বরাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনি। তিনি জানিয়েছেন,  বইমেলার সময়সীমা দুদিন বাড়ানোর আবেদনে সাড়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত বইমেলা চলবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নুরুল হুদাও রাত ৯টায় বইমেলার ঘোষণা কেন্দ্র থেকে মেয়াদ বাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সদয় সম্মতিক্রমে বইমেলা দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলার সময় আরও দুই দিন বাড়ানোর জন্য বাংলা একাডেমিকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক বিক্রেতা সমিতি। চিঠিতে বলা হয়, ‘অমর একুশে বইমেলা শুরু হওয়ার প্রথম তিন দিন মেলাপ্রাঙ্গনের প্রস্তুতি ও বৃষ্টিজনিত সমস্যার কারণে মেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশকরা যথাযথভাবে বিক্রি শুরু করতে পারেনি। সে কারণে অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। তাই ১ ও ২ মার্চ শুক্রবার ও শনিবার হওয়ায় দুই দিন অমর একুশে বইমেলার সময় বৃদ্ধির অনুরোধ করছি।’ মূলত এই বছর অধিবর্ষ হওয়ার কারণে বইমেলা ২৯ দিন হওয়ার কথা ছিল। এখন দুইদিন বাড়ানোর ফলে এবারের মেলা হচ্ছে ৩১ দিন।
এপিএল’র পাঁচটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
একাডেমিয়া পাবলিশিং হাউজ লিমিটেড (এপিএল) প্রকাশিত পাঁচটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলার গ্ৰন্থ উন্মোচন মঞ্চে এ মোড়ক উন্মোচন করা হয়। নতুন বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রফেসর ড. মাহবুব আহমেদ, প্রফেসর ড. আবু খুলদুন আল মাহমুদ, কবি মহিবুর রহমান, অধ্যাপক ড. মাসুদ আলম, ড. মমতা হেনা, এপিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এম. আবদুল আজিজ, রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, রওশন জান্নাত, ইমদাদুল হক, আব্দুল কাদের জিলানী প্রমুখ। ইমদাদুল হক অনূদিত এ চারটি বই হচ্ছে- অভিচিন্তন: একটি ইসলামী মনোআধ্যাত্মিক চর্চা, আত্মার খোরাক: একজন চিকিৎসকের আবেগীয় আচরণ থেরাপি, অনূদিত মানব মনস্তত্ত্বের কুরআনী ধারণা এবং প্যারেন্টিং (৩য় খন্ড): চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব গঠন কৌশল। ইমদাদুল হক জয়পুরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ সেখানেই। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। বর্তমানে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে সৃজনশীল একাডেমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস সংশ্লিষ্ট বই প্রকাশ করে আসছে।
এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা 
একুশে বইমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি পরিচালিত চারটি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ব্যবস্থাপনা উপকমিটির আহ্বায়ক ড. তপন কুমার বাগচীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে গুণীজনের নামে পুরস্কার দেওয়ার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর চিত্তরঞ্জন সাহা, মুনীর চৌধুরী, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪  পাচ্ছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কথাপ্রকাশ। গত বছর গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বই হিসেবে নির্বাচিত মনজুর আহমদ রচিত ‘একুশ শতকে বাংলাদেশ:শিক্ষার রূপান্তর’ এর জন্য প্রথমা প্রকাশন, মঈন আহমেদ রচিত ‘যাত্রাতিহাস: বাংলার যাত্রাশিল্পের আদিঅন্ত’ এর জন্য ঐতিহ্য এবং আলমগীর সাত্তার রচিত ‘কিলো ফ্লাইট’ এর জার্নিম্যান বুকসকে দেওয়া হচ্ছে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার। ২০২৩ সালে গুণমান বিচারে সর্বাধিক সংখ্যক শিশুতোষ বই প্রকাশের জন্য রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ময়ূরপঙ্খি। এবারের বইমেলায় কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ দেওয়া হবে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেঙ্গল বুকস, নিমফিয়া পাবলিকেশন ও অন্যপ্রকাশকে।