রোজার আগে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম (ভিডিও)
সংযমের মাস রমজানকে সামনে রেখে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আগামী মার্চে রোজা শুরু, এর মাস দুয়েক আগে থেকেই নানান অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। খেজুরের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। জাতভেদে প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা বেশি দামে। ছোলার দাম ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। গরুর মাংস আর পোলট্রি মুরগির দামও বাড়তি।
এ বিষয়ে রাজধানীর কাওরান বাজারের এক খেজুর বিক্রেতা বলেন, ভালো খেজুরের দাম কেজিতে ২০০ টাকা বেড়েছে, ছোট খেজুরের দাম কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। গতবছর শুল্ক কম ছিল, এবার বাড়তি শুল্কের কারণে খেজুরের দাম বেড়েছে। গতবার মেডজুল খেজুরের পাঁচ কেজিতে শুল্ক ছিল ২৬০ টাকা, এবার এক কেজিতে তা ২৬০ টাকা পড়ছে।
বেড়েছে ছোলাসহ প্রায় সব ধরনের ডালের দাম। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এ জন্য আমদানিকারক ও বড় ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।
দাম বাড়ার বিষয়ে এক ডাল বিক্রেতা বলেন, রমজানকে কেন্দ্র করে সবরকম ডালের বাজার চড়া। দুই সপ্তাহ আগে যে ছোলার ডাল বিক্রি করেছি ৮০ থেকে ৯০ টাকা এখন তা ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। সাদা ছোলাটি ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ছিল। এখন তা বিক্রি করতে হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। খেসারি, মসুরসহ সব ডালের দাম পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। কারণ, জানতে চাইলে পাইকাররা বলছেন ছোলা আমদানি হচ্ছে না। এতেও সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। রমজান উপলক্ষে তারা ছোলা মজুদ করছে বাজারে ছাড়ছে না।
গরুর মাংসের দাম ফের সাড়ে ৭০০ অতিক্রম করেছে। কোথাও তা ৭৮০ টাকায় ঠেকেছে। নানান অজুহাতে বাড়ছে পোলট্রি মুরগির দামও। রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রতি কেজির ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, আমদানি কম, ফিডের দাম বেশি, পরিবহনের ভাড়া বেশিসহ বিভিন্ন কারণে মুরগির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভরা মৌসুমে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আলুর দামও সহনীয় হয়নি। নতুন করে বাড়ছে সবজির দাম। এ বিষয়ে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, আমরা দিনমজুর। এক কেজি শিমের দাম ৬০ টাকা। আর এক কেজি মাছের দাম ৩৫০ টাকা। তাহলে আর পকেটে কী থাকে। সেই সঙ্গে চাউল আছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।
অন্য এক ক্রেতা বলেন, এটি একটি চক্র যা ভাঙা না গেলে রমজানে কিছু কেনাই যাবে না।
উচ্চমূল্যের বাজারে নির্দিষ্ট আয়ের ক্রেতাদের স্বস্তি দিতে নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি করেছে টিসিবি। সংস্থাটির মুখপাত্র মো. হুমায়ন কবির মনে করেন, প্রথম ধাপে এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল, ছোলা ও চাল দেওয়া হচ্ছে, যা বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে আমরা তেল, ডাল, ছোলা এবং চাল বিক্রি করব। ছোলা ৫০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা, তেল ১০০ টাকা লিটার এবং চাল যথারীতি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হবে। পরে এর সঙ্গে একটি পণ্য বাড়ানো হবে। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ এখান থেকে উপকৃত হবে। যদি এক কোটি পরিবার বাজার থেকে এসব পণ্য না কিনে টিসিবি থেকে কেনে তবে বাজারের ওপর এর একটি বিশেষ প্রভাব পড়বে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও এক কোটি পরিবারের মাঝে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নির্ধারিত দামে তেল, চাল, ডাল, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করা হবে। তবে দাম সহনীয় করতে অনিয়মের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে হবে।
মন্তব্য করুন