ভেজাল সেমাই তৈরিতে মেতেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা (ভিডিও)
ঈদকে সামনে রেখে ভেজাল সেমাই তৈরিতে মেতেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। কামরাঙ্গীরচরের পাড়ায় পাড়ায় এখন সেমাই তৈরির কারখানা। অধিক লাভের আশায় খণ্ডকালীন এই ব্যবসায় নেমে পরিচ্ছন্নতা আর মানকে যেন পাত্তাই দিচ্ছেন না তারা। বাস্তবতা জানলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সক্ষমতার ঘাটতির কথা।
কামরাঙ্গীরচরের পাড়ায় পাড়ায় এখন সেমাই তৈরির কারখানা! ঈদ উপলক্ষে খণ্ডকালীন ব্যবসায় নেমেছেন অনেকেই। মাস দুয়েকের কাজ হওয়ায় পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর নেই।
ছাপরা ঘরে খোলা হাতেই চলছে সেমাইয়ের মণ্ড বানিয়ে মেশিনে দেওয়ার কাজ। যা কখনো পড়ছে মাটিতে, আর মেশিন থেকে বের করেও শুকাতে দেওয়া হচ্ছে অপরিষ্কার স্যাঁতস্যাতেঁ ঘরে।
এক কারখানা কর্মী বলেন, মালিক কোথায় আমি কীভাবে বলব? মালিকেরা আসে তাদের সময়মতো। এটা সোহান সেমাই।
পাশের কারখানারও একই হাল। ঈদের বাড়তি চাহিদা মেটাতে পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভাবার সময় নেই। তাই সেমাইয়ের সঙ্গে ঘাম ধুলাবালি মিশে একাকার।
ঢাকার বাইরের অবস্থা আরও করুণ। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে নীলফামারীতে বানানো হচ্ছে লাচ্চাসহ নানা ধরনের সেমাই। যাদের নেই কোনো অনুমোদন। ভাজা হচ্ছে নিম্নমানের ডালডা আর পাম তেলে। এরপর চকচকে প্যাকেটে ঢুকে তা পৌঁছে যাচ্ছে ভোক্তার পাতে।
কারখানা কর্মী বলেন, এখানে পাম ওয়েল। পাম ওয়েল নিম্ন মানের হয়।
চিকিৎসকরা জানান, মানহীন, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি এসব অস্বাস্থ্যকর সেমাই জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
এনআইডিসিএইচের মেডিসিন ও চেস্ট বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. জিয়াউল করিম বলেন, একদম নোংরা পরিবেশে, ঘাম পড়ছে, এছাড়া পোড়া তেল ব্যবহার করছে। সেসব কারণে আমরা ঝুঁকির ভেতর পরে যাচ্ছি। এখন আমরা অনেক ক্যানসার রোগী পাচ্ছি। অথচ ১০ বছর আগে এত ক্যানসার রোগী পাওয়া যেত না।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দাবি, অনিয়মের তুলনায় নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নিতান্তই কম।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের মতো দেশে আমাদের প্রচুর কাজ করতে হবে এবং একটু সময় লাগবে। একই সঙ্গে জনগণকে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।
প্রতিবার ঈদ আসলেই সক্রিয় হয়ে ওঠে ভেজাল মানহীন সেমাই তৈরির এই চক্র। যাদের নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর আরও সক্রিয় ভূমিকা চান ভোক্তারা।
মন্তব্য করুন