বরগুনায় বেড়েই চলেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বরগুনায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। বিগত তিন বছরের তুলনায় এ বছর রেকর্ড সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে বরগুনা সদর হাসপাতালে। চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা পাচ্ছেন না ডাক্তারি সেবা ও ওষুধ। থাকতে হচ্ছে বারান্দার মেঝেতে নোংরা পরিবেশে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্যালাইন স্বল্পতার কথা স্বীকার করলেও সিভিল সার্জন বললেন ভিন্ন কথা।
অন্যদিকে হঠাৎ এই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের মূল কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আচমকা গরমের জন্য।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মাত্র ১০টি বেড। কিন্তু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত তিন দিনে ভর্তি হয়েছেন ৭৬ জন রোগী। এদের স্থান হয়েছে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায়। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাই বেশি। প্রতিদিন এ হাসপাতালে গড়ে ২৫ জন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাদের বেশির ভাগই বাজারের খোলা ও অস্বাস্থ্যকর পঁচা-বাসি খাবার খাওয়ায় এবং আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে হঠাৎ গরম পরায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসা সেবা নিতে এসে চিকিৎসা না পেয়ে অভিযোগ করছেন রোগীরা। অন্যদিকে হাসপাতালের নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পরছেন রোগীরা। পাচ্ছেন না স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্স জানান, এই ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র তিনজন নার্স। তাই এতো রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া এই তিনজনের পক্ষে সম্ভব না।
বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোঃ কামরুল আজাদ আরটিভি নিউজকে বলেন, গত দুই তিন বছরের তুলনায় এই সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত স্যালাইনও নেই। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। আবার হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট ও জায়গা স্বল্পতা রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ মারিয়া হাসান জানান, জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল পর্যায়ে ডায়রিয়া মোকাবেলা করার জন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া আছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন মজুদ আছে। হঠাৎ এই ডায়রিয়া বাড়ার মূল কারণ ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর খাবার, আবহাওয়া পরিবর্তন ও আচমকা গরম।
দুই এক দিনের মধ্যেই বরগুনা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়ার স্যালাইন শেষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর নতুন স্যালাইন বরাদ্দ না এলে ডায়রিয়া আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ডায়রিয়া এড়াতে নিরাপদ পানি ব্যবহার, বাজারের খোলা ও অস্বাস্থ্যকর এবং পঁচা-বাসি খাবার না খেতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
পি
মন্তব্য করুন