• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রাজধানীতে গ্যাস সংকট, সিলিন্ডারের দামও আকাশচুম্বী

  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২০:৪৮
রাজধানীতে গ্যাস সংকট, সিলিন্ডারের দামও আকাশচুম্মী

রাজধানীর বাসাবাড়িতে গ্যাসের তীব্র সংকট। চুলা জ্বলছে টিমটিম করে, অনেক এলাকায় চুলা জ্বলছে না বললেই চলে। গ্যাসের সংকট দূর করতে মাসের পর মাস গ্যাস সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের আশ্বস্ত করলেও সুফল আসছে না। অথচ গ্রাহকদের কাছ থেকে গ্যাসের বিল ঠিক নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পাইপ লাইনে গ্যাসের চাপ কমায় রান্না করা কঠিন হয়ে পড়েছে রাজধানীবাসীর। বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংকটের মুহূর্তে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দামও বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

শনিরআখড়া মাতুয়াইল এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন ফরিদ প্রধান। দুই মাস আগেও তিনি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ৯শ’ টাকায় কিনেছেন। আজ বুধবার সেই এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার কিনছেন ১ হাজার ১৫০ টাকায়। পাইপ লাইনে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দামও বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, পাইপ লাইনে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় একদিকে মানুষ বাসা-বাড়িতে রান্না করতে পারছেন না। অন্যদিকে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দামও বেড়েছে। গত কয়েক মাস আগে যে এলপিজি গ্যাসের বোতল সাড়ে ৮শ’ টাকায় বিক্রি করেছি এখন তা ১ হাজার ১৫০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। আগামীতে কয়েক মাসের মধ্যে ফের সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমবে বলে মনে করেন এই খুচরা বিক্রেতা।

জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর বনানী, বাড্ডা, ভাষানটেক, বিমানবন্দনর, ক্যান্টনমেন্টসহ বিভিন্ন এলাকায় দুই লাখ ৩০ হাজার প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হয়েছে। শীতকালে পাইপলাইনে কনডেনসেট জমা হয় এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস না থাকলে তখন সরবরাহ ব্যাহত হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন খিলগাঁও তালতলা এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গ্যাসের চুলায় গ্যাস নেই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গ্যাসের চুলা জ্বালানো যায় না। রাতে গ্যাস এলে দুই দিনের রান্না একবারে করে রাখতে হচ্ছে। অনেকের বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ থাকলেও গ্যাসের সংকট তৈরি হওয়ায় আলাদা সিলিন্ডার কিনেছেন। যারা সিলিন্ডার ক্রয় করেননি তারা কষ্ট করে রাতে গ্যাস এলে দিনের রান্না করে রাখেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড নবাবপুর রোডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর কিরণ বেসরকারি চাকরি করেন। তিনি শনিরআখড়া থেকে গত ডিসেম্বর মাসে নবাবপুর বাসা ভাড়া নিয়েছেন। জাহাঙ্গীরের ভাষ্য শনিরআখড়া, মাতুয়াইল ও রায়েরবাগ এলাকায় বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংকট থাকায় নবাবপুর বাসা নিয়েছেন। কিন্তু এখানেও গ্যাসের সমস্যা রয়েছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (টিজিটিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ গণমাধ্যমের কাছে বলেছিলেন, গত ২২ জানুয়ারির মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এরপরও গ্যাসের স্বল্পতা রয়েই গেছে। রয়ে গেছে ঢাকাবাসীর ভোগান্তি।

গ্যাস সরবরাহ সংকটের বিষয়ে ভোক্তা অধিকারের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান আরটিভি নিউজকে বলেন, শীত মৌসুমে গ্যাসের লাইনে গ্যাসের চাপ কমে। যেখানে এলাকায় গ্যাস সংকট তৈরি হয়েছে সেখানে প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা জরুরি। এতে একজন গ্রাহক যতটুকু গ্যাস ব্যবসার করবেন ততটুকু বিল পরিশোধ করবেন। এতে গ্রাহকদের গ্যাসের বিল পরিশোধের দ্বন্দ্ব বা সন্দেহের অবকাশ দূর হবে।

প্রিপেইড গ্যাসের মিটার ও কার্ডের সমস্যা সমাধানে নিয়োজিত রয়েছে সফট্ওয়ার ইঞ্জিনিয়ার কাজল। তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, প্রিপেইড গ্যাস মিটারে একজন গ্রাহক যতটুকু গ্যাস ব্যবহার করবেন ততটুকুর বিল পরিশোধ করতে হবে। সেখানে ছোট পরিবার হলে প্রিপেইড মিটারে ৫শ’ টাকার গ্যাসে এক মাস চলে যায়। আবার বড় পরিবার ও রান্না বেশি হলে সর্বোচ্চ আটশ টাকার মধ্যেই ১ মাস অতিবাহিত করতে পারেন। প্রিপেইড মিটার ব্যবহারের ফলে প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় রোধে গ্রাহক সচেতনতা ও আবাসিক পর্যায়ে গ্যাস সাশ্রয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে একদিকে যেমন গ্যাসের অপচয় রোধ হয়, অন্যদিকে গ্রাহকদের অর্থ সাশ্রয় হয়।

এফএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৩৯
রাজধানীতে পুলিশ ক্যাম্পে আগুন
রাজধানীতে ছাদ থেকে লাফিয়ে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা  
ভারতের পাটনায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৬
X
Fresh