• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকায় ধর্ষকরা একসময় পার পেয়ে যায় (ভিডিও)

মাইদুর রহমান রুবেল

  ০৯ অক্টোবর ২০২০, ১১:৪৫
Rape,
ধর্ষণ।

কোনো মতেই থামানো যাচ্ছে না দেশে ধর্ষণের ঘটনা। শুধুমাত্র চলতি বছরে গত ৯ মাসে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৭৫ জন নারী। আর ধর্ষণে জড়িতদের প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের কোনো না কোনো পদে অসীন।

বিচারের দাবিতে পথে নামাকে বিচারের প্রতি অনাস্থা বলে মনে করেন আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। রাজনীতির প্রভাবমুক্ত হয়ে দ্রুত এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না করতে পারলে ধর্ষণ থামানো সম্ভব হবে না বলে মত দেন সুজন সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

চলতি বছরে প্রতিদিন গড়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৪ জন নারী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বাইরেও প্রতিদিনই ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। কেউ ভয়ে আর কেউ আইনের মারপ্যাঁচের শঙ্কায় চেপে যায় ধর্ষণের মতো মারাত্মক এই ঘটনা।

প্রতিটি ধর্ষণের পরই দেখা যায় ধর্ষক ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে জড়িত। ক্ষমতার দাপটে অপরাধীর বিরুদ্ধে কথা বলায় সাহস দেখায় না অনেকে। সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগ আর নোয়াখালীর ধর্ষণের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক ও কৃষকলীগ নেতাদের সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ধর্ষণের দায় এড়াতে পারে না সরকার। তিনি আরও বলেন অবশ্যই সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, নোয়াখালী ও সিলেটের ঘটনা বর্বরতার চূড়ান্ত উদাহরণ। আরও বলেন এরকম জঘন্য অপরাধ যারা করেছেন, তারা অবশ্যই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন।

যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর গণমাধ্যমে ঘটনা তোলপাড় না হওয়া পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তারের নজির কম। স্বামী সন্তানকে বেঁধে তাদের সামনে নোয়াখালীর সুবর্ণচর আলোচিত ধর্ষক উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, জামিন পেয়েছেন গ্রেপ্তারের ১ বছরের মাথায়। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়ায় উৎসাহিত করছে অপরাধ প্রবণতাকে। রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকলে এরা অন্যায় করে পার পেয়ে যায় এবং পার পেয়ে গেলে তারা আরও উৎসাহিত হয়। শুধু তাই নয় বিচারহীনতার সংস্কৃতি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আদালতে গেলে পক্ষপাতদুষ্ট রায় হয় এবং দ্রুত শাস্তি হয় না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি অবসান ঘটাতে হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নীনা গোস্বামী বলেন, ধর্ষণের শাস্তি পায় শতকরা মাত্র তিন ভাগ আসামি, আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায় পুরো ৯৭ শতাংশ আসামি। তিনি আরও বলেন, তাড়াও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। অবাধে চলাফেরা করতে থাকে এবং তারা একের পর এক অপরাধ করে। এই কারণে এ ধরণের ভয়ংকর অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। আসামিরা দণ্ডিত হয় তারপরেও দেখা যায় রাজনীতির প্রভাবের কারণে আইনের সুবিধাগুলো ব্যবহার করছে অপরাধীরা।

রাজনৈতিক প্রভাব আর পুলিশের অসহযোগিতার কারণে বিচারের দীর্ঘসূতীতার সৃষ্টি বলে মনে করেন আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। অপরাজনীতি বন্ধ না হলে এর সুফল সাধারণ মানুষের ভোগ করা কঠিন হবে বলে মত তার। তিনি আরও বলেন, সাক্ষী আনার যে দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তারা এখানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে। বিচারের দীর্ঘ সূত্রতা হচ্ছে। রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব হলো নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিচারের জন্য সারাদেশের মানুষের রাস্তায় নামতে হচ্ছে।

ধর্ষণের ক্ষেত্রে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা এখন অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপই ধর্ষণ বন্ধ করতে।

জিএম/এম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মাদকের টাকার জন্য স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দিলেন স্বামী
অপরাজনীতি যেন চিরতরে দূর হয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ছবি নিয়ে রাজনীতি, কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
X
Fresh