• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে যুক্তরাজ্য : অ্যামনেস্টি 
যুক্তরাজ্য ইচ্ছাকৃতভাবে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে দাবি করেছে মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির বার্ষিক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এমনটি দাবি করা হয়েছে। খবর গার্ডিয়ানের। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনের নড়বড়ে অবস্থার মধ্যে জাতীয় ও বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সুরক্ষাকে দুর্বল করছে ব্রিটেন।  এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থী এবং অন্যান্য অভিবাসীদের লক্ষ্যবস্তু করছে দেশটির সরকার। দেশটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং বৈশ্বিক একটি বিপজ্জনক সময়ে মানবাধিকার সুরক্ষা লঙ্ঘন করেছে। এ ছাড়া গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে জাতিসংঘে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশেষভাবে যুক্তরাজ্যের নিন্দা করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। এ ব্যাপারে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের প্রধান নির্বাহী সাচা দেশমুখ বলেছেন, যুক্তরাজ্য তার ভয়ংকর অভ্যন্তরীণ নীতি এবং রাজনীতির মাধ্যমে সর্বজনীন মানবাধিকারের সম্পূর্ণ ধারণাকে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীল করে তুলছে।  
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪৪

মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে তা অস্বীকার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে তাতে অনেক বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও দাবি মন্ত্রণালয়ের।  যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে এই অভিমত তুলে ধরেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহলী সাবরীন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৩ সালের মানবাধিকার নিয়ে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন নোট করেছে বাংলাদেশ। আমরা যতই আকাঙ্ক্ষা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। কারণ, একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। আর যেসব ক্ষেত্রে আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে সেগুলোর দিকে দৃষ্টি রেখে বর্তমান সরকার এখনও কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, বয়স্ক ব্যক্তিদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক সমাবেশ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সরকারের এত অর্জন সত্ত্বেত্ত দুঃখের বিষয় যে মার্কিন প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন স্বীকার করা হয়নি। এ ছাড়া কিছু বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রতিবেদনে স্পষ্ট যে, এটি পৃথক রিপোর্ট করা বা অভিযুক্ত ঘটনার রেফারেন্স দিয়ে পরিপূর্ণ নয়। সেহলী সাবরীন আরও বলেন, এটাও স্পষ্ট, প্রতিবেদনে বেশির ভাগ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি বেনামি সংস্থা থেকে অনুমান নির্ভর তথ্য নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সে কারণে প্রতিবেদনে সহজাত এবং পক্ষপাতদুষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়েছে। মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন ওই প্রতিবেদনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গও টানা হয়েছে, যেখানে তাকে গৃহবন্দি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, খালেদা জিয়া গৃহবন্দি নন। এ ছাড়া প্রতিবেদনে কিছু ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকেও শক্তির অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এটিও সঠিক নয় বলে দাবি করা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেহেলী সাবরীন বলেন, বিএনপি এবং এর রাজনৈতিক মিত্রদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা প্রায়শই সাধারণ মানুষের জীবনকে ব্যহত করে এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করে। এতকিছুর পরও বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অত্যন্ত সংযম প্রদর্শন করছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করছে। তিনি বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক, মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকারসংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক সংলাপ থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেদনে এই বিষয়ে রাষ্ট্র বা সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিকে ছাড়িয়ে বারবার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অনুরূপ শ্রম অধিকারসংক্রান্ত বিষয়গুলো বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন এবং ক্রিয়াকলাপের বিষয়ে প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি কেস পতাকাঙ্কিত করা হয়েছে, যেগুলো একাধিক দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে প্রাসঙ্গিক মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সবশেষে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র আরও বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বাহিনী দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাংলাদেশ আশা করে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৩৬

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি নেই : যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) প্রতিবেদনটি সামনে আসে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নির্বিচারে বা বেআইনি হত্যা, জোরপূর্বক গুম, সরকার কর্তৃক নির্যাতন বা নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি, কারাগারের করুণ অবস্থা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক বন্দি, অন্য দেশে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে দমনপীড়ন, গোপনীয়তার সাথে স্বেচ্ছাচারী বা বেআইনি হস্তক্ষেপ, কারও অভিযুক্ত অপরাধের জন্য তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিকভাবে গ্রেপ্তার বা বিচার, সেন্সরশিপ এবং মতপ্রকাশ সীমিত করার জন্য ফৌজদারি মানহানি আইন কার্যকরকরণ বা হুমকির সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর গুরুতর নিষেধাজ্ঞা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সংগঠন করার স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য খবর রয়েছে। এ ছাড়া চলাচলের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ; অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের অক্ষমতা; রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ওপর গুরুতর এবং অযৌক্তিক বিধিনিষেধ, গুরুতর সরকারি দুর্নীতি, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওপর গুরুতর সরকারি বিধিনিষেধ বা হয়রানি; ব্যাপক লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, যৌন সহিংসতা, কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা, শিশু, বাল্য, এবং জোরপূর্বক বিবাহ; স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিকদের সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ এবং শিশুশ্রমের সবচেয়ে কদর্য রূপের অস্তিত্ব বাংলাদেশে রয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে গুম ও অপহরণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক দায়মুক্তির অসংখ্য খবর রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করতে এবং শাস্তি দেওয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পাশাপাশি সরকার বা সরকারি সংস্থা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিধিবহির্ভূত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলেও খবর রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে মোট কতজন নিহত হয়েছে, সরকার সেই সংখ্যা প্রকাশ করেনি, আবার ঘটনাগুলো তদন্তে স্বচ্ছ পদক্ষেপও নেয়নি। তবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিগত বছরের তুলনায় কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন এ প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত আটজনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালে মৃত্যু হওয়ার কথা বলেছে। অন্যদিকে আরেকটি মানবাধিকার সংগঠন একই সময়ে ১২ জনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার খবর দিয়েছে। রিপোর্টে ২৬ মার্চ র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৫

অধিকৃত কাশ্মীরে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ মানবাধিকার কাউন্সিলে
জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক সভায় পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে চলমান জাতিগত বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরেছেন এক রাজনৈতিক কর্মী। বৃহস্পতিবার কাউন্সিলের ৫৫তম অধিবেশনে তার ওই হস্তক্ষেপের সময় জাতীয় সমতা পার্টি জেকেজিবিএল এর চেয়ারম্যান সাজ্জাদ রাজা বলেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ‘অ্যাক্ট ৭৪’ ও গিলগিট বাল্টিস্তান ‘আদেশ ২০১৮’ দ্বারা শাসিত। উভয় আইনই ওই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের জাতিগত বৈষম্য পরিচালনায় কর্তৃপক্ষকে সাংবিধানিক সুরক্ষা দিচ্ছে। সাজ্জাদ রাজা বলেন, পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের আদিবাসীদের সক্ষমতা ও অর্জন থাকার পরও মুখ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, অডিটর জেনারেল ও অর্থ সচিবের মত পদে পদোন্নতি তারা পাচ্ছে না। এই পদগুলো কেবল পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের পাকিস্তানি জাতিসত্তার কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত। ব্যবস্থাপকের পদ ছাড়াও বেশিরভাগ চাকরির সুযোগ অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের দখলে জানিয়ে তিনি বলেন, এই অবস্থার কারণে আমাদের যুবকরা তাদের জমি ও সম্পদ বিক্রি করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ বা অন্য কোথাও অভিবাসী হচ্ছে। বাহিনীর এই সাংবিধানিক জাতিগত বৈষম্য স্পষ্টভাবে ‘ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন’ লঙ্ঘন করে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং গিলগিট বাল্টিস্তানে ‘ইউএনএইচসিআরসি রেজুলেশন ২১-৩৩’ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ন্যূনতম প্রতিক্রিয়া না জানানোয় সমালোচনা করেন তিনি। চলমান অবস্থা থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন এসময়।
১২ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৫৮

গাজায় আক্রমণের সময় মানবাধিকার কোথায় থাকে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গাজায় যখন শিশু-নারীদের ওপর হামলা চালানো হয়, তখন মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোথায় থাকে? তাদের মানবতাবোধ কোথায় থাকে? অনেকে শিশু অধিকার-মানবাধিকারের কথা বলে সোচ্চার থাকে, পাশাপাশি দেখি তাদের দ্বিমুখী আচরণ। গাজায় হামলার ঘটনায় জানি না বিশ্ব বিবেক কেন নাড়া দেয় না! এটাই আমার প্রশ্ন। আমরা সবসময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি।  রোববার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে একই দিন ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  আগামী দিনে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার মূল নেতৃত্ব দেবে আজকের শিশু-কিশোররা। এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমরা শিশুদের গড়ে তুলছি। প্রযুক্তির শিক্ষা শিশুকাল থেকে পাওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার। শিশুরা যাতে সুন্দর পরিবেশে মানুষ হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। শিশুদের ঝরে পড়ার হার কমিয়ে এনেছি। এসময় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় দিবস সম্পর্কে শিশুদের যথাযথ শিক্ষা দেয়ার আহ্বান জানান।
১৭ মার্চ ২০২৪, ১৭:২৭

‘প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যুতে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। কারণ এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। এটার তদন্ত সঠিকভাবে হওয়া উচিত। রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের চারটি গার্মেন্টস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসার গৃহকর্মী ছিল প্রীতি ওরাং (১৫)। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বহুতল ভবনের ৯ তলা থেকে পড়ে প্রীতির মৃত্যু হয়। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রীতি ওরাং বাসার একজন গৃহকর্মী। গৃহকর্মীদের জন্য বাংলাদেশের পলিসি আছে। এছাড়া আমরা মানুষ। আর মানুষ মানুষের জন্য। এই দিকটি দিয়ে একান্তই দেখা উচিত ছিল।’ এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ে মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অগ্রগতি জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।  চিঠিতে বলা হয়, প্রীতির মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবেদন পর্যালোচনায় জানা যায় রাজধানীতে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় গৃহপরিচারিকা চা শ্রমিকের কন্যা প্রীতি ওরাং নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।  গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের বাসার ৯ তলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় শিশু প্রীতি ওরাং। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার নিহত গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের বাবা লুকেশ ওরাং বাদী হয়ে অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে মর্মে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আশফাকুল-তানিয়াসহ ওই বাসা থেকে মোট ছয়জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।  মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান  বলেন, বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে গৃহকর্মী নির্যাতন একটি নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু গৃহকর্মীরা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল অবস্থানে থাকার কারণে নির্যাতনে জড়িতদের সাজা হয় না বললেই চলে। ফলে সমাজে গৃহকর্মী নির্যাতনের বিচারহীনতার এক সংস্কৃতি বহমান।’  তিনি বলেন, এ কারণে সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়াটাই একটি চ্যালেঞ্জ। যদিও বা কোনো বিষয় মামলা হয়, কিন্তু পরবর্তী সময়ে অর্থের দাপট, পেশিশক্তি এবং রাজনৈতিক দাপটের কাছে পরাস্ত হতে হয় দুর্বলদের। ফলে শুরুতে বা মাঝপথে আইনবহির্ভূত সমঝোতা লক্ষ করা যায়। উক্ত ঘটনাটি ঘটেছে একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের বাসায়। যেখানে সাংবাদিকদের সমাজের দর্পণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেখানে সাংবাদিক আশফাকুল হকের বাসায় গৃহকর্মী প্রীতির মৃত্যুর এ ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত নির্মম, মর্মান্তিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।  ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এ ধরনের পাশবিক ঘটনা আমাদের বিবেককে চপেটাঘাত করে। ঘটে যাওয়া এই ঘটনা নতুন কোনো ঘটনা নয়, এটি পুরনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি, যা ঘটেছিল গত বছরের ৬ আগস্ট একই সাংবাদিকের বাসায়।  তিনি জানান, প্রীতির মৃত্যুর ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে সেদিন কী ঘটেছিল তা অনুসন্ধান করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত বলে কমিশন মনে করে। এরই প্রেক্ষাপটে গৃহকর্মী প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে বলা হয়। এ আদেশের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৬

শিশুর মানবাধিকার কি ডেইলি স্টারে থেমে গেছে?
বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রশ্নে বিশেষ করে শিশুর মানবাধিকার নিয়ে সব থেকে সক্রিয় সংবাদপত্রের একটি, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার।  বাংলাদেশে শিশু অধিকার নিয়ে ইংরেজিতে গুগল সার্চ করলে প্রায় অধিকাংশ সংবাদই ডেইলি স্টারের পাবেন, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেই ডেইলি স্টারেরই একজন সিনিয়র সাংবাদিকের আট তলার বাসার থেকে গত ৬ মাসের মধ্যে দুজন শিশু গৃহকর্মী লাফ দিয়েছে। ছয় মাস আগেও সাত বছরের এক শিশু গৃহকর্মী বাসা থেকে লাফ দিয়েছিল। রক্তাক্ত জখম হলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ফেরদৌসি নামের সেই শিশুটি। সে ঘটনায় মামলাও হয়েছিল। ছয় মাস পেরোতে না পেরোতেই আবারও এক শিশু গৃহকর্মী একই বাসা থেকে লাফ দেয়। এবার আর ভাগ্য সহায় হয়নি।  আট তলা থেকে লাফ দিয়ে এক তলার গ্যারেজের ছাদের ওপর পড়ে ১৫ বছর বয়সী প্রীতি উড়ান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।বাংলাদেশে গৃহ কর্মে শিশুর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি, নিষিদ্ধ এবং শাস্তি যোগ্য অপরাধ, অথচ এখানে শুধু শিশুশ্রমই নয়, ঘটেছে শিশু মৃত্যুর ঘটনা।  বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশগুলোর একটি। ১৯৯০ সালের অগাস্ট মাসে এশিয়া অঞ্চলের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ওই সনদে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। বলার অপেক্ষা রাখে না শিশু অধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশ সব সময়ই সোচ্চার।  স্বাধীনতার অব্যাহত পরেই বঙ্গবন্ধু যে কয়টি আইন অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার মধ্যে বাংলাদেশ শিশু আইন ১৯৭৪ অন্যতম । শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় শিশুদের জন্যে আলাদা আদালত এবং কিশোর সংশোধনালয় তার হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত।  জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ স্বাক্ষরের পর সকল দেশকে তার শিশু আইন আন্তর্জাতিক শিশু সনদ অনুযায়ী হাল নাগাদ করার আইনগত বাধ্যবাধকতা কথা বলা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য ১৯৯০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত কোনো সরকারি এর বাস্তবিক কোনো উদ্যোগ নেয়নি।  যেই শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ তাদের জন্য আইন প্রণয়নে করা হয়েছে অবহেলা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের সরকার গঠন করার পরে শিশু আইন ১৯৭৪ বাতিল করে আন্তর্জাতিক শিশু সনদ অনুযায়ী শিশু আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেন, ফলাফল হিসেবে  ২০১৩ সালের সম্পূর্ণ নতুন এবং যুগোপযোগী বাংলাদেশ শিশু আইন প্রণীত হয়।  ভাবতে অবাক লাগে দেশে যেখানে এমন একটা অসাধারণ এবং সময়োপযোগী শিশু আইন রয়েছে সেখানে কীভাবে এখনো শিশুর সাথে এমন চরম বৈষম্য মূলক আচরণ, এমনকি ফৌজদারি অপরাধ করে হোতারা পার পেয়ে যাচ্ছে।  একবার ভাবুন যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুটি ডেইলি স্টারের সিনিয়র সাংবাদিকের বাসায় কাজে নিয়োজিত ছিল তার এমন মৃত্যু আমাদের কি বার্তা দেয়?  একজন শিক্ষিত সর্বোচ্চ সচেতন মানুষের বাসায় ৬ মাসের ব্যবধানে এমন দুটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারে দাবি আমাদের সবার করা উচিত নয় কি ? নাকি আমরা ঘটনার সাথে যুক্ত ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান দেখে থেমে যাচ্ছি। প্রতিবাদ করছি সময় ও পরিস্থিতি দেখে।  আলোচিত এই ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় যে মামলা হয়েছে, তাতে দণ্ডবিধির ৩০৪-ক ধারায় অবহেলাজনিত কাজের দ্বারা মৃত্যু ঘটানোর অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহারে লুকেশ ওড়ান বলেছেন, ‘আটককৃত ব্যক্তিরা (আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার) অবহেলাজনিতভাবে বাসার জানালায় নিরাপত্তা বেষ্টনী না দিয়ে অরক্ষিত অবস্থায় রাখার কারণে ওই জানালার ফাঁক দিয়ে আমার মেয়ে প্রীতি উড়ান পড়ে গিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।’  ছয় মাসের ব্যবধানে পরপর দুই শিশু গৃহকর্মীর সঙ্গে একই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক আশফাকুল হকের বাসার ভেতরে কী এমন ঘটনার অবতারণা হয় যে শিশু গৃহকর্মীরা আট তলা থেকে লাফ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে?  বাসায় কি তাদের শারীরিক, মানসিক কিংবা যৌন নির্যাতন করা হয়? নাকি শিশুদের ফেলে দেওয়া হচ্ছে? অথচ এই ঘটনায় আদালত দোষীদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে রিমান্ড না দিয়ে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে বলেছে।  শিশু অধিকারের আন্তর্জাতিক সনদের অনুচ্ছেদ ৩-এ বলা হয় বেস্ট ইন্টারেস্ট অফ দ্যা চাইল্ড প্রিন্সিপাল অর্থাৎ শিশুর জন্যে যা ভালো রাষ্ট্রকেই তাই করতে হবে। শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা, তার সুরক্ষা এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রকেই। আমাদের অসাধারণ একটি আইন আছে কিন্তু তার প্রয়োগের জায়গাটা কি আমরা নিশ্চিত করতে পারছি? আমরা কেন শিশুর সাথে একই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দিচ্ছি?  আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত আজকের শিশুই আগামীর বাংলাদেশের পতাকা ওড়াবে, তাকে সমর্থন করা, স্বাভাবিক বেড়ে উঠতে দেয়া আপনার-আমার নৈতিক দায়িত্ব। তেমনি তাদের সাথে ঘটে যাওয়া কোনো অপরাধের বিচার চাওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।  যার যার জায়গা থেকে প্রতিবাদ জানাতে হবে, রাষ্ট্রযন্ত্র কে বাধ্য করতে হবে যেন কোনো বড় নাম বা প্রতিষ্ঠান দেখে শিশুর সাথে অপরাধের যেন  আপোষ না হয়। শিশুর মানবাধিকার যেন কোনো নাম আটকে না যায়। লেখক :  সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৩৪

‘চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগী মৃত্যুহার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে’
কিছু চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ এবং অবহেলায় রোগীর মৃত্যু উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৭ জানুয়ারি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘প্রসূতির পেট ছিল কাটা, মা-সন্তান দুজনই মৃত’ শীর্ষক সংবাদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে আসে। ওই সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরগুনার বামনার ডৌয়াতলা কলেজ রোডে অবস্থিত সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মেঘলা আক্তার (১৯) নামে এক তরুণীকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, সেখানে মেঘলার ভুল চিকিৎসা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে জীবিত নবজাতক সন্তানকে ফের মায়ের পেটে ঢুকিয়ে দ্রুত বরিশালে নিতে বলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বরিশালে যাওয়ার পথে অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ভান্ডারিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মা ও নবজাতক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ বিষয়ের অবতারণা করে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক, অমানবিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সম্প্রতি ভুল চিকিৎসা এবং চিকিৎসায় অবহেলার কারণে রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। কতিপয় চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ এবং অবহেলার কারণে রোগীদের হয়রানি এবং কখনো কখনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।   তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের অভাবে যত্রতত্র অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে চিকিৎসক এবং নার্সরা ন্যূনতম যোগ্যতা ছাড়াই অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। অনতিবিলম্বে এসব অনুমোদনহীন হাসপাতাল চিহ্নিত করে বন্ধ করার পাশাপাশি দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।   উল্লেখ্য, প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ আমলে নিয়ে কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) এবং জেলা জজ মো. আশরাফুল আলমকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে বুধবার কমিশনের কাছে সংযুক্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কমিটির সুপারিশগুলো বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য বেঞ্চ সভায় আলোচনার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৪৫

৭ জানুয়ারির ভোট ঘিরে মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান অ্যামনেস্টির
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিনকে সামনে রেখে ১০ দফা মানবাধিকার সনদ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।  বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই ১০ দফায় প্রতিদ্বন্দ্বী সব রাজনৈতিক দলকে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি। এ সময় আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের পাশাপাশি সংবিধানে উল্লিখিত মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিষয়গুলো রক্ষায় বাধ্যবাধকতার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে অ্যামনেস্টি। অ্যামনেস্টির মানবাধিকার সনদে বলা হয়, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব রাজনৈতিক দলের মূল পরিকল্পনায় যেন মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের বিষয়টি থাকে, তা নিশ্চিত করতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে তারা। পাশাপাশি এই সনদে বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরে কিছু সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। এর মধ্যে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। এই দফায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদণ্ড অনুযায়ী সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন এবং আইনের ২১, ২৫ ও ২৮ ধারা বাতিল করার পাশাপাশি অভিযুক্ত সবাইকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি। একইসঙ্গে মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জেল-জরিমানার মতো বিধান রদ করার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।  অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, সাংবাদিকদের হয়রানি ও ভয় দেখাতে আইনের অপব্যবহার বন্ধ করুন। নাগরিকদের বিক্ষোভ মোকাবিলার ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শক্তির ব্যবহার থামাতে হবে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুরক্ষাসহ তা পালনে সহায়তার বাধ্যবাধকতা পূরণ করুন।  এছাড়া প্রতিবাদের সুরক্ষা এবং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে দায়মুক্তির অবসান চেয়ে সংস্থাটি বলেছে, সব ধরনের গ্রেপ্তার যাতে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদণ্ড অনুযায়ী করা হয়, তা নিশ্চিত করুন। এর মধ্যে রয়েছে গ্রেপ্তারের কারণ ও আটক রাখার স্থান জানানো, গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে অবিলম্বে বিচারকের সামনে হাজির করা ও আইনি পরামর্শ পাওয়া নিশ্চিত করা এবং মুক্ত ও ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করা। আরেকটি দফায় রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান চেয়ে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার রক্ষা করুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করুন। দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনুন। রোহিঙ্গা শিশুদের যথাসময়ে উপযুক্ত, মানসম্মত ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতনের ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনার দাবিও জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে অপরাধীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের সুপারিশও করেছে তারা।   করপোরেট দায়বদ্ধতা ও শ্রম অধিকার সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে আরেকটি দফায় সংগঠনটি বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়েন বাংলাদেশে শ্রমিকরা। গত অক্টোবরে ন্যূনতম মজুরির আন্দোলনে তিন শ্রমিকের মৃত্যুসহ নানা ঘটনা উল্লেখ করে সনদে কিছু সুপারিশও করেছে অ্যামনেস্টি। সনদের এই দফায় তারা আহ্বান করেছে, শ্রমিকদের বিক্ষোভে সহিংস দমনপীড়ন বন্ধ করুন। শ্রমিক নেতাসহ অন্য বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করুন। অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনুন। শ্রমিকরা যাতে সংগঠন করার স্বাধীনতার অধিকার চর্চা করতে পারেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যাতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী পর্যাপ্ত মজুরি পান, তা নিশ্চিত করুন। এছাড়া, নারী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের অধিকার রক্ষার ব্যাপারেও তাগিদ দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মানবাধিকার সনদটিতে। সেইসঙ্গে জলবায়ুসংকট মোকাবিলায় অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে সেখানে। 
০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৩১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়