ড. ইউনূসের সাজা স্থগিত প্রশ্নে হাইকোর্টে শুনানি
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার সাজা স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে এ শুনানি করা হয়। আদালত অবশ্য আজকের শুনানি মুলতবি করে ১০ মার্চ পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।
বুধবার (৬ মার্চ) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী এবাদতের বেঞ্চে এ শুনানি করা হয়।
শুনানিতে বিবাদী করা হয় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস এবং শীর্ষ কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহানকে। পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা জামিন রয়েছেন। শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় তাদেরকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।
হাইকোর্টের শুনানিতে কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন বিভাগের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আপিল আদালত সাজা স্থগিত করতে পারে না। শুধু জরিমানার আদেশ স্থগিত করতে পারে।
শুনানির সময় ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের অপর ৩ জনের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন ও খাজা তানভীর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তারা আগামী ১০ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার ৩ সহকর্মীকে। শ্রম আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেন ড. ইউনূস। আপিল করায় দেওয়া হয় এক মাসের জামিন।
জামিনের সময় শেষ হওয়ায় আবারও ট্রাইব্যুনালে হাজির হন ড. ইউনূসসহ অন্যান্যরা। তাদের পক্ষে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী জামিন চান আইনজীবী। তবে আপত্তি তোলা হয় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে। পরে উভয় পক্ষের যুক্তি তর্ক আমলে নিয়ে আদালত দিন-তারিখ উল্লেখ না করে জামিন মঞ্জুর করে।
এদিন ড. ইউনূস বলেন, আপনারা আজকের এই ছবিটা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের বটতলায় আমরা সবাই। এটা ঐতিহাসিক একটা ছবি। এটা আজকে-কালকে পত্রপত্রিকায় বের হবে। কিন্তু এটা যুগ যুগ ধরে নানা বইতে প্রকাশিত হবে। আপনারা সেই ইতিহাসের সাক্ষী।
তিনি বলেন, এটা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়, সারা দুনিয়ার মানুষ লক্ষ্য করছে এই বিচারে কি হলো। আমরা যা যা করছি তা সবই তারা দেখছে।
তিনি আরও বলেন, এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার পক্ষে লিখুন, বিপক্ষে লিখুন কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এটা রেকর্ডেড। জাতির ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে যাবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করব, নাকি অপরাধবোধ করব? এ রকম একটা সন্তানকে এমন অপরাধে অপরাধী কেন করলাম? এগুলোর জবাব থেকে মুক্তি নেই।
০৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:২৬