আফগানিস্তান নিয়ে ওআইসির সিদ্ধান্ত
আফগানিস্তান ইস্যুতে ৫৭ সদস্যের মুসলিম দেশগুলোর সংঘটন অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এক জরুরি বৈঠক ডেকেছিল। সে বৈঠকে সংগঠনটি আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তার অঙ্গীকার করেছে।
বৈঠকে সংগঠনটি নতুন করে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়া উচিত হবে না আফগানিস্তানের এবং ভবিষ্যৎ নেতাদের অবশ্যই তা নিশ্চিত করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে।
-
আরও পড়ুন... তালেবানের ১০ প্রতিশ্রুতি
আফগানিস্তান যেন আর কখনও সন্ত্রাসবাদের প্ল্যাটফর্ম অথবা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত না হয় সেই স্বার্থে ‘ভবিষ্যৎ আফগান নেতৃত্ব’ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে রিয়াদের ডাকা এক বিশেষ সভা শেষে সৌদি আরবভিত্তিক এই সংগঠনটি জানিয়েছে, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে আফগানিস্তানে পা রাখার অনুমতি দেয়া যাবে না।
আফগানিস্তানের জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করে ওআইসি আহ্বান করেছে যে, সব পক্ষকে সহিংসতা ত্যাগ করতে হবে। আর অতি দ্রুত সমগ্র আফগানিস্তানে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
-
আরও পড়ুন... আফগান অধিনায়কের বাড়িতে তালেবান নেতারা
সৌদিভিত্তিক সংগঠনটি বলেছে, আফগানিস্তানে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও জাতীয় ঐক্যের প্রতি জোর দিতে আগামী মাসে তারা কাবুলে দূত পাঠাবে।
সংগঠনটি আরও বলছে, আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু কেউ যেন আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ না করে।
ওআইসির আহ্বান এবং সিদ্ধান্তের বেশিরভাগ প্রতীকী হলেও গত সপ্তাহে কাবুল দখলে নেয়া তালেবানের প্রতি নিজেদের অবিশ্বাস প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। মুসলিম দেশগুলো আফগানিস্তানের নতুন বাস্তবতা নিয়ে উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছে ওআইসি।
বিবৃতিতে আফগানিস্তানের বিভিন্ন পক্ষকে তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে মুসলিম বিশ্বের এই সংগঠন।
গত মে মাস থেকে আফগানিস্তান দখলে অভিযান শুরু করে তালেবান। মাত্র তিন মাসের মধ্যে দেশের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৮টি নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়। গত ১৫ আগস্ট থেকে রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণও নেয় তালেবান।
গত তিন মাস ধরে আফগানিস্তানের প্রদেশগুলোতে যুদ্ধ-সংঘাত চলার ফলে বাড়ি-ঘর সহায় সম্বল হারিয়েছেন অসংখ্য আফগান। তাদের একটি ছোট অংশ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তীদেশ ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন; কিন্তু এখনও রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের বড় শহরগুলোতে লাখ লাখ আফগান শরণার্থী দিন-রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে।
প্রসঙ্গত, ৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান লৌহমুষ্ঠিতে আফগানিস্তান শাসন করেছে। ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ এ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর আল কায়েদার জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়ার কারণে সামরিক অভিযান চালিয়ে তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনী।
-
আরও পড়ুন... ইসরায়েলকে আরব লিগের হুঁশিয়ারি
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর ২০ বছর ধরে লড়াই করে আসা গোষ্ঠীটি ফের দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে এবার তারা কট্টরপন্থা এড়িয়ে কিছুটা মধ্যপন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে চাইছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স ও আরব নিউজ
টিএস
মন্তব্য করুন