• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সুযোগ থাকলে পড়া চালিয়ে যেতে চাই, জাতীয় দলে ডাক পাওয়া রিমন

  ১১ মার্চ ২০২১, ১৫:২২
Rimon Hossain, basundhara kings, bangladesh national football team, samsul huda football academy, rtv online
ফেডারেশন কাপের ট্রফি হাতে রিমন হোসেন

ফুটবলার তৈরির কারখানা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া শামসুল হুদা অ্যাকাডেমি থেকে এবার জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন রিমন হোসেন। নেপালের মাঠে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের জন্য ঘোষণা করা স্কোয়াডে রয়েছে বসুন্ধরা কিংসের এই ডিফেন্ডার।

যশোরে অবস্থিত এই অ্যাকাডেমির যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালে। রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ফুটবলের উন্নয়নে অবদান রাখতে অ্যাকাডেমিটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেসময় প্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন নিজেই।

শুরুতে নিজস্ব কোনও মাঠ ছিল না। পর্যায়ক্রমে মাঠ, আবাসন থেকে জিম পর্যন্ত সবকিছুরই ব্যবস্থা রয়েছে অ্যাকাডেমিতে। প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন দল ছাড়াও অনূর্ধ্ব ১৪, ১৫, ১৬, ১৯ ও ২৩ দলে খেলেছেন অনেকেই। প্রথমবারের মতো এবার ডাক এলো রিমনের।

অ্যাকাডেমি প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী মারুফ। ২০১৫ সালে তার হাত ধরেই শামসুল হুদা অ্যাকাডেমিতে আগমন রিমনের।

‘রিমনকে আমি নওগাঁ থেকে নিয়ে আসি। জেলা দলের তৎকালীন খেলোয়াড় ছিলেন আরিফ। তার মাধ্যমে জানতে পারি ক্লাস সিক্সে পড়া একটা ছেলের কথা। বয়সের তুলনায় শারীরিক গড়ন দেখে আমার ভাল লাগে। এরপর এক সপ্তাহের ক্যাম্পে সুযোগ করে দেই। প্রতিভাবান ছিল তাই আমরা ভর্তি নিয়ে নেই।’ বলছিলেন মারুফ।

ফুটবল সম্পৃক্ত নানা পোস্ট নিজ ফেসবুক দিয়ে আসছেন লিংকন ইব্রাহিম। শামসুল হুদা ফুটবল অ্যাকাডেমির সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় রিমনকে নিয়েও পোস্ট করেন এই ফুটবল প্রেমী। সেখান থেকে নজরে আসে বসুন্ধরা কিংসের। তার পরই ক্লাবটির সভাপতি ইমরুল হাসান রিমনকে নিজেদের করে নেয়।

বাংলাদেশ দলে প্রথমবার ডাক পেয়ে ১৬ বছর বয়সী রিমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আরটিভি নিউজের কাছে।

তিনি বলেন, ‘শামসুল হুদা অ্যাকাডেমি থেকেই আমার সব কিছু। ২০১৫ সালে যোগ দেয়ার পর পাইওনিয়ার, থার্ড ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন খেলে ২০২০ সালে বসুন্ধরা কিংসে যোগ দেই।’

দেশের হয়ে খেলার সুযোগ তৈরি হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শামসুল হুদা ফুটবল অ্যাকাডেমির প্রতি।

রিমন বলেন, ‘নাম মাত্র বেতনে ‍সুবিধাবঞ্চিত অনেক ফুটবলার অ্যাকাডেমিতে থাকছে, খেলছে। তাদের জন্যই এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। তাই অ্যাকাডেমি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমি চির ঋণী।’

অন্যদিকে বসুন্ধরা কিংসে স্প্যানিশ কোট অস্কার ব্রুজন ও দেশসেরা সব ফুটবলারদের সঙ্গে অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়।

‘কিংসের প্রেসিডেন্ট, কোচ, ট্রেইনার, খেলোয়াড়সহ কিংসের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ যোগ করেন তিনি।

২০১৯/২০ মৌসুমে বসুন্ধরার জার্সিতে ফেডারেশন কাপের দুটি ম্যাচে অংশ নেন। চ্যাম্পিয়ন হয় দল। প্রিমিয়ার লিগের পাঁচটি ম্যাচে খেলতে নামেন। যদিও করোনার দাপটে স্থগিত হয় লিগ।

নতুন মৌসুমে কিংসদের জার্সি গায়ে জড়িয়ে তুলে নেন ফেডারেশন কাপের দ্বিতীয় ট্রফি। চলমান প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষে আছে রিমনের দল। প্রথম ধাপে ১২ ম্যাচে ১১ জয় ও ১ ড্র তুলে ৩৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে বসুন্ধরা।

জনপ্রিয় দলটিতে যোগ দেয়ার আগে অ্যাকাডেমিতে থাকাকালীন ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়েছেন রিমন। পেশাদার ফুটবল শুরু করার পর পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।

তবে খেলার পাশাপাশি পড়ারও ইচ্ছা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রিমন বলেন, ‘অনুশীলন, খেলার জন্য পড়ার সুযোগ তেমন একটা পাচ্ছি না। তবে সুযোগ থাকলে চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকবে।’

তরুণ এই ফুটবলারের পড়ার বিষয়টি নিয়ে বসুন্ধরা কিংসের মিডিয়া ম্যানেজার আহমেদ শায়েক আরটিভি নিউজকে বলেন, ‘আমাদের ক্লাব সব সময় সমর্থন করে খেলোয়াড়রা যাতে পড়া চালিয়ে যায়। শিক্ষিত হয়। পড়া-লেখার সঙ্গে ফুটবলের সম্পৃক্ততা অনেক। আন্তর্জাতিক মানের ফুটবলাররা ভালো খেলার কারণ তারা মাঠের বাইরেও শিক্ষা অর্জন করে। বাংলাদেশে পেশাদার কোনও ফুটবলার খেলার পাশাপাশি যদি পড়া চালিয়ে যেতে চায় সেটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। আর এটাকে আমরা সমর্থনও করি। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি আনিসুর রহমান জিকো ও তারিক কাজী নিজ থেকে পড়া চালিয়ে যেতে চেয়েছেন। আমরাও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে তাদের পড়া চালিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রিমন যদি পড়তে চায় তার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হবে না।’

মাঠে রিমনের জার্সি নম্বর ৭১। দুর্দান্ত পারফরমেন্স ছাড়াও তার জার্সি নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা।

রিমনের ভাষায়, ‘ইমরুল স্যার নিজে পছন্দ করে আমাকে জার্সিটি দিয়েছিলেন। যদি সুযোগ থাকে এই জার্সি নম্বর নিয়ে মাঠে নামতে চাই। সংখ্যাটির সঙ্গে বাংলাদেশের নাম জড়িয়ে আছে।’

লিগের ম্যাচগুলো দেখতে ভেন্যু গুলোতে ঘুরে খেলোয়াড় নির্বাচন করেছেন জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে। মাঠে বিশেষ কিছু করেছেন তাই তো রিমনের প্রতি নজর পড়েছে তার।

নওগাঁর শৈলগাছীতে জন্ম নেয়া রিমনের বাবা মারা গেছেন। বড় বোনেরও মৃত্যু হয়েছে। বাড়িতে শুধু থাকেন তার মা। নওগাঁয় থাকা অবস্থায় প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের ডাক পাওয়ার সংবাদটি কানে আসে তার।

‘দলে সুযোগ হওয়ার খবর পেয়ে আমার বন্ধুরা বাড়িতে এসে অভিনন্দন জানিয়েছে। ফেসবুকে আমাকে অনেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। সবার কাছে ভালোবাসা পেয়েছি। সবাই দোয়া করবেন।’

১৩ মার্চ কোভিড টেস্টের পর ১৪ তারিখ থেকে শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প। আগামী ১৮ তারিখ ঢাকা ছাড়ার কথা লাল-সবুজদের। বাংলাদেশ, নেপাল ছাড়াও ২২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে খেলবে কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল।

ওয়াই

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সালাউদ্দিনের মন্তব্য নিয়ে যা বললেন কোচ ক্যাবরেরা
নারী ফুটবল লিগের সূচি বদলে দিলেন সালাউদ্দিন
বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার সামর্থ্য নেই বাফুফের, তাপদাহের মধ্যে মেয়েদের খেলা
বেতন ছাড়াই ছুটিতে গেলেন সাবিনারা, যা বলছে ফিফা
X
Fresh