১৩০ ক্ষুদে ফুটবলারের স্বপ্ন পূরণ করলেন আলফাজ
ঢাকার বিভিন্ন মাঠে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফুটবলে হাতেখড়ি আলফাজ আহমেদের। তৃণমূল থেকে উঠে এসে এক সময় হয়েছিলেন দেশসেরা স্ট্রাইকার। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় মাঠ মাতিয়েছেন ভারতের ঘরোয়া ফুটবলেও। এবার ফুটবলের উন্নয়নে এগিয়ে এসেছেন আলফাজ।
আবাহনী, আরামবাগ, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও টিম বিজেএমসির হয়ে খেললেও ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়টা পাড় করেছেন ঢাকা মোহামেডানের হয়েই। রয়েছে ভারতীয় লিগে মোহনবাগানের হয়ে মাঠে নামার অভিজ্ঞতা। ২০০০-২০০১ মৌসুমে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী দলটিতে নাম লেখান তিনি। বাংলাদেশের খেলোয়াড় হিসেবে সবশেষ আলফাজই খেলেছেন বিদেশি দলে। সম্প্রতি মিরপুরে শুরু করেছেন ঢাকা গোল্ডেন ফিউচার ফুটবল অ্যাকাডেমি। যেখানে কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে। কোচ বেলাল আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল থেকে প্রতিভা বের করে আনতে কাজ করছেন তিনি।।
আলফাজের এই অ্যাকাডেমিতে দুইশ’র বেশি শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগের স্বপ্ন ছিল জামাল ভূঁইয়াদের কাছ থেকে দেখার। আর সেই স্বপ্নই পূরণ হয়েছে শনিবার।
বাসে করে ঢাকা গোল্ডেন ফিউচার ফুটবল অ্যাকাডেমির ক্ষুদে ফুটবলারদের নিয়ে আসা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। যেখানে নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন লাল-সবুজরা। এদিন দেড় ঘণ্টা অনুশীলন করে জেমি ডে’র শিষ্যরা। অনুশীলন পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনও।
দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে গর্জন শোনা গেল। মাঠে যখন জাতীয় দল প্রবেশ করে, ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশ’ চিৎকার করে ক্ষুদে ফুটবলাররা প্রিয় খেলোয়াড়দের স্বাগত জানায়।
গ্যালারিতে থাকা শিশুদের সঙ্গে দেখা করেন কাজী সালাউদ্দিনও। কিংবদন্তিকে দেখে তারাও ছিল উচ্ছ্বসিত।
দীর্ঘ অনুশীলন যখন শেষ, জামাল-মামুনুলরা দৌড়ে গিয়ে অতিথিদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন কোচ জেমি ডে’ও। আয়োজন শেষে আলফাজ আহমেদ কথা বলেন আরটিভি নিউজের সঙ্গে।
২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের অন্যতম এই নায়ক বলেন, ‘বাচ্চাগুলোর অনেকদিনের ইচ্ছা স্টেডিয়াম দেখবে। জাতীয় দলেরও অনুশীলন চলছে। তার মধ্যে সালাউদ্দিন ভাইও এসেছিলেন। সময়টাকে কাজে লাগিয়ে তাদের নিয়ে আসলাম।’
শিশুদেরকে এত বড় সুযোগ করে দেয়ার জন্য বাফুফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আলফাজ।
সাবেক তারকা স্ট্রাইকার বলেন, ‘আমাদের অ্যাকাডেমিতে ১৮০ জন শিশু রয়েছে। আজকে ১৩০ জনকে নিয়ে এসেছি। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তারা সবাই অনেক খুশি। ঢাকা গোল্ডেন ফিউচার ফুটবল অ্যাকাডেমিকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই ফুটবল ফেডারেশনকে।’
নিজেদের লক্ষ্য জানিয়ে আলফাজ বলেন, ‘অ্যাকাডেমিতে ৮ থেকে ১৫ বছরের খেলোয়াড় রয়েছে। বেশিরভাগই সুবিধাবঞ্চিত। আপাতত পরিকল্পনা তাদের ফুটবলের প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া। আসন্ন মৌসুমে পাইওনিয়ার লিগেও দল গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা নিয়েও বাফুফের সঙ্গে আলোচনা চলছে আমাদের। পর্যায়ক্রমে এদের মধ্য থেকে বড় মাপের ফুটবলার তৈরি করতে চাই।’
এদিকে কোচ বেলাল আহমেদ বলেন, ‘ছোট শিশুরা আমাদের সন্তানের মতো। তাদের ইচ্ছাপূরণ করতে পেরে আমাদের সবার ভালো লাগছে। আজকে কাছ থেকে তারকাদের দেখলো ওরা। আশাকরি আগামীতে আমাদের অ্যাকাডেমির মাধ্যমে ফুটবলের অনেক তারকা বের হয়ে আসবে।’
ওয়াই/পি
মন্তব্য করুন