• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিভিন্ন সমস্যায় বন্ধ হয়ে গেছে চুয়াডাঙ্গার ৬ রেলস্টেশন (ভিডিও)

জহির রায়হান সোহাগ, চুয়াডাঙ্গা

  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:৪৬
বিভিন্ন সমস্যায় বন্ধ হয়ে গেছে চুয়াডাঙ্গার ৬ রেলস্টেশন

লোকবল সংকটসহ নানান সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে চুয়াডাঙ্গার ৬টি রেলওয়ে স্টেশন। রাতে এসব স্টেশনে বাড়ছে মাদকসেবীদের আনাগোনা সঙ্গে ঘটছে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ। গেটম্যান না থাকায় অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলোতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা, ঝরছে তাজা প্রাণ।

বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে। সে সময় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়া জেলার জগতী পর্যন্ত ৫৩.১১ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপিত হয়। ১৮৯৭ সালে সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয় দর্শনা-পোড়াদহ সেকশনটি।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৪০ কিলোমিটার রেলপথে ১০টি স্টেশন রয়েছে। খুলনা-ঢাকা, খুলনা-রাজশাহী, খুলনা-সৈয়দপুর এ তিনটি রুটে ১৪টি আন্তঃনগর, ৬টি লোকাল ও ২টি মৈত্রী ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার যাত্রী চুয়াডাঙ্গার স্টেশনগুলো থেকে যাতায়াত করে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে বন্ধ রয়েছে আলমডাঙ্গা, মুন্সিগঞ্জ, মোমিনপুর, জয়রামপুর, উথলী ও আনসারবাড়িয়া স্টেশন। ফলে দুর্ভোগে আছেন যাত্রীরা।

কোন ট্রেন কখন আসবে তা জানতে পারেন না যাত্রীরা। একই অবস্থা জেলার আনসারবাড়িয়া স্টেশনসহ আরও চারটি স্টেশনের। এতে ট্রেনে যাতায়াত ও টিকিট কাটা নিয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। স্টেশন বন্ধ থাকায় বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। প্রতিটি রেলস্টেশনে একজন স্টেশন মাস্টার ও সহকারী মাস্টার এবং চারজন করে পয়েন্টম্যান থাকার কথা। কিন্তু এসব স্টেশনে কেউ নেই। এ কারণে রাতে ট্রেনের চালককে সংকেত দেয়া, যাত্রীদের সহায়তা করা ও টিকিট সরবরাহের কাজ বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে টিকিট কেটে টিকিট কালোবাজারি করছে একটি চক্র। অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন স্টেশনে যাত্রী সেবার মান নিম্নমুখী হওয়ায় রেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই।

সঠিক তদারকি না থাকায় নষ্ট হচ্ছে স্টেশনের মূল্যবান সরঞ্জাম। হচ্ছে চুরিও। দখল হয়েছে রেলওয়ের সম্পত্তি। ১০০ এর অধিক লেভেল ক্রসিং থাকলেও মাত্র ২৮টিতে রয়েছে ২৫ জন গেটম্যান। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব রেল ক্রসিং পারাপার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেও কোন লাভ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

আলমডাঙ্গা স্টেশন রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান ফারুক জানান, আলমডাঙ্গা স্টেশনটি দেশের একমাত্র দোতলা স্টেশন। কয়েক বছর আগেও স্টেশনটি কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু কয়েক বছর থেকে স্টেশন মাস্টারসহ জনবল সংকট থাকায় প্রায় অচল হয়ে গেছে স্টেশনটি।

কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান মল্লিক লিমন বলেন, আলমডাঙ্গা স্টেশনটি এখন মৃত প্রায়। রাত হলেই ভূতুড়ে হয়ে যায় পুরো স্টেশন। এতে মাদকসেবীদের আনাগোনাসহ বাড়ে চুরি ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ।

জনবল সংকটের কারণে অধিকাংশ রেলস্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জনবল সংকটের কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলার ১০টি স্টেশনের মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ৬টির। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে।

লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে স্টেশনগুলো অচিরেই চালু হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, জনবল ঘাটতির কারণে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ১২৬টি স্টেশনের মধ্যে ৪৮টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এই ৪৮টির মধ্যে রয়েছে চুয়াডাঙ্গার ৬টি স্টেশন। আমাদের জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ জন স্টেশন মাস্টার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের খুব দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে পাঠানো হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপে আটকা প্রতিবন্ধী যুবক
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি 
নওগাঁয় নদী, খাল-বিল দখল ও দূষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে চাঁদপুরে বাজুসের মানববন্ধন
X
Fresh