• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘আমি শুধু আমার ছেলেকে ফিরে ফেতে চাই’

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৩ জুলাই ২০২১, ০৯:০০
আমি শুধু আমার ছেলে পারভেজকে ফিরে ফেতে চাই!
অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের আহজারিতে ভারী হয়ে উঠছে পরিবেশ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের আহজারিতে ভারী হয়ে উঠছে সেখানকার পরিবেশ। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানায় কর্মরত ৫২ জন শ্রমিক আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়। লাশগুলো এতটাই পুড়ে যায় যে, সেগুলো দেখে চেনা বা শনাক্ত করার উপায় ছিল না।

চাঁদপুরের বাসিন্দা লাকী বেগম অভাবের তাড়নায় মাত্র কয়েক মাস আগে রূপগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান পারভেজকে হাসেম ফুট অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় ৮ হাজার টাকার বেতনে চাকরি নেয়। বৃহস্পতিবার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ছেলেকে হারিয়ে এখন অসহায় লাকী বেগম। ঐদিন থেকে ছেলের খোঁজে কখনও কারখানায়, কখনও হাসপাতালে, এভাবে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ছেলে কি জীবিত না মৃত, তার কোনো খোঁজ নেই। লাশটাও পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়। অসহায় লাকী বেগম সন্তান হারিয়ে যেমন বাকরুদ্ধ তেমনি বাঁচার জন্য কে এখন তাকে ভরণপোষণ দেবে, এই আকুতি ও আর্তনাদে রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে।

স্বামী পরিত্যক্তা সাথী বেগম (৩৪) সংসার চালানোর জন্য ও সন্তানদেরকে লেখাপড়া করানোর জন্য হাসেম ফুড কারখানায় কাজ করতেন। কিন্তু এই নারী এখনও বেঁচে আছেন কিনা, জানতে পারছেন না তার সন্তান ও বোন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে কাজ করছিলেন সাথী বেগম। এখনও তার হদিস নেই। লাশ পাবেন কিনা তাও জানে না অসহায় পরিবারটি।

যার বিনিময়েই হোক না কেন আমি আমার ছেলেকে চাই, এমন আহজারি তাসলিমা বেগমের। দুই সন্তান রেখে তাসলিমা বেগমের স্বামী মারা যায়। তাসলিমা বেগম গার্মেন্টসে কাজ করে ও দিনমজুরি করে দুই সন্তানকে তিলে তিলে বড় করেছেন। সংসারের অভাব গোছানোর জন্য কিছুদিন আগে বড় সন্তানকে হাসেম ফুড কারখানায় চাকরিতে দেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সন্তানকে আজও খুঁজে পাচ্ছেন না।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা জানান, কারখানার দারোয়ান ও নিরাপত্তা ইনচার্জের অদক্ষতার কারণে এত লোক আগুনে পুড়ে মারা গেছে। অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া এক শ্রমিক জানায়, দ্বিতীয়তলায় আগুন লাগার পর শ্রমিকরা চতুর্থ তলায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। অনেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় দারোয়ান জোড় করে কারখানার সিঁড়ির কেচি গেইট বন্ধ করে দেয়। এতে অনেক শ্রমিক আটকা পড়ে। পরে এত নিহতের ঘটনা ঘটে।

গত শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় যাদের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ আগুন লাগে। সে আগুন শুক্রবার দুপুরের পর নিয়ন্ত্রণে আসে।

পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে সোহেল রানা
জায়েদ খানের মতো ‘ডিগবাজি’ দেওয়ার কথা ভাবছেন কণ্ঠশিল্পী পারভেজ!
আমার ছেলে গান না শিখে কোরআন শিখেছে : খালিদের স্ত্রী
আমার ছেলে হারাম খায় না : খালিদের স্ত্রী
X
Fresh