• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ড্রাগন ও সৌদির খেজুর আবাদে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন সাইফুলের

যশোর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৩৩
Saiful dreams of becoming self-sufficient in dragon and Saudi date cultivation,
সাইফুলের ড্রাগন ও সৌদির খেজুর বাগান

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের সফল চাষী সাইফুল ইসলাম ড্রাগন ও সৌদি খেজুরের আবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি ৮ মাস আগে বাণিজ্যিকভাবে ৮ বিঘা জমিতে ড্রাগন, ৫ বিঘা জমিতে সৌদি খেজুর, ৪ বিঘা জমিতে বেগুনসহ হরেক রকমের সবজি আবাদ করেন। এছাড়া তার ক্ষেতে ড্রাগনের সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে বেগুন, মরিচ, ওল ও চাল কুমড়ার আবাদ রয়েছে। তার এ আধুনিক প্রযুক্তির আবাদ উপজেলাব্যাপী সম্প্রসারণেও তিনি ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা সরেজমিনে তার ক্ষেত পরিদর্শন করে দিকনির্দেশনা দেন।

সাতবাড়িয়া গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম পরিকল্পনা নেন ড্রাগন ফল ও সৌদি খেজুরের আবাদ করার। ৬ মাস আগে তিনি বাণিজ্যিকভাবে ৮ বিঘা জমিতে ড্রাগন, ৫ বিঘা জমিতে সৌদি খেজুর, ৪ বিঘা জমিতে বেগুনসহ হরেক রকমের সবজি আবাদ করেন। এছাড়া মিশ্র ফসল হিসেবে তিনি ড্রাগন ও সৌদি খেজুর ক্ষেতে বেগুন, ঝাল, ওল ও কুমড়ার আবাদ করেন। ফসলের নিয়মিত পরিচর্যা করায় তিনি বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

সফল চাষী সাইফুল ইসলাম জানান, যশোরের পলাশীর রুদ্রপুর পার্কের পাশে ড্রাগন ফলের আবাদ দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন। পরবর্তীতে সেখান থেকে এ গাছের কান্ড সংগ্রহ করে ক্ষেতে লাগিয়ে নিয়মিত পরিচর্যা করতে থাকেন। তার ক্ষেতে ২৫০০টি সিমেন্টের তৈরি পিলার পোতার কাজ সম্পন্ন হওয়ায় দৃশ্যমান হয়েছে ড্রাগন ক্ষেত। তার এ পর্যন্ত পিলার প্রতি এক হাজার টাকা করে খরচ হয়ে গেছে। বর্তমান ড্রাগন ক্ষেতে রিং ও টায়ার স্থাপনের কাজ চলছে। ইউটিউবে ড্রাগন ফলের আবাদ দেখে তিনি সে মোতাবেক চাষাবাদ শুরু করেন। তার খেজুর ক্ষেতে বারী, খলিজি ও খালাদ জাতের খেজুর গাছ রয়েছে। যা কাঁচা খাওয়া যায়। ক্ষেতে সার হিসেবে কম্পোস্ট, ফসফেট, পটাশ, বোরন, জিংক ও ইউরিয়া ব্যবহার করেছেন। এতে তার প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে বেগুন গাছে ফল ওঠা শুরু হয়েছে। তার ক্ষেতের ফসলের পরিচর্যায় সার্বক্ষণিক ২০ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এ পর্যন্ত তার যে ব্যয় হয়েছে তা শুধু বেগুন বিক্রি করেই উঠে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

সাইফুল ইসলাম শুধু একজন ড্রাগন ফলের চাষী হতে চান না। তিনি ড্রাগন ফলের আবাদ উপজেলা ব্যাপী ছড়িয়ে দিতেও কাজ করছেন। তার ক্ষেতের উৎপাদিত ড্রাগন গাছের কান্ড উপজেলাব্যাপী কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার আশা রয়েছে তার। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক আসছে তার ক্ষেতের ড্রাগন গাছ দেখতে।

সরেজমিনে তার ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি পিলারে ৪টি করে ড্রাগন গাছ লাগানো হয়েছে। ড্রাগন ক্ষেতের ভেতর সারিবদ্ধভাবে এক পাশে বেগুন, অন্যপাশে ঝাল, চারপাশ দিয়ে ওল ও মেটে আলুর আবাদ করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে মিষ্টি কুমড়া ও চাল কুমড়ার গাছ আছে। পোকার আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষায় ক্ষেতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। ফসলের ক্ষতিকর পোকা দমনে সন্ধ্যার পর ক্ষেতে আলোর ফাঁদ পাতারও ব্যবস্থা আছে। তিনি ক্ষেতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন বলেই তার সবজির বাজারে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, তার ড্রাগন ক্ষেত ইতোপূর্বে কয়েকবার পরিদর্শন করা হয়েছে। এ দেশের আবহাওয়া সৌদি খেজুর ও ড্রাগন চাষে খুবই উপযোগী। ড্রাগন ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। খেতেও খুব সুস্বাদু। একবার লাগালে ৩০ থেকে ৩৫ বছর ফল খাওয়া ও বাজারজাত করা যায়। সব সময় নতুন জাতের ফসল আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। দিন দিন কৃষকরা এসব ফসল আবাদে ঝুঁকছে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী শাপলা আক্তার
X
Fresh