• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রাজধানীতে প্রতিদিন করোনায় হাজারের বেশি আক্রান্ত হলেও উল্টো চিত্র বস্তিতে (ভিডিও)

আরটিভি নিউজ

  ০৬ আগস্ট ২০২০, ২১:৪৫

কোভিড-১৯ এ প্রতিদিনই যখন দেশে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, তখন ঠিক তার উল্টো চিত্র রাজধানীর বস্তিগুলোতে। ঘনবসতি, একই রান্নাঘর ও টয়লেট ব্যবহার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে অসচেতনতার মধ্যেও রাজধানীর ছোটবড় ৩৩টি বস্তিতে আক্রান্তের সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে কম। বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় অবাক করা এমন তথ্যই উঠে এসছে।

রিকশা গ্যারেজ মালিক আবদুল্লাহ বলেন, যে অবস্থায় আমরা আছি এখনে আক্রান্ত হওয়াটা আল্লাহর হাতে, যতটা সতর্ক হয়ে চলতে পারছি চলতে হবে। মা-স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৫ সদস্য থাকেন ৮ ফুট বাই ৯ ফুটের চালাঘরে। তার মতো হাজারো পরিবারের বাস রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে। একটি করে টয়লেট আর রান্নাঘর বরাদ্দ কয়েকটি পরিবারের জন্য। মাস্ক কিংবা স্যানিটাইজর ব্যবহার নেই বললেই চলে। তারপরও করোনা তাদের কাবু করতে পারেনি।

রাজধানীর বস্তিতে বসবাসরত এক কিশোর জানান, আব্বু ব্যবসা করে আম্মু এই ব্যবসায় সহযোগিতা করে আমরা তিন ভাইবোন পড়াশোনা করি।

বস্তিতে বসবাসরত লোকজন জানান, এক ঘরে চারজন থাকি করোনার ভয়তো আছেই, ভয় থাকলেও কিছু করার নেই। আরেকজন জানান, জ্বর অনেকেরই হয় কিন্তু সবাই কয়েকদিন পরেই ভালো হয়ে যায়। দুই তিনদিন চারদিন জ্বর থাকে তারপর জ্বর আবার ভালো হয়ে যায়।

কড়াইল, সাততলা, চলন্তিকা, ভাষানটেক, বাউনিয়াবাঁধ, আবুলের বস্তি, লালাসরাইসহ রাজধানীর ছোটবড় ৩৩টি বস্তির চিত্র প্রায় একই। অথচ এখানে সামাজিক দুরত্ব মানার বালাই নেই।

রাজধানীতে বসবাসরত বস্তিবাসীরা জানান, স্বাস্থ্যবিধি হচ্ছে সুস্থ থাকা মাক্স পড়ে চলা আর হাত পা পরিষ্কার রাখা যতটা সম্ভব রাখি। একজন রিকশাচালক জানান আমরা সব সময় রিকশা চালাই কিন্তু আমাদের এখন পর্যন্ত জ্বর হয় নাই। তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত কোন কিছুই হয় নাই আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছি।

২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নাসির জানান, এখানে দুইটা বস্তি একটা কড়াইল বস্তি আরেকটা সাততলা বস্তি। এই পরিস্থিতে প্রায় তিন লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ লোক বসবাস করে এর জন্য আমরা স্পেশালি কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি। প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে মাইক দিয়ে ঘোষণা করেছে তোমরা এভাবে চল, এভাবে থাকবে এভাবে ঘুমাবা, এভাবে খাবে এভাবে চলাফেরা করলে আল্লাহ তোমাদেরকে বাঁচিয়ে দেবে। তোমরা করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে পারবে।

করোনা মহামারির শুরুতে ঘনবসতির বস্তিগুলো নিয়েই ছিল যত শঙ্কা। অথচ দেশে সংক্রমণের প্রায় ৫ মাস পরও কোনো বস্তিতে ব্যাপক সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি।

নগর উন্নয়ন কর্মসূচি ব্রাক এর পরিচালক মো. লিয়াকত আলী জানান, একেবারে করোনার প্রেজেন্ট সেখানে নাই। জিরো সেটা বলা যাবে না তবে সংখ্যা ন্যাশনাল যে চিত্র তার থেকে অনেক অনেক কম। যেহেতু এখানে কর্মক্ষম অ্যাক্টিভ মানুষ সারাক্ষণ চলাচল কাজের মধ্যে থাকে সে কারণে হতে পারে। তাদের করোনার আক্রমণটা তুলনামূলক ভাবে ন্যাশনাল এর চাইতে কম হতে পারে। এমন আশ্চর্য ঘটনার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে তা জানতে গবেষণা চলছে বলে জানান, আইইডিসিআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর।

তিনি জানান, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বোম্বে এবং কলকাতাতে আমরা দেখেছি বস্তিতে অনেক অনেক সংক্রমণ হয়েছে।

জীবন জীবিকার সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকা বস্তির মানুষগুলোর অসীম মনোবল আর নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস তাদের করোনা থেকে দূরে রেখেছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

এনএম/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৩৯
রাজধানীতে পুলিশ ক্যাম্পে আগুন
রাজধানীতে ছাদ থেকে লাফিয়ে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা  
ঢাকার যেসব জায়গায় বসবে কোরবানির পশুর হাট
X
Fresh