• ঢাকা বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo
নাট্যকারদের মূল্যায়নই হচ্ছে না: রাজীব মণি দাস
রাজীব মণি দাস। টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কাজসহ নানা বিষয় নিয়ে তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন আরটিভির। আরটিভি: টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কমিটিতে আপনি সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কেমন লাগছে? রাজীব মণি দাস: অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে। সব নাট্যকারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।  আরটিভি: নতুন কমিটি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী? রাজীব মণি দাস: পূর্বের কমিটিতে আমি দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য যা যা প্রয়োজন, তার সবই করব। আরটিভি: বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে একটু জানতে চাই... রাজীব মণি দাস: এই মুহূর্তে চারটি চিত্রনাট্যের কাজ নিয়ে সময় পার করছি। সব ঠিক থাকলে নাটকগুলো ঈদেই মুক্তি পাবে। আরটিভি: একক নাটকের পাশাপাশি ধারাবাহিক নাটকও লেখেন আপনি। এ পর্যন্ত আপনার লেখায় প্রচারিত নাটকের সংখ্যা কত? রাজীব মণি দাস: ধারাবাহিক প্রচার হয়েছে ১৩টি। আর একক নাটকের সংখ্যা দেড়শ’র ওপরে।   আরটিভি: আপনার লেখা কোনো ধারাবাহিক নাটক কী এই মুহূর্তে প্রচারিত হচ্ছে? রাজীব মণি দাস: হ্যাঁ। বর্তমানে আরটিভিতে প্রচার হচ্ছে ‘ট্রাফিক সিগনাল’।  আরটিভি: ‘ট্রাফিক সিগনাল’ ধারাবাহিকের রেসপন্স কেমন পাচ্ছেন? রাজীব মণি দাস: দারুণ। দর্শকরা খুব প্রশংসা করছেন। এমন সাড়া পেলে কাজের গতিটাই বেড়ে যায়।  আরটিভি: নাট্যকাররা ঠিকঠাক পারিশ্রমিক পান না, প্রায়ই এই অভিযোগটা ওঠে। এটা আসলে কতটুকু সত্য? রাজীব মণি দাস: টাকা অনেকেই পান না, অভিযোগটা সত্য। আগের কমিটিতেও আমরা বিভিন্ন চ্যানেলে গিয়ে অভিযোগ দিয়ে দিয়ে বিভিন্নজনের টাকা উদ্ধার করেছি।    আরটিভি: গানের ক্ষেত্রে যেমন কথা প্রাণ, নাটকের ক্ষেত্রেও তেমনি চিত্রনাট্য। সেই জায়গা থেকে আসলে নাট্যকারদের মূল্যায়নটা হচ্ছে কি না? রাজীব মণি দাস: নাট্যকারদের মূল্যায়নই হচ্ছে না। হলে আমাকে চ্যানেলে ফোন দিয়ে বলতে হতো না, নাট্যকার হিসেবে আমার নামটা কই? আমার ধারণা, এমনটা অনেকের সাথেই হয়েছে। নাটক অনএয়ার হয়েছে, সেখানে শুধু পরিচালকের নাম। নাট্যকারের নাম নেই। আবার ইউটিউব থাম্বনেইলেও দেখা গেছে একই চিত্র। সেখানেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাট্যকারদের নাম নেই।  আরটিভি: তাহলে কী আমরা নাটক নির্মাণের পেছনের মানুষগুলোকে অবহেলা করছি? রাজীব মণি দাস: অবশ্যই। আমরা তাদেরকে ভুলেই যায়। স্বীকার করতে চাই না, পরিচালক-নাট্যকার-প্রযোজক-প্রোডাকশনের সবার সম্মিলিত চেষ্টাতেই একটি সুন্দর কাজ হয়। অথচ দেখুন, লাইট-ক্যামেরা-মেকআপ-ক্রুদের কথা কেউই বলেন না। আরটিভি: বর্তমানে টিভি নাটকে দেখা যায় গল্পের তেমন ভিন্নতা নেই। এর পেছনে আসলে কারণ কী? রাজীব মণি দাস: নাট্যকাররা প্রযোজক-পরিচালক কিংবা এজেন্সির চাহিদা অনুযায়ী চিত্রনাট্য লেখেন। তাই চাইলেও অনেক সময় অনেক কিছু করতে পারেন না। তাছাড়া আরেকটা বিষয় তো রয়েছেই। তারা ভাবেন, লিখে পাইনা ঠিকঠাক টাকা। তার মধ্যে এত বৈচিত্র্যতা আনতে গেলে সংসারই তো চলবে না। আমাদেরও তো পেট আছে। সংসার আছে। তাহলে কী আমরা চুরি করে চলবো? আরটিভি: অনেক নাটকে স্ল্যাং লাঙ্গুয়েজের ব্যবহার হচ্ছে, বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন? রাজীব মণি দাস: এই ট্র্যাডিশনটা চালু করেছে মুষ্টিমেয় কিছু ইউটিউব চ্যানেল। তাদের উচিত শুধু ব্যবসা নয়, দেশের সংস্কৃতির দিকেও নজর দেওয়া। আরটিভি: অনেক নাট্যকারই লেখার পাশাপাশি নির্মাণে যুক্ত। আপনাকে পাচ্ছি কবে? রাজীব মণি দাস: শখের বশে বছরে ১টা নাটক বানাই। এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে নেই।   আরটিভি: বড় পর্দায় কাজ করা নিয়ে আপনার পরিকল্পনার কথা জানতে চাই... রাজীব মণি দাস: অবশ্যই পরিকল্পনা আছে। তবে সেটা যদি মনের মতো না হয়, তাহলে করবো না। অনেকগুলো অফারও পেয়েছি। কিন্তু ব্যাটে-বলে মেলে নাই। দেখা যাক, সামনে কী হয়। তবে লিখলে আর্ট ফিল্মই লিখবো। কমার্শিয়াল ফিল্ম নয়। 
০৬ মে ২০২৪, ১৬:৩৬

যে কারণে মামা-মামি ও মামাতো বোনকে খুন করেন রাজীব
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভাগিনা রাজীবের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল মামা বিকাশের। এর জের ধরেই শুরু হয় মনোমালিন্য। এরপর টাকা দেওয়ার কথা বলে মামার বাসায় যায় ভাগিনা রাজীব। এরপর পালাক্রমে মামাতো বোন, মামি ও মামাকে হত্যা করে রাজীব। মরদেহ উদ্ধারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারীকে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে এই ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে হত্যাকারী। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস কনফারেন্সে এ কথা জানান জেলার পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তাড়াশ থেকেই ভাগিনা রাজীব কুমার ভৌমিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাজীব সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ ও নিহত বিকাশের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে। আগের দিন যখন বিকাশদের খোঁজ মিলছিল না তখন তার মাসতুতো ভাই ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে রিপোর্ট করতে থানাতেও যায় রাজীব। পুলিশ সুপার বলেন, আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৫) এবং ভিকটিমরা পরস্পর আত্মীয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকারের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে রাজীব। হত্যাকারীর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। তার মারা যাওয়ার পর বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে ২০২১ সাল থেকে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে খাদ্যশস্য কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত হয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তার ভাগিনা রাজীর কুমার ভৌমিককে ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা দেন। এরপর ব্যবসা চলমান থাকাকালীন হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে ব্যবসার লভ্যাংশসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা ফেরত দিলেও চলতি বছরে এসে হত্যাকারী রাজীবের কাছে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকার অতিরিক্ত ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর বিকাশ চন্দ্র সরকার গত ২২ জানুয়ারি দাবিকৃত টাকা ৭-৮ দিনের মধ্যে ভাগিনাকে ফেরত দেওয়ার জন্য অনেক চাপ দেয় এবং টাকার জন্য রাজীব ও তার মাকে (ভিকটিমের বোন) ফোনে অনেক বকাবকি করে। হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক টাকা ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং মামার বকাবকিতে মনঃকষ্ট পাওয়ায় তার মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৪৮ মিনিটে মামাকে ফোন করে পাওনা টাকা নিয়ে বাসায় আসতে চায় রাজীব। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তাড়াশের বাইরে থাকায় তার ভাগিনাকে টাকা নিয়ে সরাসরি তার তাড়াশের বাসায় এসে মামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাসাতেই থাকতে বলেন। তিনি বলেন, রাজীব যখন বাসায় যায় তখন তার মামি সন্ধ্যা পূজা করছিলেন। হত্যাকারী রাজীব কুমার বাসায় মামার অনুপস্থিতির সুযোগে তার মামি এবং মামাতো বোন পারমিতা সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর একপর্যায়ে ভাগিনা রাজীবকে কফি খাওয়ানোর জন্য তার মামি বাসার নিচে দোকানে কফির প্যাকেট কিনতে গেলে হত্যাকারী রাজীব ব্যাগে করে রাস্তা থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে কিনে আনা লোহার রড দিয়ে তার মামাতো বোনের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে মামাতো বোন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ইতোমধ্যে তার মামি কফি কিনে বাসায় প্রবেশ করলে তার মামিকেও একইভাবে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। মামি এবং মামাতো বোন পারমিতা সরকারকে হামলার পর সে চলে যেতে চায়। এর মধ্যেই তার মামা বাসায় চলে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মামা বাসায় ঢুকলে তার মামাকেও প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করে। এরপর তার মামাকে গলাকেটে হত্যা নিশ্চিতের পর লাশ টেনে বেডরুমে নিয়ে যায়। এরমধ্যে তার মামি ও মামাতো বোনের গোংরানির শব্দ আসলে পরে গিয়ে তাদেরকেও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে বাইরে তালা দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার পথে রাজীব লোহার রড একটি পুকুরে ফেলে যায় এবং রক্তমাখা হাঁসুয়াসহ ব্যাগটি নিজ বাড়িতে রাখে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিকাশের ফোনের একটি কল রেকর্ড থেকে প্রথম সূত্র পাই। এরপর ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য খাটিয়ে এবং সার্বিকভাবে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ার পরে রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাজীব আমাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। তবে এটাই সত্য যে এভাবে পালাক্রমে রাজীব একাই তিনজনকে হত্যা করে। এরপরও আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো প্রক্রিয়াধীন।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:২০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়