• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ৫ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে এডিবি
বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোর জন্য নতুন করে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করবে বলে ঘোষণা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। শুক্রবার (৩ মে) সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে দুর্বল দেশগুলোকে এ সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে এশীয় উন্নয়ন তহবিলের (এডিএফ)। প্রসঙ্গত, এশিয়ার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এডিএফ হচ্ছে এডিবির সবচেয়ে বড় অনুদানের উৎস। প্রতি চার বছর পর পর এমন ঘোষণা আসে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ২০২৫-২৮ মেয়াদে সদ্য ঘোষিত এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রকল্প প্রস্তুত করতে, সক্ষমতা তৈরি করতে এবং প্রযুক্তিগত বা নীতি পরামর্শ দিতে সহায়তায় এ অর্থায়ন করতে যাচ্ছে এডিবি। এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেছেন, ‘আমাদের দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে দুর্বল সদস্যরা সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নের বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করছে। এ ধাক্কাগুলো সামলাতে এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। এই অর্থ বেশি প্রয়োজন তাদের উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে।’ এডিবি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ভঙ্গুর এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা দেওয়া জরুরি। এ ঋণ জলবায়ু পরিবর্তন, অভিযোজন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
০৪ মে ২০২৪, ০৩:১২

এপ্রিলের ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৮ কোটি ডলার
চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে দেশে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রোববার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আর গত মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে আসে ১৬২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এই হিসাবে চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এপ্রিলের ২০ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এ ছাড়া ৬ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর ১ থেকে ৫ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।   চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় আসে প্রায় ২১৭ কোটি ডলার। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি ডলার।
২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩১

তাপদাহে বছরে ২৭০০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন ঢাকা
তীব্র তাপদাহের কারণে উৎপাদনশীল খাতে প্রতিবছর দুই হাজার ৭০০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ঢাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ শুধু পোশাক খাতেই ক্ষতি হবে ৬০০ কোটি ডলার। আর এতে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন প্রায় আড়াই লাখ পোশাককর্মী। শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত ‘পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কর্মক্ষেত্রে জৈবরাসায়নিক দূষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তাদের কথায় উঠে আসে এসব তথ্য। সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওশি)। অনুষ্ঠানে আলোচকরা বিদ্যমান অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে দাবদাহকে সরকারিভাবে দুর্যোগ ঘোষণার দাবি জানান। পাশাপাশি তাপদাহের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত নীতিমালায় দাবদাহ নিঃসরণ সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা, শুষ্ক এলাকার জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাংলাদেশ শ্রম আইনে দাবদাহকে পেশাগত স্বাস্থ্যের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয় আলোচনা সভায়। এতে সভাপতিত্ব করেন ওশি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সাকি রেজওয়ানা। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেখ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এপ্রিল ও মে মাসে শ্রমিকরা তাদের মোট কর্মঘণ্টার ২৫ শতাংশ হারাতে পারেন। এর ফলে প্রাক্কলিত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপারসন ড. এস এম মোর্শেদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের অধ্যাপক জোসিন্তা জিনিয়া এবং পেশাগত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাসুম উল আলম। আলোচনা সভায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ৪০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।  
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪০

চাল আমদানি না করায় সাশ্রয়ী হয়েছে ডলার 
ডলার সংকট মোকাবিলায় চাল আমদানির বিপরীতে জোর দেওয়া হচ্ছে কৃষকের কাছ থেকে বেশি হারে ধান সংগ্রহকে। এরই মধ্যে চাল আমদানি খাত থেকে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতে সাশ্রয় হবে কমপক্ষে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিগত মৌসুমগুলোয় উৎপাদন ভালো হওয়ায় এই আমন মৌসুমের সংগ্রহ পর্যন্ত চাল আমদানির প্রয়োজন নেই। এর পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণেও চাল আমদানি না করে খাদ্য পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, সেদিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ২০২১-২২ অর্থবছরে সাড়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা হলেও এরপর গত ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো চাল আমদানি করা হয়নি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) হিসাবে চলতি অর্থবছরে মোট ৪ কোটি ১২ লাখ টন চাল উৎপাদন হতে পারে। এর মধ্যে বোরো ২ কোটি ৯ লাখ টন, আউশ ৩০ লাখ টন ও আমন ১ কোটি ৭০ লাখ টন। আর দেশে চালের চাহিদা ৩ কোটি ৫০ লাখ টনের কাছাকাছি। সেই হিসেবে দেশে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত আছে।  জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসেবে বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি দামের কারণে গত এক বছরে বাংলাদেশে কোনো সেদ্ধ চাল আমদানি হয়নি। যেখানে ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশে ৮ থেকে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছিল। আর তাতে সাশ্রয়ী হয়েছে বিপুল পরিমাণ ডলার।  গত বছর বাংলাদেশে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৭৭ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ বলছে, এভাবে ২০১৮ সাল থেকেই বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণ চাল উৎপাদন হচ্ছে। চলতি বছরেও উৎপাদনের এই ধারাহিকতা রক্ষা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, বিগত বছরেও চাল আমদানির প্রয়োজন হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানির তথ্য বলছে গত বছরের জুলাই থেকে এই বছরের ৭ মার্চ পর্যন্ত কোন চাল আমদানি করা হয়নি।  বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুসারে মাথাপিছু ১৫২ কেজি চালের প্রয়োজনীয়তা ধরে নিয়ে আমাদের বার্ষিক চালের চাহিদা নিরূপণ করা যায়। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ আছে। তাতে বার্ষিক খাদ্যচাহিদা দাঁড়ায় ২ কোটি ৫৮ লাখ মেট্রিক টন চাল। এর সঙ্গে বীজ ও অপচয় এবং পশুখাদ্য বাবদ ১৫ শতাংশ যোগ করে মোট চালের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২ কোটি ৯৬ লাখ টন বা প্রায় ৩ কোটি টন। দৈনিক চালের চাহিদা আরও বেশি বিবেচনায় নিয়ে মাথাপিছু দৈনিক আধা কেজি বা বার্ষিক জনপ্রতি ১৮২ দশমিক ৫ কেজি হিসেবে চালের চাহিদা দাঁড়ায় ৩ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। বীজ, অপচয় ও পশুখাদ্য হিসেবে আরো ১৫ শতাংশ যোগ করা হলে মোট চাহিদা দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে মজুত আছে ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৬০৯ মেট্রিক টন।   বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিস্টিটিউটের (বিআরআরআই) পলিসি গবেষণার প্রজেকশন অনুযায়ী, ২০৩০ সালে বাংলাদেশে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টন, ২০৪১ সালে ৫ কোটি ৪১ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে ৬ কোটি ৯ লাখ টন চালের প্রযোজন হবে। বিআরআরআই -এর মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর জানিয়েছেন, ২০৩০ সালে ৪২ লাখ টন, ২০৪০ সালে ৫৩ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে ৬৫ লাখ টন চালে উদ্বৃত্ত থাকবে। এই বাড়তি উৎপাদন আমাদের যে কোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় বাফার স্টক হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাথাপিছু দৈনিক চাল গ্রহণের পরিমাণ ৩২৮ দশমিক ৯ গ্রাম হয়েছে। শহরাঞ্চলে মাথাপিছু চাল গ্রহণের পরিমাণ ২৮৪ দশমিক ৭ গ্রাম, যা জাতীয় গড় থেকে ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। ১৭ কোটির মানুষের প্রতিদিনের হিসাব ধরে বছরে প্রয়োজন হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টন চাল। শুধু ভাত হিসেবে এ চাল মানুষ গ্রহণ করে। এর বাইরে বিভিন্ন পোলট্রি ফিড, বীজসহ অন্যান্য প্রয়োজনে চাল ব্যবহার হয় ১ কোটি টন। সবমিলে প্রয়োজন ৩ কোটি ৬০ লাখ টন। কিন্তু গত বছরে উৎপাদন হয়েছে ৪ কোটি ১৩ লাখ টন।   বিআরআরআই -এর কর্মকর্তারা বলেছেন, বিআরআরআই ইতিমধ্যে রাইস ভিশন ২০৫০ প্রণয়ন করেছে, যাতে ২০৩০, ২০৪১ এবং ২০৫০ সালে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বিপরীতে চালের উৎপাদন প্রক্ষেপণ করা হয়েছে এবং তা অর্জনে ব্রি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কৌশলপত্র প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি হারে আমাদের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে যা নিশ্চিত করে যে আমরা খাদ্যে উদ্বৃত্ত।          তাহলে এত চাল কোথায় যায়, আমদানি কেন করতে হয় তাহলে প্রশ্ন উঠেছে এরপরও কেন সরকারকে চাল আমদানি করতে হয়। এ বিষয়ে ধান বিজ্ঞানীরা বলছেন, দেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে। তাদের তথ্য আদমশুমারিতে যুক্ত হয়নি। এরা যে ভাত খায়, সে চাল আমাদের দেশেই উৎপাদিত হয়। আবার চালের একটি অংশ বীজের জন্য রাখতে হয়। নানা কারণে চালের অপচয় হয়। ব্যক্তিগতভাবে অনেক কৃষক নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে চাল মজুত করেন, যেটি হিসাবেও নেই। ব্যবসায়ীদের কাছেও মজুত থাকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চালের হিউম্যান কনজাম্পশন (সরাসরি ভাত) ছাড়াও নন-হিউম্যান কনজাম্পশন (অন্যান্য কাজে) আছে। হিউম্যান কনজাম্পশন হিসাবে উদ্বৃত্ত ঠিকই আছে। তবে নন-হিউম্যান কনজাম্পশনও বাড়ছে। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ চাল নন-হিউম্যান কনজাম্পশনে ব্যয় হয়ে যায়। অর্থাৎ মানুষের ভাত গ্রহণ ছাড়াও অন্যান্য কাজে চালের ব্যবহার আছে।কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১১৫টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে আগের চেয়ে ফলন ও উৎপাদন বাড়ছে। অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনা হচ্ছে। মো. শাহজাহান কবীর বলেন, মাথাপিছু দৈনিক চাল গ্রহণের হিসাব বিবেচনায় নিলে ১৭ কোটির মানুষের প্রয়োজন হয় প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ টন চাল। শুধু ভাত হিসেবে এ চাল মানুষ গ্রহণ করে। এর বাইরে বিভিন্ন পোলট্রি ফিড, বীজসহ অন্যান্য প্রয়োজনে চাল ব্যবহার হয় এক কোটি টন। কিন্তু গত বছর উৎপাদন হয়েছে চার কোটি ১৩ লাখ টন। ফলে চাল আমদানির প্রয়োজন নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে চাল আমদানি করতে হয় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে। বিশেষ করে যেকোনো ঝুঁকি মোকাবেলা ও বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার চাল আমদানি করে থাকে।  
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:৫১

৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিপি
বাংলাদেশ সরকারকে ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। Loan 4440- BAN: Climate-Resilient Integrated Southwest Project for Water Resources Management'  শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ চুক্তি সই হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। শনিবার (২০ এপ্রিল) এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ঢাকায় ঋণচুক্তি ও প্রকল্পচুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় বলে জানা গেছে।  বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং উভয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।  বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির আবাসিক মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে। আলোচ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করে কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, আনুষঙ্গিক উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আনয়ন, সমন্বিত পানি সম্পদ ও অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং উন্নত অবকাঠামো নির্মাণ ও সমন্বিত সহায়তার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হবে। ঋণটি এডিবির Ordinary Operations (Concessional) বা নমনীয় শর্তে পাওয়া গিয়েছে যার সুদের হার ২ শতাংশ এবং ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ২৫ বছরে পরিশোধযোগ্য। এছাড়া অন্য কোনো চার্জ নেই। এছাড়া প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত সুবিধাদির দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব বজায় রাখার নিমিত্ত পানি ব্যবস্থাপনা সংঘ গঠন করা হবে। প্রকল্পটির  জানুয়ারি ২০২৪ হতে শুরু হয়ে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে।  এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে সদস্য লাভের পর থেকে এডিবি থেকে এর অর্থনীতির অগ্রাধিকারভুক্ত বিভিন্ন খাতসমূহে ধারাবাহিকভাবে আর্থিক সহায়তা পেয়ে আসছে।  বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি সাধারণত বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, কৃষি, পানিসম্পদ ও সুশাসনকে প্রাধান্য দেয়। এ যাবত বাংলাদেশ সরকারকে ৩১ হাজার ৫৪৭.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা ও ৫৭১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে এডিবি।
২০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৮

রেমিট্যান্সে ঈদের সুবাতাস, ১২ দিনে এলো ৮৭ কোটি ডলার
ঈদ ঘিরে সুবাতাস বইছে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসীদের কাছ থেকে দেশে এসেছে ৮৭ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ এই সময়ে গড়ে প্রতিদিন দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। সোমবার (১৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোজা ও ঈদকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স প্রবাহে সুবাতাস লেগেছে। ঈদের বদৌলতে রেমিট্যান্সের চাঙ্গাভাব দেখা গেছে বিগত দুই মাসেও। আগামী ঈদুল আজহা পর্যন্ত এ সুবাতাস জারি থাকতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।  বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, রোজা-ঈদে প্রবাসীরা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ পাঠান। তাই এ সময়ে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ। রেমিট্যান্সের এ ধারা অব্যাহত থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে। সেইসঙ্গে কেটে যাবে ডলার সংকটও। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে ৮৭ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এর আগে গত মার্চ ও ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১২ দিনে যথাক্রমে রেমিট্যান্স এসেছিল ৮১ কোটি ৪৮ লাখ ও ৮৬ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে চলতি মাসে। তবে, পুরো মাসের বিচারে চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই মাসে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। আর মার্চ মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার।      
১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৮

৪৪ বিলিয়ন ডলার জালিয়াতির দায়ে ভিয়েতনামের ধনকুবেরের মৃত্যুদণ্ড
ভিয়েতনামের এক শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যবসায়ী ৪৪ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের মামলায় মৃত্যুদণ্ডর মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা এটি। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) তিনিসহ কয়েক ডজন আসামির বিরুদ্ধে এই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।  ভিয়েতনাম এক্সপ্রেসের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত ট্রুং মাই ল্যান একটি ডেভেলপার কোম্পানির চেয়ারপারসন। তিনি ভিয়েতনামের সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংক (এসসিবি) থেকে এক দশক ধরে জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে উঠে এসেছে।  ল্যান এবং অন্য ৮৫ জন পাঁচ সপ্তাহের বিচারকার্যের পরে ভিয়েতনামের ব্যবসাকেন্দ্র হো চি মিন সিটিতে আদালতের রায় ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন। অভিযুক্তদের তালিকায় সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তা, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা এবং পূর্ববর্তী এসসিবি নির্বাহীরা রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি এবং ব্যাংকিং আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তবে ল্যান অভিযোগ অস্বীকার করে তার অধস্তনদের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। তার আইনজীবীরা বলেছেন, তিনি কোনো ধরনের তছরুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, কারণ এসসিবিতে তার কোনো আনুষ্ঠানিক পদ নেই।  তবে বিচারকরা এই যুক্তি মানেননি। তারা বলেছেন, এসসিবি ব্যাংকের ৯১ দশমিক ৫ শতাংশের শেয়ারের মালিক ল্যান। সুতরাং ব্যাংকে তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। প্রকৃতপক্ষে তিনিই ব্যাংকের মালিক। তিনিই ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা নিয়োগেও তার হাত ছিল।  ভিয়েতনামে দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডেভিড ব্রাউন বলেন, আমার মনে হয়, কমিউনিস্ট যুগে এ ধরনের শো ট্রায়াল আগে কখনো হয়নি।  কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল নগুয়েন ফু ট্রংয়ের নেতৃত্বে ‘ব্লেজিং ফার্নেস দুর্নীতি’ বিরোধী প্রচারণার এ পর্যন্ত সবচেয়ে নাটকীয় অধ্যায় ছিল এই বিচার। এদিকে ল্যান গত সপ্তাহে আদালতে তার শেষ মন্তব্যে বলেছেন, তিনি আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন। তিনি বলেন, ‘হতাশার মধ্যে ডুবে গিয়ে আমি মৃত্যুর কথা ভেবেছিলাম। আমি এতটাই ক্ষুব্ধ যে, এই অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যবসায়িক পরিবেশে জড়িয়ে পড়ার জন্য আমি এতটা বোকা ছিলাম! ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব কম।’  ২০২২ সালের অক্টোবরে ল্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় শত শত মানুষ রাজধানী হ্যানয় এবং হো চি মিন সিটিতে বিক্ষোভ শুরু করে। একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে এটি ছিল বিরল ঘটনা।  গতকাল বুধবার হ্যানয়ে স্টেট ব্যাংক অব ভিয়েতনামের বাইরে প্রচুর পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এখানেই এর আগে বিক্ষোভ হয়েছিল। পুলিশ এই আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রায় ৪২ হাজার ভুক্তভোগীকে চিহ্নিত করেছে। এ ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সরকার ও সাধারণ মানুষ হতবাক হয়েছে।  ল্যান বিয়ে করেছেন হংকংয়ের একজন ধনী ব্যবসায়ীকে। তিনিও এখন বিচারাধীন। তার বিরুদ্ধে এসসিবি থেকে ঋণ নিতে জাল নথিপত্র ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। ল্যান এই ব্যাংকের ৯০ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিক ছিলেন।
১১ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৮

পাঁচদিনে এলো ৪৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
দেশে চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম পাঁচ দিনে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সেই হিসেবে গড়ে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছে ৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম পাঁচদিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সবমিলিয়ে এপ্রিলের প্রথম পাঁচদিনে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার দেশে এসেছে। এর আগে, মার্চের প্রথম ৫দিনে ৩২ কোটি ৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সেই হিসেবে চলতি মাসের শুরুতেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। এই ধারা আগামী ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, রোজা-ঈদে প্রবাসীরা দেশে আত্মীয়-স্বজনদের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ পাঠান। তাই এই সময়ে স্বাভাবিকভাবেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে। একইসঙ্গে ডলার সংকটও কেটে যাবে। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে দেশে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। আর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ।
০৮ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২৪

দেশে জ্বালানি ও ডলার সংকটে ব্যবসায়ীরা চাচ্ছে এক্সিট
সুদহার বাড়ছে, ডলার রেটও বাড়ছে। রপ্তানি পণ্যের দর পাচ্ছি না। অপরদিকে চলমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট। এতে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এ জন্য ব্যবসায়ীরা সেফ এক্সিট পলিসি চাইছে সরকারের কাছে। আক্ষেপ করে তারা বলেন, দিনশেষে আমরা ডলার দেশে আনার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আমরা যদি এত প্রতিবন্ধকতার জন্য ব্যবসা করতে না পারি, তাহলে সরকারের ডলার আসবে কোত্থেকে? ব্যাংকগুলোর জন্য সরকার সহজ এক্সিট পলিসি করেছে দাবি করে ব্যবসায়ীরা বলেন, কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে গ্রাহক সর্বোচ্চ মাত্র ১ লাখ টাকা পাবে। এর বেশি পাবে না। অথচ শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য কোনো সহজ এক্সিট পলিসি নেই। অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করে তারা বলেন, আপনি আমাদের গ্যাস দেন। গ্যাস-বিদ্যুৎ দিয়ে আমাদের কারখানা চালানোর ব্যবস্থা করেন। এলপিজি দিয়ে এই কারখানা চালানো আর সম্ভব নয়। রেভিনিউ যা চান, আমরা দিতে রাজি আছি। ব্যাংকগুলো ব্যাংকিং ব্যবসা না করে ডলার ব্যবসায় নেমেছে বলে অভিযোগ করে শিল্পোদ্যোক্তারা। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির সভায় এসব সমস্যার কথা তুলে ধরেন শিল্পোদ্যোক্তারা। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং এনবিআরের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সভায় এমন নানা সংকটের সমাধান চাওয়া হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীমের সভাপতিত্বে সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ডলার সংকট, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ব্যবসা এখন নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে। ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য এক্সিট পলিসি দিন। দিনশেষে আমরা ডলার দেশে আনার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আমরা যদি এত প্রতিবন্ধকতার জন্য ব্যবসা করতে না পারি, তাহলে সরকারের ডলার আসবে কোত্থেকে? সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম রপ্তানি খাতের সংকট তুলে ধরে বলেন, সুদহার বাড়ছে, ডলার রেট বাড়ছে। ব্যাংক আমাদের সাথে ব্যবসা না করে ডলার ব্যবসায় নেমেছে। রপ্তানি পণ্যের দর পাচ্ছি না। উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দরে অর্ডার নিতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় এবার বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, আমাদের জন্য সেফ এক্সিট পলিসি দরকার। ব্যাংকগুলোর জন্য সরকার সহজ এক্সিট পলিসি করেছে দাবি করে তিনি বলেন, কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে গ্রাহক সর্বোচ্চ মাত্র ১ লাখ টাকা পাবে। অথচ শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য কোনো সহজ এক্সিট পলিসি নেই। ইস্পাত শিল্পের ব্যবসায়ী মাসুদুল আলম মাসুদ বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ খাতের উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। গ্যাসের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। গ্যাসের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে দেশে বিনিয়োগ আসবে না বলে হুঁশিয়ার করেন সরকারকে। দেশের সব শিল্পই গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য ভোগান্তি পোহাচ্ছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য সবার খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে দাবি করে উত্তরা মোটর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমান অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করে বলেন, আপনি আমাদের গ্যাস দেন। রেভিনিউ যা চান, আমরা দিতে রাজি আছি। গ্যাস-বিদ্যুৎ দিয়ে আমাদের কারখানা চালানোর ব্যবস্থা করেন। এলপিজি দিয়ে এই কারখানা চালানো আর সম্ভব নয়। এ সময় কর ব্যবস্থায় হয়রানি ও জটিলতা দূর করে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, এ জন্য আগামী বাজেটে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে। একই সঙ্গে বিশেষত ব্যবসার খরচ কমিয়ে আনতে বিনিয়োগ সুরক্ষা, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুষম বিনিয়োগসহায়ক মুদ্রা ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, শিপিং খরচসহ সব ধরনের পরিবহন খরচ কমানো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ প্রতি ক্ষেত্রে স্থায়ী পরিকাঠামো উন্নয়ন, স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। অপরদিকে বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিপন্থী উল্লেখ করে বিকেএমইএর মোহাম্মদ হাতেম বলেন, অস্বাভাবিকভাবে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে, যা এখন অসহনীয় হয়ে গেছে। এর মূল কারণ কর্মকর্তাদের প্রণোদনা। এর কারণে তারা অন্যায়ভাবে রপ্তানি আটকে রেখে জরিমানা আদায় করছেন। সবাইকে আশ্বস্ত করে অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের বলেন, সবার সুচিন্তিত মতামত বিবেচনা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী সবার ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করতে চান।
০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:১০

বিমানবন্দরে ডলার কারসাজি : ১৯ ব্যাংকারসহ ২১ জনের নামে মামলা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডলার এবং অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ ব্যাংকারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৭ মার্চ) দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জন ব্যাংকার ও দুইজন মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের মালিককে আসামি করা হয়েছে। দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলার আসামিরা হলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রন্সিপাল অফিসার ও বুথ ইনচার্জ আনোয়ার পারভেজ, প্রিন্সিপাল অফিসার শামীম আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান, সিনিয়র অফিসার মো. সুরুজ জামাল, অমিত চন্দ্র দে, মো. মানিক মিয়া, সাদিক ইকবাল, মো. সুজন আলী ও মো. হুমায়ুন কবির। অন্যদিকে সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া (ক্যাশ), মো. কামরুল ইসলাম (ক্যাশ), একই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. সোহরাব উদ্দিন খান, খান আশিকুর রহমান, এবিএম সাজ্জাদ হায়দার (ক্যাশ), সামিউল ইসলাম খান, অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাককে আসামি করা হয়। এ ছাড়া বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অফিসার মো. আবু তারেক প্রধান, ব্যাংকটির সাপোর্টিং স্টাফ মো. মোশাররফ হোসেন, এভিয়া মানি এক্সচেঞ্জারের কাস্টমাস সার্ভিস ম্যানেজার মো. আসাদুল হোসেন ও ইম্পিরিয়াল মানি এক্সচেঞ্জের পরিচালক কে এম কবির আহমেদকে আসামি করা হয়। এ বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আসামিদের বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় ও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের অবৈধভাবে মুদ্রা সরবরাহ করছেন। তিনি বলেন, অবৈধভাবে ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের কারণে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। অবৈধ এসব অর্থ দেশের বাইরে পাচারও হতে পারে। দুদক এখন থেকে এসব বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করবে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা প্রতিদিন শত কোটি টাকার বেশি মূল্যের ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রা আনেন। এসব ডলার জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করছে চক্রটি।  জাল ভাউচারে যাত্রীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে পরে তা খোলা বাজারে ছাড়া হচ্ছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক ও নিবন্ধিত মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হয়েও তারা বেআইনিভাবে বিদেশি মুদ্রা কিনে ব্যক্তিগত লাভের জন্য খোলা বাজারে বিক্রি করছেন।
২৭ মার্চ ২০২৪, ১৯:১৯
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়