• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১
logo
কিশোরগঞ্জের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ঢাকায় গ্রেপ্তার
ভৈরবে ট্রেনের ধাক্কায় ব্রিজ থেকে ছিটকে পড়ে নারীসহ নিহত ২
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় সেতু থেকে নিচে পড়ে অজ্ঞাতনামা একজন নারী ও একজন পুরুষ নিহত হয়েছেন।  রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রেলপথের রেলওয়ে সেতু এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে রেলওয়ে সেতুর নিচে তাদের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুর্ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তখন নারীকে মৃত ঘোষণা করেন এবং গুরুতর আহত পুরুষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেন। কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে পুরুষটিও মারা যান। এ ব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, তাদের পরিচয় শনাক্ত না করা গেলেও ধারণা করা যাচ্ছে তারা স্বামী-স্ত্রী ছিলেন। এবং অসাবধানবশত তারা ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলীম হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া তাদের পরিচয় শনাক্তেরও চেষ্টা করছে পুলিশ।
অষ্টগ্রামে বজ্রপাতে জেলে নিহত
ইটনায় বর্ষার পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
পাকুন্দিয়ায় ডোবায় পড়ে ২ মাদরাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু
দুই ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যা: হাসিনা-কাদেরসহ ৮৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ইটনা আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ ৩৮ জনের নামে মামলা
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী কামরুলসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভোক্তভোগী হারুন মিয়া। রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের ওয়ারা গ্ৰামের মৃত কাশেম আলীর ছেলে মো. হারুন মিয়া (৩৫) বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হারুন মিয়া মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রচারণা শেষে ২৫ মে বাড়িতে ফেরার পথে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, ককটেলসহ অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী চৌধুরী কামরুলের নির্দেশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে বাদী মুদিরগাঁও বিএনপি অফিসে আশ্রয় নিলে সেখানেও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে অফিস ভাঙ্গচুর করে। আসামিদের ভয়ে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন। আসামিরা হলেন- ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অব্যাহতি প্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান, বাদলা ইউপি চেয়ারম্যান আদিলুজ্জামান, ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রদীপ চন্দ্র দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাপস রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির রব্বানী মামলা দায়ের করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিএনপি জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে: প্রিন্স
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, সন্ত্রাস আওয়ামী রাজনৈতিক সংস্কৃতি। বিএনপির রাজনীতির অভিধানে এসবের স্থান নেই। বিএনপি জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে। যারা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অনৈতিক কাজ করবে তাদেরকে বহিষ্কার করে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। রোববার (২৫ আগস্ট) কিশোরগঞ্জে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষমতার পরিবর্তন শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতার হাতবদল নয় বরং রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন। তারেক রহমানের এই চেতনাকে ধারণ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের মন মানসিকতা ও মনোজগতের পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিজয় নস্যাৎ করতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সর্বত্র শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।  বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহীদুল্লাহ কায়সার, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আশফাক।
অষ্টগ্রামে বালু উত্তোলন, ড্রেজারসহ গ্রেপ্তার ৫
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে কালনী (মেঘনা) নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় এমভি সজীব রুহান ড্রেজারসহ পাঁচ বালু খেকোকে গ্রেপ্তার করেছে অষ্টগ্রাম থানা পুলিশ। শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের বাঘাইয়া ও নোয়াগাঁও গ্রামের মধ্যবর্ত্তী কালনী (মেঘনা) নদীর থেকে ড্রেজারসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় কালনী নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে। ভাল্কহেডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিলো এ বালু খেকোচক্রটি। এতে নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মৎস্য সম্পদ ও হাওরের জীববৈচিত্র্য। শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অষ্টগ্রাম থানা পুলিশ নদীতে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের ড্রেজার এমভি সজীব রুহানসহ পাঁচ বালু খেকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময়, বালু বোঝাই একটি ভাল্কহেডসহ কয়েক জন পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা দরবেশ মিয়ার ছেলে মো. কামরুল ইসলাম (৪০), সোনারুহাটির বাচ্চু মিয়া ছেলে সারুফ মিয়া (৩৮), দেওঘর ইউনিয়নের কাগজীগ্রামের হাছেন আলীর ছেলে বুলবুল আহমেদ (৩৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার ধানতলিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে নিহা আলম (২৪) ও নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের সৈয়দ মিয়ার ছেলে সাহেব জামাল (৪০)। এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেলে পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ৯ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা’ দায়ের করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাই-বোন-ভাতিজার নামে ২ মামলা
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বোন কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আছিয়া আলম, ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল হক নূরু ও ভাতিজা মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ কামালসহ ৯২ জনকে আসামি করে দুটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিঠামইন থানার ওসি আহসান হাবিব।  তিনি বলেন, মিঠামইনের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও বিস্ফোরক আইনে এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে। মিঠামইন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন জেরি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল আলম জাহাঙ্গীরের ভাতিজা ফারহান সিকদার বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। মামলায় এখনও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার হয়নি। প্রথম মামলায় ৪৭ জনের এবং দ্বিতীয় মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার লিখিত এজাহার থেকে জানা যায়, বিগত ৫ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে মিঠামইন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিএনপি অফিসের সামনে আসার পরই বিপরীত দিক থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাল্টা মিছিল বের করে বিএনপির মিছিলে হামলা চালায়। এ হামলায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন জেরিসহ অনেক নেতাকর্মী আহত হন। এ ছাড়া ওই দিন বিএনপির মিছিলে হামলা চালিয়ে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল আলম জাহাঙ্গীরের বড় ভাই শাহরিল আলম তপনের পাঁচফোড়ন নামক হোটেলে প্রবেশ করে ভাঙচুরসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং শাহরিল আলম তপনকে মারধর করে ক্যাশ থেকে নগদ তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। দুটি মামলাতেই সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বোন মিঠামইন উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আছিয়া আলম, ছোট ভাই অধ্যক্ষ আবদুল হক নূরু ও ভাতিজা মিঠামইন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ কামালসহ অজ্ঞাত আরও শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া গেছে। প্রায় ১০ ঘণ্টায় ৩৫০ জন টাকা গণনার কাজ শেষ করেন। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনা শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় দিকে জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ টাকার পরিমাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে তা মসজিদের দোতলায় গণনার জন্য নেওয়া হয়। এবার তিন মাস ২৭ দিন পর পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্সে মিললো ২৮ বস্তা টাকা, এতে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়।  এর আগে, গত ২০ এপ্রিল ৪ মাস ১০ দিন পর মসজিদের ৯টি দানবাক্স ও একটি ট্যাঙ্ক খোলা হয়। এতে রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিলো। এরও আগে, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ৩ মাস ২০ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। ২৩টি বস্তায় তখন রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাক্ষ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিলো। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে ২৮টি বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় আনা হয় গণনার জন্য। টাকা গণনার কাজে শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এ ছাড়াও এ সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ মাদরাসার ১৪৫ জন ছাত্র, ঐতিহ্যবাহী জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসার ১১৩ জন ছাত্রসহ ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। এ ছাড়া মসজিদ কমিটির ১৫ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন। মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজনের সূত্রে জানা যায়, এ মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়—এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ মসজিদে দান করে থাকেন। জনশ্রুতি আছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন এলাকাবাসী। কিন্তু ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকায়, এমনকি দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দান-খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয়—এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এ মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এমকি বৈদেশিক মুদ্রাও দান করেন।  
খ্রিস্টান ছেলেকে পেতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে খ্রিস্টান ছেলেকে জীবনসঙ্গী করে পাওয়ার ইচ্ছা জানানো এক নারীর চিঠি পাওয়া গেছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় পাগলা মসজিদে ৯টি দানবাক্স খোলা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্য। তিন মাস ২৭ দিন পর দানবাক্সগুলো খুলে রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। টাকা গণনার কাজে অংশ নেন মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩৫০ জনের একটি দল। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত করেন এসব তথ্য। এ সময় দানবাক্সের টাকাগুলোর সঙ্গে বেশ কিছু চিঠিও পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটিতে আফরোজ আক্তার সেজুতি নামের এক মেয়ে এক খ্রিস্টান ছেলেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চিঠি লিখেছেন।  চিঠিতে লেখা আছে, ‘আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমার নাম আফরোজ আক্তার সেজুতি, আমি একজনকে অনেক ভালোবাসি, সারাদিন তার চিন্তা আমার মাথায় ঘুরে। ওর কথা মনে পড়লে অনেক কান্না আসে। আমি আমার পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারি না। ও আমার ব্যাপারে কিছুই জানে না, আমি ওর ব্যাপারে সব জানি। ও খ্রিস্টান আমি মুসলমান, আমি আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করি। প্রতিদিন নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বলি যাতে ও মুসলমান হয়ে যায়, আমি চাই ও আমার জন্য হালাল হয়ে যাক। আল্লাহ ওকে আমার জন্য হালাল করে দেন, আমি ওর প্রতি দুর্বল ওকে কিছুতেই ভুলতে পারি না। আমি ওকে ভুলতেও চাই না। আমার অনেক ভয় লাগে, ও যেন অন্য কারো হয়ে না যায়। আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন তকদিরে দিয়ে দোয়া করবেন। আমার সালাম নিবেন।’ কিশোরগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে খোলা হয় দানবাক্সগুলো। টাকা গণনার কাজে আরও অংশ নিয়েছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহুয়া মমতাজ, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা আনোয়ার পারভেজ।