ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিল্মি স্টাইলে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের কারণ জানালো র্যাব (ভিডিও)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে এক স্কুলছাত্রীকে ফিল্মি স্টাইলে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণের সিসিটিভির ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। যে ঘটনা তদন্তে নড়েচড়ে বসে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এর মধ্যেই তৎপরতা চালিয়ে ঘটনার মূল অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে (২৫) গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্স র্যাব। অন্যদিকে অপহরণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় থানা পুলিশ। অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকায় জসিমের বড় ভাই কাউসার মিয়াকে (৩২) গতকাল সোমবার (১১ অক্টোবর) গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার (১১ অক্টোবর) ওই তরুণী বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানাতে আজ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
-
আরও পড়ুন... স্কুলছাত্রীকে ফিল্মি কায়দায় অপহরণ, ভিডিও ভাইরাল
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থী এক স্কুল ছাত্রীকে ফিল্মি কায়দায় প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণের করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ও মূল পরিকল্পনাকারী জসীম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৯ অক্টোবর (শনিবার) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আলোচিত ফিল্মি স্টাইলে এসএসসি পরীক্ষার্থী তরুণীকে অপহরণের ঘটনায় প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী জসীম উদ্দিনকে রাজধানীর বাড্ডা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় অপহরণকারীরা ভুক্তভোগী তরুণীকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে একই দিন সন্ধ্যায় সদর উপজেলার সুহিলপুর এলাকায় নামিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় জসিম উদ্দিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারায় একটি মামলা করেন। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে র্যাব এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।
-
আরও পড়ুন... ৩০ টাকায় পেঁয়াজ
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার ভোরে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২-এর আভিযানিক দল রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালায়। পরবর্তীতে মামলার প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী জসীম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসীম জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন। ওই তরুণীকে দীর্ঘদিন প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। স্কুলে যাওয়া ও প্রাইভেট পড়তে আসা-যাওয়ার সময় জসীম উদ্দিন প্রায়ই তরুণীকে উত্ত্যক্ত করতেন। কিন্তু প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময় জসীম উদ্দিন তরুণীকে অপহরণসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান।
ঘটনার দিন ওই তরুণী স্কুল শেষে বাসায় ফেরার পথে তিনি (জসীম) ও তার কয়েকজন সহযোগী (ইরফান এবং আশিক) জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নেয়। বিকাল সাড়ে ৫টার পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যায় এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম ও এলাকায় জানাজানি হলে জসীম উদ্দিন ওই তরুণীকে রাত ৮টার দিকে নির্জন জায়গায় ছেড়ে দেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি রাজধানীর বাড্ডায় তার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার জসীম উদ্দিন প্রাইভেটকারটি তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ভাড়ায় নিয়েছিলেন।
কেএফ/টিআই
মন্তব্য করুন