• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
যেভাবে সোমালীয় জলদস্যুদের উত্থান, যেমন আয় তাদের
কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতা কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : ডিবিপ্রধান
সম্প্রতি পুলিশের একটি প্রতিবেদনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অন্তত ২১ জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ‘কিশোর গ্যাং’ সদস্যদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ তদন্তে কিশোর গ্যাং পরিচালনায় যার যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।  মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। ডিবি প্রধান বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে জড়িত ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওয়ারী ও গুলশান বিভাগ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে বেশিরভাগ কিশোর গ্যাং সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তাররা বাড্ডা, ভাটারা, তুরাগ, তিনশো ফিট ও যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় টার্গেট করা ব্যক্তিদের উত্ত্যক্ত করতো। এরপর সংঘবদ্ধভাবে ঘেরাও করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন এবং নারীদের কাছ থেকে স্বর্ণের অলঙ্কার ছিনিয়ে নিতো। ছিনতাই ছাড়াও চাঁদাবাজি, চুরি এবং মাদক কারবারের সঙ্গেও জড়িত এই কিশোর গ্যাং সদস্যরা। গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাং সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে কিছু ‘বড় ভাইয়ের’ নাম পাওয়া গেছে জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, তারা কিছু বড় ভাইয়ের নাম আমাদের জানিয়েছে।  এই বড় ভাইদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। ঢাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালনাকারী এই বড় ভাইদের মধ্যে কিছু কাউন্সিলরের নাম এসেছে। ডিবি তাদের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না, জানতে চাইলে  হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতাররা সাবেক ও বর্তমান কিছু কাউন্সিলরের নাম জানিয়েছে। এটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে যদি কোনও কাউন্সিলরের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফ্রিল্যান্সারের সাড়ে তিন কোটি টাকা গায়েব, ৭ ডিবি সদস্য ক্লোজড
জেলখানার গল্পে বেরিয়ে এলো খুনের রহস্য
রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে কুলি থেকে কোটিপতি
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফাটল ধরিয়ে ‘দরবেশ’ সেজে নিজেই দিতেন সমাধান
ডিবি কার্যালয়ে এসে মুশতাক প্রসঙ্গে যা বললেন তিশার বাবা
বর্তমান সময়ের আলোচিত-সমালোচিত দম্পতি মুশতাক-তিশা। এবার রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে এসে মুশতাকের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মুশতাক মানসিকভাবে অসুস্থ।’ রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাকে এবং আমার ছোট মেয়েকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করতে ডিবি অফিসে এসেছি। তিনি বলেন, আমাকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার পর এক নম্বর থেকে কল আসে। সে বলে আপনি যদি তিসার বিষয়ে কথা বলেন আপনি এবং অপনার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে। তিশাকে উদ্দেশ করে বাবা সাইফুল  বলেন, আমি মুশতাকের ছায়াটাও দেখতে চাই না। মুশতাকের নামটা শুনলে আমার ওজুটাও নষ্ট হয়ে যায়। আম্মু তুমি আমার কাছে ফিরে এসো, কোনো কারণে যদি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়, সেটার আবার লাইনে তুলে সামনে আগানো যায়। তুমি আমার কাছে ফিরে এসো, মুশতাকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।   তিনি বলেন, একটা মেয়ে কতটা জিম্মি হলে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে। তিশাকে খুব রেস্ট্রিকসনে রাখে, তাকে মোবাইলেও কথা বলতে দেয় না। কথা বলতে দিলে মুশতাক পাশে বসে থাকে। একদিন আমার স্ত্রী তিশাকে বলছিল, মুশতাকের কাছ থেকে না এলে তোমার জীবনটা ধ্বংস হয়ে যাবে।জবাবে তিশা বলে, আম্মু আমার অনেক অশ্লীল ছবি মুশতাকের কাছে আছে। ছবিগুলো ফিরিয়ে দিলে লাথি দিয়ে চলে আসতাম।   এদিকে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আলোচিত এ দম্পতিকে জ্ঞানপাপী, ভণ্ড, কু-শিক্ষিত, সমাজ বিরোধী, যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী, তরুণ প্রজন্ম ধ্বংসকারী, প্রতারক ও সভ্যতা বিরোধী লোক বলে মন্তব্য করে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. তানভীরুল ইসলাম।
এক বছরে কিশোর গ্যাংয়ের ৬০০ জন গ্রেপ্তার
চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইসহ নানান অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে একবছরে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৬০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মোহাম্মদপুরে র‍্যাব-২-এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার আনোয়ার হোসেন খান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গত একবছরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও হাজারীবাগ এলাকা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের ৬০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইসহ নানান অপরাধে জড়িত ছিল। এর আগে, সবশেষ গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ‘পাটালি’ গ্রুপের ৫ জন, ‘লেভেল হাই’ গ্রুপের ৬ জন, ‘লও ঠেলা’ গ্রুপের ৫ জন রয়েছেন। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেকটি গ্রুপে ১৮ থেকে ২০ জন সদস্য থাকে বলেও নিশ্চিত করেছেন আনোয়ার হোসেন খান।
ইউটিউব দেখে জাল নোট তৈরি, দুই কোটি টাকা ছড়িয়েছে জিসান
ইউটিউব দেখে জাল নোট তৈরি এবং তা সরবরাহের অভিযোগে জিসান হোসেন রিফাত (১৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার ৯০০ টাকার জাল নোট ও ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।      শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে র‍্যাব-১০ এর সিপিসি-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল বলেন, উচ্চাভিলাষী জিসান ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে একটি চক্রের কাছ থেকে জাল নোট তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এরপর তিনি নিজেই জাল নোট তৈরি করে বিভিন্নভাবে সরবরাহ করে আসছিলেন। প্রায় ২ কোটি সমমূল্যের জাল টাকা বাজারে ছেড়েছেন তিনি। জিসানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, জাল টাকা সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হয় সে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র টেলিগ্রাম অ্যাপসের মাধ্যমে জাল টাকা তৈরির প্রযুক্তি আদান-প্রদান করতো জিসান। অ্যাপসে এ টাকা বিক্রির পন্থা বলে দিত চক্রের সদস্যরা। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে নোট বিক্রি করা হতো। ফেসবুক গ্রুপে জাল টাকা বিক্রির পোস্ট দেওয়ার পর আগ্রহীদের কমেন্টে মেসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ে আসতে বলা হতো। সেখানেই হতো লেনদেন। ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করা হতো। মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল বলেন, জাল নোটগুলো ঢাকার কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চক্রের সদস্যদের কাছে সরবরাহ করতো জিসান। প্রতি ১ লাখ টাকার সমপরিমাণ মূল্যের জাল নোট ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন তিনি। এরপর চক্রটি মাছ বাজার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করতো। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানির পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ছাপিয়ে মজুদ করতেন জিসান। জাল নোট প্রিন্টিংয়ের সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয়ে ফেলতেন তিনি। যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে পারেন।  
মুশতাকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে, এবার গা শিউরে ওঠা তথ্য জানালেন বাবা 
রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তিশা ও একই কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাকের বিয়ের ঘটনা এখন সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলছে। অমর একুশে বইমেলায় এই দম্পতির দুটি বই প্রকাশ পেলে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে ওঠে। এ বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) একটি গণমাধ্যমের ফেসবুক লাইভে মুখোমুখি কথা বলেছেন তিনি। যেখানে উঠে আসে অসম বয়সী এই বিয়ের ঘটনার পেছনের ঘটনাসহ নানান বিষয়।  তিশা-মুশতাকের এই সম্পর্ককে ‘বিয়ে’ বলতে নারাজ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এটাকে আমি বিয়ে বলি না। এটাকে বিয়ে বললে ভুল হবে। তাকে (তিশা) ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। একটি অশ্লীল ভিডিওর মাধ্যমে জিম্মি করে তাকে বাধ্য করে কাবিননামায় স্বাক্ষর করানো হয়েছে। আমার মেয়ে তিশা মেডিকেল বোর্ডের সামনে জবানবন্দি দিয়েছে। সে বলেছে যে, তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। অশ্লীল ছবি ও ভিডিও করে তাকে কাবিননামায় স্বাক্ষর করতে বলে। সে রাজি না হলে তাকে বলে এগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে, টিসি দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হবে। সে (মুশতাক) কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়ে এখন এটাকে বিয়ে হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে।’ দশম শ্রেণির ছাত্রী থাকাকালে তিশা মুশতাকের কুনজরে পড়ে জানিয়ে ক্ষুব্ধ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে যখন আইডিয়াল স্কুলের মুগ্ধা শাখার দশম শ্রেণির ছাত্রী, তখন বিতর্ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে তার কুনজরে পড়ে। তখন থেকেই সে (মুশতাক) তাকে ফোন দিয়ে আঁকতে শুরু করে কীভাবে তিশাকে আয়ত্তে নেয়া যায়। আয়ত্তের অংশ হিসেবে তার মেয়েকে আনে আমার মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতো। মুশতাকের মেয়ের নাম তন্মিমা। তন্মিমার সঙ্গে আমার মেয়ের বন্ধুত্ব করায়। তারপর মেয়ের বান্ধবীর পেছনে টাকা খরচ করতে থাকে।’ তিশাকে কাছে পেতে মুশতাকের নানান অপকৌশল তুলে ধরে তিশার বাবা জানান, ‘মুশতাক একদিন এক ছেলেকে ভাড়া করে। ভাড়া করা ওই ছেলেকে আমার মেয়ের বয়ফ্রেন্ড বানায়। এরপর ওই ছেলেকে দিয়েই ছবি তোলায় মুশতাক। এভাবে অন্তত ১০-১২ জনের সঙ্গে আমার মেয়ের অশ্লীল ছবি তুলে সে। তারপর ওই ছবিগুলো দিয়েই তাকে ব্ল্যাকমেইল করে। বিয়ের কাবিননামায় সাক্ষর দিয়েছে মুশতাকের বাসার কাজের লোক।’ ‘মতিঝিল আইডিয়াল কলেজের রুমের মধ্যেই তিশাকে কোলে নিয়ে নাচে মুশতাক’ এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম। কলেজ অধ্যক্ষের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বলেন, এই দায়ভার কলেজের প্রিন্সিপালও এড়াতে পারবে না। একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কীভাবে এসব কাজ হয়। মুশতাক প্রিন্সিপালের ভালো বন্ধু। তাই প্রিন্সিপাল থেকে সে সহযোগিতা নেয়। তখন প্রিন্সিপাল আমার মেয়েকে ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে যায় তার রুমে। এভাবেই আমার মেয়েকে তারা ফাঁসায়।’
তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও পেলেন একমাত্র ছেলের লাশ
তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও অপহৃত একমাত্র ছেলে তাওহীদ হোসেনকে (১০) ফিরে পেলেন না মা তাসলিমা আক্তার। অপহরণের ৩৬ ঘণ্টা পরে পেলেন তার লাশ। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তাওহীদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সে আব্দুল্লাহপুর রসুলপুর মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। জানা গেছে, শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় আব্দুল্লাহপুর মধ্যপাড়া থেকে তাওহীদকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা তাওহীদদের বাসার পাশে একটি মোবাইল ফেলে রেখে যায়। সেই মোবাইলে কল করে তারা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে ছেলেকে ফিরে পেতে তিন লাখ টাকা দিতে রাজি হন তাওহীদের মা। তবে তারা ১০ লাখের কমে তাকে ফিরিয়ে দেবে না বলে জানায়। পরে অপহরণকারীরা তাসলিমা আক্তারকে তিন লাখ টাকা নিয়ে মাওয়া সড়কের রাজেন্দ্রপুর ওভার ব্রিজের ওপরে একটি পিলারের নিচে রেখে যেতে বলে।  আরও জানা গেছে, এই ঘটনা র‍্যাবকে জানানো হয়। এরপর ওভার ব্রিজের নিচ থেকে টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব সদস্যরা। পরে মকবুল র‍্যাবকে জানান, তাওহীদের লাশ আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে রাখা আছে। সোমবার ভোরে রানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে তাওহীদের লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। গ্রেপ্তার মকবুল হোসেনের বাড়ি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার রোহিতপুর ইউনিয়নের লাকিরচর এলাকায়। তিনি কয়েকমাস ধরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর মধ্যপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তাওহীদ হোসেনের মামা মো. মহসিন হোসেন বলেন, আমার বোনের স্বামী উজ্জ্বল হোসেন সৌদি প্রবাসী হওয়ায় আমার ভাগনেকে টার্গেট করে অপহরণকারীরা। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহাবুব রহমান বলেন, তাওহীদের লাশ উদ্ধার করেছে র‍্যাব সদস্যরা। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 
সাংবাদিক আশফাকের বাসার গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় যত প্রশ্ন
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শাজাহান রোডের একটি বাসার নিচতলার গ্যারেজের ওপর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশু গৃহকর্মী প্রীতি উড়ানকে (১৫) উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান বাসার কেয়ারটেকার। ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে।  হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ওই ভবনের অষ্টম তলার একটি ফ্ল্যাটে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসা। ঘটনার পরে বাসার সবাইকে আটক করা হলেও ১২ ঘণ্টারও পরে এজাহার প্রস্তুত করে আশফাক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার আদালতে হাজির করা হলে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। ঘটনার সময় থেকে এখন পর্যন্ত এই মৃত্যুকে ঘিরে যত প্রশ্ন তার জবাব মেলে না। মানবাধিকারকর্মী ও আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, মামলা যে ধারায় হয়েছে সেটি সঠিক না। এবং অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। ছয় মাস আগেও সাত বছরের এক শিশু গৃহকর্মী বাসা থেকে লাফ দিয়েছিল। রক্তাক্ত জখম হলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ফেরদৌসি নামের সেই শিশুটি। সে ঘটনায় মামলাও হয়েছিল। ছয় মাস পেরোতে না পেরোতেই আবারও এক শিশু গৃহকর্মী একই বাসা থেকে লাফ দেয়। এবার আর ভাগ্য সহায় হয়নি। আট তলা থেকে লাফ দিয়ে এক তলার গ্যারেজের ছাদের ওপর পড়ে ১৫ বছর বয়সী প্রীতি উড়ান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রশ্ন হলো ছয় মাস আগে যে বারান্দা থেকে একজন পড়ে গেল, সেই বারান্দায় গ্রিল লাগানোর প্রয়োজন আশফাক বোধ করেছিলেন কিনা। আগের ঘটনার পরে আবারও পুনরাবৃত্তি হয় যদি একই ঘটনার এবং কারোর মৃত্যুর কারণ হয় তারপরেও কীভাবে সেটা কেবল অবহেলা হয়ে থাকে।  প্রীতি উড়ানের বাবার অভিযোগ, অভাবের কারণে দুই বছর আগে মিন্টু নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে সাংবাদিক আশফাকুল হকের বাসায় ছোট মেয়েকে গৃহকর্মীর কাজে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আশফাকুল হকের পরিবার দুই বছরেও মেয়েকে তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেয়নি। মাসে দুই-একবার গৃহকর্তার মোবাইলে যোগাযোগ করে কথা বলিয়ে দিতো তারা। প্রশ্ন উঠছে, সচেতন সাংবাদিক তার বাসায় শিশুকে গৃহকর্মে নিয়োগ দিতে পারে কিনা। ২০২২ সালে ‘আইএলও কনভেনশন-১৩৮’ অনুসমর্থনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়৷বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ওই সনদে শিশুশ্রমের ন্যূনতম বয়স সংক্রান্ত শর্তগুলো তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে তিনটা জিনিস আছে। একটা হলো জেনারেল ভিউটা, যেহেতু বেসিক এডুকেশন করতে ১৫ বছর লাগে সুতরাং ১৫ বছরের কম কোনো বাচ্চাকে কাজে লাগানো যাবে না। ‘দুই নম্বরে আরেকটু রিল্যাক্স করেছে, তবে কোনো দেশের যদি আর্থসামাজিক অবস্থা বিশেষ বিবেচনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কমাতে চায় তাহলে ১৪ বছর পর্যন্ত কমানো যাবে, এর ওপর না। ‘তিন নম্বরে বলেছে, এই যে ১৪ হোক বা ১৫ই হোক এই শিশুদের কোনো অবস্থায়ই কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ করা যাবে না।’ সনদের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যেসব কাজে তাদের এক্সিডেন্ট হওয়ার বা জীবন নাশের সম্ভাবনা আছে সেই সব কাজে কোনোভাবেই এই সব শিশুদেরকে ব্যবহার করা যাবে না।’ এদিকে তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা বলেন, বারবার একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার কথা নয়। ওই বাসায় কেউ না কেউ গৃহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করতেন বলে তারা ধারণা করছেন। এ কারণে গৃহকর্মীরা বাসায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। বাসা থেকে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার গৃহকর্মীর নিচে পড়া সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করার চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, প্রীতিকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে এর বিচার চেয়েছে পরিবার ও এলাকাবাসী। এ উপলক্ষে শনিবার সকালে মিরতিংগা চা-বাগানে শ্রমিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল, মিরতিংগা চা-বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মন্টু অলমিক প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানান। মানববন্ধনে চা-বাগানের শ্রমিকসহ স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেন।
জেল থেকে বেরিয়ে কিশোর গ্যাং গড়ে তোলেন জুলফিকার
‘দে ধাক্কা’ ও ‘ডায়মন্ড’ নামে দুটি কিশোর গ্যাং তৈরি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন জুলফিকার আলী ও তার সহযোগীরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. জুলফিকার আলী (৩৭), তার অন্যতম সহযোগী মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), মো. শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮) ও মো. সুরুজ মিয়া (৩৯)। তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, দুটি চাপাতি ও সাতটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব জানায়, জুলফিকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। কিছুদিন ওয়ার্কশপে কাজ করার পর নারায়ণগঞ্জে পিকআপ ভ্যানে হেলপারের কাজ শুরু করেন। এ অবস্থায় মালামাল চুরির দায়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা হয়। এরপর তিনি পালিয়ে সৌদি চলে যান। এরপর ২০২১ সালে দেশে আসার পর গ্রেপ্তার হয়ে দুই মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। জেলে বসে হারুনের সঙ্গে জুলফিকারের সখ্যতা গড়ে ওঠে।  জুলফিকার জামিনে মুক্ত হয়ে হারুনকে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টিউবওয়েলের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে কৃষ্ণ শামছুদ্দিন ও সুরুজসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ২০২২ সালে জুলফিকার ‘ডায়মন্ড’ নামে একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেন। পরে ‘দে ধাক্কা’ নামে আরও একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেন তিনি। কিশোর গ্যাং বাহিনী দুটিকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করতে থাকেন জুলফিকার। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্যাং দুটির সদস্যরা নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতেন। তাদের নির্দেশনা দেওয়াসহ দেশি-বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ করতেন জুলফিকার। কিশোর গ্যাং দুটির সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ছিনতাই, মাদক, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানান অপরাধ করতেন। এ ছাড়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন।