• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
১৮৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একই পরিবারের ৭ জনের নামে মামলা
বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গণঅধিকারের তারেকসহ গ্রেপ্তার ৪
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে বিটিভি ভবন, মেট্রোরেলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব মো. তারেক রহমানসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। রাজধানীর মিরপুর ও বাড্ডা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তাররা হলেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান (৩১) ও তার সহযোগী মো. সজল মিয়া (২৪), আল ফয়সাল রকি (২৭) ও মো. আরিফুল ইসলাম (৩০)। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, গত ৬ জুন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, সংঘর্ষ ও নাশকতার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‌্যাব সড়ক ও আকাশ পথে টহল কার্যক্রম পরিচালনাসহ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ জুলাই র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর একটি দল রাজধানীর মিরপুর ও বাড্ডা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিটিভি ভবন, মেট্রোরেলসহ রাজধানীর রামপুরা, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় জড়িত গণঅধিকার পরিষদের যুগ্মা সদস্য সচিব মো. তারেক রহমানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি শর্টগানের খালি খোসা, ২টি ল্যাপটপ, ৩টি সিপিইউ, ১টি হার্ড ডিক্স, ১টি মডেম, ১টি এটিএমকার্ড, ৪টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১১ হাজার ৮৮৭ টাকা উদ্ধার করা হয়।  মুনীম ফেরদৌস জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন।  র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তাররা সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হামলা, নাশকতা ও অগ্নিসংযোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী চক্রের নির্দেশনায় তারা এই হামলা ও নাশকতায় অংশ নেন।  মূলত গ্রেপ্তার তারেক রহমানের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে রাজধানীর বিটিভি ভবনসহ, মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশনসহ রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুরে বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী কুচক্রী মহলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন তারেক। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুনীম ফেরদৌস আরও বলেন, গ্রেপ্তার তারেক রহমান কুমিল্লার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। সে মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ী। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ গঠিত হলে তাকে যুগ্ম সদস্য সচিব নির্বাচিত করা হয়। সে যুব অধিকার পরিষদের সঙ্গেও যুক্ত ছিল। পরবর্তীতে গণ অধিকার পরিষদ গঠন হলে তাকে সংগঠনটির যুগ্ম সদস্য সচিব পদ প্রদান করা হয়। ২০২১ সালে গণ অধিকার পরিষদ দুই ভাগে বিভক্ত হলে সে একটি অংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে তারেক রহমান সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতো। হাইকোর্ট কর্তৃক কোটা বাতিল বিষয়ক রায়ের পর ২০২৪ সালের জুন মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে তারেক রহমান গণ অধিকার পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে এবং আন্দোলনকে উসকে দিয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তার সমমনাদের নিয়ে বিভিন্নভাবে অপচেষ্টা চালায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নাম করে তারেক রহমান দেশের জনসাধারণ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন। তিনি বলেন, দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী কুচক্রী মহলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন তারেক। এছাড়াও তিনি রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন ইউটিউব ও ফেসবুক পেইজসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তীতে সময়ে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বিভিন্ন গুজবসহ বিভিন্ন কার্যকলাপ পরিচালনা করতেন। সরকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলেও তিনি রাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠীর নির্দেশনায় সরকার পতনের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিটিভি ভবনসহ রামপুরা ও বাড্ডায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালান। গ্রেপ্তার সজল সম্পর্কে র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর উত্তরার একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। সে অনলাইনে মধুর ব্যবসা করতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার তারেকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে সে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদে যুক্ত হয় এবং মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদকপ্রাপ্ত হয়। গ্রেপ্তার তারেকের নির্দেশনায় সজল কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হয়ে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিভিন্ন ভবনে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেয় এবং বিটিভি ভবনসহ রামপুরা ও বাড্ডার বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণ করে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় দুটি মামলা রয়েছে এবং ওই মামলায় সে এক বছর কারাভোগ করেছে।  গ্রেপ্তার ফয়সাল সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ফয়সাল রাজধানীর মহানগর প্রজেক্টের একটি কলেজে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। পাশাপাশি একটি পার্ট টাইম চাকরি করতো। ২০২১ সালে সে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদে যুক্ত হলে গ্রেপ্তার তারেকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০২২ সালে সে সংগঠনের মহানগর উত্তরের সভাপতি পদ লাভ করে। সে গ্রেপ্তার তারেকের নির্দেশনায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা চালায়। সে রামপুরা এবং বাড্ডায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয়।  লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌসের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার আরিফুল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। পরবর্তীতে সে রাজধানীর লালমাটিয়া মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করে। দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেপ্তার তারেকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। গ্রেপ্তার তারেকের নির্দেশনায় আরিফুল মিরপুর-১০ কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয়।  
আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার / ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণসহ ৭ জন রিমান্ডে
দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ‘৪০০ কোটির পিয়ন’ জাহাঙ্গীর
জামিন পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার
আনার হত্যা / জবানবন্দি প্রত্যাহারের পর মামলার ভবিষ্যৎ কী, জানালেন ডিবিপ্রধান
উত্তরা বিআরটিএতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ অভিযানে ৪ দালালের কারাদণ্ড
উত্তরা বিআরটিএতে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ৪ দালালকে কারাদণ্ড দেয়েছে বিআরটিএ। গ্রাহকেদের হয়রানি দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উত্তরা ডিয়াবাড়িতে অবস্থিত ঢাকা মেট্রো সার্কেল-৩ কার্যালয়কে দালালমুক্ত করতে বুধবার (১০ জুলাই) অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় অবৈধ দালালিতে জড়িত থাকার দায়ে দালাল চক্রের ৪ জনকে আটক করে বিভিন্ন দণ্ডাদেশ প্রদান জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।  ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান পরিচালনা করেন বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনিসুজ্জামান।  আটককৃতরা হলেন- শান্ত গাজী (২০), আলমগীর হোসেন( ৫০), জহির (৪৮) ও রতন আলী। তারা প্রত্যেকেই আদালতের কাছে তাদের দোষ স্বীকার করেন। তাদের মধ্যে একজনকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অন্য তিনজনকে এক মাসের বিনাশ্রম  দণ্ডাদেশ প্রদান করেন বিআরটিএ ভ্রমমাণ আদালত।  অভিযান চলাকালীন প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়।  এ বিষয়ে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুজ্জামান বলেন, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বিআরটিএ অফিসে আগত গ্রাহকদের কাছ থেকে দ্রুত কাজ করিয়ে দেওয়ার নাম করে কাগজপত্র টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়। তাই দালাল ও প্রতারকদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে এবং  ভবিষ্যতেও থাকবে। তিনি গ্রাহকদের উদ্দেশে বলেন, বিআরটিএ আগত গ্রাহকগণ সরাসরি বিআরটিএর কর্মকর্তা কর্মচারীর কাছে আসলে দ্রুত সেবা পাবেন।  
প্রশ্নফাঁসে আরও ৮ জন শনাক্ত, জড়িত ‘হাইপ্রোফাইল’ কর্মকর্তারাও
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ক্যাডার, নন-ক্যাডার পরীক্ষাসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) সৈয়দ আবেদ আলী। তার সঙ্গে জড়িত প্রশ্নফাঁসের বড় একটি চক্র।মেডিকেল ও নার্সিংয়ের প্রশ্নপত্রও ফাঁস করেছিল। আবেদ আলীর সঙ্গে প্রশ্নফাঁসে জড়িত একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে ১০ কোটি টাকার চেকসহ মঙ্গলবার আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের আরও আটজন শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে ও ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেনের জামিন গতকাল নামঞ্জুর করেন আদালত।  তদন্তকারীরা বলছেন, এ পর্যন্ত পিএসসির যত প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, সেগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন ভেতরের কর্মকর্তারা। সরাসরি প্রশ্ন প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত না থেকেও কীভাবে তারা প্রশ্ন সংগ্রহ করেছেন, তা ভাবিয়ে তুলেছে। তাদের।  গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, ফাঁস করা প্রশ্ন গণহারে না ছেড়ে তা বিক্রি করতে পিএসসির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মাধ্যমে একটি চক্র গড়া হয়।  এরা নির্বাচিত প্রার্থীদের কাছে ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন দিতেন।  প্রশ্নগুলো যেন বাইরে না যায় সে জন্য বাসা ভাড়া করে প্রার্থীদের তিন-চার দিন ধরে প্রশ্নোত্তর মুখস্থ করিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠাতেন।  উত্তর প্রস্তুত করতে সাহায্য নিতেন বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদেরও। তবে পুরো ঘটনার সঙ্গে পিএসসির কর্মকর্তারা জড়াতেন না।  তারা শুধু প্রশ্নের সেটগুলো পিএসসি থেকে বের করতেন।  সৈয়দ আবেদ আলী জড়িত ছিলেন নগদ লেনদেন ও চাকরি প্রার্থী সংগ্রহের কাজে। পিএসসির সাবেক মেম্বার মাহফুজুর রহমান ছিলেন গাড়ি চালক আবেদ আলী গুরু। পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন। গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন তারা। চক্রের সদস্যরা ওই পরীক্ষার আগের রাতে তাদের চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের বাসায় রেখে ওই প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর দিয়ে দেন। তদন্তে এখন পর্যন্ত আরও অনেকের নাম সামনে এসেছে। হাইপ্রোফাইল কিছু নামও পাওয়া গেছে। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।  একই সঙ্গে সৈয়দ আবেদ আলীর হাত ধরে যারা বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। ২০১০ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে আবেদ আলীর সম্পৃক্ততা পায় একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়, তিনি স্বীকারও করেছিলেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসে কারা জড়িত, অন্যান্য প্রশ্নপত্র কিভাবে ফাঁস করা হয় সেই তথ্যও তিনি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে দেন। ওই সময় এই ঘটনায় আবেদ আলীসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন বিষয়টি পিএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়। তখন আবেদ আলী পিএসসির চেয়ারম্যানের কাছে অঙ্গীকার করেন যে, আর কখনো প্রশ্নফাঁসের কাজটি করবেন না। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই সময়ের চেয়ারম্যান পিএসসির আবেদ আলীসহ যে কয়জন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন তাদের চাকরিচ্যুত করেন।  ২০১১ সালে শেরে বাংলা নগর থানায় আবেদ আলীসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বিজি প্রেসেরও দুইজন কর্মকর্তা আসামি ছিলেন। ২০১৪ সালে বিচার কার্যক্রম শুরু হলে তখন মাত্র দুই জন সাক্ষীর জবানবন্দির গ্রহণ করা হয়। বর্তমান মামলাটি বিচারাধীন।  অর্থাৎ আবেদ আলীর হাত যে অনেক বড় সেটা সবাই বুঝতে পারছেন, যেখানে মামলাও চলছে ধীর গতিতে। চাকরিচ্যুত হওয়ার পর আবেদ আলী প্রশ্নফাঁসের কাজটি পুরাদমে শুরু করেন। কয়েক শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যান। তার সঙ্গে বড় একটি গ্রুপ জড়িত। ওই সময় ভর্তি পরীক্ষার এই প্রশ্নগুলো বিজিপ্রেসের যারা টাইপ করতো, সেখানে ছিল আবেদ আলীর লোক। তারা প্রশ্নগুলো মুখস্থ করে ফেলতো। তারা সবাই মিলে প্রশ্নফাঁস করতো। তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে পাঠাতো। সেই কোচিং সেন্টারগুলোও শনাক্ত করে গোয়েন্দা সংস্থা। তবে এদের পেছনে নেপথ্যের শক্তি এতো শক্তিশালী ছিল যে, তাদের কিছুই করা যায়নি।  বিজিপ্রেসের পক্ষ থেকে ওই সময় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রশ্নফাঁস বন্ধের উপায় কি? তখন এ থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, যেহেতু বিজি প্রেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই এখানে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৬১ জন পুলিশ সদস্য রাখা যেতে পারে। তারা নিরাপত্তার কাজটি করবে। কিন্তু পরবর্তীতে সেই প্রস্তাব আর বাস্তবায়ন হয়নি। পিএসসির মাধ্যমে মেধাসম্পন্ন অফিসার চাকরিতে প্রবেশ করে। মেধাবিরা উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসনে যাবে। কিন্তু ফাঁস হওয়া প্রশ্নে কেউ ডাক্তার হলে, সে কি ধরনের ডাক্তার হবে, তা বলার উপেক্ষা রাখে না। প্রশাসনে গেলে ভালো প্রশাসক হবে না। যে শিক্ষকতায় গেছে, সে ভালো শিক্ষক হবে না। স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মূলে থাকা মাহফুজুরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে দুই অপরাধ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন।  জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় পিএসসির অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এসব ঘটনায় আরও যেসব কর্মকর্তা জড়িত, তাঁদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে বলেও জানতে পেরেছি।’  এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গত সোমবার সিআইডি ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে।  তাদের মধ্যে ছয়জনই পিএসসিতে কর্মরত।  তাদের মধ্যে উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও রয়েছেন।  তারা এক যুগে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।     
যে কারণে ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার হুমকি দেন সোহাগ
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে হত্যা নয়, প্রতারণার মাধ্যমে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল গ্রেপ্তার প্রতারক সোহাগ মিয়ার উদ্দেশ্য। বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তার সোহাগ মিয়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হিংগাজিয়া (মোবারকপুর) গ্রামের মন্তাজ মিয়ার ছেলে। পুলিশ সুপার জানান, সোহাগ চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) খুদেবার্তায় জানান, ব্যারিস্টার সুমনের জীবন ঝুঁকিতে, তাকে হত্যা করা হতে পারে। এ বিষয়ে ২৮ জুন চুনারুঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে হবিগঞ্জ পুলিশ ও ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সমন্বয়ে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। সোহাগের প্রতারণতার শিকার তারই এক বন্ধুর কাছে তার বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। এরপর মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাতে সোহাগ মিয়াকে সিলেট শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহাগের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মো. আক্তার হোসেন জানান, সোহাগ মোবাইলফোন নয়, হোয়াটসঅ্যাপে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। সে ৬-৭ বছর মধ্যপ্রাচ্যে থেকে দেশে আসেন, কিন্তু কিছুই করতে পারেননি। এরপর প্রতারক সোহাগ বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হন। অবশেষে অভাব-অনটন দূর করতে এই প্রতারণার পথ বেছে নেন। পুলিশ সুপার আরও জানান, মোবাইলে ভারতীয় একটি প্রতারণার গল্প দেখে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রতারণার কৌশল শেখেন। তারই অংশ হিসেবে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। সোহাগের কাছে ব্যারিস্টার সুমনের ফোন নম্বর না থাকায় ওসিকে খুদেবার্তা পাঠান। তার উদ্দেশ্য ছিল সংসদ সদস্য হুমকির কথা শুনলেই হয়তো বলবেন, কারা হত্যা করতে চায় তাদের নাম বলো। তখন তিনি টাকা চাইবেন। কিন্তু তার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। উল্টো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে মামলা / হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক কারাগারে
রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১০ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেনের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন আমিন আহমেদ। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। জামিনের বিরোধিতা করেন দুদক আইনজীবী। শুনানি শেষে বিকেল ৩টার দিকে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।  ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট বাজারের ৩০.২৫ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা গোপন করার চেষ্টা এবং সাড়ে আট কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক নুরুল হুদা।  মামলার আসামিরা হলেন, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, বাচ্চুর ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ ছাবিদ হাই অনিক এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ। মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, জমি বিক্রয় ও প্রকৃত মূল্য গোপন করতে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে সহযোগিতা করেছেন আমিন আহমেদ। তিনি ১৩৪টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও নগদে ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে, তাদের আয়কর নথিতে জমির জন্য মূল্য প্রদর্শন করেছেন ২৪ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৪ টাকা। অর্থাৎ শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর আয়-ব্যয় এবং প্রকৃত সম্পদের মধ্যে কোনো সামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়নি। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১২ সালের ৮ জুলাই ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার ৬ নম্বর প্লটের ৩০.২৫ কাঠা জমি ১১০ কোটি টাকায় ক্রয়ের জন্য আসামি আমিন আহমেদের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিপত্র করেন আরেক আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু। চুক্তি করা জমির মূল্য ১১০ কোটি টাকা এবং চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের সময় পরিশোধিত অর্থ ১০ কোটি টাকা। চুক্তিপত্র অনুযায়ী দুটি দলিলে ভূমির দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়, যার মধ্যে ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর প্রথম দলিলে ১৮ কাঠা জমির দাম নয় কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে গ্রহীতা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, শেখ শাহরিয়ার পান্না ও শিরিন আক্তার। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দলিলে ওই একই বছরে ১২.২৫ কাঠার দাম ছয় কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। যেখানে গ্রহীতা হলেন শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাই। অর্থাৎ জমির মোট রেজিস্ট্রেশন মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশনে মূল্য ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম দেখিয়ে অবৈধ আয় গোপন করার চেষ্টা করেন আসামিরা। এ ছাড়া জমির মূল্য কম দেখিয়ে সরকারের আট কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার রাজস্বও ফাঁকি দিয়েছেন। 
সব ক্যাডারেই আছে আবেদ আলীর লোক, তালিকা হচ্ছে তাদের
লাখ লাখ স্বপ্নবাজদের স্বপ্ন বিক্রি করে কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়া সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এতে কাদেরকে তিনি বিসিএস ক্যাডার বানিয়েছেন সব বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সব ক্যাডারের আছে তার হাত ধরে সাফল্য পাওয়া লোক।  মঙ্গলবার (৯ জুলাই) থেকে আবেদ আলীর হাত ধরে ক্যাডার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে একটি সরকারি সংস্থা। জানা গেছে, অনেক আগে থেকেই পিএসসির প্রশ্নফাঁস শুরু হলেও গত ২৪তম ব্যাচে এটি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। এরপর ২৫তম ব্যাচে প্রশ্নফাঁস বিষয়টি ধরা পড়ে। সে সময় পিএসসির মেম্বার ছিলেন মাহফুজুর রহমান। বর্তমানে দুর্নীতির মামলায় তিনি ১৩ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত। সে সময় মাহফুজুর রহমানের ড্রাইভার ছিলেন সৈয়দ আবেদ আলী। আবেদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। গ্রুপটির কাজ ছিল কাস্টমার যোগাড় করা। গ্রুপটি পরিচালনা করতেন মাহফুজুর রহমান। ঢাকার গুলশানের একটি এলাকা এবং নীলফামারির কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ‘ভিন্ন জগৎ’ নামক দুই স্থানে টাকা দেওয়া কাস্টমারদের নিয়ে যাওয়া হতো। পরীক্ষার একদিন আগে সেখানেই তাদেরকে প্রশ্ন সরবরাহ করা হতো, রিসোর্টগুলোতে পড়ার ব্যবস্থাও রাখা ছিল। মাহফুজের কাছে দলীয় নেতাদের তালিকাও আসতো। সেই তালিকার পরীক্ষার্থীদের দেওয়া টাকা থেকে নেতাদেরকেও ভাগ দিতেন তিনি। এভাবেই হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন মাহফুজ। স্বাস্থ্যের বহুল আলোচিত মিঠু ঠিকাদারও তার চক্রের সদস্য ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী জানিয়েছেন, তিনি শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারে রয়েছে আবেদের ডুপ্লেক্স বাড়ি। ঢাকায় রয়েছে একটি ছয়তলা বাড়ি, তিনটি ফ্ল্যাট ও একটি গাড়ি। আবেদ আলী স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, মাহফুজুর রহমানের ফাঁস করা প্রশ্নের মাধ্যমে ঠিক কতজন ক্যাডার হয়েছেন তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে সব ধরণের বিসিএস ক্যাডার বানিয়েছেন তিনি। তার হাত ধরে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরসহ চার দলীয় জোটের দলীয় নেতাকর্মীরা বেশি বিসিএস ক্যাডারে হয়েছেন। তবে দলের পরিচয় দিলেও টাকা দেওয়া লেগেছে সবার। শত শত কোটি টাকা একটি ব্যাচ থেকে কামিয়েছে তারা।  অপরাধ বিশেষজ্ঞরা জানান, আবেদ আলী যদি এতো সম্পদের মালিক হন। তবে যেসব কর্মকর্তার গাড়ি চালিয়েছেন সেসব কর্মকর্তা কত হাজার কোটি টাকার মালিক, তা আর বোঝার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে সাবেক পিএসসি মেম্বার মাহফুজুর রহমান ছিলেন হাওয়া ভবনের লোক। তার জন্য সরকারি কর্ম কমিশনে ছিল আলাদা রুমের ব্যবস্থা। সেসময় পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সকলে তাকে ভয় পেতেন। এখন সরকারি প্রায় সব পর্যায়ে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা বিরাজ করার নেপথ্যে রয়েছে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার হওয়া। তারা চাকরিতে প্রবেশ করেছে দুর্নীতির মাধ্যমে। মঙ্গলবার আবেদ আলীর আরেক সহযোগী একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে ১০ কোটি টাকার চেকসহ গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। কোন কোন কর্মকর্তা এসব টাকার ভাগ পেতেন তা তার মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। এর আগে গত ৮ জুলাই রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে সৈয়দ আবেদ আলী ও তার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান ওরফে সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের ৭ জন বিসিএসের ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার পদের ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা বলেছেন, চাকরিপ্রার্থীদের হাতে প্রশ্ন দেওয়া হতো না। পরীক্ষার আগের রাতে তাদেরকে নিরাপদ জায়গায় রাখা হতো। রাজধানীর পল্টনে একটি গোডাউনে চাকরিপ্রার্থীদের জড়ো করা হতো। সারা রাত প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করিয়ে সকালে পরীক্ষা দিতে পাঠানো হতো। রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার ৪৬ জন প্রার্থীকে তারা পল্টনের একটি গুদামে রেখে পড়িয়ে পরীক্ষা দেওয়ান। বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এই চক্রটি ২৪তম বিসিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে সর্বশেষ ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস করেছে তারা। পাশাপাশি পিএসসির অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নন ক্যাডার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও তারা ফাঁস করেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, আস্তে আস্তে আমরা অনেকের বিষয়ে তথ্য পাচ্ছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সকলকে গ্রেপ্তার করা হবে।
৩০ হাজারের রাউটার ৬ লাখ, দেড় লাখের প্রিন্টার ১৫ লাখ!
কেনাকাটায় বড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিরুদ্ধে।  প্রতিষ্ঠানটি ৩০ হাজার টাকার একেকটি রাউটার ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকায়,  ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার প্রিন্টার ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকায় এবং ৬০ হাজার টাকার কম্পিউটার ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৬২ টাকায় কিনেছে। একইভাবে ল্যাপটপ, স্লিপ প্রিন্টার, এসিসহ বিভিন্ন পণ্য বাজার দরের চেয়ে কেনা হয়েছে অনেক বেশি দামে।  এসব মালপত্র বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে সরবরাহ ও স্থাপন করেছে বিদ্যুৎ বিতরণকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি।   জানা গেছে, ‘প্রি-পেমেন্ট ই-মিটারিং ইন  ঢাকা ডিভিশন আন্ডার রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন প্রোগ্রাম (ফেইজ-১)’ নামে একটি প্রকল্পের আওতায় ১১টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জন্য এসব মালপত্র কিনেছে আরইবি। এর মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েশন গ্রুপ লিমিটেড (ডব্লিউজিএল) পাঁচটি এবং হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (এইচইএল) ছয়টি সমিতিতে মালপত্র সরবরাহ করেছে। একই প্রকল্পের আওতায় একই কাজের জন্য দুই ধাপে এসব মালপত্র কেনা হলেও প্রতিষ্ঠান দুটির দামের ক্ষেত্রে রয়েছে বিশাল পার্থক্য। দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জন্য আরইবি বিভিন্ন সময়ে যেসব মালপত্র কিনে থাকে, সেগুলোর সব তথ্য যাচাই করলে বিপুল পরিমাণ অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র উঠে আসবে বলে অভিযোগ করেছেন আরইবির অন্তত তিনজন কর্মকর্তা। ১১টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে ছয়টি সমিতিতে মালপত্র সরবরাহের মূল্যতালিকা গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। এর মধ্যে তিনটি সমিতিতে ডব্লিউজিএল ৫০টি এইচপি ব্র্যান্ডের ডেস্কটপ কম্পিউটার (কোর আই ফাইভ) সরবরাহ করেছে। প্রতিটি কম্পিউটারের দাম ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৬২ টাকা হিসাবে মোট ২ কোটি ৮৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।  অথচ বাজারে ওই মানের একটি কম্পিউটারের দাম ৬০-৬৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে একই প্রকল্পে এইচইএল তিনটি সমিতিতে ৪০টি একই ধরনের কম্পিউটার সরবরাহ করেছে মাত্র ৫৭ হাজার টাকা করে।  যার মোট মূল্য ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এদিকে, বিল পরিশোধের পর গ্রাহককে রসিদ দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি প্রিন্টার কিনেছে আরইবি। এর মধ্যে ডব্লিউজিএল তিনটি সমিতিতে ৬১টি প্রিন্টার সরবরাহ করেছে প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। প্রতিটি প্রিন্টারের দাম পড়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৯ টাকা। অথচ বাজারে মানভেদে এ ধরনের প্রিন্টারের দাম ১৫ হাজার থেকে ৩২ হাজার টাকা। তিনটি সমিতিতে ৪০টি প্রিন্টার সরবরাহ করেছে এইচইএল। তাদের প্রতিটি স্লিপ প্রিন্টারের দাম মাত্র ১৬ হাজার ৩৭০ টাকা।  ২৫টি লেজার প্রিন্টার সরবরাহ করেছে ডব্লিউজিএল। প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। যার বাজারমূল্য মানভেদে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অন্যদিকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা করে ২০টি লেজার প্রিন্টার সরবরাহ করেছে এইচইএল। ২৫টি নেটওয়ার্ক রাউটার সরবরাহ করে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নিয়েছে ডব্লিউজিএল। প্রতিটি রাউটারের দাম পড়েছে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। একই ধরনের ২০টি রাউটার সরবরাহ করেছে এইচইএল। প্রতিটির মূল্য নিয়েছে ৩৫ হাজার ৩৯৫ টাকা। এর বাজারমূল্য মানভেদে ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা। এইচপি ব্র্যান্ডের একেকটি ল্যাপটপের দাম (কোর আই ফাইভ, ১৫ ইঞ্চি) প্রায় ৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা নিয়েছে ডব্লিউজিএল। অথচ জেনুইন অপারেটিং সিস্টেমসহ এই মানের ল্যাপটপের বাজারমূল্য ৯০-৯৫ হাজার টাকা। আর এইচইএল সরবরাহ করেছে ১ লাখ ১ হাজার ৭৬১ টাকা করে ৩৮টি ল্যাপটপ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কম্পিউটারের সঙ্গে উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেমের একটি নিবন্ধনকৃত সফটওয়্যার সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু যে ব্র্যান্ডের কম্পিউটারটি কেনা হয়েছে তাতে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনকৃত ওই সফটওয়্যার ফ্রি দিয়ে থাকে। একইভাবে স্লিপ প্রিন্টার, রাউটার এবং লেজার প্রিন্টারের সঙ্গে সফটওয়্যার কেনা বাবদ ব্যয় দেখানো হলেও বাস্তবে সেখানে যে সফটওয়্যার ব্যবহার হয়, তাও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রি সরবরাহ করে। তখন প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন আরইবির বর্তমান পরিচালক (কারিগরি) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দরপত্রের মাধ্যমে মালপত্রগুলো কেনা হয়েছে, যেখানে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা হয়েছিল। এখানে কিছু আইটেমের দাম বেশি মনে হলেও কোনো কোনো আইটেমের দাম বাজারদরের চেয়ে অনেক কম। যেমন একটা মিটার স্থাপন করতে ন্যূনতম ৩০০ টাকা দরকার। কিন্তু এখানে ঠিকাদার এই কাজটি মাত্র সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ টাকায় করেছে।  এ বিষয়ে আরইবির চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি একটা জরুরি মিটিংয়ে আছি। পরে আরইবির সদস্য (বিতরণ ও পরিচালন) দেবাশীষ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। দেবাশীষ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অন্য সেকশনের। তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।’ এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ‘আইটেম ওয়াইজ’ দর এবং গুণগত মান যাচাই করে যৌক্তিক মূল্যের ভিত্তিতে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়াই হলো দেশের আইনি বিধান। সামগ্রিকভাবে যার দর কম তাকে কাজ দিতে হবে এমন কোনো বিধান আইনে নেই। প্রকল্প পরিচালক এটা করতে পারেন না। এখন তারা নিজেদের মতো ব্যাখ্যা দিলে তো হবে না।   ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যদি এ তথ্য সঠিক হয়, তাহলে এটা পুকুর চুরি নয় বরং সাগর চুরি। পণ্যের প্রকৃত বাজার মূল্যের সঙ্গে আরইবির কেনাকাটায় যে বিশাল তারতম্য, তাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করা হয়েছে এখানে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’    
প্রশ্নফাঁসে কোটিপতি বনে লটারিতে কপাল খোলার খবর ছড়ান সোহেল
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন আবু সোলেমান মো. সোহেল (৩৫)। বেড়ে উঠেছেন কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নে বানাশুয়া গ্রামের সাধারণ এক পরিবারে। প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িত থেকে অল্পদিনেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠেন নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেওয়া এ ব্যক্তি। হঠাৎ অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার এ রহস্য হিসেবে নিজ এলাকায় গল্প ছড়িয়ে দেন, আমেরিকার এক লটারিতেই খুলেছে তার ভাগ্য। এমনকি গল্পটি এলাকাবাসীকে এমনভাবে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হন, যে সোহেলের প্রশ্নফাঁসের ব্যাপারটি সামনে আসার পর যারপরনাই অবাক তারা!   তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সোহেল সবার ছোট। সোহেলের গ্রামের সবাই জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। তবে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা নিয়ে সন্দেহ আছে সহপাঠীদের মধ্যে। তাদের দাবি, ছাত্র হিসেবে তেমন ভালো ছিলেন না সোহেল।  তার সার্টিফিকেট নিয়েও তদন্ত হওয়া দরকার। সেটাও ভুয়া হতে পারে। সোহেলের গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছে জিজ্ঞাসা করা হয় তার ব্যাপারে। তাদের প্রায় সবার মুখেই এক গল্প, শুনেছেন সোহেল আমেরিকার একটি লটারি পেয়ে কোটিপতি হয়েছেন। সেই টাকায় তিনি মিরপুরে ব্যবসা করেন।  গ্রামের কয়েকজনের কাছ থেকে জানা যায়, মাঝে মাঝে ঢাকা থেকে বাড়িতে এলেও কারো সঙ্গে তেমন মিশতেন না সোহেল। তার বড় ভাই সুজনের একটি স্বর্ণের দোকান আছে কুমিল্লা শহরের ছাতিপট্টিতে। মেজো ভাই খালেদ হোসেনেরও স্বর্ণের দোকান আছে বুড়িচং সদরে। দুই দোকানেই বিনিয়োগ আছে সোহেলের। কিছুদিন আগে তিনি বাড়ির পাশে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৬০ শতক জমিও ক্রয় করেছেন। প্রসঙ্গত, সদ্য অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির দুজন উপপরিচালক, দুজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গত রোববার ও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় তাদের।