জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অবকাশকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে চিন্ময় দাসের জন্য আগাম জামিন শুনানির অনুমতি চাওয়া হলে তা নাকচ করে দেন আদালত।
চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবীর ওকালতনামা না থাকায় আবেদন নাকচ করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মফিজুল হক ভূঁইয়া।
গত ৩১ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ফিরোজ খান নামের এক বিএনপি নেতা। পরে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আদালত সূত্র জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি আগামী বছরের ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এ মামলার অন্য দুই আসামির জামিন শুনানির কথা ছিল। তবে, আইনজীবী না আসায় সেই শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় চিন্ময়ের জামিনের আগাম শুনানির জন্য আবেদন করেন রবীন্দ্র ঘোষ নামে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
আগাম শুনানির আবেদনে বলা হয়, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন সন্ন্যাসী। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আবেদনে আরও বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত কারণে ৩ ডিসেম্বর চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, চিন্ময়ের আগাম জামিন শুনানির আবেদন করা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ কোনো ওকালতনামা দেননি তার পক্ষে মামলা লড়ার। এ ছাড়া চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মাও হাজির ছিলেন না। শুভাশীষ মামলা লড়ার জন্য রবীন্দ্র ঘোষকে লিখিত কিছু দেননি। পরে আদালত আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের আবেদন নাকচ করে দেন।
এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষ জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে চিন্ময়ের আইনজীবী ৩ ডিসেম্বর শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। এ জন্য আজ আগাম জামিন শুনানির আবেদন করা হয়। কিন্তু আইনজীবীদের বাধার মুখে আদালত তা নাকচ করে দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪০ জন। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ১০ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। ২ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর