• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয় : হাইকোর্ট
টিপু-প্রীতি হত্যা: অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।   বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রফিক উদ্দীন বাচ্চু।  এর আগে গত ৫ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার আদালতে ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, আন্ডার ওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, প্রধান সমন্বয়কারী সুমন সিকদার মুসা, শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, শামীম হোসাইন, তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, মাহবুবুর রহমান টিটু, নাসির উদ্দিন মানিক, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান, সেকান্দার শিকদার আকাশ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মাতবর, আবু সালেহ শিকদার, কিলার নাসির, ওমর ফারুক, মোহাম্মদ মারুফ খান, ইশতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইমরান হোসেন জিতু, রাকিবুর রহমান রাকিব, মোরশেদুল আলম পলাশ, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল। গত বছরের ২০ জুন ৩৩ জনের নামে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হওয়ায় পরবর্তী বিচারের জন্য এ আদালতে আসে। আসামিদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামিদের মধ্যে ১৯ জন কারাগারে, ৭ জন জামিনে ও ৭ জন পলাতক রয়েছেন।   ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। 
সেই গোল্ডেন মনিরের খালাস নিয়ে যা বললেন আদালত
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি
ট্রান্সকমের ৩ কর্মকর্তা কারাগারে
ইতিহাস গড়লেন বাঁধন
ফের মামুনুল হকের তিন মামলায় জামিন 
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ধর্ষণ মামলায় জামিন পাওয়ার পর হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক ফের তিন মামলায় জামিন পেয়েছেন। এসব মামলা রাজধানীর পল্টন ও মতিঝিল থানায় বিভিন্ন সময় হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছন মামুনুল হকের আইনজীবী আব্দুস সালাম হিমেল। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের মতিঝিল থানার এক মামলায় ও ২০২১ সালের পল্টন থানার দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন। ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। পরে ওই রিসোর্ট ভাঙচুর করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেন তার অনুসারীরা। একই বছরের ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। এ ঘটনার ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন তার সঙ্গে থাকা ওই নারী। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় জামিন না পাওয়ায় এখনই তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না। তবে এসব মামলায় জামিন পেলে তিনি কারামুক্ত হতে পারবেন। 
বেইলি রোড ট্রাজেডি / পেছাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ
রাজধানীর বেইলি রোডে কোজি কটেজ ভবনের অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানিরঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৪ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে।  বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিন এই তারিখ ধার্য করেন। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আদালত নতুন তারিখ ধার্য করেন।  আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তরের রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজাম উদ্দিন ফকির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জন প্রাণ হারান। সেইসঙ্গে আহত হন ১১ জন। নিহতদের মধ্যে ৮ শিশু ছাড়াও ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ছিলেন।এ ঘটনায় ২ মার্চ সকালে রমনা মডেল থানার এসআই মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অবহেলা জনিত হত্যা মামলাটি করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন—ভবনটির নিচতলায় থাকা চা কফির দোকান চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক (২৯), গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের মালিক আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ, ভবনের ম্যানেজার মুন্সি হামিমুল আলম বিপুল (৪০) এবং কাচ্চি ভাই নামে রেস্তোরাঁর মালিক মো. সোহেল সিরাজ (৩৪)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ভবনটির মালিক ও ম্যানেজার সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট এবং দোকান ভাড়া দেন। রেস্টুরেন্টগুলো যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া রান্নার কাজে গ্যাসের সিলিন্ডার এবং চুলা ব্যবহার করে। রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য ভবনের মালিক ও ম্যানেজারের যোগসাজশে চুমুক, কাচ্চি ভাই, মেজবানী রেস্টুরেন্ট, খানাস ফ্ল্যাগশিপ, স্ট্রিট ওভেন, জেষ্টি, হাক্কা ঢাক্কা, শেখহলি, ফয়সাল জুসবার (বার্গার), ওয়াফেলবে, তাওয়াজ, পিৎজা–ইন, ফোকো এবং এম্ব্রোশিয়া রেস্তোরাঁর মালিকেরা ভবনটির নিচ তলায় বিপুল পরিমাণে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করেন। তাঁরা জননিরাপত্তা তোয়াক্কা না করে অবহেলা, অসাবধানতা, বেপরোয়া ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ এবং বিপজ্জনকভাবে এই গ্যাস সিলিন্ডার এবং গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে আসছিলেন। এই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এই আগুনের তাপ ও প্রচণ্ড ধোঁয়া পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে বিভিন্ন ফ্লোরে থাকা রেস্টুরেন্ট ও দোকানে অবস্থানকারী লোকজন আগুনে পুড়ে ও ধোঁয়া শ্বাসনালিতে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান এবং গুরুতর আহত হন। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভবনটি আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত হলেও পরবর্তীতে মালিক ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর ব্যবসায়িক কাজে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়। ভবনটির যেসব তলায় রেস্তোরাঁ ছিল, সেগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের কোনো অনুমোদন নেয়নি। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়িও নেই। আরও বলা হয়েছে, ভবনের মালিক, ম্যানেজার ও রেস্তোরাঁর মালিকেরা ভবন ব্যবহারের যথাযথ নিয়ম মানেননি। তাঁরা আবাসিক ভবনকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ভাড়া দিয়েছেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দোকান পরিদর্শকদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ স্থাপন করে, গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার ব্যবহার করেছেন। অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনার পর ভবনের কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার জিসান, চা চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক ও শাকিল আহমেদ রিমন এবং গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ম্যানেজার হামিমুল হক বিপুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  
ফের পেছাল এস কে সিনহার অবৈধ সম্পদের মামলার প্রতিবেদন
ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফের সময় দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এ মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু, দুদক প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন ২৬ জুন দিন ধার্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আক্কাস আলী। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় ২০২২ সালের ৩১ মার্চ এস কে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১২ জুন দুই লাখ ৮০ হাজার ডলারে (৮৬ টাকা ডলার ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার টাকা) এস কে সিনহার জন্য তিনতলা একটি বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার। বাড়িটি কেনার আগে ৩০ বছরের কিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে অনন্ত সিনহা নিজের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আরও একটি বাড়ি কিনেছিলেন। পেশায় দন্ত চিকিৎসক অনন্ত প্রথম বাড়িটি ৩০ বছরের কিস্তিতে কিনলেও নিজের ভাইয়ের জন্য বাড়ি কেনেন নগদ টাকায়। মামলার বিবরণে আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত অনন্ত কুমার সিনহার নিউজার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি হিসাবে ৬০ হাজার ডলার জমা হয়। ওই একই হিসাবে অন্য একটি উৎস থেকে একই বছরের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এস কে সিনহার বাড়ি কেনার বা বিদেশে অর্থপাচারে বৈধ কোনো উৎসের সন্ধান পায়নি সংস্থাটি। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র মনে করে, এস কে সিনহা বিভিন্ন সময়ে ঘুষ হিসেবে যেসব টাকা নিয়েছেন তা বিদেশে পাচার করেছেন। দুদক তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনে। এর আগে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এরমধ্যে মানিলন্ডারিংয়ে সাত বছর এবং অর্থ আত্মসাতের মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে ১৮২ পাতার রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। এ ছাড়া এস কে সিনহার ৭৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
আপিল বিভাগে নিয়োগ পাচ্ছেন ৩ বিচারপতি
হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে। ওই তিন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি কাশিফা হোসেন ও বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম। বুধবার (২৪ এপ্রিল) আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। তিনজনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপিল বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াবে আটজনে। প্রজ্ঞাপন জারির পরে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ জানা যাবে।
রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকা চান হাইকোর্ট
হাইকোর্ট রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার তথ্য চেয়েছেন। আগামী ৬ জুনের মধ্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, নির্বাচন কমিশনসহ তিনজনকে এ তালিকা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ৩৮ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের ঈদগাহ ইউনিয়নের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে বলেছেন। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ নিয়ে এক আদেশ দেন। স্থানীয় ভোটার মো. হামিদুর রহমানের রিটের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন বিচারকরা। মো. হামিদুর রহমানের পক্ষে গতকাল ২৩ এপ্রিল রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রিটে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কতজন রোহিঙ্গা কক্সবাজারে নাগরিকত্ব পেয়ে ভোটার হয়েছেন তা খুঁজে বের করতে উচ্চপর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে রিটে ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেয়ার আর্জি জানানো হয়। সে পর্যন্ত ঘোষিত তফসিলে নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ বন্ধ বা স্থগিত রাখার আবেদন করা হয়। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন ৩৮ জন রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়। এছাড়াও একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা নাগরিক হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা / খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছাল
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ পেছালেন আদালত। আগামী ২৫ জুন শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক আলী হোসেনের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল)। কিন্তু আদালতে হাজির হয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি মুলতুবি রাখার জন্য সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২৫ জুন নতুন তারিখ ধার্য করেন। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি করেন। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।  মামলার ২৪ আসামির মধ্যে ১১ জন এরই মধ্যে মারা গেছেন। মামলার জীবিত আসামিরা হলেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গ্যাটকোর পরিচালক সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন ও বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।
বাবুলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় খুন হন মিতু
মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের জন্য জামাতা সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে দায়ী করেছেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বাবুলের মা নিজে তার কাছে স্বীকার করেছেন বাবুল মিতুকে হত্যা করেছে, তাকে যেন আমরা মাফ করে দিই। সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন শাহেদা মোশাররফ। আসামি বাবুলের সামনেই সাক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। শাশুড়ি বিস্ফোরক বিভিন্ন তথ্যের বিপরীতে একেবারে নীরব ছিলেন বাবুল। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার বড় মেয়ে মাহমুদ খানম মিতুর বিয়ে হয়। তখন বাবুল আক্তার বেকার ছিলেন। বিয়ের পর শুরু থেকেই তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, মোটামুটি ছিল। পরে বাবুল পুলিশে যোগদান করে। এরপর কক্সবাজারে এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হিসেবে বদলি হয়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। ভিন্ন নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় বাবুলকে দেখে ফেলেন মিতু: শাহেদা মোশাররফ বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠে। পাশের রুমে ওই নারীও ওঠেন। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে। তখন মিতু জানতে চায় সে এখানে কী করছে? বাবুল মিতুকে বলে, বিদেশে যাওয়ার জন্য ল্যাপটপে কাজ করছে। তাদের দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খারাপ লাগে। সে কিছুক্ষণ ওখানে ছিল। বাচ্চারা একা থাকায় মিতু তাদের রুমে চলে আসে। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেও ঘুমিয়ে পড়ে। ‘রাত ৩টার দিকে মিতুর ঘুম ভেঙে যায়। তখনও বাবুল আক্তার মিতুর রুমে ছিল না। মিতু আবার ওই নারীর রুমে গেলে তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। মিতু রুমে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি তাকে বলি, তুই চলে আয়। মিতু তখন বলে, আমার ছেলে-মেয়েরা আমাকে খারাপ মনে করবে। তাই আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি।’ এক বাসায় আলাদা রুমে থাকতেন বাবুল-মিতু : শাহেদা মোশাররফ বলেন, চট্টগ্রামে বদলি হওয়ার পর আমার মেয়ের সঙ্গে এক বাসায় থাকলেও বাবুল আলাদা রুমে থাকত। বাবুল আক্তার গভীর রাত পর্যন্ত অনেক মেয়ের সঙ্গে কথা বলত। মিতু সেগুলো আড়ি পেতে শুনত। বাবুল ২০১৪ সালে মিশনে যায়। মিশনে যাওয়ার সময় তার একটি মোবাইল বাসায় রেখে যায়। ওই মোবাইলে বাবুল আক্তারকে দেওয়া ওই ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারীর মেসেজ খুঁজে পায় মিতু। একইসঙ্গে বাবুল আক্তারকে ওই নারীর উপহার দেওয়া দুটি ইংরেজি বই পায়। মিতু মেসেজগুলো দুটি বড় পৃষ্ঠা ও দুটি ছোট পৃষ্ঠায় লিখে রাখে।’ তিন-চারবার ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ মিতুর : শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে আমার ছোট মেয়ের বাসায় মিতু ও তার ছেলেমেয়েরা বেড়াতে যায়। মিতু তখন আমাকে পৃষ্ঠায় লেখা মেসেজগুলো দেয়। এসব আমাদের বলায় বাবুল মিতুর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এরপর মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মিতু চট্টগ্রামের বাসা থেকে ঢাকায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। ২০১৬ সালের জুনের ৪ তারিখ রাতে মিতু আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে, আম্মা মাহিরের স্কুল থেকে ম্যাসেজ এসেছে। আমাকে খুব ভোরে মাহিরকে নিয়ে স্কুলে চলে যেতে হবে। ৫ জুন সকালে মিতুর বাসার পাশ থেকে একজন নারী আমাকে ফোন দেন।’ ওই নারী আমাকে বলেন, মিতু গাড়ির সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে অ্যাকসিডেন্ট করেছে। আমি বলি, মা তুমি মিতুকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাও। আমি টাকা নিয়ে আসছি। এরপর মাহির (মিতুর ছেলে) একজনের মোবাইল থেকে কল দিয়ে বলে, নানু, আম্মুকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়েছে, গুলি করেছে। তখন আমি মাহিরকে বলি, তোমার আম্মু কি কথা বলছে? মাহির বলে, না, আম্মু তাকিয়ে আছে শুধু।’ ‘আমি মাহিরকে বলি, তুমি তোমার বাবাকে কল দিয়েছ? মাহির বলে, হ্যাঁ নানু, ফোন দিয়েছি, তবে বাবা কথা বলে না। আমি মাহিরকে বলি তোমার আম্মুকে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখো। এরপর আমি, আমার ছোট দুই দেবর, জা ও ছোট মেয়েকে নিয়ে বিমানযোগে চট্টগ্রাম চলে আসি। মিতুকে যেখানে খুন করা হয়েছে, আমি সেখানে যাই। এরপর আমি মিতুর বাসায় আসি। ওখানে শুনি মিতু (লাশ) হাসপাতালে আছে।’ শাহেদা বলেন, ‘বাসায় যাওয়ার পর মাহির আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলে, নানু আমার মা চলে গেছে। মিতুকে (লাশ) এরপর হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় পুলিশ লাইনে। সেখানেই তার জানাজা হয়। পুলিশ লাইনে জানাজা হওয়ার পর আমার দুই দেবর মিতুর লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা নিয়ে যায়। আমরা ফ্লাইটে করে ঢাকা যাই। এরপর আমাদের বাড়ি মেরাদিয়াতে মিতুর জানাজা হয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।’ এসময় তিনি জানান, মিতু মারা যাওয়ার পর ছেলে মাহির বাবুল আক্তারকে তিনবার কল দিয়েছিল। কিন্তু বাবুল কল রিসিভ করলেও কোনো কথা বলেননি। শাহেদাও একবার কল দিয়েছিলেন, কিন্তু বাবুল সেটি রিসিভ করেননি। মিতুর ব্যবসার টাকায় মিতুকে খুন: শাহেদা মোশাররফ আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে থাকার সময় তিন-চারবার দেশে আসে। কিন্তু তখন একবারও বাসায় আসেনি। তখন থেকে মিতুকে মারার পরিকল্পনা করে এবং টাকা লেনদেন করে। মিশন থেকে এসে সে চায়না যায় টিম নিয়ে। চায়নাতে বসেও মিতুকে মারার চেষ্টা করেছে। পরিকল্পনা করে। শাহেদা বলেন, মিতুর একটি ব্যবসা ছিল। ব্যবসার তিন লাখ টাকা দিয়েই মিতুকে খুন করায় বাবুল। মিতু মারা যাওয়ার পর বাবুল আক্তার আমাদের বাসায় ওঠে। ছয়মাস আমাদের বাসায় ছিল সে। সেখানে বসে সে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ২৪ জুন (২০১৬) বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বাবুল সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে আসে। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, চাকরি ছাড়লে কেন? তখন সে বলে, মিতু খুন হওয়ার কারণে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। আমি তাকে বলি, তোমার চাকরি ছাড়ার বিষয় কি মিতুর খুনের বিচারের জন্য? ‘বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়। একথা বলেছে মুসার স্ত্রী। মুসার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি মিতুকে খুন করেছ ? তখন মুসা তার স্ত্রীকে বলে, আমি খুন না করলে বাবুল আক্তার আমাকে ক্রসফায়ার দেবে। বাবুল আক্তার আমাদের বলেছিল, মিতুর খুনের আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছে। আমি ক্রসফায়ার দিতে বলেছি।’ শাহেদা আরও বলেন, আসামি ওয়াসিম, আনোয়ার গ্রেপ্তার হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়, বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মুসা মিতুকে খুন করেছে। মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর সে যে বাসায় ছিল ওখানে মিলাদ পড়ানোর জন্য আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেপ্তার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিজেই মিতু হত্যার মামলা করেছে।’ ‘বাবুলের মা বলছেন তার ছেলেকে যেন মাফ করে দিই’ শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘১৫ দিন আগে বাবুল আক্তারের মা আমাকে কল দিয়ে বলেছেন, বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলেই খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দিন। আমি তাকে বলি, বাবুল মরলে কি এ কথা বলতেন?’ উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।  তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল। এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটিতেও অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। গত বছরের ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।