• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

হুমকির মুখে রাজকান্দি রেঞ্জের কুরমা বনবিট

অবাধে চলছে গাছ ও বাঁশ নিধন

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার থেকে

  ২১ জানুয়ারি ২০২০, ২১:২০
অবাধে চলছে গাছ ও বাঁশ  নিধন
কুরমা বনবিটে অসংখ্য বড় বড় সেগুন গাছের কাটা মোথা। ছবি: আরটিভি অনলাইন

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের দৃষ্টিনন্দন স্থানের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বনবিট একটি অরণ্যঘেরা গহিন দুর্গম পাহাড়। ৭ হাজার ৯৭০ একর আয়তনের সংরক্ষিত এই বনাঞ্চলটি এখন হুমকির সম্মুখীন। বনের ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে শতশত সেগুন গাছ কাটার দৃশ্য।

প্রতিদিন নির্বিচারে বাঁশ ও গাছ কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। আর এসব গাছ চুরিতে সরাসরি সহায়তা করছে বনবিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। দিনের পর দিন প্রকৃতির এরূপ ক্ষতিসাধন করা হলেও এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই।

কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন ইসলামপুরের কুরমা বনবিটের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার নয়নাভিরাম জলপ্রপাত হামহাম যেতে রাস্তার দু-পাশে একটু লক্ষ করলেই চোখে পড়বে ছোট ছোট ট্রেক। কখনো কখনো চোখে পড়বে বাঁশ দিয়ে রাস্তাটি এমনভাবে ডেকে দেয়া হয়েছে যাতে দেখে মনে হয় সামনে আর যাবার জায়গা নেই। এ ট্রেক বা পথ দিয়ে সামনে এগুলেই চোখে পড়বে অসংখ্য বড় বড় সেগুন গাছের কাটা মোথা ও ডাল।

প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি সেগুন গাছ কর্তন করা হচ্ছে। এখান থেকে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার ঘনফুট মূল্যবান গাছ ও বাঁশ। আর এতে মদদ দিচ্ছে বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। গাছগুলো কেটে পুরাতন গাছের পাতা দিয়ে বা বাঁশের পাতা দিয়ে ডেকে দেয়া হয়। কোনও কোনও সময় মোথা উপড়ে ফেলে দেয়া হয়। সবচেয়ে বেশি গাছ চুরি হচ্ছে ইরানি টিলা,পাথর টিলা, সিতাব, বন্দরজানিয়া, মাস্টার জানিয়া, মোল্লার জানিয়া ও তৈলং বস্তি এলাকায়। এভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার বাঁশ ও সেগুন গাছ কাটার ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য। এ বনজসম্পদ ধ্বংসের ফলে বিরাট পরিবর্তনসূচক হয়ে দাঁড়িয়েছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা।

পর্যটক ও এলাকাবাসী বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা দিয়ে অবাধে চুরি হচ্ছে সেগুন গাছ ও বাঁশ। এগুলো রোধ না করলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা যাবে না। বনকে বাঁচিয়ে রাখলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধ করা যাবে।

তবে, এমন কোনও অনিয়ম নেই দাবি করে রাজকান্ধি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবু তাহের বলেন, আমার বিট অফিসার সচেতন রয়েছে। এছাড়া আমিও সেখানে নিয়মিত যায়। গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, আগে হয়েছে, এখন এতটা চুরি নেই! বনবিভাগের পাহাড়াটা বেড়েছে। আর স্থানীয় জনসাধারণ অনেকটা সচেতন হয়েছে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন, এই জেলা বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি’র নিজ এলাকা। তিনি সম্প্রতি ভিজিট করে বলেছেন, গাছের একটি পাতাও যেন কাটা না হয়। আর বন ও পরিবেশ মন্ত্রী এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেন। আর অবৈধভাবে গাছ কাটা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh