ঈদের কেনাকাটায় নারীরা ছুটছেন প্রসাধনীর দোকানে (ভিডিও)
যেকোনো উৎসবে নিজেকে পরিপাটি রূপ দিতে পছন্দ করেন নারীরা। তাই জামা-জুতার পাশাপাশি চাই প্রসাধনীও। ঈদেও তার ব্যতিক্রম হয় না। তাই বিভিন্ন বয়সী নারীরা ছুটছেন কসমেটিকসের দোকানগুলোতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জামা ও জুতার সাথে ম্যাচিং করে লিপস্টিক, নেইলপলিস আর মেকাপের অন্যান্য অনুষঙ্গ কিনতে নারীদের প্রসাধনী দোকানে দেখা গেছে। নামিদামি মার্কেট, সুপারশপ থেকে শুরু করে ফুটপাতেও পসরা সাজিয়ে চলে প্রসাধনী বেচাকেনা।
এদিকে করোনার স্থবির সময়কে কাটিয়ে ভালো বিক্রি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা। তবে ঈদে সব ধরনের পণ্যেরই দাম বৃদ্ধির অভিযোগ ক্রেতাদের।
বিক্রেতারা জানান, সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে পার্লার আইটেম থেকে শুরু করে রেখেছেন সব ধরনের মেকাপের আইটেম।
তবে ঈদকে কেন্দ্র বাজারে সয়লাব চকবাজারের নকল প্রসাধনী।
মন্তব্য করুন
নাজুক ট্রাফিক ব্যবস্থায় বছরে ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি (ভিডিও)
নাজুক ট্রাফিক ব্যবস্থা, অনিয়ন্ত্রিত যান, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তা দখলসহ নানা করণে নিয়ন্ত্রণহীন রাজধানীর যানজট। এর সাথে প্রতিদিন বাড়ছে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা। বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর এখন ঢাকা। এতে রাজধানীতে প্রতিদিন ৮০ লাখের বেশি কর্ম ঘণ্টা নষ্ট হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। সব মিলে প্রতিদিনের ক্ষতি ১৫২ কোটি টাকার বেশী। আর বছরে তা ৫৫ হাজার কোটির বেশি।
তবে আশার আলো দেখাচ্ছে মেট্রোরেল। সবগুলো রুট চালু হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
চারদিক স্থবির, নড়ছে না যানবাহনের চাকা, ট্রাফিক পুলিশের প্রাণান্তকর চেষ্টা। তবে সবই যেন ব্যর্থ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকাই যেন রাজধানীবাসির নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহরের রেকর্ড গড়েছে রাজধানী ঢাকা। যানজট নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও বুয়েটের গবেষণা বলছে, ২০২২ সালে রাজধানীর সড়কে যানবাহনের গড় গতি নেমেছ ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারে।
অপ্রতুল ও সরু রাস্তাঘাটের কারণে যানজট বাড়ছে। সাথে দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থা, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তা ও ফুটপাথ দখল, বিশৃঙ্খল যান চলাচল পরিস্থিকে আরও নাজুক করেছে।
বুয়েটের দুর্ঘটনা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী, যানজটের কারণে রাজধানীতে প্রতিদিন ৮০ লাখের বেশি কর্ম-ঘণ্টা নষ্ট হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। সব মিলে প্রতিদিনের ক্ষতি ১৫২ কোটি টাকার বেশী। যানজটের কারণে বছরে জিডিপির ক্ষতি ২.৯ শতাংশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, গত ১২ বছরে আমার ঢাকায় অনেক অবকাঠামো তৈরি করে ফেলেছি। এর মধ্যে ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে। মেট্রোও চালু করে ফেলেছি কিন্তু যানজটের যে পেরেনিয়াল পরিস্থিতি তা থেকে বের হতে পারিনি। আমরা একটা বৃত্তের মধ্যে পড়ে গেছি। গবেষণা বলছে ২০১৭ সালে যানজটে
প্রতিদিন ১০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতো, তা এখন দেড়শ কোটিতে ঠেকেছে। একদিকে বিনিয়োগ বাড়ছে অন্যদিকে যানজটের কারণে গতি কমছে। যানজট নিরসনে ১৮টি সংস্থা থাকলেও তারা আশার আলো দেখাতে পারছে না।
ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদি হাসান বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি সড়কের প্রায় ৬৪ শতাংশ জায়গা দখল করে রাখে। মানে একটি গাড়ি একজন মানুষ। এসব মানুষকে আমরা যদি মেট্রো মাস ও মেট্রো ট্রেনে শিফট করতে পারি, তাহলেই আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার সুফল পাব।
তবে যানজটের নগরীতে আশার আলো দেখাচ্ছে মেট্রোরেল। আরও পাঁচটি রুট চালু হলে যানজট কমবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
তবে অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, গণপরিবহনকে আমরা যদি ঢেলে সাজাতে না পারি তবে মেট্রো দিয়ে ঢাকা শহরে যানজট নিরসন করা যাবে না। ২০৩৫ সাল নাগাদ আমরা যদি পুরো মেট্রোর নেটওয়ার্কও তৈরি করে ফেলি তাও ১৫ শতাংশের বেশি যাত্রী আমরা মেট্রোতে পরিবহন করতে পারব না। সড়কের ৮৫ শতাংশ যাত্রীর কথা ভুলে গেলে এতো হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ কোন কাজে আসবেনা।
তিনি বলেন, যানজট নিরসনে আমাদের নীতির পরিবর্তন আনতে হবে। রাজধানীর ৩০ শতাংশ মানুষ হেটেই অফিসে যান। ফুটপাতগুলোকে ঠিক করলে নিরবিচ্ছিন্ন ফুটপাত করলে যানযট ৩০ শতাংশ কমে যাবে।
সক্ষমতার অভাবে দুই যুগেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি (ভিডিও)
রাজধানীর নির্মাণাধীন ভবনগুলো যেন একেকটা মশা উৎপাদনের কারখানা। ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিলে কিছুটা নজরদারি বাড়লেও এখন যেন দেখার কেউ নেই। মাঝে মধ্যে ওষুধ ছিটানো হলেও তা কাজে আসে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশক নিধনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের ঘাটতি আর সক্ষমতার অভাবে দুই যুগেও দেশে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি।
গত কয়েক দশক ধরে রাজধানীতে চলছে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রতিযোগিতা। নির্মাণাধীন এসব ভবনে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। গত বছর রাজধানীতে ৫০ শতাংশ ডেঙ্গু রোগের জন্য নির্মাণাধীন ভবনকে দায়ী করা হয়। এবারের চিত্রও আগের মতো। ডেঙ্গু মোকাবিলায় নেওয়া হয়নি আগাম কোনো ব্যবস্থা।
ভবন মালিকদের অসচেতনতার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের উদাসিনতাকে দায়ী করছেন নগরবাসী।
তারা জানান, যেখানে মশা তৈরি হয় সেখানে ওষুধ দেওয়া হয় না। মাঝে মধ্যে মশার ওষুধ প্রয়োগ করা হলেও তা কাজে আসছে না। আর ওষুধ দেওয়া হলেও এর ভেতরে থাকে কেরোসিন।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. গোলাম সারোয়ার বলছেন, সঠিক পদ্ধতিতে ওষুধ প্রয়োগ না করায়, মশা মরছে না। তিনি বলেন, যে দূরত্ব থেকে স্প্রে করা দরকার, এর থেকে বেশি হলে মশা বাড়বে। আর স্প্রের কারণে মশার প্রাকৃতিক শত্রুরা মারা যাবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেনজির আহমেদ জানান, গত বারের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারাদেশে প্রস্তুত হাসপাতালগুলো’
দখল ও দূষণে জর্জরিত রাজধানীর খালগুলো হচ্ছে মশার সবচেয়ে নিরাপদ আবাসস্থল। ফলে বংশবিস্তারও ঠেকানো যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারাদেশে প্রস্তুত রয়েছে হাসপাতালগুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতালে মশক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার কমাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা মহানগরে যত খাল রয়েছে, তার বেশির ভাগই এখন ময়লার ভাগাড়। বৃষ্টির পানি নির্গমনের পথগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা যেমন বাড়ছে তেমনই বাড়ছে মশা। রাজধানীর মশার অন্যতম উৎপত্তিস্থল এসব খালে মাঝেমধ্যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হলেও তা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছু নয় বলে মনে করছে নগরবাসী।
তাদের অভিযোগ, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অনেক আগে এসেছিলেন। এরপর আর তাদের দেখিনি। অথচ এখানে প্রচুর মশা। মশার কামড়ে বাচ্চাদের ডেঙ্গু হয়ে যায়।
জনগণের অসচেতনতা আর সিটি করপোরেশনের উদাসীনতার বলি হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাই। ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত যেখানে ডেঙ্গুতে মারা যায় ৮৬৮ জন, সেখানে ২০২৩ সালে এক বছরেই মারা যায় এক হাজার ৭০৫ জন। দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। রোগীর উপচে পড়া ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।
গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যন্ত্রপাতির সক্ষমতা বাড়িয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাসপাতালগুলো।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় শুধু রাজধানী নয়, সারাদেশেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার জন্য আমাদের চিকিৎসকরা এখন অভিজ্ঞ। তারা সব জানেন। তাই ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোকে সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হবে।
জোরেশোরে চলছে কারওয়ান বাজার সরিয়ে নেওয়ার কাজ (ভিডিও)
কারওয়ান বাজার সরিয়ে নিতে যাত্রাবাড়ী ও গাবতলিতে আড়তদারদের দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কাজ হাতে নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না গেলে নতুন জায়গার বরাদ্দ বাতিলের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মেয়র। গাবতলিতে যেতে না চাইলেও যাত্রাবাড়ীতে আপত্তি নেই ব্যবসায়ীদের, সেক্ষেত্রে রয়েছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসেই কাঁচাবাজার খালির কাজ শুরু হচ্ছে।
শত বছরের পুরোনো কারওয়ান বাজার সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার এমন ঘোষণা আসলেও শেষ মুহূর্তে আলোর মুখ দেখেনি। তবে এবার ২৮ মার্চ কারওয়ান বাজারে অবস্থিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয় সরানোর মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের ১৭৬টি পাইকারি দোকান গাবতলিতে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেখানে মূলত উত্তরবঙ্গ থেকে আসা পণ্যের জন্য পাইকারি আড়তের কথা বলছে ডিএনসিসি। তবে ব্যবসায়ীরা যেতে চান যাত্রাবাড়ীতে।
এ বিষয়ে কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, দুই তিন প্রজন্ম ধরে তারা এখানে ব্যবসা করছেন। কৃষকদের টাকা দাদন দেওয়া আছে। বিভিন্ন জায়গাতে টাকা পড়ে আছে। এই মুহূর্তে বাজার সরালে তাদের টাকাগুলো উদ্ধার না-ও হতে পারে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, যাত্রাবাড়ীর মার্কেটটি দীর্ঘদিন পড়ে আছে অবহেলায়। সেখানে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা পণ্যের জন্য আড়তের আন্ডারগ্রাউন্ডে যাদের বরাদ্দ মিলবে, তাদের জন্য ৯০ স্কয়ার ফিট বেশি থাকবে। কাঁচাবাজারের পর পর্যায়ক্রমে মার্কেটের অন্যান্য দোকানও সরিয়ে নেওয়া হবে।
এর আগে কারওয়ান বাজার স্থানান্তর কমিটির সদস্য ও ডিএনসিসির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী নাঈম রায়হান খান বলেছিলেন, কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ভবনে থাকা ১৭৬ জন ব্যবসায়ীই শুধু ভবনের ভেতর দোকান বরাদ্দ পাবেন। অস্থায়ী কাঁচাবাজারের ১৮০ জন ব্যবসায়ীকে বাজারের পূর্ব পাশে খালি জায়গায় দোকান দেওয়া হবে। বেশির ভাগ দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে দক্ষিণ পাশের ভবনে।
ঢাকা উত্তর সিটির সূত্র অনুযায়ী, কারওয়ান বাজার আড়ত ভবনে নিচতলায় ৪০০ বর্গফুটের ৬২টি ও দোতলায় ১৭০ বর্গফুটের ১১৪টি দোকান রয়েছে। আর আড়ত ভবনের দুই পাশে টিনের ছাউনির নিচে অস্থায়ী কাঁচাবাজারে ১৮০টি দোকান রয়েছে। ২০০ বর্গফুট আয়তনের এসব দোকান সম্পত্তি বিভাগ থেকে বরাদ্দ দেওয়া।
লোভনীয় অফার, অনলাইনে সক্রিয় প্রতারক চক্র
ঘরে বসে বাড়তি আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ডিজিটাল প্রতরণায় সক্রিয় হয়েছে বেশ কিছু চক্র। অনলাইনে আয়ের কথা বলে যারা মূলত গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি এদের তৎপরতা বেড়েছে। অপরাধী সনাক্তে সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে শক্তিশালী করছে পুলিশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইন প্রতরণার কবল থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
আপনি নির্বাচিত হয়েছেন, ঘরে বসে দৈনিক দেড় থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আয় করুন! কিংবা কোনো বিদেশী ফোন করে লোভনীয় বেতনে কাজের অফার দেন। সম্প্রতি এমন ম্যাসেজ বা ফোন কল পাচ্ছেন অনেকে। অথচ এর পুরোটাই প্রতারক চক্রের কাজ।
ভোলার মনপুরায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিক্রয় বিভাগে কাজ করেন সাইফুল রহমান ইমন। গেল মাসে অনলাইনে আয়ের লোভনীয় অফারের ম্যাসেজ আসে তার ফোনে। প্রথমে সহজ কিছু কাজ করে পাঁচ/ছয়শো টাকা আয়ও করেন। তাদের বিশ্বাস করে প্রথমে দেড় হাজার ও পরে ধার করে আরও পনেরো হাজার টাকা জমা দেন তিনি। এরপর থেকেই তার টাকা ফেরত পাচ্ছেন না ইমন। প্রায় ২৮ হাজার টাকা প্রতারক চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে বলেন জানান তিনি।
চক্রটির ফাঁদে পা দিয়ে আর্থিক ও সামাজিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ইমনের মতো অনেকেই।
সম্প্রতি সাইবার প্রতরণার এমন অভিযোগ বাড়লেও এখনও কাওকে শনাক্ত করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সাধারণ মানুষকে শর্টকাটে বড়লোক হওয়ার প্রলোভন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ পুলিশের।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের নতুন ডিসি মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘সাইবার ক্রাইম একটি ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম। ক্রাইমগুলো দেশের বাইরে থেকে সাধারণত হয়ে থাকে। সেই আসামিদের দেশে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে আইনগত অনেক জটিলতা রয়েছে। এ কারণে আসলে ভুক্তভোগীকেই আগে সচেতন হতে হবে। নিজের লোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
প্রতারণা রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা ও সাধারণের সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা ।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, ‘প্রতারণার বিষয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে আইনের কাছে সোপর্দ করতে গেলে যে ধরনের মানব সম্পদ এবং ডিজিটাল যন্ত্রপাতি পুলিশের দরকার তা সংখ্যায় কম আছে। আর সবচেয়ে বড় কথা প্রযুক্তিগত অপরাধ প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে।’
নিত্যপণ্যের মতোই লাগামহীন ওষুধের দাম
করোনাকালীন একদফা বাড়ার পর আবারও কোনো ঘোষণা ছাড়াই বেড়েছে বেশির ভাগ ওষুধের দাম। এ অবস্থায় চিকিৎসা খরচ মেটাতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। এর পেছনে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা। কিছুই করার নেই বলছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণে স্বচ্ছতার ঘাটতি দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৯ সালে চাকরি জীবন শেষ করেন সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখার নিরীক্ষা বিভাগে কর্মরত খোরশেদ আলম। স্বপ্ন ছিল অবসরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাবেন। কিন্তু ২০২১ সালে হঠাৎ বুকে ব্যথা ওঠার পর জানতে পারেন তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। গেল তিন বছরে চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা, যার বেশির ভাগ চলে গেছে ওষুধ ক্রয়ে।
করোনা মহামারির সময় ওষুধের যে দাম বেড়েছিল তা আর কমেনি। চলতি বছরে আবারও শুরু হয়েছে অস্থিরতা। সব থেকে বেশি বেড়েছে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ওষুধ তৈরির সব কাঁচামাল আমদানিতে বেড়েছে খরচ, আর তাই বেড়েছে ওষুধের দাম।
আজিজি কো-অপারেটিভ ওষুধ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এলসি করতে গেলে যে ধরনের কাঁচামাল বা ওষুধ শিল্পের জন্য যে সমস্ত মালামাল দরকার এর জন্য সময় সাপেক্ষ বিষয় হয়ে যায়। সেই জিনিসটাকে মেকাপ করতে হলে অতিরিক্ত দামে কাঁচামাল নিয়ে আসতে হচ্ছে।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সম্প্রতি ওষুধের দাম বাড়াকে স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাহ উদ্দিন ফোনে বলেন, ‘ওষুধের দাম কিছুটা বেড়েছে। এটি অস্বীকার করছি না। আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য এবং ডলারের ক্রাইসিসের জন্য এটি হয়েছে।’
নোংরা বরফের শরবতে প্রাণ জুড়াচ্ছেন ঢাকাবাসী! (ভিডিও)
তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। বাইরে বেরোলেই গলা শুকিয়ে হয়ে যাচ্ছে কাঠ। তৃষ্ণা মেটাতে মন চায় বরফ ঠান্ডা এক গ্লাস শরবত। কাঠফাটা গরমে ঠান্ডা বরফ দেওয়া এক গ্লাস শরবতে যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের এই সময়ে সড়কের পাশে, মোড়ে মোড়ে বসেছে শরবতের দোকান। বিক্রি হচ্ছে লেবু, বেলের শরবত ও আখের রস। এ ছাড়া পেঁপে, আনারস, মাল্টা, আঙুরসহ বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ফলের জুস। আর তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেও ঠান্ডার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে মাছ হিমায়িত করার বরফ।
তীব্র গরমে একটু স্বস্তির আশায় রাস্তার পাশের এসব শরবত বা জুসের দোকানে হরহামেশাই ভিড় করছেন পথচারীরা। ক্লান্তি দূর করতে শরবত, আখের রস বা জুসে তৃষ্ণা মেটানো এই বরফ কোথা থেকে আসছে তা জানেও না ভোক্তা।
জানা গেছে, ওয়াসার সাপ্লাইয়ের পানি দিয়ে, মাছসহ পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয় এ বরফ। বরফ মিশ্রিত এসব পানিও গরমে দেহের ক্ষতি করে, তার ওপরে দূষিত পানির ফলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ।
মাছ বাজারের পানি আর ছাগলের মল-মূত্রে একাকার নোংরা পরিবেশে রাখা বরফ কিনে তা দিয়ে আখের রস করছিলেন ফার্মগেট এলাকার এক বিক্রেতা, আরটিভির ক্যামেরা দেখেই পালানোর চেষ্টা করেন তিনি।
একজন অ্যালোভেরার শরবত বিক্রেতা বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় সবসময় বরফ ব্যবহার করি না। তবে গরমে তৃষ্ণা মেটাতে বরফের চাহিদা থাকায় ব্যবহার করছেন তিনিও।
শরবত পান করা ক্রেতারা বলেছেন, গরমে হাতের নাগালে শরবত পেয়ে আমরা কিনে খাই। কিন্তু এসব বরফ কোথা থেকে আসে তা জানি না।
নগরবাসী বলছেন, দূষিত পানির এই বরফ মিশিয়ে নানা ধরনের পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে। এজন্য সরকারের তদারকির অভাবকেই দায়ী করছেন তারা।