• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ফলোআপ

বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধুত্ব থেকে শারীরিক সম্পর্ক: আদালতে স্বীকারোক্তি

  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২২:৫৩
From friendship to physical relationship at university, that night was 1 time!
ফাইল ছবি

রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রীর সঙ্গে মাত্র একবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারই বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী। এর আগে তারা ৫ তরুণ-তরুণী মিলে মদ পান করেছিলেন। এরপর কয়েক দফা বমি করেন সেই ছাত্রী। এরমধ্যেই আরেক বান্ধবীর মোহাম্মদপুরের বাসায় রাতে একবার শারীরিক সম্পর্ক হয় তাদের। এসবের পরই অসুস্থতা বোধ করলে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান সেই ছাত্রী। একই মদের পার্টিতে অংশ নেওয়া তাদেরই আরেক বন্ধু আরাফাত মারা যান ওই ছাত্রীর আগেই। ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ‘ধর্ষণ’ মামলা দায়ের করেন তার বাবা।

আজ শনিবার (০৬ জানুয়ারি) রিমান্ডের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা জানা যায়।

গত শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) ৫ দিনের রিমান্ডে শেষে মর্তুজা চৌধুরী রায়হানকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময়েই তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আজ শনিবার (০৬ জানুয়ারি) মামলার আরেক আসামি নুহাদ আলম তাফসিরকে পুলিশ আদালতে হাজির করে। পরে আদালত তাফসিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, ওই শিক্ষার্থীর বন্ধু রায়হান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সার্বিক পরিস্থিতি, ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্য প্রমাণ যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর বন্ধু রায়হান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দীতে তিনি ওই তরুণীর সঙ্গে ১ বার শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বন্ধুত্বের সম্পর্ক ধরে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। তবে তাদের বন্ধু তাফসিরের সঙ্গে মদপান বা অন্যান্য ঘটনার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে তাকে আদালত কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে পড়াশুনা করার কারণে রায়হানের সঙ্গে ওই ছাত্রীর গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এদিন বিকালে তারা হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজার সামনে একত্রিত হন। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা হয় তাদের বন্ধু আরাফাতের। সেখানে আরাফাত তাদেরকে গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে দাওয়াত আছে বলে নিমন্ত্রণ দেন। গুলশানে যাওয়ার পর আরাফত তাদেরকে জানান যে রেস্টুরেন্টের লোকেশন একটু বদল হয়েছে। উত্তরায় ৩ নম্বর সেক্টরে ব্যাম্বু সুট রেস্টুরেন্টে তারা মিলিত হবেন। সন্ধ্যার আগে তারা ব্যাম্বু সুট রেস্টুরেন্টে মিলিত হন। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বন্ধু ফারজানা জামান নেহা ওরফে ডিজে নেহা এবং সাফায়েত জামিল। রেস্টুরেন্টে তারা ৫ জন একত্রিত হয়ে মদপান করেন। মদ সরবরাহ করে সাফায়েত জামিল।

একপর্যায়ে নেহা অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং রেস্টুরেন্টের টয়লেটে গিয়ে বমি করে। তখন নেহা ও সাফায়েত চলে যায়। রেস্টুরেন্টে আরাফাত, রায়হান ও ওই তরুণী মদপান করেন। একপর্যায়ে ওই তরুণী টয়লেটে গিয়ে বমি করে। সেই অবস্থা দেখে রায়হান ও আরাফাত ওই তরুণীকে নিয়ে একসাথে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে একটি উবার নেয়। উবারে ওই তরুণী ও রায়হানকে গুলশান-২ এ নামিয়ে দেয় আরাফাত।

গুলশান-২ এ নেমে ওই তরুণী বলে যে, সে বাসায় যাবে না, তাকে তার বান্ধবী তাফসিরের মোহাম্মদপুরের বাসায় নিয়ে যেতে হবে। তখন তারা দুইজন মিলে মোহাম্মদপুর হোমস লিমিটেডের ৯ নম্বর বিল্ডিংয়ের বাসায় যায়। সেই বাসায় তাফসির তার মা’র সঙ্গে থাকতো। তবে সেদিন তাফসির একা ছিল। ২৮ জানুয়ারি রাতে তারা তাফসিরের বাসায় ঢুকে। এর পরপরই ওই তরুণী বমি করে। সেই বমি পরিষ্কার করে তাফসির ও রায়হান। এরপর রায়হান ও তরুণীকে এক রুমে রেখে অন্য রুমে চলে যায় তাফসির।

রাতে রায়হান ও তরুণীর মধ্যে একবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। এর পরদিন ভোরে তরুণীকে ওই বাসায় রেখে রায়হান তার পিসি কালচার হাউজিং এলাকার ৯, প্রবাল হাউজিংয়ের ৫ম তলায় তাদের নিজেদের ফ্ল্যাটে চলে যায়। গত ২৯ জানুয়ারি দুপুরে রায়হান বান্ধবী তাফসিরের বাসায় এসে তরুণীর খোঁজ খবর নিয়ে যান। ওই দিন মধ্যরাতে তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাফসিরে এক বন্ধু বাসায় যায়। ওই বন্ধু তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় ৪০ মিনিট পর তাকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আইসিইউতে রাখা হয় তরুণীকে। তখন রায়হান তরুণীর বাবাকে ফোন করে এবিষয়ে জানায়। ৩০ জানুয়ারি দুপুরে তার বাবা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন। ওই দিন রাতে তার বাবা থানায় একটি মামলা করেন। পরদিন ৩১ জানুয়ারি ওই তরুণী মারা যাওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপরই পুলিশ জানতে পারে যে, তাদের আরেক বন্ধু আরাফাত গত ২৯ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে মারা গেছে। হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ধারণা করছেন, শারীরিক সম্পর্কের কারণে নয়, মদ পানের পর বিষক্রিয়া তাদের মৃত্যু হয়েছে। কেনোনা ওই ছাত্রীর শরীরের আঘাত বা জখমের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নারায়ণগঞ্জে ২ শিশুকে ধর্ষণ মামলায় যুবক গ্রেপ্তার  
দুই শিশুকে ধর্ষণ মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
প্রযোজকের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রীর ধর্ষণ মামলা
অবশেষে বিচ্ছেদের গুঞ্জনে মুখ খুললেন নেহা
X
Fresh