• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

আমদানি না করেই নকল মাস্ক সরবরাহ করে অপরাজিতা

এ আর বাদল, আরটিভি নিউজ

  ২৬ জুলাই ২০২০, ১৪:১৩
Aparajita provides fake masks without importing
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নকল মাস্ক সরবরাহ করে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি না করেই অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করেছে। মেয়াদহীন লাইসেন্স আর স্বাস্থ্যসামগ্রী বিক্রির অনুমোদন ছাড়াই মাস্ক সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। আরটিভির কাছে অনিয়মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন অপরাজিতার স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহান। এসব যাচাই না করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন তাদের কার্যাদেশ দিয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

করোনা মহামারিকে পুঁজি করে অনিয়ম-দুর্নীতির নতুন উদাহরণ অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের বিষয়টি ধরা পড়ায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহান।
এর আগে আরটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কার্যাদেশ পেলেও তার প্রতিষ্ঠান এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করেনি। বরং অন্যদের কাছ থেকে কিনে সরবরাহ করেছে।
শারমিন জাহান বলেন, আমি নিজে আমদানি করিনি, এখানে ব্যক্তিও আছে প্রতিষ্ঠানও আছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে ৪ লট ৪ জনের কাছ থেকে নিয়েছি। আমি শুধু সাপ্লাই করি, একজনের কাছ থেকে নিয়ে আরেক জনের কাছে বিক্রি করি। টোটাল ১১ হাজার পিস মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ পেয়েছিলাম আমি। এটার জন্য আমি দাম নির্ধারণ করেছি ৭৩০ টাকা প্রতি পিস।
তিনি আরো বলেন, বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিন উনি তো অনেক কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকেন; তাই ওনার একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর শফিকুল ইসলামকে অ্যাসাইন করে দিয়েছেন এই প্রজেক্টের জন্য।
অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের লাইসেন্সের মেয়াদ ছিল না। ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। ছিল না স্বাস্থ্যসামগ্রী আমদানির কোনো অনুমতিও।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কর্তৃপক্ষ এই প্রতিষ্ঠানটিকে এগার হাজার মাস্ক আমদানির কার্যাদেশ দেয়। যাচাই-বাছাই ছাড়া কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানকে স্পর্শকাতর মাস্ক আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছিল তা এখন খুঁজে দেখছে কর্তৃপক্ষ।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মোবাইল ফোনে আরটিভি নিউজকে বলেন, মাস্কগুলো আমাদের যারা রিসিভ করেছিল তারা ও চিকিৎসকরা যখন খুলে দেখলো যে নম্বর দেয়া সেটা আসলে নকল মাস্ক। তারপর তারা জানিয়েছে যে তারা এই মাস্কগুলোর জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। সেজন্য মামলা করা হলো। আমাদের পরিচালক এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন। কারণ ওই প্রক্রিয়াগুলো সেখান থেকে হয়েছে।

বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিন জানান, তাদের সাথে আমাদের যথাযথ নিয়ম মানা হয়েছে। আমাদের ঠিক ওই মুহূর্তে মাস্ক খুব দ্রুত প্রয়োজন ছিল। এটা আমাদের লিগ্যাল বিভাগের সাথে আলোচনা করে দেখব।

অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহান বেসরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে কর্মরত আছেন। উপাচার্য বলেন, এমন হয়ে থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বলেছি এই তথ্যগুলো আমাকে দিতে। আদৌ সে আমাদের এখানে কর্মচারী কিনা। মামলারও তথ্য চেয়েছি। আমি অলরেডি রেজিস্ট্রারকে বলে রেখেছি। এই নামে আমাদের কে আছে, এই তথ্যগুলো আমার কাছে উপস্থাপন করবে। তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ধরনের কাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম করবে, সেটা হতে দেয়া হবে না।

অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের শাস্তির পাশাপাশি মদদদাতাদেরও সামনে এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

আরও পড়ুন:

পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh