সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের
ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানা কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে সাংবাদিকের হাত ও পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খাদেমুল আলম শিশির। এ সময় ওসির সামনেই অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয় সংবাদকর্মীদের।
এ ঘটনায় নিরব ভূমিকা পালন করেছেন তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. ওয়াজেদ মিয়া।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তারাকান্দা থানা কার্যালয়ের অফিস কক্ষে এসব ঘটনা ঘটে।
হুমকির শিকার ওই সংবাদকর্মীর নাম মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজ অনলাইন পোর্টালের ময়মনসিংহ প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী জানান, উপজেলার পলাশকান্দা কান্দাপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ জালাল উদ্দিন তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন। জালাল উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিবেশীর ঝগড়া থাকায় আশপাশের সবার বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকলেও জালাল উদ্দিনের বাড়িতে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। পারিবারিক বিরোধের কারণে জালাল উদ্দিনের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে দেয় না স্থানীয় একটি প্রভাশালী মহল। বিষয়টি নিয়ে শিশির চেয়ারম্যান বেশ কয়েকবার সালিস করেন। কিন্তু বিষয়টির মীমাংসা হয়নি। পরে সালিসে শর্ত দেওয়া হয় জালাল উদ্দিনের স্ত্রী বৃদ্ধা ফাতেমা খাতুনকে সবার কাছে মাফ চাইতে হবে, না হলে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না। কিন্তু ফাতেমা খাতুনের দাবি, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। তাই তিনি ক্ষমা চাইবেন না।
এ ঘটনায় সরেজমিনে নিউজ করতে গেলে সাংবাদিক মঞ্জরুল ইসলামকে হুমকি দেন তারাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাদেমুল আলম শিশির।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, থানার বাইরে দুপক্ষের উচ্চবাচ্য হয়েছে। পরে তারা থানায় আসলে এখানেও তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এ সময় থানায় স্থানীয় ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী এসেছিল। তারাও উচ্চব্যাচ্য করেছে।
এ সময় ওসি আরও বলেন, আমি দীর্ঘদিন শহরে কাজ করে আসছি। এখন তারাকান্দা থানায় এসেছি। চেষ্টা করি সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকার। তাই ঘটনার শেষে দুজনকে মিলিয়ে দিয়েছি। এরপরও সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম যদি কোনো অভিযোগ করেন, অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুম আহমেদ ভুঁঞা বলেন, ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে অভিযোগ দিলে বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হবে।
তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান খাদেমুল আলমকে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:২২