• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‌‘দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না’
দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বরিশালের একটি হোটেলে আয়োজিত পুষ্টিখাতে অর্থায়ন শীর্ষক সংলাপে এ কথা জানান তিনি। নাসিরুজ্জামান আরও বলেন, জরিপ বলছে দেশের ৩৬ শতাংশ মানুষ খর্বাকার। ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না। পুষ্টি বলতে সাধারণত মানুষ বুঝে থাকে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমকে। কিন্তু শাকসবজিতেও যে পুষ্টি রয়েছে তার ধারণা নেই।  তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। এতে অনেকেরই ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। আমরা যদি নিজেদের পুষ্টির উৎপাদন ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে বেশি মূল্যে বাজার থেকে পুষ্টিকর খাবার কিনতে হবে না। বিকল্প হিসেবে পারিবারিক পুষ্টি কৃষির মডেল তৈরি করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার উৎপাদনে নিজেদের পতিত জমিতে পুষ্টিকর সবজি চাষ করা গুরুত্বপূর্ণ। নয়তো ভবিষ্যতে আমাদের জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মোট কৃষকের ৪৮ শতাংশ বর্গা চাষি। তারা সাধারণত জমিতে কৃষি বলতে ধান চাষ আর কলাগাছ রোপনকে বোঝেন। এর পাশাপাশি পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনে জোর দিতে হবে। পুষ্টি কৃষিতে সরকারের চেয়ে বেসরকারি বিনিয়োগ কার্যকর উল্লেখ করে এরপর তিনি বলেন, খাদ্যাভাব পূরণে মানুষ সবচেয়ে বেশি ঋণ গ্রহণ করেন উন্নয়ন সংস্থা থেকে। এটা সরকারি ব্যাংকের ব্যর্থতা। সরকারি ব্যাংকে কৃষক ঋণ নিতে গেলে তার জামানত আছে কি না, কি কি কাগজপত্র আছে তা চায়। এতে কৃষক নিরুৎসাহিত হন। এসব বিবেচনা করে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করছে কৃষি ব্যাংক। ১০ টাকার কৃষক অ্যাকাউন্ট চালু করে একজন কৃষক তার বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষের জন্য এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। ১২ মাসে তিনি ঋণ পরিশোধ করবেন। ঋণ নিতে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রই যথেষ্ট। পুষ্টিখাতের অগ্রগতির জন্য হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জিয়াকুন শি। তিনি বলেন, পুষ্টি নিরাপত্তায় ১৯৭৬ সাল থেকে আমরা কাজ করছি। পুষ্টি উন্নয়নে ইতোমধ্যে ২৫০টিরও বেশি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ পুষ্টির বিষয়ে সবসময়ে সচেতন ও সহায়ক মানসিকতার। জাতিসংঘের খাদ্যসংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুর মতো কাজ করছে। শুধু সরকার নয়, আমরা সবাই যদি পুষ্টি নিশ্চিতে এগিয়ে আসি তাহলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কারিগরি সহায়তা সমন্বয়কারী ইমানুন নবী খান। তার বক্তব্যে তিনি পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের মার্চ মাসের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, দেশের ২২ শতাংশ মানুষ মাঝারি থেকে শুরু করে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। আর যাদের মূল পেশা কৃষি তাদের মধ্যে ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এ ছাড়া শতকরা ২৫ দশমিক ৫ ভাগ পরিবারকে দৈনন্দিন খাবার কিনতে ঋণ করতে হচ্ছে। খাদ্যের অনিশ্চয়তার ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে নাগরিকদের রক্ত স্বল্পতার প্রতিবেদনেও। ২০১২ সালে রক্তস্বল্পতায় ভুগতো ৩৫ দশমিক ৭০ ভাগ মানুষ। ২০১৯ সালে তা ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশে। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা উইংয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল হক পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় সংলাপে আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, ডাচ বাংলা ব্যাংকের সিএসআর রিসার্চ প্রোগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. মঞ্জুরুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শহীদ রেজা, সারাবাংলা কৃষক সোসাইটির সভাপতি রিতা ব্রাহ্ম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রোগ্রাম প্রতিনিধি নূর আহমেদ খন্দকার। সংলাপ শেষে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ৩০টি উৎপাদরকারী সংগঠনের নারী কৃষকদের হাতে জামানতমুক্ত ১০ হাজার টাকার ঋণ চেক এবং পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনের জন্য বীজ তুলে দেন অতিথিরা।
৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৬

‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষ পুষ্টিকর খাবার কাটছাঁট করছেন’
মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষ প্রতিদিনের খাবার খরচে পুষ্টিকর খাবার কাটছাঁট করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।  অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে দেশের একটা বড় অংশের মানুষের প্রকৃত আয় কমছে। অনেকে চিকিৎসা খরচ মেটাতে পারছেন না। প্রতিদিনের খাবারের খরচে একটু একটু করে বাদ যাচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। এসব খাবারের জায়গায় আরেকটা খাবার ঢুকছে। প্রকৃত আয় কমায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। তিনি বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষের দুরবস্থার জন্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছাড়াও চাঁদাবাজি দায়ী। কারণ, চায়ের দোকান বা হকার, ভ্যানগাড়ি নিয়ে যারা চলে তাদেরকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। এর পরিমাণ শতকোটি টাকা। অর্থনীতির এ অধ্যাপক বলেন, আর এসবের সুবিধাভোগী ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের মতো ক্ষমতাসীন সংগঠন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো প্রশাসন। আনু মুহাম্মদ বলেন, যখন থেকে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তখন থেকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। আর সবকিছু একচেটিয়াভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানি; যা দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির এটা বড় কারণ। তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ ও চাহিদা বাড়লে জিনিসপত্রের দাম বাড়তেই পারে। কিন্তু সবজি থেকে শুরু করে সব কৃষিপণ্যের সরবরাহে সমস্যা নেই তবুও দাম বাড়ছে। কয়েকটি গোষ্ঠী বা চোরের হাত উৎপাদন বা বিতরণ—কোনো কাজে না থেকেও দ্রুত টাকা বানাচ্ছে।     নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ও দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। এতে অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান প্রমুখ সমাবেশে সংহতি জানান।
৩০ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৪

টিফিনে ডিম-দুধ-রুটি পাবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা
দেশের ১৫০টি উপজেলার ১৮ থেকে ১৯ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীকে সপ্তাহে পাঁচদিন পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচি (ফেইজ-১) প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের দুধ, ডিম, মৌসুমি ফল, কলা, ফর্টিফাইড বিস্কুট, কেক ও  পাউরুটি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকাগুলোর শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত টিফিনের সময় শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব খাবার বিতরণ করা হবে। জানা গেছে, তিন বছরের জন্য প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ৪ হাজার ৭৫৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে সরকার এবং বাকি ৬৪ কোটি টাকা বৈদেশিক অনুদান হিসেবে আসবে। প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের জন্য ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহে পাঁচদিন এসব খাবার বিতরণের জন্য তিনিটি ধাপে কর্মসূচির রোডম্যাপ করা হয়েছে। যেদিন দুধ দেওয়া হবে, সঙ্গে পাউরুটি দেওয়া হবে। যেদিন ডিম দেওয়া হবে, সঙ্গে কলা ও ফর্টিফাইড বিস্কুট দেওয়া হবে। আর যেদিন ফল দেওয়া হবে, সঙ্গে অন্য খাবার দেওয়া হবে। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত খিচুড়ি রান্নার ফরমেট প্রকল্প এবং ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্প একনেক সভা থেকে বাতিল হয়েছে। এখন সরকারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচি (ফেইজ-১) প্রকল্পের ভবিষ্যৎ একনেক কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ বৃদ্ধি এবং ঝরে পড়া রোধে প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় আমরা ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীকে টিফিনে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার দিতে চাই।
২২ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়